আল-আদাবুল মুফরাদ- ইমাম বুখারী রহঃ

আল-আদাবুল মুফরাদের পরিচ্ছেদসমূহ

হাদীস নং: ১০১৬
৪৬৪. মজলিস হইতে উঠিবার সময় সালাম
১০১৬. হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ) বলেনঃ যখন কোন ব্যক্তি মজলিসে উপস্থিত হয়, তখন তাহার উচিত সালাম করা। সে যদি মজলিসে বসে এবং অতঃপর মজলিস ভঙ্গের পূর্বেই উঠিয়া যাইবার প্রয়োজন দেখা দেয়, তবে তাহার সালাম করিয়া উঠা উচিত। কেননা প্রথম সালাম কোন অংশেই শেষের সালাম হইতে উত্তম নহে। (অর্থাৎ উভয় সালামই সওয়াবের দিক দিয়া সমান)।
بَابُ التَّسْلِيمِ إِذَا قَامَ مِنَ الْمَجْلِسِ
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، قَالَ‏:‏ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ قَالَ‏:‏ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ قَالَ‏:‏ أَخْبَرَنِي سَعِيدٌ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ‏:‏ إِذَا جَاءَ الرَّجُلُ الْمَجْلِسَ فَلْيُسَلِّمْ، فَإِنْ جَلَسَ ثُمَّ بَدَا لَهُ أَنْ يَقُومَ قَبْلَ أَنْ يَتَفَرَّقَ الْمَجْلِسُ فَلْيُسَلِّمْ، فَإِنَّ الأُولَى لَيْسَتْ بِأَحَقَّ مِنَ الأخْرَى‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সালাম দেওয়ার উদ্দেশ্য তাকে নিজের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দেওয়া। সালামের মাধ্যমে বোঝানো হয় যে, তুমি আমার দিক থেকে নিশ্চিন্ত থাকো। আমার দ্বারা তোমার কোনও ক্ষতি হবে না। কোনও মজলিসে পৌছে সালাম দিলে মজলিসে উপস্থিত লোকজন আশ্বস্ত হতে পারে যে, এই আগন্তুকের পক্ষ থেকে তাদের কোনও ভয় নেই। ফলে তারা নিশ্চিন্তমনে তাকে গ্রহণ করে নিতে পারে। এজন্যই মজলিসে পৌঁছে সালাম দিতে হয়। তাদের এই একই নিরাপত্তা ওই ব্যক্তির বিদায় গ্রহণকালেও পাওয়া দরকার। কেননা অনেক সময় মজলিসে আগন্তুক ব্যক্তি মজলিসের খবরাখবর জেনে যায়। তারপর সে ওই মজলিসের কথা অন্যত্র প্রচার করে কিংবা মজলিসের লোকজন সম্পর্কে অন্যদের অবহিত করে তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। কাজেই এ ব্যক্তি বিদায় নেওয়ার পর যে তাদের এরকম কোনও ক্ষতি করবে না, সে বিষয়ে তাদের নিশ্চিন্ত হওয়া দরকার। সালামের দ্বারা বিদায় নিলে তারা সে নিশ্চিন্ততা লাভ করতে পারে। কাজেই বিদায় গ্রহণকালেও সালাম দেওয়া উচিত। এজন্যই হাদীছটিতে বলা হয়েছে, শেষের সালাম অপেক্ষা প্রথমবারের সালাম বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থাৎ নিরাপত্তা ও নিরুদ্বেগের ব্যাপারে প্রথমবার সালাম দেওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, বিদায়কালীন সালামও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। সে সালামের গুরুত্ব প্রথমবারের তুলনায় মোটেই কম নয়। তাই সাক্ষাৎকালে যেমন সালাম দেওয়া হয়েছে, বিদায়কালেও তেমনি সালাম দেওয়া উচিত।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. সালাম দেওয়ার দ্বারা সালামদাতার পক্ষ থেকে কোনওরূপ ক্ষতি ও অনিষ্ট সাধিত না হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। তাই সালামদাতার কর্তব্য সালামের এ অন্তর্নিহিত আবেদন সম্পর্কে সচেতন থাকা।

খ. মজলিসে উপস্থিত হওয়ার সময় বা কারও সঙ্গে সাক্ষাৎকালে যেমন সালাম দেওয়া হয়, তেমনি সালাম দিতে হবে বিদায়কালেও।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
আল-আদাবুল মুফরাদ - হাদীস নং ১০১৬ | মুসলিম বাংলা