মা'আরিফুল হাদীস

পবিত্রতা অধ্যায়

হাদীস নং: ৩১
পবিত্রতা অধ্যায়
সালাতের গুরুত্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিস্ওয়াকের প্রভাব
৩১. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যে সালাতের জন্য মিস্ওয়াক করা হয় তার মর্যাদা মিস্ওয়াকহীন সালাতের চেয়ে সত্তরগুণ বেশী। (বায়হাকীর শু'আবুল ইমান)
کتاب الطہارت
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " تَفْضُلُ الصَّلَاةُ الَّتِي يُسْتَاكُ لَهَا عَلَى الصَّلَاةِ الَّتِي لَا يُسْتَاكُ لَهَا سَبْعِينَ ضِعْفًا " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

একথা বহুবার বলা হয়েছে যে, আরবী ভাষায় সত্তর এর ব্যবহার দ্বারা নির্দিষ্ট সংখ্যা বুঝানো হয় না। বরং আধিক্য বুঝানো হয় সম্ভবত আলোচ্য হাদীসেও সত্তর সংখ্যাটি আধিক্য অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ব্যাখ্যার আলোকে হাদীসের মর্ম হবে এই যে, যে সালাতের জন্য মিস্ওয়াক করা হয় তার মর্যাদা মিস্ওয়াকবিহীন সালাতের চেয়ে অনেক বেশি। আর 'সাবয়ীন' দ্বারা যদি সত্তর-ই উদ্দেশ্য হয় তাতেও কোন ক্ষতি নেই।

যখন কোন লোক আহকামুল হাকিমীন মহান আল্লাহর দরবারে সালাত সমাপনান্তে দু'আও মুনাজাতের ইচ্ছা করে তখন তার অন্তরের গভীর প্রকোষ্ঠে এ চেতনা জাগ্রত হওয়াই স্বাভাবিক যে, মিশক ও গোলাপ মেখে জিহ্বা ও মননকে পরিচ্ছন্ন করে দু'আ করে। কিন্তু আল্লাহ্ কেবল মিস্ওয়াক করাকেই যথেষ্ট সাব্যস্ত করেছেন এবং তারই নির্দেশ দিয়েছেন। মোটকথা, কোন লোক যদি এ চেতনার আলোকে সালাতের জন্য মিস্ওয়াক করে, তবে মিস্ওয়াক বিহীন সালাতের চেয়ে সত্তর কিংবা ততোধিক গুণ সাওয়াব বেশী হওয়াই স্বাভাবিক, তবে বস্তুতঃপক্ষে-
هزار بار بشویم دهن زمشک و گلاب
ہنوز نام تو گفتن کمال بے ادبی است
"মিশুক ও গোলাপ দিয়ে মুখ ধুয়ে নেই হাযার বার
তব নাম মুখে নেওয়া তবুও ত হায় বে-আদাবী সার।"
জ্ঞাতব্যঃ হযরত আয়েশা (রা) থেকে মিশকাত শরীফে কেবল ইমাম বায়হাকীর বর্ণনায় আলোচ্য হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু আল্লামা মুনযিরী (র) তাঁর "আত্ তারগীর ওয়াত তারহীব" গ্রন্থে আয়েশা (রা) শাব্দিক পরিবর্তনসহ হাদীসসমূহ প্রসঙ্গে বলেন "আহমদ, বাযযার, আবূ ই'আলা ও ইবনে খুযায়মা তাঁর সহীহ্ গ্রন্থে এবং হাকিম তাঁর মুস্তাদরাকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাকীম বলেছেন: হাদীসটির সনদ বিশুদ্ধ। প্রায় কাছাকাছি অর্থের একই বিষয়ের আরেকটি হাদীস আবু নু'আয়ম (র) আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে এবং অন্য সূত্রে জাবির (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন। প্রথম সনদটি উত্তম এবং দ্বিতীয়টি বিশুদ্ধ।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান