মা'আরিফুল হাদীস

আখলাক অধ্যায়

হাদীস নং: ১৪৬
আখলাক অধ্যায়
মু'মিনগণ পরস্পর একটি ইমারত সদৃশ
১৪৬. হযরত আবূ মূসা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী ﷺ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি ﷺ বলেছেন: এক মু'মিন অপর মু'মিনের নিকট একটি ইমারত সদৃশ, যার এক অংশ অপর অংশকে শক্তভাবে ধরে রাখে। অতঃপর নবী ﷺ তাঁর এক হাতের অঙ্গুলী অন্য হাতের অঙ্গুলীর মধ্যে ঢুকালেন। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي مُوسَى ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : « المُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ ، يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا » ثُمَّ شَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ . (رواه البخارى ومسلم)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

নবী করীম ﷺ মু'মিনদের পারস্পরিক সম্পর্ক ইমারতের বিভিন্ন অংশের সাথে তুলনা করেছেন। যেরূপ ইমারতের শক্তি এবং দুর্বলতা তার বিভিন্ন অংশের শক্তি এবং দুর্বলতার উপর নির্ভরশীল, সেরূপ মু'মিনদের শক্তি ও দুর্বলতা তাদের পারস্পরিক শক্তি ও দুর্বলতার উপর একান্তভাবে নির্ভর করে। ইমারতের সকল অংশ মযবুত না হলে যেমন গোটা ইমারতকে মযবুত বলা যাবে না এবং তা বাস উপযোগী গণ্য করা যাবে না, তেমনি উম্মতের প্রত্যেক সদস্য দৃঢ় ও শক্তিশালী না হলে সামগ্রিকভাবে মুসলিম উম্মতকে শক্তিশালী বলা যাবে না। বিল্ডিং-এর এক অংশ অপর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করলে বিল্ডিং-এর কোন মূল্য থাকে না এবং তার ব্যবহার উপযোগিতা হারিয়ে ফেলে, সেরূপ মুসলিম উম্মত পরস্পর বিচ্ছিন্ন থাকলে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং উম্মত হিসেবে যিম্মাদারী পালন করতে ব্যর্থ হয়। অন্য জাতি ও ভিন্ন জীবন ব্যবস্থা তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে মুসলমানদের দুনিয়ার যিন্দেগী বরবাদ ও বিনষ্ট হবে এবং আখিরাতের আদালতে আল্লাহ সুবহানাহু তাদেরকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন।

হাদীসে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ তাঁর এক হাতের অঙ্গুলী অপর হাতের অঙ্গুলীর মধ্যে ঢুকালেন। এক হাতের অঙ্গুলি অপর হাতের অঙ্গুলির মধ্যে ঢুকালে যেরূপ আঙ্গুলগুলো সুদৃঢ় ও শক্তিশালী হয়, সেরূপ মুসলমানগণ ঐক্যবদ্ধ জীবন যাপন করলে সুদৃঢ় ও শক্তিশালী উম্মত হিসেবে দুনিয়ার বুকে বেঁচে থাকবে। মানব জাতিকে হক ও ইনসাফের পথে আহবান করার জন্য আল্লাহ তাদেরকে যে গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছেন তা তারা পালন করতে সক্ষম হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান