মা'আরিফুল হাদীস
কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৫
কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়
কুরআন মজীদের মাহাত্ম্য ও ফযীলত
৩৫. হযরত আলী মুরতাযা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছিঃ সাবধান, একটি মহা বিপর্যয় আসন্ন। আমি জিজ্ঞেস করলাম: তা থেকে বাঁচবার কী ব্যবস্থা রয়েছে ইয়া রাসূলাল্লাহ?
জবাবে তিনি বললেন; কিতাবুল্লাহ্, তাতে রয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহের (শিক্ষাপ্রদ ঘটনাবলীর) সংবাদ এবং তোমাদের পরবর্তীদের হাল-হাকীকত, (অর্থাৎ আমল ও আখলাকের যে সব পার্থিব এবং পারলৌকিক পরিণতি দেখা দিবে, কুরআন মজীদে সে সব সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে) তোমাদের মধ্যকার সমস্য সমূহ সম্পর্কে কুরআন মজীদে সিদ্ধান্ত ও বিধান রয়েছে, (হক-বাতিল ও ভুল-শুদ্ধ সম্পর্কে) তা হচ্ছে চূড়ান্ত ফয়সালা স্বরূপ, বেহুদা বাক্যলাপ নয়। যে কেউ গোঁয়ার্তুমী করে তা থেকে ঘাড় ফিরিয়ে নেবে আল্লাহ তার ঘাড় মটকাবেন। আর যে ব্যক্তি এর বাইরে হিদায়াত অন্বেষণ করবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্যে আসবে কেবল গুমরাহী। (অর্থাৎ সে হকের হিদায়াত থেকে অবশ্যই বঞ্চিত থাকবে)। কুরআনই হচ্ছে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ রক্ষার মযবুত বন্ধন বা মাধ্যম আর তা হচ্ছে সুদৃঢ় হিদায়াত এবং এটাই সিরাতুল মুস্তাকীম বা সহজ-সরল পথ। এটাই হচ্ছে সেই স্পষ্ট সত্য, যার অনুসরণে প্রবৃত্তিসমূহ বক্র পথ অবলম্বন করতে পারে না এবং রসনা সমূহ তাকে বিকৃত করতে পারে না। (অর্থাৎ যেভাবে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব সমূহে রসনার পথে গুমরাহীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং বিকৃতিকারীরা নিজেদের ইচ্ছা মত একটির স্থলে অন্যটি পড়ে পড়ে সে সব কিতাবে বিকৃতি সাধন করেছে, এই কুরআনে তারা সেভাবে তা করে বিকৃতি সাধন করতে পারবে না। আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামত পর্যন্ত তার সুসংরক্ষণের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।) জ্ঞানীরা কখনো তার দ্বারা পূর্ণ পরিতৃপ্ত হবেন না। (মানে যতই তারা এ নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করবেন ততই জ্ঞানের নিকট নতুন নতুন রহস্য উম্মোচিত হতে থাকবে এবং কখনো কুরআন চর্চাকারী এটা মনে করবেন না যে, এর জ্ঞান-বিজ্ঞানের সবটুকুই তাঁর আয়ত্তে এসে গেছে আর কিছু জানবার বা বুঝবার মত বাকী নেই; বরং যতই তাঁরা এ নিয়ে গবেষণা করবেন ততই তাঁরা অনুভব করবেন যে, এ পর্যন্ত কুরআনের জ্ঞান-বিজ্ঞানের যতটুকু আমরা হাসিল করেছি তার চাইতে অনেকগুণ বেশি আমাদের অজ্ঞাত রয়ে গেছে) বার বার পূনরাবৃত্তির দরুন তা কখনো পুরনো হয়ে যাবে না (অর্থাৎ যে ভাবে পৃথিবীর অন্য দশটি বই একবার পড়ে নিলেই বার বার পড়তে আর মন চায় না, বিরক্তিকর ঠেকে; কুরআন শরীফের ব্যাপারে তা ঘটবে না তা যতবেশি তিলাওয়াত করা হবে আর যত বেশি তাতে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করা হবে, ততই উপভোগ্য ও আনন্দদায়ক মনে হবে।) আর এর চমৎকারিত্ব ও বিস্ময় কখনো শেষ হবার নয়। কুরআন শরীফের শান হচ্ছে এই যে, যখন জিনেরা তা শুনলো তখন তারা বলে উঠলোঃ
إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ
আমরা কুরআন শ্রবণ করেছি যা বিস্ময়কর, পথ প্রদর্শন করে কল্যাণের দিকে। তাই আমরা এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি।
যে ব্যক্তি কুরআন অনুযায়ী কথা বলবে, সে যথার্থ ও হক কথা বলবে আর যে ব্যক্তি সে অনুসারে আমল করবে, সে তার বিনিময় বা পুরস্কার লাভ করবে। যে ব্যক্তি কুরআন অনুসারে ফয়সালা করবে সে ইনসাফ করবে এবং যে ব্যক্তি কুরআনের দিকে আহবান জানাবে, সে সিরাতুল মুস্তাকীম বা সহজ-সরল পথে পরিচালিত হবে। (জামে, তিরমিযী ও সুনানে দারেমী)
জবাবে তিনি বললেন; কিতাবুল্লাহ্, তাতে রয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহের (শিক্ষাপ্রদ ঘটনাবলীর) সংবাদ এবং তোমাদের পরবর্তীদের হাল-হাকীকত, (অর্থাৎ আমল ও আখলাকের যে সব পার্থিব এবং পারলৌকিক পরিণতি দেখা দিবে, কুরআন মজীদে সে সব সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়েছে) তোমাদের মধ্যকার সমস্য সমূহ সম্পর্কে কুরআন মজীদে সিদ্ধান্ত ও বিধান রয়েছে, (হক-বাতিল ও ভুল-শুদ্ধ সম্পর্কে) তা হচ্ছে চূড়ান্ত ফয়সালা স্বরূপ, বেহুদা বাক্যলাপ নয়। যে কেউ গোঁয়ার্তুমী করে তা থেকে ঘাড় ফিরিয়ে নেবে আল্লাহ তার ঘাড় মটকাবেন। আর যে ব্যক্তি এর বাইরে হিদায়াত অন্বেষণ করবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্যে আসবে কেবল গুমরাহী। (অর্থাৎ সে হকের হিদায়াত থেকে অবশ্যই বঞ্চিত থাকবে)। কুরআনই হচ্ছে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ রক্ষার মযবুত বন্ধন বা মাধ্যম আর তা হচ্ছে সুদৃঢ় হিদায়াত এবং এটাই সিরাতুল মুস্তাকীম বা সহজ-সরল পথ। এটাই হচ্ছে সেই স্পষ্ট সত্য, যার অনুসরণে প্রবৃত্তিসমূহ বক্র পথ অবলম্বন করতে পারে না এবং রসনা সমূহ তাকে বিকৃত করতে পারে না। (অর্থাৎ যেভাবে পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব সমূহে রসনার পথে গুমরাহীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে এবং বিকৃতিকারীরা নিজেদের ইচ্ছা মত একটির স্থলে অন্যটি পড়ে পড়ে সে সব কিতাবে বিকৃতি সাধন করেছে, এই কুরআনে তারা সেভাবে তা করে বিকৃতি সাধন করতে পারবে না। আল্লাহ্ তা'আলা কিয়ামত পর্যন্ত তার সুসংরক্ষণের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।) জ্ঞানীরা কখনো তার দ্বারা পূর্ণ পরিতৃপ্ত হবেন না। (মানে যতই তারা এ নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করবেন ততই জ্ঞানের নিকট নতুন নতুন রহস্য উম্মোচিত হতে থাকবে এবং কখনো কুরআন চর্চাকারী এটা মনে করবেন না যে, এর জ্ঞান-বিজ্ঞানের সবটুকুই তাঁর আয়ত্তে এসে গেছে আর কিছু জানবার বা বুঝবার মত বাকী নেই; বরং যতই তাঁরা এ নিয়ে গবেষণা করবেন ততই তাঁরা অনুভব করবেন যে, এ পর্যন্ত কুরআনের জ্ঞান-বিজ্ঞানের যতটুকু আমরা হাসিল করেছি তার চাইতে অনেকগুণ বেশি আমাদের অজ্ঞাত রয়ে গেছে) বার বার পূনরাবৃত্তির দরুন তা কখনো পুরনো হয়ে যাবে না (অর্থাৎ যে ভাবে পৃথিবীর অন্য দশটি বই একবার পড়ে নিলেই বার বার পড়তে আর মন চায় না, বিরক্তিকর ঠেকে; কুরআন শরীফের ব্যাপারে তা ঘটবে না তা যতবেশি তিলাওয়াত করা হবে আর যত বেশি তাতে চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করা হবে, ততই উপভোগ্য ও আনন্দদায়ক মনে হবে।) আর এর চমৎকারিত্ব ও বিস্ময় কখনো শেষ হবার নয়। কুরআন শরীফের শান হচ্ছে এই যে, যখন জিনেরা তা শুনলো তখন তারা বলে উঠলোঃ
إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ
আমরা কুরআন শ্রবণ করেছি যা বিস্ময়কর, পথ প্রদর্শন করে কল্যাণের দিকে। তাই আমরা এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি।
যে ব্যক্তি কুরআন অনুযায়ী কথা বলবে, সে যথার্থ ও হক কথা বলবে আর যে ব্যক্তি সে অনুসারে আমল করবে, সে তার বিনিময় বা পুরস্কার লাভ করবে। যে ব্যক্তি কুরআন অনুসারে ফয়সালা করবে সে ইনসাফ করবে এবং যে ব্যক্তি কুরআনের দিকে আহবান জানাবে, সে সিরাতুল মুস্তাকীম বা সহজ-সরল পথে পরিচালিত হবে। (জামে, তিরমিযী ও সুনানে দারেমী)
کتاب الاذکار والدعوات
عَنْ عَلِيٍّ قَالَ: إِنِّي قَدْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّهَا سَتَكُونُ فِتْنَةٌ. قُلْتُ: مَا الْمَخْرَجُ مِنْهَا يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: كِتَابُ اللهِ فِيهِ نَبَأُ مَا قَبْلَكُمْ وَخَبَرُ مَا بَعْدَكُمْ، وَحُكْمُ مَا بَيْنَكُمْ، وَهُوَ الفَصْلُ لَيْسَ بِالهَزْلِ، مَنْ تَرَكَهُ مِنْ جَبَّارٍ قَصَمَهُ اللَّهُ، وَمَنْ ابْتَغَى الهُدَى فِي غَيْرِهِ أَضَلَّهُ اللَّهُ، وَهُوَ حَبْلُ اللهِ الْمَتِينُ، وَهُوَ الذِّكْرُ الحَكِيمُ، وَهُوَ الصِّرَاطُ الْمُسْتَقِيمُ، هُوَ الَّذِي لاَ تَزِيغُ بِهِ الأَهْوَاءُ، وَلاَ تَلْتَبِسُ بِهِ الأَلْسِنَةُ، وَلاَ يَشْبَعُ مِنْهُ العُلَمَاءُ، وَلاَ يَخْلَقُ عَلَى كَثْرَةِ الرَّدِّ، وَلاَ تَنْقَضِي عَجَائِبُهُ، هُوَ الَّذِي لَمْ تَنْتَهِ الجِنُّ إِذْ سَمِعَتْهُ حَتَّى قَالُوا: {إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ} مَنْ قَالَ بِهِ صَدَقَ، وَمَنْ عَمِلَ بِهِ أُجِرَ، وَمَنْ حَكَمَ بِهِ عَدَلَ، وَمَنْ دَعَا إِلَيْهِ هَدَى إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ. (رواه الترمذى والدارمى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীসখানা কুরআনুল করীমের মাহাত্ম্য ও ফযীলত বর্ণনায় নিঃসন্দেহে অত্যন্ত ব্যাপক হাদীস। এতে ব্যাখ্যা সাপেক্ষ বাক্যগুলোর ব্যাখ্যা অনুবাদের সাথে করে দেয়া হয়েছে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)