মা'আরিফুল হাদীস

যাকাত অধ্যায়

হাদীস নং: ১৯
যাকাত অধ্যায়
যাকাত-সদাকার হকদার কারা
১৯. হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে যখন কোন খাদ্য-সামগ্রী নিয়ে আসা হত, তখন তিনি জিজ্ঞাসা করতেন যে, এটা কি হাদিয়া, না সদাকা? যদি বলা হত যে, এটা সদাকা, তাহলে তিনি সাথীদেরকে (অর্থাৎ, ঐসব সাথীদেরকে যাদের জন্য সদাকা জায়েয, যেমন, আসহাবে সুফফা,) বলতেন যে, তোমরা খেয়ে নাও এবং তিনি নিজে এখান থেকে খেতেন না। আর যদি বলা হত যে, এটা হাদিয়া, তাহলে তিনি নিজেও এর দিকে হাত বাড়াতেন এবং তাদের সাথে খেয়ে নিতেন।-বুখারী, মুসলিম
کتاب الزکوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أُتِيَ بِطَعَامٍ سَأَلَ عَنْهُ : « أَهَدِيَّةٌ أَمْ صَدَقَةٌ؟ » ، فَإِنْ قِيلَ صَدَقَةٌ ، قَالَ لِأَصْحَابِهِ : « كُلُوا » ، وَلَمْ يَأْكُلْ ، وَإِنْ قِيلَ هَدِيَّةٌ ، ضَرَبَ بِيَدِهِ ، فَأَكَلَ مَعَهُمْ.
(رواه البخارى ومسلم)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

কোন ব্যক্তিকে গরীব ও অভাবী মনে করে তার সাহায্য-সহযোগিতা হিসাবে সওয়াবের নিয়্যতে যাকিছু দান করা হয়, এটাকে শরী‘আতের পরিভাষায় সদাকা বলা হয়। চাই এটা ফরয-ওয়াজিব হোক- যেমন, যাকাত অথবা ফিতরা কিংবা নফল হোক- যাকে সাধারণত আমরা সাহায্য ও খয়রাত বলে থাকি। তবে হাদিয়া বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্নরকম। ভক্তি ভালবাসা ও সম্পর্কের কারণে নিজের কোন শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় ব্যক্তির সামনে কোন কিছু পেশ করাকে হাদিয়া বলে।

সদাকাদাতার অবস্থান উপরে থাকে, আর গ্রহীতার নীচে। এ জন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোন প্রকার সদাকা গ্রহণ করতেন না। আর হাদিয়াদাতা যেহেতু এর মাধ্যমে ভক্তি-শ্রদ্ধা, সম্পর্ক ও ভালবাসার প্রকাশ ঘটায় এবং এটাকে নিজের আনন্দ ও সৌভাগ্যের বিষয় মনে করে, এ জন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এটা খুশী মনে গ্রহণ করতেন। হাদিয়া দাতাকে দু‘আ দিতেন এবং অনেক সময় নিজের পক্ষ থেকে তাকে হাদিয়া দিয়ে এর বদলা দিতেন। কিন্তু কেউ যদি সদাকা হিসাবে কিছু নিয়ে আসত, তাহলে তিনি এটা এর হকদারদের মধ্যে বন্টন করে দিতেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান