মা'আরিফুল হাদীস
আখলাক অধ্যায়
হাদীস নং: ১৮৯
আখলাক অধ্যায়
গীবতকারীর পরকালীন অবস্থা
১৮৯. হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: যখন আমার মিরাজ হয়েছিল, তখন আমি কতিপয় লোকের নিকট দিয়ে গিয়েছিলাম যাদের নখ ছিল তামার এবং তারা তা দিয়ে নিজেদের চেহারা এবং বুক খামচিয়ে যখম করছিল। আমি বললাম, হে জিবরাঈল! এ লোকগুলো কারা? তিনি বললেনঃ তারা মানুষের গোশত খেত এবং তাদের ইযযতের উপর হামলা করত। (আবূ দাউদ)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " لَمَّا عُرِجَ بِي مَرَرْتُ بِقَوْمٍ لَهُمْ أَظْفَارٌ مِنْ نُحَاسٍ يَخْمُشُونَ وُجُوهَهُمْ وَصُدُورَهُمْ ، فَقُلْتُ : مَنْ هَؤُلَاءِ يَا جِبْرِيلُ ، قَالَ هَؤُلَاءِ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ لُحُومَ النَّاسِ ، وَيَقَعُونَ فِي أَعْرَاضِهِمْ " (رواه ابو داؤد)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
মিরাজের সময় নবী করীম ﷺ আলমে বরযখের মধ্যে গীবতকারীদের অবস্থা দেখেছিলেন। যারা দুনিয়ার যিন্দেগীতে মানুষের আবরু ও ইযযতের উপর হামলা করে, অসাক্ষাতে অন্য মানুষের সম্মান বিনষ্ট করে, তাদের জন্য আল্লাহ আখিরাতের যিন্দেগীতে ভয়ানক আযাব নির্ধারিত করে রেখেছেন। মানুষের ইযযতের উপর হামলা করা মানুষের শরীরের গোশত খাওয়ার সমতুল্য। অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনের চেয়ে সম্মানের অবমাননা বেশি পীড়াদায়ক। ঔষধের দ্বারা মানুষের শারীরিক যখম আরোগ্য করা যায়, কিন্তু মানুষের মনের উপর যে ক্ষতের সৃষ্টি করা হয় তা সহজে চিকিৎসা করা যায় না। মানুষের মন ও ইযযতের উপর হামলাকারীগণ মৃত্যুর পর আলমে বরযখে নিজেদের চেহারা এবং বুক তামার নখের দ্বারা আঁচড়াতে থাকবে। দুনিয়ার যিন্দেগীতে কথার তলোয়ার দ্বারা তারা যেরূপ অন্যের চেহারা ক্ষত-বিক্ষত করেছিল, আখিরাতের যিন্দেগীতে তাদেরকে নিজেদের চেহারা নিজেরাই ক্ষত-বিক্ষত করতে বাধ্য করা হবে। দুনিয়ার যিন্দেগীতে তারা ইযযতের উপর হামলা চালিয়ে যেরূপ মানুষের বুকের উপর ক্ষত সৃষ্টি করত, সেরূপ ক্ষত নিজেদের বুকের উপর সৃষ্টি করার জন্য তাদেরকে হুকুম করা হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)