মা'আরিফুল হাদীস
আখলাক অধ্যায়
হাদীস নং: ১৭২
আখলাক অধ্যায়
মিষ্ট কথা ও কটূ কথা
মানুষের নৈতিক জীবনের যেসব দিক দিয়ে তার সমজাতির সাথে সর্বাধিক পালা পড়ে এবং যেগুলোর প্রভাব ও ফলাফল খুবই সুদূরপ্রসারী হয়ে থাকে, এগুলোর মধ্যে তার ভাষার মিষ্টতা ও তিক্ততা এবং বাক্যালাপে নম্রতা ও কঠোরতা অন্যতম। এ জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অনুসারী ও ভক্তদেরকে মিষ্টি কথা ও মধুর ভাষা ব্যবহার করতে খুব তাকীদ করতেন এবং খারাপ ও কঠোর ভাষা প্রয়োগ করতে নিষেধ করতেন। এমনকি মন্দ কথার উত্তরেও মন্দ কথা বলতে তিনি পছন্দ করতেন না। নিম্নে এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদীস পাঠ করে নিন।
কয়েকজন ইয়াহুদীর সাথে নবীজীর ব্যবহার
মানুষের নৈতিক জীবনের যেসব দিক দিয়ে তার সমজাতির সাথে সর্বাধিক পালা পড়ে এবং যেগুলোর প্রভাব ও ফলাফল খুবই সুদূরপ্রসারী হয়ে থাকে, এগুলোর মধ্যে তার ভাষার মিষ্টতা ও তিক্ততা এবং বাক্যালাপে নম্রতা ও কঠোরতা অন্যতম। এ জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অনুসারী ও ভক্তদেরকে মিষ্টি কথা ও মধুর ভাষা ব্যবহার করতে খুব তাকীদ করতেন এবং খারাপ ও কঠোর ভাষা প্রয়োগ করতে নিষেধ করতেন। এমনকি মন্দ কথার উত্তরেও মন্দ কথা বলতে তিনি পছন্দ করতেন না। নিম্নে এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদীস পাঠ করে নিন।
কয়েকজন ইয়াহুদীর সাথে নবীজীর ব্যবহার
১৭২. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, কয়েকজন ইয়াহূদী নবী করীম ﷺ-এর নিকট আসল। তারা বলল: 'আসসামু আলাইকুম'। হযরত আয়েশা (রা) জবাব দিলেন: তোমাদের উপর তা বর্ষিত হোক, তোমাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত, তোমাদের উপর আল্লাহর ক্রোধ। নবী ﷺ বললেনঃ হে আয়েশাঃ বিরত হও, তোমার উচিত বিনম্রতা অবলম্বন করা এবং কর্কশ ও মন্দ বাক্য থেকে সাবধান থাকা। (বুখারী)
کتاب الاخلاق
عَنْ عَائِشَةَ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا : أَنَّ يَهُودَ أَتَوُا النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا : السَّامُ عَلَيْكُمْ ، فَقَالَتْ عَائِشَةُ : عَلَيْكُمْ ، وَلَعَنَكُمُ اللَّهُ ، وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ . قَالَ : « مَهْلًا يَا عَائِشَةُ ، عَلَيْكِ بِالرِّفْقِ ، وَإِيَّاكِ وَالعُنْفَ وَالفُحْشَ » (رواه البخارى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এসব ইয়াহূদী নবী করীম ﷺ-এর সাথে খুব অভদ্র ও নিন্দনীয় আচরণ করেছিল। তারা নবী করীম ﷺ-কে বলেছিল, তোমার মৃত্যু হোক। উন্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা (রা) তা বরদাশত করতে পারেননি এবং মন্দ বাক্যের জবাব মন্দ বাক্যের দ্বারা দিয়েছিলেন। নবী করীম ﷺ ইয়াহুদীদের অভদ্র আচরণে হয়ত অন্তরে ব্যথা পেয়েছিলেন এবং এরূপ ব্যথা পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি ব্যথিত অবস্থায়ও মন্দকে মন্দের দ্বারা প্রতিরোধ করতে পসন্দ করেননি। কারণ নবী করীম ﷺ-এর অভ্যাস হল ক্রোধকে দমন করা, মানুষের প্রতি সদয় থাকা এবং তাঁর শিক্ষা হল উত্তম তরীকার দ্বারা মন্দকে দূর করা। ওয়াযের চেয়ে আমল মানুষের কাছে আকর্ষণীয় এবং গ্রহণযোগ্য। তাই আমাদের উচিত, নবী করীম ﷺ-এর আদর্শ অনুসরণ করা এবং কর্মক্ষেত্রে তাঁর বাস্তব নমুনা পেশ করা, যাতে আল্লাহর বান্দাগণ সহজে বুঝতে পারে যে, মুসলমানগণ আখেরী নবীর আদর্শের বাস্তব অনুসারী।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)