কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
৩৪. নিহতের রক্তপণ সংক্রান্ত অধ্যায়
হাদীস নং: ৪৪৪১
আন্তর্জাতিক নং: ৪৫০১ - ৪৫০২
৩. রক্তপণ মাফের ব্যাপারে ইমামের নির্দেশ সম্পর্কে।
৪৪৪১. মুহাম্মাদ ইবনে আওফ (রাহঃ) ...... আলকামা ইবনে ওয়ায়েল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা এক ব্যক্তি একজন হাবশীকে নিয়ে নবী করীম (ﷺ)-এর কাছে আসে এবং বলেঃ এ ব্যক্তি আমার ভাইয়ের ছেলেকে হত্যা করেছে। তখন নবী (ﷺ) তাকে জিজ্ঞাসা করেনঃ তুমি তাকে কিরূপে হত্যা করেছ? সে বলেঃ আমি তার মাথায় কুঠার দিয়ে আঘাত করেছিলাম, কিন্তু এতে আমার হত্যার ইচ্ছা ছিল না। তিনি বলেনঃ তোমার কাছে রক্তপণ দেয়ার মত মাল আছে কি? সে বলেঃ না। তিনি বলেন যদি আমি তোমাকে ছেড়ে দেই তবে কি তুমি লোকদের থেকে চেয়ে রক্তপণের টাকা যোগাড় করতে পারবে? সে বলেঃ না। তিনি আবার তাকে জিজ্ঞাসা করেনঃ তোমার ওয়ারিছরা তোমার পক্ষ হতে দিয়াত পরিশোধ করতে পারবে কি? সে বলেঃ না।
তখন নবী (ﷺ) নিহত ব্যক্তির চাচাকে বলেনঃ তুমি তাকে নিয়ে যাও। সে ব্যক্তি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নিতে চাইলে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ যদি এ ব্যক্তি তাকে হত্যা করে, তবে সেও অনুরূপ গুনাহের অধিকারী হবে। নবী (ﷺ)-এর এ কথা তার নিকট পৌঁছলে সে বলে, এ ব্যাপারে যা খুশী ফায়সালা করুন। তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ তুমি তাকে ছেড়ে দাও। সে নিহত ব্যক্তির ও তার নিজের গুনাহের কারণে দোজখের অধিবাসী হবে। একথা শুনে সে তাকে ছেড়ে দেয়।
আবু উমামা ইবনু সাহল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, যখন তিনি (বিদ্রোহীদের দ্বারা) একটি ঘরে আটক ছিলেন। ঐ ঘরের একটি প্রবেশদ্বার ছিলো। কেউ ঐ প্রবেশদ্বারে প্রবেশ করলে আল-বালাত নামক স্থানে লোকের কথাবার্তা শুনতে পেতো। উসমান (রাঃ) তাতে প্রবেশ করলেন এবং বিবর্ণ অবস্থায় আমাদের নিকট এসে বললেন, তারা এই মাত্র আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আল্লাহই তাদের বিরুদ্ধে আপনার জন্য যথেষ্ট। তিনি প্রশ্ন করলেন, তারা আমাকে হত্যা করবে কেন?
আমি তো রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছিঃ তিনটি অপরাধের কোনো একটি ব্যতীত মুসলিম ব্যক্তির রক্তপাত করা হালাল নয়ঃ (১) ইসলাম গ্রহণের পর পুনরায় কুফরীতে ফিরে যাওয়া, (২) বিবাহিত ব্যক্তির যেনায় লিপ্ত হওয়া এবং (৩) হত্যার অপরাধী না হওয়া সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করলে। আল্লাহর কসম! আমি জাহিলী যুগে এবং ইসলামী যুগেও কখনো যেনা করিনি। আল্লাহ আমাকে হিদায়াত দান করার পর থেকে আমি মোটেই অন্য ধর্ম গ্রহণ পছন্দ করি না এবং আমি কোনো মানুষকে হত্যা করিনি। অতএব তারা কেন আমাকে হত্যা করবে? ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) বলেন, উসমান ও আবু বকর (রাঃ) উভয়ে জাহিলী যুগেই মাদক গ্রহণ পরিত্যাগ করেছেন।
তখন নবী (ﷺ) নিহত ব্যক্তির চাচাকে বলেনঃ তুমি তাকে নিয়ে যাও। সে ব্যক্তি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নিতে চাইলে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ যদি এ ব্যক্তি তাকে হত্যা করে, তবে সেও অনুরূপ গুনাহের অধিকারী হবে। নবী (ﷺ)-এর এ কথা তার নিকট পৌঁছলে সে বলে, এ ব্যাপারে যা খুশী ফায়সালা করুন। তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ তুমি তাকে ছেড়ে দাও। সে নিহত ব্যক্তির ও তার নিজের গুনাহের কারণে দোজখের অধিবাসী হবে। একথা শুনে সে তাকে ছেড়ে দেয়।
আবু উমামা ইবনু সাহল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা উসমান (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, যখন তিনি (বিদ্রোহীদের দ্বারা) একটি ঘরে আটক ছিলেন। ঐ ঘরের একটি প্রবেশদ্বার ছিলো। কেউ ঐ প্রবেশদ্বারে প্রবেশ করলে আল-বালাত নামক স্থানে লোকের কথাবার্তা শুনতে পেতো। উসমান (রাঃ) তাতে প্রবেশ করলেন এবং বিবর্ণ অবস্থায় আমাদের নিকট এসে বললেন, তারা এই মাত্র আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আল্লাহই তাদের বিরুদ্ধে আপনার জন্য যথেষ্ট। তিনি প্রশ্ন করলেন, তারা আমাকে হত্যা করবে কেন?
আমি তো রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছিঃ তিনটি অপরাধের কোনো একটি ব্যতীত মুসলিম ব্যক্তির রক্তপাত করা হালাল নয়ঃ (১) ইসলাম গ্রহণের পর পুনরায় কুফরীতে ফিরে যাওয়া, (২) বিবাহিত ব্যক্তির যেনায় লিপ্ত হওয়া এবং (৩) হত্যার অপরাধী না হওয়া সত্ত্বেও কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করলে। আল্লাহর কসম! আমি জাহিলী যুগে এবং ইসলামী যুগেও কখনো যেনা করিনি। আল্লাহ আমাকে হিদায়াত দান করার পর থেকে আমি মোটেই অন্য ধর্ম গ্রহণ পছন্দ করি না এবং আমি কোনো মানুষকে হত্যা করিনি। অতএব তারা কেন আমাকে হত্যা করবে? ইমাম আবু দাউদ (রহঃ) বলেন, উসমান ও আবু বকর (রাঃ) উভয়ে জাহিলী যুগেই মাদক গ্রহণ পরিত্যাগ করেছেন।
باب الإِمَامِ يَأْمُرُ بِالْعَفْوِ فِي الدَّمِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَوْفٍ الطَّائِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْقُدُّوسِ بْنُ الْحَجَّاجِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ عَطَاءٍ الْوَاسِطِيُّ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِحَبَشِيٍّ فَقَالَ إِنَّ هَذَا قَتَلَ ابْنَ أَخِي . قَالَ " كَيْفَ قَتَلْتَهُ " . قَالَ ضَرَبْتُ رَأْسَهُ بِالْفَأْسِ وَلَمْ أُرِدْ قَتْلَهُ . قَالَ " هَلْ لَكَ مَالٌ تُؤَدِّي دِيَتَهُ " . قَالَ لاَ . قَالَ " أَفَرَأَيْتَ إِنْ أَرْسَلْتُكَ تَسْأَلُ النَّاسَ تَجْمَعُ دِيَتَهُ " . قَالَ لاَ . قَالَ " فَمَوَالِيكَ يُعْطُونَكَ دِيَتَهُ " . قَالَ لاَ . قَالَ لِلرَّجُلِ " خُذْهُ " . فَخَرَجَ بِهِ لِيَقْتُلَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَمَا إِنَّهُ إِنْ قَتَلَهُ كَانَ مِثْلَهُ " . فَبَلَغَ بِهِ الرَّجُلُ حَيْثُ يَسْمَعُ قَوْلَهُ فَقَالَ هُوَ ذَا فَمُرْ فِيهِ مَا شِئْتَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَرْسِلْهُ - وَقَالَ مَرَّةً دَعْهُ - يَبُوءُ بِإِثْمِ صَاحِبِهِ وَإِثْمِهِ فَيَكُونَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ " . قَالَ فَأَرْسَلَهُ .
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ عُثْمَانَ وَهُوَ مَحْصُورٌ فِي الدَّارِ وَكَانَ فِي الدَّارِ مَدْخَلٌ مَنْ دَخَلَهُ سَمِعَ كَلاَمَ مَنْ عَلَى الْبَلاَطِ فَدَخَلَهُ عُثْمَانُ فَخَرَجَ إِلَيْنَا وَهُوَ مُتَغَيِّرٌ لَوْنُهُ فَقَالَ إِنَّهُمْ لَيَتَوَاعَدُونَنِي بِالْقَتْلِ آنِفًا . قُلْنَا يَكْفِيكَهُمُ اللَّهُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ . قَالَ وَلِمَ يَقْتُلُونَنِي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلاَّ بِإِحْدَى ثَلاَثٍ كُفْرٌ بَعْدَ إِسْلاَمٍ أَوْ زِنًا بَعْدَ إِحْصَانٍ أَوْ قَتْلُ نَفْسٍ بِغَيْرِ نَفْسٍ " . فَوَاللَّهِ مَا زَنَيْتُ فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلاَ إِسْلاَمٍ قَطُّ وَلاَ أَحْبَبْتُ أَنَّ لِي بِدِينِي بَدَلاً مُنْذُ هَدَانِي اللَّهُ وَلاَ قَتَلْتُ نَفْسًا فَبِمَ يَقْتُلُونَنِي قَالَ أَبُو دَاوُدَ عُثْمَانُ وَأَبُو بَكْرٍ رضى الله عنهما تَرَكَا الْخَمْرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ .
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ عُثْمَانَ وَهُوَ مَحْصُورٌ فِي الدَّارِ وَكَانَ فِي الدَّارِ مَدْخَلٌ مَنْ دَخَلَهُ سَمِعَ كَلاَمَ مَنْ عَلَى الْبَلاَطِ فَدَخَلَهُ عُثْمَانُ فَخَرَجَ إِلَيْنَا وَهُوَ مُتَغَيِّرٌ لَوْنُهُ فَقَالَ إِنَّهُمْ لَيَتَوَاعَدُونَنِي بِالْقَتْلِ آنِفًا . قُلْنَا يَكْفِيكَهُمُ اللَّهُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ . قَالَ وَلِمَ يَقْتُلُونَنِي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " لاَ يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلاَّ بِإِحْدَى ثَلاَثٍ كُفْرٌ بَعْدَ إِسْلاَمٍ أَوْ زِنًا بَعْدَ إِحْصَانٍ أَوْ قَتْلُ نَفْسٍ بِغَيْرِ نَفْسٍ " . فَوَاللَّهِ مَا زَنَيْتُ فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلاَ إِسْلاَمٍ قَطُّ وَلاَ أَحْبَبْتُ أَنَّ لِي بِدِينِي بَدَلاً مُنْذُ هَدَانِي اللَّهُ وَلاَ قَتَلْتُ نَفْسًا فَبِمَ يَقْتُلُونَنِي قَالَ أَبُو دَاوُدَ عُثْمَانُ وَأَبُو بَكْرٍ رضى الله عنهما تَرَكَا الْخَمْرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ .


বর্ণনাকারী: