মা'আরিফুল হাদীস

আখলাক অধ্যায়

হাদীস নং: ১৬৩
আখলাক অধ্যায়
রাগ প্রতিরোধের উপায়
১৬৩. হযরত আবু যর (রা) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন: তোমাদের কোন ব্যক্তি দন্ডায়মান অবস্থায় রাগান্বিত হলে সে যেন বসে পড়ে। যদি ক্রোধ তার থেকে দূর হয়ে যায় (ভাল কথা), অন্যথায় সে যেন শুয়ে পড়ে। (মুসনাদে আহমদ ও তিরমিযী)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ ، قَالَ : إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَنَا : « إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ قَائِمٌ فَلْيَجْلِسْ ، فَإِنْ ذَهَبَ عَنْهُ الْغَضَبُ وَإِلَّا فَلْيَضْطَجِعْ » (رواه احمد والترمذى)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এই হাদীসে আল্লাহর রাসূল ﷺ ক্রোধকে দমন করার পন্থা শিক্ষা দান করেছেন। মানুষের শারীরিক অবস্থানের সাথে তার মানসিক চিন্তার সংযোগ রয়েছে। দৌড়ানোর সময় মানুষের চিন্তাশক্তি যে পর্যায়ে থাকে, দাঁড়ান অবস্থায় তাতে পার্থক্য সূচিত হয়। আবার দাঁড়ান অবস্থায় মানুষের চিন্তা-ভাবনা যেরূপ হয়, বসা অবস্থায় সেরূপ থাকে না। শায়িত অবস্থায় মানুষের চিন্তা ভিন্ন ধরনের হয়। দণ্ডায়মান অবস্থায় মানুষের যাবতীয় শারীরিক শক্তি সক্রিয় থাকে। তাই মানুষ ভাল-মন্দ যে কোন কাজ শক্তি সহকারে করতে সক্ষম হয়। কিন্তু রাগান্বিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকার মধ্যে বিপদ রয়েছে। বসা অবস্থায় মানুষ কোন বিশেষ সমস্যার বিভিন্ন দিক পরখ করে দেখতে সক্ষম। তাই রাগান্বিত ব্যক্তি বসলে তার চিন্তার মধ্যে পরিবর্তন আসবে এবং রাগের উন্মত্ততা হালকা হয়ে যাবে। যদি রাগের প্রভাব খুব বেশি হয় এবং বসার দ্বারা চিন্তার পরিবর্তন তথা রাগের পরিবর্তন না হয়, তাহলে শুয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। শায়িত অবস্থায় শারীরিক শক্তি সক্রিয় না থাকার কারণে রাগান্বিত ব্যক্তি ক্রোধের প্রচণ্ড আক্রমণ থেকে নিজেকে সহজে রক্ষা করতে পারেন। নবী করীম ﷺ রাগ দমন করার এ বিজ্ঞানসম্মত পন্থার উল্লেখ করেছেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান