মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

হত্যা, অপরাধ ও রক্তপাতের বিধান

হাদীস নং: ১২৬
হত্যা, অপরাধ ও রক্তপাতের বিধান
দিয়াত (রক্তপণ) প্রসঙ্গ

পরিচ্ছেদ: কোন মানুষের হত্যার, তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কাটার এবং তার উপকারিতা নষ্ট করার। আর ভুল বশত হত্যার, ইচ্ছাকৃত হত্যার এবং ইচ্ছাকৃত হত্যার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হত্যার রক্তপণ সম্পর্কিত বর্ণনা।
১২৬। আমর ইবন শুআইব (রা) তাঁর পিতা থেকে এবং শুআইব তাঁর দাদা আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি কোন মু'মিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে তাহলে তাকে নিহতদের অভিভাবকদের নিকট সোপর্দ করা হবে। তারা চাইলে তাকে হত্যা করবে। আর চাইলে রক্তপণ গ্রহণ করবে। আর তা হল: ত্রিশটি চার বছর বয়সের উট ত্রিশটি পাঁচ বছর বয়সের উট এবং চল্লিশটি গর্ভবর্তী উট। আর এটা ইচ্ছাকৃত হত্যার রক্তপণ। আর যদি তারা কোন কিছুর বিনিময়ে আপোসরফা করে, সে অধিকার তাদের থাকবে। আর (ইচ্ছাকৃত হত্যার এ) রক্তপণ কঠোরতর আর ইচ্ছাকৃত হত্যার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হত্যার রক্তপণ ইচ্ছাকৃত হত্যার রক্তপণের ন্যায় কঠোর, এরূপ হত্যাকারীকে হত্যা করা যাবে না। এর ব্যাখ্যা এই যে, শয়তান মানুষকে কুমন্ত্রণা দেয়, ফলে তাদের মধ্যে রক্তপাতের ঘটনা ঘটে এবং সেটা তাদের পারস্পরিক বিদ্বেষ এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ ছাড়াই। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, "যদি কেউ আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়", এমনিভাবে তা ঘটে একে অন্যের প্রতি আক্রমণের লক্ষে ঘাপটি মেরে বসে থাকা ছাড়াই। এরূপ কোন অবস্থা ছাড়াই হত্যা করে তাহলে তা ইচ্ছাকৃত হত্যার সাদৃশ্য হত্যা, হিসেবে গণ্য। এর রক্তপণও কঠোর, তবে এরূপ হত্যাকারীকে হত্যা করা যাবে না, সে পবিত্র মাস ও মসজিদে হারামের মর্যাদা এবং তার প্রতিবেশীর কারণে। আর যদি কেউ ভুল বশত কাউকে হত্যা করে তার রক্তপণ একশত উট, ত্রিশটি দু' বছর বয়সের মাদী উট, ত্রিশটি চার বছর বয়সের উট এবং দশটি সদ্য বয়ঃপ্রাপ্ত উট। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর জামানায় গ্রামবাসীদের উপর রক্তপণের মূল্য চার হাজার দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) বা তার সমতুল্য দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা) নির্ধারণ নির্ধারণ করতেন। আর তিনি তার মূল্য ঐ সময়ের উটের মূল্য অনুযায়ী নির্ধারণ করতেন। যদি উটের মূল্য বৃদ্ধি পেত তাহলে তিনি তার মূল্য বৃদ্ধি করতেন। আর উটের মূল্য কমে গেলে তার মূল্য কমাতেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জামানায় তার মূল্য চারশত দীনার থেকে আটশত দীনার বা তার সমমূল্য আট হাজার দিরহাম রৌপ্যমুদ্রা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেত। আর তিনি ফয়সালা দেন যে, যদি তার রক্তপণ গরুর মালিকদের উপর আরোপিত হয় তবে তা হবে দু'শত গাভী। আর তিনি ফয়সালা দেন যে, যদি তার রক্তপণ বকরীর মালিকদের উপর আরোপিত হয় তবে তা হবে দু'হাজার বকরী। আর তিনি নাক কাটার ক্ষেত্রে ফয়সালা দেন যে, যদি তা সম্পূর্ণ কাটা হয় তাহলে পূর্ণ রক্তপণ আর যদি তার প্রান্ত কাটা হয় তাহলে অর্ধেক রক্তপণ হবে। আর তিনি ফয়সালা দেন যে, চক্ষু নষ্ট করলে অর্ধেক রক্তপণ, পঞ্চাশটি উট, বা তার সমতুল্য স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রা, বা একশত গাভী, বা এক হাজার বকরী দিতে হবে। আর পা কাটলে অর্ধেক রক্তপণ, হাত কাটলে অর্ধেক রক্তপণ দিতে হবে, মস্তিষ্কের মজ্জার আঘাতে এক- তৃতীয়াংশ রক্তপণ তথা ত্রিশটি উট বা তার সমমূল্য পরিমাণ স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রা কিংবা গরু বা বকরী দিতে হবে। যে আঘাত পেটের ভিতরে পৌছে যায় তাতেও এক-তৃতীয়াংশ রক্তপণ দিতে হবে। আর যে আঘাতে হাড়ের উপরস্থ আবরণ মরে যায় তার রক্তপণ হবে পনেরটি উট। আর যে আঘাতে হাড় প্রকাশ পায় তার রক্তপণ পাঁচটি উট, আর দাঁত ভাঙ্গায় পাঁচটি উট।
(আহমদ ইবন্ আবদুর রহমান আল বান্না বলেছেন, আমি ইমাম আহমদ ছাড়া অন্য কারো নিকট হাদীসটির এরূপ দীর্ঘ বর্ণনা অবগত হইনি। আবু দাউদ, নাসাঈ, তিরমিযী এবং ইবন মাজাহ এর অংশগুলি বিভিন্ন অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মদ ইবন ইসহাক ছাড়া ইমাম আহমদের হাদীসের অন্য বর্ণনা কারীগণ নির্ভরযোগ্য। তিনি মুদাল্লিস বর্ণনাকারী। তাঁর উস্তাদ তাঁকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এরূপ কথা তিনি স্পষ্ট করেননি।)
كتاب القتل والجنايات وأحكام الدماء
أبواب الدية

باب جامع دية النفس وأعضائها ومنافعها وما جاء فى الخطأ والعمد وشبه العمد
حدثنا يعقوب ثنا أبى عن محمد بن إسحاق فذكر حديثاً (6)، قال ابن إسحاق وذكر عمرو بن شعيب بن محمد بن عبد الله بن عمرو بن العاص عن أبيه عن جده قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من قتل مؤمناُ متعمداُ فإنه يدفع إلى أولياء القتيل فإن شاءوا قتلوا، وإن شاءوا أخذوا الدية، وهى ثلاثون حقه (7) وثلاثون جذعة (8) وأربعون خلفة (9) فذلك عقل العمد (10) ما صالحوا عليه من شيء فهو لهم (11) وذلك شديد العقل، وعقل شبه العمد (12) مغلظة مثل عقل والعمد ولا يقتل صاحبه (1)، وذلك أن ينزغ (2) الشيطان بين الناس فتكون دماء فى غير ضغينة (3) ولا حمل سلاح فإن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال يعنى من حمل علينا السلاح فليس منا، ولا رصد (4) بطريق فمن قتل على غير ذلك فهو شبه العمد وعقله مغلظة ولا يقتل صاحبه وهو بالشهر الحرام وللحرمة وللجار، ومن قتل خطأ (5) فديته مائة من الإبل ثلاثون ابنة مخاض (6) وثلاثون ابنة لبون (7) وثلاثون حقة: وعشر بكارة (8) بنى لبون ذكور؛ قال وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقيمها (9) على أهل القرى أربعمائة دينار (10) أو عدلها من الورق، وكان يقيمها على أثمان الإبل فإذا غلت (11) رفع فى قيمتها وإذا هانت (12) نقص من قيمتها على عهد الزمان ما كان فبلغت على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم مابين أربعمائة دينار إلى ثمانمائة دينار أو عدلها من الورق ثمانية آلاف درهم (13) وقضى أن من كان عقله على أهل البقر فى البقر مأتى بقرة، وقضى أن من كان عقله على أهل الشام (14) فألفى شاة، وقضى في الأنف إذا جدع كله (1) بالعقل كاملاً، وإذا جدعت أرنبته فنصف العقل، وقضى فى العين نصف العقل خمسين من الإبل أو عدلها ذهباً أو ورقاً أو مائة بقرة أو ألف شاة، والرجل نصف العقل، واليد نصف العقل والمأمومة (2) ثلث العقل ثلاث وثلاثون من الإبل أو قيمتها من الذهب أو الورق أو البقر أو الشاة أو الجائفة (3) ثلث العقل؛ والمنقلة (4) خمس عشرة من الإبل والموضحة (*) خمس من الإبل والأسنان (6) خمس من الإبل
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ - হাদীস নং ১২৬ | মুসলিম বাংলা