মা'আরিফুল হাদীস

কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়

হাদীস নং: ১৭
কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়
যিকিরের কালেমাসমূহ: সেগুলোর বরকত-ফযীলত
১৭. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী বলবে, তার গুনাহরাশি মোচন করে দেয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনারাশির মত অধিকও হয়ে থাকে। -(সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)
کتاب الاذکار والدعوات
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ قَالَ: سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ، فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ، حُطَّتْ خَطَايَاهُ، وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ البَحْرِ " (رواه البخارى ومسلم)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সুবহানাল্লাহি ও বিহামদিহী এর অর্থ পূর্বোল্লেখিত সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহ এর অর্থ একই। অর্থাৎ এমন সকল ব্যাপার থেকে আল্লাহ তা'আলার পবিত্রতা ঘোষণা করা হয়েছে, যা তাঁর মাহাত্ম্য ও পবিত্রতার পরিপন্থী এবং যাতে সামান্যতম ত্রুটিবিচ্যুতি বা দোষণীয় কিছু থাকতে পারে। সাথে সাথে এতে সমস্ত কামালিয়াত বা পূর্ণতা, মাহাত্ম্য ও কৃতিত্ব তাঁর প্রতি আরোপ করা হয়েছে এবং তাঁর স্তবস্তুতি করা হয়েছে। এ হিসাবে এ সংক্ষিপ্ত কালিমা “সুবহানাল্লাহি ও বিহামদিহী" আল্লাহ তা'আলার প্রশংসায় কথিত সমস্ত ইতিবাচক ও নেতিবাচক উক্তির অর্থ নিজের মধ্যে ধারণ করে। পূর্ববর্তী হাদীসের মত এ হাদীসেও এ সংক্ষিপ্ত দু'টি শব্দ সম্বলিত কালিমার শুভ প্রভাবের কথা বর্ণিত হয়েছে যে, যে বান্দা এ কালিমাটি দৈনিক ১০০ বার পাঠ করবে, তার সমস্ত পাপরাশি মোচন হবে এবং পাপের পঙ্কিলতা থেকে সে ব্যক্তি মুক্ত হয়ে যাবে, যদি তার গুনাহরাশি সমুদ্রের ফেনারাশির মত প্রচুর এবং অগণিতও হয়ে থাকে। প্রখর আলো যেভাবে তিমির রাশিকে বিনাশ করে বা প্রচণ্ড উত্তাপ যেভাবে আর্দ্রতাকে তিরোহিত করে দেয়, ঠিক তেমনি আল্লাহর যিকির ও অন্যান্য পুণ্যকর্ম গুনাহরাশির কুপ্রভাবকে তিরোহিত করে দেয়। কিন্তু কুরআন মজীদের কোন কোন আয়াত এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কোন কোন হাদীসের দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, নেকীর প্রভাব ও বরকতে কেবল সে সব গুনাহই মাফ হয়ে থাকে, যেগুলো 'কবীরা' পর্যায়ের নয়। এজন্যে বড় বড় মারাত্মক গুনাহ যেগুলোকে বিশেষ পরিভাষায় 'গুনাহে কবীরা' বলা হয়ে থাকে, সেগুলো থেকে নিষ্কৃতির জন্যে তাওবা-ইস্তেগফার অপরিহার্য। মা'আরিফুল হাদীসের অন্য কয়েক স্থানেও ইতিপূর্বে তা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহর সর্বজ্ঞ।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান