আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৬- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়

হাদীস নং: ২৮৭৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৯১
১৯৪১. খুমুস (এক-পঞ্চমাংশ) নির্ধারিত হওয়া
২৮৭৩। আবদান (রাহঃ) .... আলী (রাযিঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের গনীমতের মালের মধ্য থেকে যে অংশ আমি পেয়েছিলাম, তাতে একটি জওয়ান উটনীও ছিল। আর নবী (ﷺ) খুমুসের মধ্য থেকে আমাকে একটি জওয়ান উটনী দান করেন। আর আমি যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর কন্যা ফাতিমা (রাযিঃ)- এর সাথে বাসর যাপন করব, তখন আমি বনু কায়নুকা গোত্রের জনৈক স্বর্ণকারের সাথে এ মর্মে চুক্তিবদ্ধ হলাম যে, সে আমার সঙ্গে যাবে এবং আমরা উভয়ে মিলে ইযখির ঘাস (জঙ্গল হতে) সংগ্রহ করে আনব। আমার ইচ্ছা তা স্বর্ণকারদের কাছে বিক্রয় করে তা দিয়ে আমার বিবাহের ওয়ালীমা সম্পন্ন করব।
ইতিমধ্যে আমি যখন আমার জওয়ান উটনী দু’টির জন্য আসবাবপত্র যেমন পালান (বসার আসন) থলে ও রশি ইত্যাদি একত্রিত করছিলাম, আর আমার উটনী দু’টি জনৈক আনসারীর হুজরার পার্শ্বে বসা ছিল। আমি আসবাবপত্র যোগাড় করে এসে দেখি উট দু’টির কুজ কেটে ফেলা হয়েছে এবং কোমরের দিকে পেট কেটে কলিজা বের করে নেয়া হয়েছে। উটনী দু’টির এ দৃশ্য দেখে আমি অশ্রু সম্বরণ করতে পারলাম না। আমি বললা, কে এমনটি করেছে? লোকেরা বলল, ‘হামযা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব এমনটি করেছে। সে এ ঘরে আছে এবং শরাব পানকারী কতিপয় আনসারীর সাথে আছে।’
আমি নবী (ﷺ)- এর নিকট চলে গেলাম। তখন তাঁর নিকট যায়দ ইবনে হারিসা (রাযিঃ) উপস্থিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার চেহারা দেখে আমার মানসিক অবস্থা উপলব্ধি করতে পারলেন। তখন নবী (ﷺ) বললেন, তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আজকের মত দুঃখজনক অবস্থা দেখিনি। হামযা আমার উট দু’টির উপর অত্যাচার করেছে। সে দু’টির কুজ কেটে ফেলেছে এবং পাঁজর ফেড়ে ফেলেছে। আর এখন সে অমুক ঘরে শরাব পানকারী দলের সাথে আছে।’
তখন নবী (ﷺ) তাঁর চাঁদরখানি আনতে আদেশ করলেন এবং চাঁদরখানি জড়ায়ে পাযে হেঁটে চললেন। আমি এবং যায়দ ইবনে হারিসা (রাযিঃ) তাঁর অনুসরণ করলাম। হামযা যে ঘরে ছিল সেখানে পৌঁছে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তারা অনুমতি দিল। তখন তারা শরাব পানে মত্ত ছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হামযাকে তাঁর কাজের জন্য তিরস্কার করতে লাগলেন। হামযা তখন পূর্ণ নেশাগ্রস্থ। তার চক্ষু দু’টি ছিল রক্তলাল।
হামযা তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- এর প্রতি তাকাল। তারপর সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল এবং তাঁর হাঁটু পানে তাকাল। পুনরায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাঁর নাভির প্রতি তাকাল। আবার সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাঁর মুখমণ্ডলের প্রতি তাকাল। এরপর হামযা বলল, তোমরাই তো আমার পিতার গোলাম। এ অবস্থা দেখে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বুঝতে পারলেন, সে এখন পূর্ণ নেশাগ্রস্থ আছে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পেছনে হেঁটে সরে আসলেন। আর আমরাও তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে আসলাম। (এ ছিল মদ হারাম হওয়ার পূর্বেকার ঘটনা)।
باب فَرْضِ الْخُمُسِ
3091 - حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ الحُسَيْنِ، أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيًّا قَالَ: كَانَتْ لِي شَارِفٌ مِنْ نَصِيبِي مِنَ المَغْنَمِ يَوْمَ بَدْرٍ، وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَعْطَانِي شَارِفًا مِنَ الخُمُسِ، فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْتَنِيَ بِفَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَاعَدْتُ رَجُلًا صَوَّاغًا مِنْ بَنِي قَيْنُقَاعَ أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِيَ، فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ أَرَدْتُ أَنْ أَبِيعَهُ الصَّوَّاغِينَ، وَأَسْتَعِينَ بِهِ فِي وَلِيمَةِ عُرْسِي، فَبَيْنَا أَنَا أَجْمَعُ لِشَارِفَيَّ مَتَاعًا مِنَ الأَقْتَابِ، وَالغَرَائِرِ، وَالحِبَالِ، وَشَارِفَايَ مُنَاخَتَانِ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ، رَجَعْتُ حِينَ جَمَعْتُ مَا جَمَعْتُ، فَإِذَا شَارِفَايَ قَدْ اجْتُبَّ أَسْنِمَتُهُمَا، وَبُقِرَتْ خَوَاصِرُهُمَا وَأُخِذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا، فَلَمْ أَمْلِكْ عَيْنَيَّ حِينَ رَأَيْتُ ذَلِكَ المَنْظَرَ مِنْهُمَا، فَقُلْتُ: مَنْ فَعَلَ هَذَا؟ فَقَالُوا: فَعَلَ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ المُطَّلِبِ وَهُوَ فِي هَذَا البَيْتِ فِي شَرْبٍ مِنَ الأَنْصَارِ، فَانْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعِنْدَهُ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ، فَعَرَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي وَجْهِي الَّذِي لَقِيتُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا لَكَ؟» ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا رَأَيْتُ كَاليَوْمِ قَطُّ، عَدَا حَمْزَةُ عَلَى نَاقَتَيَّ، فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا، وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا، وَهَا هُوَ ذَا فِي بَيْتٍ مَعَهُ شَرْبٌ، فَدَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرِدَائِهِ، فَارْتَدَى، ثُمَّ انْطَلَقَ يَمْشِي وَاتَّبَعْتُهُ أَنَا وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ حَتَّى جَاءَ البَيْتَ الَّذِي فِيهِ حَمْزَةُ، فَاسْتَأْذَنَ، فَأَذِنُوا لَهُمْ، فَإِذَا هُمْ شَرْبٌ، «فَطَفِقَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلُومُ حَمْزَةَ فِيمَا فَعَلَ» ، فَإِذَا حَمْزَةُ قَدْ ثَمِلَ، مُحْمَرَّةً عَيْنَاهُ، فَنَظَرَ حَمْزَةُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ، فَنَظَرَ إِلَى رُكْبَتِهِ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ، فَنَظَرَ إِلَى سُرَّتِهِ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ، فَنَظَرَ إِلَى وَجْهِهِ، ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ: هَلْ أَنْتُمْ إِلَّا عَبِيدٌ لِأَبِي؟ فَعَرَفَ [ص:79] رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَدْ ثَمِلَ، فَنَكَصَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى عَقِبَيْهِ القَهْقَرَى، وَخَرَجْنَا مَعَهُ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সহীহ বুখারী - হাদীস নং ২৮৭৩ | মুসলিম বাংলা