মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ২২৬
সলাত অধ্যায়
বিশেষ সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট নফল সালাতসমূহ
ফজরের আগে কিংবা পরে নফলসমূহ এবং এমনিভাবে তাহাজ্জুদ, ইশরাক ও চাশতের সালাত-এসবের জন্য সময় নির্দিষ্ট রয়েছে। কিন্তু কিছু নফল সালাত এমন রয়েছে যা নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় বরং বিশেষ অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত। যেমন তাহিয়্যাতুল উযূ অথবা তাহিয়্যাতুল মসজিদ, এমনিভাবে হাজতের সালাত, তাওবার সালাত, ইস্তিখারার সালাত ইত্যাদি। স্পষ্টতই এসব সালাত কোন নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত নয়, বরং সময় ও অবস্থার দাবির প্রক্ষিতে এসকল সালাত আদায় করা হয়। এসবের মধ্যে তাহিয়্যাতুল উযূর সম্পর্কীয় হাদীস উযূর বর্ণনায় পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। এমনিভাবে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ এর সাথে সম্পৃক্ত হাদীসমূহ ও 'মসজিদের গুরুত্ব ও ফযীলত' শিরোনামের আওতায় বর্ণনা করা হয়েছে। অবশিষ্ট নফল সালাতসমূহের সাথে সম্পৃক্ত হাদীসমূহ পাঠ করা যেতে পারে।
সালাতুল ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনার সালাত)
ফজরের আগে কিংবা পরে নফলসমূহ এবং এমনিভাবে তাহাজ্জুদ, ইশরাক ও চাশতের সালাত-এসবের জন্য সময় নির্দিষ্ট রয়েছে। কিন্তু কিছু নফল সালাত এমন রয়েছে যা নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় বরং বিশেষ অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত। যেমন তাহিয়্যাতুল উযূ অথবা তাহিয়্যাতুল মসজিদ, এমনিভাবে হাজতের সালাত, তাওবার সালাত, ইস্তিখারার সালাত ইত্যাদি। স্পষ্টতই এসব সালাত কোন নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত নয়, বরং সময় ও অবস্থার দাবির প্রক্ষিতে এসকল সালাত আদায় করা হয়। এসবের মধ্যে তাহিয়্যাতুল উযূর সম্পর্কীয় হাদীস উযূর বর্ণনায় পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। এমনিভাবে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ এর সাথে সম্পৃক্ত হাদীসমূহ ও 'মসজিদের গুরুত্ব ও ফযীলত' শিরোনামের আওতায় বর্ণনা করা হয়েছে। অবশিষ্ট নফল সালাতসমূহের সাথে সম্পৃক্ত হাদীসমূহ পাঠ করা যেতে পারে।
সালাতুল ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনার সালাত)
২২৬. হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবু বকর (রা) আমাকে বলেছেন এবং তিনি সত্য বলেছেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজ করবে, তারপর পবিত্রতা অর্জন করে কিছু সালাত আদায় করবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। তারপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন- وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনওভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। (৩, সূরা আল ইমরান: ১৩৫)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عَلِيٍّ قَالَ : حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ وَصَدَقَ أَبُو بَكْرٍ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : « مَا مِنْ رَجُلٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا ثُمَّ يَقُومُ فَيَتَطَهَّرُ ، ثُمَّ يُصَلِّي ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللَّهَ إِلَّا غَفَرَ لَهُ » ، ثُمَّ قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ {وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ } (رواه الترمذى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
গুনাহ ক্ষমা করার বিষয় সম্বলিত যে আয়াত রাসূলুল্লাহ ﷺ পাঠ করেছেন তা সূরা আলে ইমরানের অন্তর্ভুক্ত। এ আয়াতে আল্লাহর ঐ সকল বান্দার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে যাদের জন্য বিশেষভাবে জান্নাত তৈরি করে রাখা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে:
وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا اللَّهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلَى مَا فَعَلُوا وَهُمْ يَعْلَمُونَ (135) أُولَئِكَ جَزَاؤُهُمْ مَغْفِرَةٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَجَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَنِعْمَ أَجْرُ الْعَامِلِينَ
"এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনওভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে আর আল্লাহ ছাড়া আর কেইবা আছে, যে গুনাহ ক্ষমা করতে পারে? আর তারা জেনেশুনে তাদের কৃতকর্মে অবিচল থাকে না। এরাই সেই লোক, যাদের পুরস্কার হচ্ছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে মাগফিরাত এবং সেই উদ্যানসমূহ, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত, যাতে তারা স্থায়ী জীবন লাভ করবে। তা কতই না উৎকৃষ্ট প্রতিদান, যা কর্ম সম্পাদনকারীগণ লাভ করবে।" (৩, সূরা আলে ইমরান: ১৩৫-১৩৬০)
যে সকল লোক পাপ কাজকে অভ্যাসে বা পেশায় পরিণত করে না আলোচ্য হাদীসে সে সকল গুনাহগারদেরকে ক্ষমা ও জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। বরং তাদের অবস্থা এই যে, যখন তাদের দ্বারা কবীরা কিংবা সগীরাগুনাহ সংঘটিত হয় তখন ভীষণভাবে লজ্জিত হয়ে পড়ে এবং আল্লাহর অভিমুখী হয়ে গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। রাসূলুল্লাহ ﷺ আলোচ্য হাদীসে এও বলেছেন যে, আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করার সর্বোত্তম পদ্ধতি হল এই, উযূ করে প্রথমে দুই রাক'আত সালাত আদায় করে নিজ গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। কাজেই কেউ যদি এরূপ করে আল্লাহ্ তার পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন।
وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا اللَّهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلَى مَا فَعَلُوا وَهُمْ يَعْلَمُونَ (135) أُولَئِكَ جَزَاؤُهُمْ مَغْفِرَةٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَجَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَنِعْمَ أَجْرُ الْعَامِلِينَ
"এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনওভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে আর আল্লাহ ছাড়া আর কেইবা আছে, যে গুনাহ ক্ষমা করতে পারে? আর তারা জেনেশুনে তাদের কৃতকর্মে অবিচল থাকে না। এরাই সেই লোক, যাদের পুরস্কার হচ্ছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে মাগফিরাত এবং সেই উদ্যানসমূহ, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত, যাতে তারা স্থায়ী জীবন লাভ করবে। তা কতই না উৎকৃষ্ট প্রতিদান, যা কর্ম সম্পাদনকারীগণ লাভ করবে।" (৩, সূরা আলে ইমরান: ১৩৫-১৩৬০)
যে সকল লোক পাপ কাজকে অভ্যাসে বা পেশায় পরিণত করে না আলোচ্য হাদীসে সে সকল গুনাহগারদেরকে ক্ষমা ও জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। বরং তাদের অবস্থা এই যে, যখন তাদের দ্বারা কবীরা কিংবা সগীরাগুনাহ সংঘটিত হয় তখন ভীষণভাবে লজ্জিত হয়ে পড়ে এবং আল্লাহর অভিমুখী হয়ে গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। রাসূলুল্লাহ ﷺ আলোচ্য হাদীসে এও বলেছেন যে, আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করার সর্বোত্তম পদ্ধতি হল এই, উযূ করে প্রথমে দুই রাক'আত সালাত আদায় করে নিজ গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। কাজেই কেউ যদি এরূপ করে আল্লাহ্ তার পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)