আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২৫. অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
হাদীস নং: ৫৫৩৮
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদ: শাফা'আত ইত্যাদির বর্ণনা
৫৫৩৮. হযরত আবু বকর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ভোর বেলায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সালাত আদায় করলেন। তারপর বসে থাকলেন, যখন পূর্বাহ্ন হল, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হাসলেন এবং স্বস্থানে বসে থাকলেন। তারপর (ক্রমান্বয়ে) যোহর, আসর ও মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। এপুরো সময়টুকু কথা না বলে অবশেষে ইশা'র সালাত আদায় করলেন। এরপর তাঁর পরিবার-পরিজনের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়ালেন। লোকজন আবু বকর (রা)-কে বলল, আপনি রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে একটু জিজ্ঞেস করুন না। তার অবস্থা কি? তিনি আজ এমন কিছু করেছেন, যা ইতিপূর্বে কখনোও করেন নি। তখন তিনি (রাসুলুল্লাহ সা) বললেন, হাঁ, দুনিয়া ও আখিরাতে যা কিছু সংঘটিত হবে, তা আমার সামনে পেশ করা হয়েছে। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সমস্ত মানুষকে একটি ভূমিতে সমবেত করা হল। তারপর তারা সবাই আদম (আ)-এর কাছে গেল। ঘাম তাদের মুখের লাগাম পর্যন্ত হওয়ার উপক্রম হল। তারা বলল, হে আদম (আ)। আপনি হচ্ছেন মানব জাতির পিতা। আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে মনোনীত করেছেন। আপনি আপনার প্রতিপালকের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। তিনি বললেনঃ তোমরা যেরূপ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছ আমিও তা তদ্রূপ অবস্থার সম্মুখীন হয়েছি। তোমাদের (প্রথম) পিতার (আমার)পর তোমার (দ্বিতীয়) পিতা নুহের কাছে যাও। "নিশ্চয় আল্লাহ্ তা'আলা আদম, নূহ, ইব্রাহীমের পরিবার ও ইমরান পরিবারকে সমগ্র বিশ্ববাসীর মধ্যে মনোনীত করেছেন।" (৩ঃ ৩২)
তারপর তারা নূহ (আ)-এর কাছে যাবে এবং বলবে আপনি আপনার প্রতিপালকের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে মনোনীত করেছেন এবং আপনার দু'আ তিনি কবুল করেছেন। পৃথিবীর উপর কোন কাফির গৃহবাসীকে ছেড়ে দেন নি। তিনি বলেন সে অধিকার আমার নেই। তোমরা ইবরাহীম (আ)-এর কাছে যাও। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে 'খলীল-অন্তরঙ্গ' রূপে গ্রহণ করেছেন। সেমতে তারা ইব্রাহীম (আ)-এর কাছে যাবে। তিনি বলবেন, সে অধিকার আমার নেই। তোমরা বরং মূসা (আ)-এর কাছে যাও। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর সাথে একান্ত কথা বলেছেন। তারা তখন মুসা (আ)-এর কাছে যাবে। তিনি বলবেন, আমার সে অধিকার নেই। তোমরা ঈসা ইবন মারইয়াম (আ)-এর কাছে যাও। কেননা, তিনি অন্ধ ও শ্বেত রুগীর রোগ নিরাময় করতেন এবং মৃতকে জীবিত করতেন। ঈসা (আ) বলবেন, সে অধিকার আমার নেই। তবে তোমরা আদম (আ)- এর সন্তানদের নেতা (মুহাম্মদ সা)-এর কাছে যাও। কেননা কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম তাঁর উপর থেকেই ভূমি বিদীর্ণ হবে। তোমরা মুহাম্মদ -এর কাছে যাও। তিনি অবশ্যই তোমাদের প্রতিপালকের কাছে তোমাদের জন্য সুপারিশ করবেন। তিনি বলেন, তখন তারা আমার কাছে আসবে। আমি জিব্রীলের কাছে যাব। তখন জিবরীল (আ) আল্লাহ তা'আলার কাছে যাবেন। তিনি বলবেন, তাকে (সুপারিশের) অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তিনি বলেন, অতঃপর জিবরীল (আ) তাঁকে নিয়ে যাবেন। তারপর তিনি এক সপ্তাহ পরিমাণ সিজদাবনত হয়ে পড়ে থাকবেন। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, হে মুহাম্মদ। আপনি আপনার মাথা তুলুন এবং আপনি (যা বলার) বলুন, আপনার কথা শোনা হবে। আপনি সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে। তখন তিনি তাঁর মাথা তুলবেন। তারপর যখন তিনি তার প্রতিপালকের দিকে তাকাবেন, তখন তিনি আরেক সপ্তাহ পর্যন্ত সিজদায় পড়ে থাকবেন। আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, হে মুহাম্মদ। আপনি আপনার মাথা তুলুন এবং আপনি (যা বলার) বলুন, আপনার কথা শোনা হবে। আপনি সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে। তিনি (আবার) তিনি সিজদাবনত হতে যাবেন, তখন জিব্রীল (আ) তাঁর বাহুদ্বয় ধরে ফেলবেন এবং আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে এমন সব দু'আ শিখিয়ে দেবেন, যা কখনও কোন মানুষকে তিনি শিখান নি। তিনি বলবেন, হে আমার প্রতিপালক। আপনি আমাকে আদম সন্তানদের সর্দার বানিয়েছেন। এতে (আমার কোন) গর্ববোধ নেই এবং আমাকে সেই ব্যক্তি বানিয়েছেন, যার উপর থেকে কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম ভূমি বিদীর্ণ হবে। এতে (আমার কোন) গর্ব নেই। তারপর সান'আ ও আয়লার মধ্যবর্তী স্থানে যত লোক ধরে তার চেয়ে অধিক লোক হাওযে কাওসারে পানি পানের জন্য হাযির হবে। এরপর বলা হবে, সিদ্দীকদেরকে ডাক, তখন তারা সুপারিশ করবে। এরপর বলা হবে, নবীদেরকে ডাক, তখন একজন নবী আসবেন তাঁর সাথে থাকবে একটি ক্ষুদ্রদল। কোন নবীর সাথে থাকবে পাঁচ-ছয়জন, কোন নবী এমনও আসবেন যার সাথে একজনও থাকবে না। এরপর বলা হবে, শহীদদেরকে ডাক, তখন তারা যাদের ব্যাপারে ইচ্ছা সুপারিশ করবে।।
যখন শহীদরা তাদের সুপারিশ শেষ করবে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, আমি দয়াশীলদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াশীল। যারা আমার সাথে কিছুকে শরীক করত না, তাদের সবাইকে আমার জান্নাতে দাখিল কর। তখন তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
তারপর আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, তোমরা জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখ, সেখানে কি এমন কেউ রয়েছে, যে কখনও কোন সৎকর্ম করেছে। তখন তারা জাহান্নামে একটি লোক পাবে, তাকে জিজ্ঞেস করা হবে ওহে। তুমি কি কখনও কোন সৎকর্ম করেছ। সে বলবে, না। তবে আমি বেচা-বিক্রির সময় মানুষের সাথে উদার আচরণ করতাম। তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, আমার বান্দার সাথে উদারতা প্রদর্শন কর, যেমনটা সে আমার বান্দাদের সাথে উদারতা প্রদর্শন করেছে এরপর জাহান্নাম থেকে আরেক ব্যক্তিকে বের করা হবে, তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, ওহে। তুমি কি কখনও কোন সৎকর্ম করেছ? সে বলবে, না। তবে আমি আমার পুত্রকে বলতাম, যখন আমি মারা যাব, তখন তোমরা আমাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে এবং তারপর তোমরা আমাকে পিষে ফেলবে। যখন আমি সুরমার মত হয়ে
যাব, তখন তোমরা আমাকে সমুদ্রে নিয়ে যাবে এবং আমাকে বাতাসে উড়িয়ে দেবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন,
এটা তুমি কেন করেছ হে। সে বলবে, আপনার ভয়ে। তিনি বলবেন, তুমি কোন মহারাজার রাজত্বের দিকে তাকাও। আমি তোমাকে তার সমান ও তার দশগুণ দিলাম। সে বলবে, আপনি আমার সাথে কেন উপহাস করছেন প্রভু! অথচ আপনি হচ্ছেন রাজাধিরাজ। একারণেই আমি পূর্বাহ্নের হেসেছি।
(আহমাদ, বাযযার, আবু ইয়া'লা ও ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' কিতাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবন হিব্বান বলেন, ইসহাক ইবন ইবরাহীম বলেছেন, এটা সর্বশ্রেষ্ঠ হাদীসসমূহের অন্যতম। অনেকেই নবী থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে হুযায়ফা, আবু মাসউদ, আবূ হুরায়রা প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
হাদীসে উক্ত العصابة অর্থ দল। এর কোন একবচন নেই। আখফাশের অভিমত তাই। কেউ কেউ বলেছেন, দশ অথবা বিশ থেকে চল্লিশ পর্যন্ত লোকের দলকে বলা হয়।)
তারপর তারা নূহ (আ)-এর কাছে যাবে এবং বলবে আপনি আপনার প্রতিপালকের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে মনোনীত করেছেন এবং আপনার দু'আ তিনি কবুল করেছেন। পৃথিবীর উপর কোন কাফির গৃহবাসীকে ছেড়ে দেন নি। তিনি বলেন সে অধিকার আমার নেই। তোমরা ইবরাহীম (আ)-এর কাছে যাও। কেননা, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে 'খলীল-অন্তরঙ্গ' রূপে গ্রহণ করেছেন। সেমতে তারা ইব্রাহীম (আ)-এর কাছে যাবে। তিনি বলবেন, সে অধিকার আমার নেই। তোমরা বরং মূসা (আ)-এর কাছে যাও। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর সাথে একান্ত কথা বলেছেন। তারা তখন মুসা (আ)-এর কাছে যাবে। তিনি বলবেন, আমার সে অধিকার নেই। তোমরা ঈসা ইবন মারইয়াম (আ)-এর কাছে যাও। কেননা, তিনি অন্ধ ও শ্বেত রুগীর রোগ নিরাময় করতেন এবং মৃতকে জীবিত করতেন। ঈসা (আ) বলবেন, সে অধিকার আমার নেই। তবে তোমরা আদম (আ)- এর সন্তানদের নেতা (মুহাম্মদ সা)-এর কাছে যাও। কেননা কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম তাঁর উপর থেকেই ভূমি বিদীর্ণ হবে। তোমরা মুহাম্মদ -এর কাছে যাও। তিনি অবশ্যই তোমাদের প্রতিপালকের কাছে তোমাদের জন্য সুপারিশ করবেন। তিনি বলেন, তখন তারা আমার কাছে আসবে। আমি জিব্রীলের কাছে যাব। তখন জিবরীল (আ) আল্লাহ তা'আলার কাছে যাবেন। তিনি বলবেন, তাকে (সুপারিশের) অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তিনি বলেন, অতঃপর জিবরীল (আ) তাঁকে নিয়ে যাবেন। তারপর তিনি এক সপ্তাহ পরিমাণ সিজদাবনত হয়ে পড়ে থাকবেন। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, হে মুহাম্মদ। আপনি আপনার মাথা তুলুন এবং আপনি (যা বলার) বলুন, আপনার কথা শোনা হবে। আপনি সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে। তখন তিনি তাঁর মাথা তুলবেন। তারপর যখন তিনি তার প্রতিপালকের দিকে তাকাবেন, তখন তিনি আরেক সপ্তাহ পর্যন্ত সিজদায় পড়ে থাকবেন। আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, হে মুহাম্মদ। আপনি আপনার মাথা তুলুন এবং আপনি (যা বলার) বলুন, আপনার কথা শোনা হবে। আপনি সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ মঞ্জুর করা হবে। তিনি (আবার) তিনি সিজদাবনত হতে যাবেন, তখন জিব্রীল (আ) তাঁর বাহুদ্বয় ধরে ফেলবেন এবং আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে এমন সব দু'আ শিখিয়ে দেবেন, যা কখনও কোন মানুষকে তিনি শিখান নি। তিনি বলবেন, হে আমার প্রতিপালক। আপনি আমাকে আদম সন্তানদের সর্দার বানিয়েছেন। এতে (আমার কোন) গর্ববোধ নেই এবং আমাকে সেই ব্যক্তি বানিয়েছেন, যার উপর থেকে কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম ভূমি বিদীর্ণ হবে। এতে (আমার কোন) গর্ব নেই। তারপর সান'আ ও আয়লার মধ্যবর্তী স্থানে যত লোক ধরে তার চেয়ে অধিক লোক হাওযে কাওসারে পানি পানের জন্য হাযির হবে। এরপর বলা হবে, সিদ্দীকদেরকে ডাক, তখন তারা সুপারিশ করবে। এরপর বলা হবে, নবীদেরকে ডাক, তখন একজন নবী আসবেন তাঁর সাথে থাকবে একটি ক্ষুদ্রদল। কোন নবীর সাথে থাকবে পাঁচ-ছয়জন, কোন নবী এমনও আসবেন যার সাথে একজনও থাকবে না। এরপর বলা হবে, শহীদদেরকে ডাক, তখন তারা যাদের ব্যাপারে ইচ্ছা সুপারিশ করবে।।
যখন শহীদরা তাদের সুপারিশ শেষ করবে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, আমি দয়াশীলদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াশীল। যারা আমার সাথে কিছুকে শরীক করত না, তাদের সবাইকে আমার জান্নাতে দাখিল কর। তখন তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
তারপর আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, তোমরা জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখ, সেখানে কি এমন কেউ রয়েছে, যে কখনও কোন সৎকর্ম করেছে। তখন তারা জাহান্নামে একটি লোক পাবে, তাকে জিজ্ঞেস করা হবে ওহে। তুমি কি কখনও কোন সৎকর্ম করেছ। সে বলবে, না। তবে আমি বেচা-বিক্রির সময় মানুষের সাথে উদার আচরণ করতাম। তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, আমার বান্দার সাথে উদারতা প্রদর্শন কর, যেমনটা সে আমার বান্দাদের সাথে উদারতা প্রদর্শন করেছে এরপর জাহান্নাম থেকে আরেক ব্যক্তিকে বের করা হবে, তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, ওহে। তুমি কি কখনও কোন সৎকর্ম করেছ? সে বলবে, না। তবে আমি আমার পুত্রকে বলতাম, যখন আমি মারা যাব, তখন তোমরা আমাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে এবং তারপর তোমরা আমাকে পিষে ফেলবে। যখন আমি সুরমার মত হয়ে
যাব, তখন তোমরা আমাকে সমুদ্রে নিয়ে যাবে এবং আমাকে বাতাসে উড়িয়ে দেবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলবেন,
এটা তুমি কেন করেছ হে। সে বলবে, আপনার ভয়ে। তিনি বলবেন, তুমি কোন মহারাজার রাজত্বের দিকে তাকাও। আমি তোমাকে তার সমান ও তার দশগুণ দিলাম। সে বলবে, আপনি আমার সাথে কেন উপহাস করছেন প্রভু! অথচ আপনি হচ্ছেন রাজাধিরাজ। একারণেই আমি পূর্বাহ্নের হেসেছি।
(আহমাদ, বাযযার, আবু ইয়া'লা ও ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' কিতাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবন হিব্বান বলেন, ইসহাক ইবন ইবরাহীম বলেছেন, এটা সর্বশ্রেষ্ঠ হাদীসসমূহের অন্যতম। অনেকেই নবী থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তন্মধ্যে হুযায়ফা, আবু মাসউদ, আবূ হুরায়রা প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
হাদীসে উক্ত العصابة অর্থ দল। এর কোন একবচন নেই। আখফাশের অভিমত তাই। কেউ কেউ বলেছেন, দশ অথবা বিশ থেকে চল্লিশ পর্যন্ত লোকের দলকে বলা হয়।)
كتاب البعث
فصل فِي الشَّفَاعَة وَغَيرهَا
5538- وَعَن أبي بكر الصّديق رَضِي الله عَنهُ قَالَ أصبح رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم ذَات يَوْم فصلى الْغَدَاة ثمَّ جلس حَتَّى إِذا كَانَ من الضُّحَى ضحك رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَجلسَ مَكَانَهُ حَتَّى صلى الأولى وَالْعصر وَالْمغْرب كل ذَلِك لَا يتَكَلَّم حَتَّى صلى الْعشَاء الْآخِرَة ثمَّ قَامَ إِلَى أَهله فَقَالَ النَّاس لأبي بكر رَضِي الله عَنهُ سل رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا شَأْنه صنع الْيَوْم شَيْئا لم يصنعه قطّ فَقَالَ نعم عرض عَليّ مَا هُوَ كَائِن من أَمر الدُّنْيَا وَالْآخِرَة فَجمع الْأَولونَ وَالْآخرُونَ بصعيد وَاحِد حَتَّى انْطَلقُوا إِلَى آدم عَلَيْهِ السَّلَام والعرق يكَاد يلجمهم فَقَالُوا يَا آدم أَنْت أَبُو الْبشر اصطفاك الله اشفع لنا إِلَى رَبك فَقَالَ قد لقِيت مثل الَّذِي لَقِيتُم انْطَلقُوا إِلَى أبيكم بعد أبيكم إِلَى نوح إِن الله اصْطفى آدم ونوحا وَآل إِبْرَاهِيم وَآل عمرَان على الْعَالمين آل عمرَان 33 فَيَنْطَلِقُونَ إِلَى نوح عَلَيْهِ السَّلَام فَيَقُولُونَ اشفع لنا إِلَى رَبك فَأَنت اصطفاك الله واستجاب لَك فِي دعائك فَلم يدع على الأَرْض من الْكَافرين ديارًا فَيَقُول لَيْسَ ذاكم عِنْدِي فَانْطَلقُوا إِلَى إِبْرَاهِيم فَإِن الله اتَّخذهُ خَلِيلًا فَيَنْطَلِقُونَ إِلَى إِبْرَاهِيم عَلَيْهِ السَّلَام فَيَقُول لَيْسَ ذاكم عِنْدِي فَانْطَلقُوا إِلَى مُوسَى فَإِن الله كَلمه تكليما فَيَنْطَلِقُونَ إِلَى مُوسَى عَلَيْهِ السَّلَام فَيَقُول لَيْسَ ذاكم عِنْدِي وَلَكِن انْطَلقُوا إِلَى عِيسَى ابْن مَرْيَم فَإِنَّهُ كَانَ يبرىء الأكمه والأبرص ويحيي الْمَوْتَى فَيَقُول عِيسَى لَيْسَ ذاكم عِنْدِي وَلَكِن انْطَلقُوا إِلَى سيد
ولد آدم فَإِنَّهُ أول من تَنْشَق عَنهُ الأَرْض يَوْم الْقِيَامَة انْطَلقُوا إِلَى مُحَمَّد فليشفع لكم إِلَى ربكُم قَالَ فَيَنْطَلِقُونَ إِلَيّ وَآتِي جِبْرِيل فَيَأْتِي جِبْرِيل ربه فَيَقُول ائْذَنْ لَهُ وبشره بِالْجنَّةِ قَالَ فَينْطَلق بِهِ جِبْرِيل فيخر سَاجِدا قدر جُمُعَة ثمَّ يَقُول الله تبَارك وَتَعَالَى يَا مُحَمَّد ارْفَعْ رَأسك وَقل يسمع وَاشْفَعْ تشفع فيرفع رَأسه فَإِذا نظر إِلَى ربه خر سَاجِدا قدر جُمُعَة أُخْرَى فَيَقُول الله يَا مُحَمَّد ارْفَعْ رَأسك وَقل تسمع وَاشْفَعْ تشفع فَيذْهب ليَقَع سَاجِدا فَيَأْخُذ جِبْرِيل بضبعيه وَيفتح الله عَلَيْهِ من الدُّعَاء مَا لم يفتح على بشر قطّ فَيَقُول أَي رب جَعَلتني سيد ولد آدم وَلَا فَخر وَأول من تَنْشَق عَنهُ الأَرْض يَوْم الْقِيَامَة وَلَا فَخر حَتَّى إِنَّه ليرد على الْحَوْض أَكثر مَا بَين صنعاء وأيلة ثمَّ يُقَال ادعوا الصديقين فيشفعون ثمَّ يُقَال ادعوا الْأَنْبِيَاء فَيَجِيء النَّبِي مَعَه الْعِصَابَة وَالنَّبِيّ مَعَه الْخَمْسَة والستة وَالنَّبِيّ لَيْسَ مَعَه أحد ثمَّ يُقَال ادعوا الشُّهَدَاء فيشفعون فِيمَن أَرَادوا فَإِذا فعلت الشُّهَدَاء ذَلِك يَقُول الله جلّ وَعلا أَنا أرْحم الرَّاحِمِينَ أدخلُوا جنتي من كَانَ لَا يُشْرك بِي شَيْئا فَيدْخلُونَ الْجنَّة ثمَّ يَقُول الله تبَارك وَتَعَالَى انْظُرُوا فِي النَّار هَل فِيهَا من أحد عمل خيرا قطّ فيجدون فِي النَّار رجلا فَيُقَال لَهُ هَل عملت خيرا قطّ فَيَقُول لَا غير أَنِّي كنت أسامح النَّاس فِي البيع فَيَقُول الله اسمحوا لعبدي كإسماحه إِلَى عَبِيدِي ثمَّ يخرج من النَّار آخر فَيُقَال لَهُ هَل عملت خيرا قطّ فَيَقُول لَا غير أَنِّي كنت أمرت وَلَدي إِذا مت فأحرقوني بالنَّار ثمَّ اطحنوني حَتَّى إِذا كنت مثل الْكحل اذْهَبُوا بِي إِلَى الْبَحْر فذروني فِي الرّيح فَقَالَ الله لم فعلت ذَلِك قَالَ من مخافتك فَيَقُول انْظُر إِلَى ملك أعظم ملك فَإِن لَك مثله وَعشرَة أَمْثَاله فَيَقُول لم تسخر بِي وَأَنت الْملك فَذَلِك الَّذِي ضحِكت بِهِ من الضُّحَى
رَوَاهُ أَحْمد وَالْبَزَّار وَأَبُو يعلى وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَقَالَ قَالَ إِسْحَاق يَعْنِي ابْن إِبْرَاهِيم هَذَا من أشرف الحَدِيث وَقد روى هَذَا الحَدِيث عدَّة عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم نَحْو هَذَا مِنْهُم حُذَيْفَة وَأَبُو مَسْعُود وَأَبُو هُرَيْرَة وَغَيرهم انْتهى
ولد آدم فَإِنَّهُ أول من تَنْشَق عَنهُ الأَرْض يَوْم الْقِيَامَة انْطَلقُوا إِلَى مُحَمَّد فليشفع لكم إِلَى ربكُم قَالَ فَيَنْطَلِقُونَ إِلَيّ وَآتِي جِبْرِيل فَيَأْتِي جِبْرِيل ربه فَيَقُول ائْذَنْ لَهُ وبشره بِالْجنَّةِ قَالَ فَينْطَلق بِهِ جِبْرِيل فيخر سَاجِدا قدر جُمُعَة ثمَّ يَقُول الله تبَارك وَتَعَالَى يَا مُحَمَّد ارْفَعْ رَأسك وَقل يسمع وَاشْفَعْ تشفع فيرفع رَأسه فَإِذا نظر إِلَى ربه خر سَاجِدا قدر جُمُعَة أُخْرَى فَيَقُول الله يَا مُحَمَّد ارْفَعْ رَأسك وَقل تسمع وَاشْفَعْ تشفع فَيذْهب ليَقَع سَاجِدا فَيَأْخُذ جِبْرِيل بضبعيه وَيفتح الله عَلَيْهِ من الدُّعَاء مَا لم يفتح على بشر قطّ فَيَقُول أَي رب جَعَلتني سيد ولد آدم وَلَا فَخر وَأول من تَنْشَق عَنهُ الأَرْض يَوْم الْقِيَامَة وَلَا فَخر حَتَّى إِنَّه ليرد على الْحَوْض أَكثر مَا بَين صنعاء وأيلة ثمَّ يُقَال ادعوا الصديقين فيشفعون ثمَّ يُقَال ادعوا الْأَنْبِيَاء فَيَجِيء النَّبِي مَعَه الْعِصَابَة وَالنَّبِيّ مَعَه الْخَمْسَة والستة وَالنَّبِيّ لَيْسَ مَعَه أحد ثمَّ يُقَال ادعوا الشُّهَدَاء فيشفعون فِيمَن أَرَادوا فَإِذا فعلت الشُّهَدَاء ذَلِك يَقُول الله جلّ وَعلا أَنا أرْحم الرَّاحِمِينَ أدخلُوا جنتي من كَانَ لَا يُشْرك بِي شَيْئا فَيدْخلُونَ الْجنَّة ثمَّ يَقُول الله تبَارك وَتَعَالَى انْظُرُوا فِي النَّار هَل فِيهَا من أحد عمل خيرا قطّ فيجدون فِي النَّار رجلا فَيُقَال لَهُ هَل عملت خيرا قطّ فَيَقُول لَا غير أَنِّي كنت أسامح النَّاس فِي البيع فَيَقُول الله اسمحوا لعبدي كإسماحه إِلَى عَبِيدِي ثمَّ يخرج من النَّار آخر فَيُقَال لَهُ هَل عملت خيرا قطّ فَيَقُول لَا غير أَنِّي كنت أمرت وَلَدي إِذا مت فأحرقوني بالنَّار ثمَّ اطحنوني حَتَّى إِذا كنت مثل الْكحل اذْهَبُوا بِي إِلَى الْبَحْر فذروني فِي الرّيح فَقَالَ الله لم فعلت ذَلِك قَالَ من مخافتك فَيَقُول انْظُر إِلَى ملك أعظم ملك فَإِن لَك مثله وَعشرَة أَمْثَاله فَيَقُول لم تسخر بِي وَأَنت الْملك فَذَلِك الَّذِي ضحِكت بِهِ من الضُّحَى
رَوَاهُ أَحْمد وَالْبَزَّار وَأَبُو يعلى وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَقَالَ قَالَ إِسْحَاق يَعْنِي ابْن إِبْرَاهِيم هَذَا من أشرف الحَدِيث وَقد روى هَذَا الحَدِيث عدَّة عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم نَحْو هَذَا مِنْهُم حُذَيْفَة وَأَبُو مَسْعُود وَأَبُو هُرَيْرَة وَغَيرهم انْتهى