আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২৫. অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
হাদীস নং: ৫৫২৫
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদ: হাওযে কাওসার, পাল্লা ও পুলসিরাত সম্পর্কে আলোচনা
৫৫২৫. হযরত হুযায়ফা ও আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তাঁরা উভয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা মানব জাতিকে সমবেত করবেন।..... এরপর হাদীসটি বর্ণনা করে এক পর্যায়ে তাঁরা বলেন, অতঃপর লোকজন মুহাম্মদ-এর কাছে আসবে। তিনি দাঁড়াবেন, তাঁকে অনুমতি দেওয়া হবে এবং তাঁর সাথে আমানত ও আত্মীয়তার বন্ধনকে পাঠানো হবে। তারা পুলসিরাতের দু'পাশে ডানে ও বামে দাঁড়াবে। তখন তোমাদের সর্বপ্রথম ব্যক্তিটি বিদ্যুতের গতিতে পার হয়ে যাবে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। বিদ্যুতের গতি কি? তিনি বললেন, তোমরা কি বিদ্যুতের গতি দেখনা, কিভাবে চোখের পলকের মধ্যে বিদ্যুত চলে যায় এবং আবার ফিরে আসে? এরপর কেউ বায়ু গতিতে, তারপর কেউ পাখির গতিতে এবং কেউ পায়ে হাঁটার গতিতে চলবে। তাদের আমল তাদেরকে নিয়ে যাবে। তোমদের নবী (ﷺ) পুলসিরাতের গোড়ায় দাঁড়ানো থাকবেন। তিনি বলবেন, হে আমার প্রতিপালক! নিরাপদে রাখ, নিরাপদে রাখ। তারপর ক্রমান্বয়ে বান্দাদের আমল দুর্বল হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত এমন এক ব্যক্তি আসবে, যে হামাগুড়ি না দিয়ে চলতে পারবে না। তিনি বলেন, পুলসিরাতের দুইপাশে থাকবে অনেক জ্বলন্ত হুক, যাকে ধরতে বলা হয়, তাকে ধরতে তারা আদিষ্ট থাকবে। তন্মধ্যে আঁচড় খাওয়া লোক মুক্তি প্রাপ্ত হবে এবং আটক ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আবু হুরায়রার প্রাণ রয়েছে, নিশ্চয় জাহান্নামের গভীরতা হবে সত্তর বছরের দূরত্ব।
(মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। সম্পূর্ণ হাদীসটি "শাফা'আত” অধ্যায়ে ইনশাআল্লাহ্ বর্ণিত হবে। ইবন মাসউদ (রা)-এর হাদীসটি "হাশর"-আরে বর্ণনার পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে। তাতে আছেঃ "পুলসিরাত তরবারির ধারের মত ধারালো, পিচ্ছিল ও পদস্খলনের স্থান। তিনি বলেন, মানুষ তাদের (আমলের) দূর অনুপাতে চলবে। তন্মধ্যে কেউ নক্ষত্র পতনের গতিতে চলবে, কেউ পলক গতিতে চলবে, কেউ বায়ুর গতিতে চলবে, কেউ পায়ে হাঁটার গতিতে এবং কেউ দ্রুতবেগে চলার গতিতে চলবে। তারা তাদের আমল অনুপাতে চলবে। অবশেষে যার নূর তার পদযুগলের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে রয়েছে, সে এভাবে চলবে যে, তার এক হাত পড়বে, অপর হাত ঝুলে থাকবে এবং একপা পড়বে, অপর পর ঝুলে থাকবে এবং তার আশে-পাশে আগুনের স্পর্শ লাগবে।"
আমি একবার আল্লাহ তা'আলার বাণী وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا "তোমাদের কেউই জাহান্নামে প্রবেশ না করে থাকবে না।” (১৯ঃ ৭১) প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, যে ইবন মাসউদ (রা) তাদেরকে বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, মানুষ জাহান্নামে প্রবেশ করবে। তারপর তাদের আমলের সাহায্যে তারা সেখান থেকে পার হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি বিদ্যুতের গতিতে, তারপর বায়ুর গতিতে, তারপর দ্রুতগামী ঘোড়ার গতিতে তারপর হাওদায় আরোহণকারীর গতিতে, তার পর দ্রুত হাঁটার গতিতে, তারপর স্বাভাবিক পায়ে হাঁটার গতিতে চলবে।)
বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। বিদ্যুতের গতি কি? তিনি বললেন, তোমরা কি বিদ্যুতের গতি দেখনা, কিভাবে চোখের পলকের মধ্যে বিদ্যুত চলে যায় এবং আবার ফিরে আসে? এরপর কেউ বায়ু গতিতে, তারপর কেউ পাখির গতিতে এবং কেউ পায়ে হাঁটার গতিতে চলবে। তাদের আমল তাদেরকে নিয়ে যাবে। তোমদের নবী (ﷺ) পুলসিরাতের গোড়ায় দাঁড়ানো থাকবেন। তিনি বলবেন, হে আমার প্রতিপালক! নিরাপদে রাখ, নিরাপদে রাখ। তারপর ক্রমান্বয়ে বান্দাদের আমল দুর্বল হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত এমন এক ব্যক্তি আসবে, যে হামাগুড়ি না দিয়ে চলতে পারবে না। তিনি বলেন, পুলসিরাতের দুইপাশে থাকবে অনেক জ্বলন্ত হুক, যাকে ধরতে বলা হয়, তাকে ধরতে তারা আদিষ্ট থাকবে। তন্মধ্যে আঁচড় খাওয়া লোক মুক্তি প্রাপ্ত হবে এবং আটক ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আবু হুরায়রার প্রাণ রয়েছে, নিশ্চয় জাহান্নামের গভীরতা হবে সত্তর বছরের দূরত্ব।
(মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। সম্পূর্ণ হাদীসটি "শাফা'আত” অধ্যায়ে ইনশাআল্লাহ্ বর্ণিত হবে। ইবন মাসউদ (রা)-এর হাদীসটি "হাশর"-আরে বর্ণনার পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে। তাতে আছেঃ "পুলসিরাত তরবারির ধারের মত ধারালো, পিচ্ছিল ও পদস্খলনের স্থান। তিনি বলেন, মানুষ তাদের (আমলের) দূর অনুপাতে চলবে। তন্মধ্যে কেউ নক্ষত্র পতনের গতিতে চলবে, কেউ পলক গতিতে চলবে, কেউ বায়ুর গতিতে চলবে, কেউ পায়ে হাঁটার গতিতে এবং কেউ দ্রুতবেগে চলার গতিতে চলবে। তারা তাদের আমল অনুপাতে চলবে। অবশেষে যার নূর তার পদযুগলের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে রয়েছে, সে এভাবে চলবে যে, তার এক হাত পড়বে, অপর হাত ঝুলে থাকবে এবং একপা পড়বে, অপর পর ঝুলে থাকবে এবং তার আশে-পাশে আগুনের স্পর্শ লাগবে।"
আমি একবার আল্লাহ তা'আলার বাণী وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا "তোমাদের কেউই জাহান্নামে প্রবেশ না করে থাকবে না।” (১৯ঃ ৭১) প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, যে ইবন মাসউদ (রা) তাদেরকে বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, মানুষ জাহান্নামে প্রবেশ করবে। তারপর তাদের আমলের সাহায্যে তারা সেখান থেকে পার হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি বিদ্যুতের গতিতে, তারপর বায়ুর গতিতে, তারপর দ্রুতগামী ঘোড়ার গতিতে তারপর হাওদায় আরোহণকারীর গতিতে, তার পর দ্রুত হাঁটার গতিতে, তারপর স্বাভাবিক পায়ে হাঁটার গতিতে চলবে।)
كتاب البعث
فصل فِي الْحَوْض وَالْمِيزَان والصراط
5525- وَعَن حُذَيْفَة وَأبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَا قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يجمع الله النَّاس فذكرا الحَدِيث إِلَى أَن قَالَا فَيَأْتُونَ مُحَمَّدًا صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَيقوم وَيُؤذن لَهُ وَترسل مَعَه الْأَمَانَة وَالرحم فيقومان جنبتي الصِّرَاط يَمِينا وَشمَالًا فيمر أولكم كالبرق
قَالَ قلت بِأبي أَنْت وَأمي أَي شَيْء كمر الْبَرْق قَالَ ألم تروا إِلَى الْبَرْق كَيفَ يمر وَيرجع فِي طرفَة عين ثمَّ كمر الرّيح ثمَّ كمر الطير وَشد الرِّجَال تجْرِي بهم أَعْمَالهم ونبيكم صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَائِم على الصِّرَاط يَقُول رب سلم سلم حَتَّى تعجز أَعمال الْعباد حَتَّى يَجِيء الرجل فَلَا يَسْتَطِيع السّير إِلَّا
زاحفا قَالَ وَفِي حافتي الصِّرَاط كلاليب معلقَة مأمورة تَأْخُذ من أمرت بِهِ فمخدوش نَاجٍ ومكدوش فِي النَّار وَالَّذِي نفس أبي هُرَيْرَة بِيَدِهِ إِن قَعْر جَهَنَّم لسَبْعين خَرِيفًا
رَوَاهُ مُسلم وَيَأْتِي بِتَمَامِهِ فِي الشَّفَاعَة إِن شَاءَ الله وَتقدم حَدِيث ابْن مَسْعُود فِي الْحَشْر وَفِيه والصراط كَحَد السَّيْف دحض مزلة قَالَ فيمرون على قدر نورهم فَمنهمْ من يمر كانقضاض الْكَوْكَب وَمِنْهُم من يمر كالطرف وَمِنْهُم من يمر كَالرِّيحِ وَمِنْهُم من يمر كشد الرجل ويرمل رملا فيمرون على قدر أَعْمَالهم حَتَّى يمر الَّذِي نوره على إِبْهَام قَدَمَيْهِ تَخِر يَد وَتعلق يَد وتخر رجل وَتعلق رجل فتصيب جوانبه النَّار
رَوَاهُ ابْن أبي الدُّنْيَا وَالطَّبَرَانِيّ وَالْحَاكِم وَاللَّفْظ لَهُ وروى الْحَاكِم أَيْضا بِإِسْنَاد ذكر أَنه على شَرط مُسلم عَن الْمسيب قَالَ سَأَلت مرّة عَن قَوْله تَعَالَى وَإِن مِنْكُم إِلَّا واردها فَحَدثني أَن ابْن مَسْعُود حَدثهمْ أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ يرد النَّاس ثمَّ يصدرون عَنْهَا بأعمالهم وأولهم كلمح الْبَرْق ثمَّ كلمح الرّيح ثمَّ كحضر الْفرس ثمَّ كالراكب فِي رَحْله ثمَّ كشد الرجل ثمَّ كمشيه
قَالَ قلت بِأبي أَنْت وَأمي أَي شَيْء كمر الْبَرْق قَالَ ألم تروا إِلَى الْبَرْق كَيفَ يمر وَيرجع فِي طرفَة عين ثمَّ كمر الرّيح ثمَّ كمر الطير وَشد الرِّجَال تجْرِي بهم أَعْمَالهم ونبيكم صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَائِم على الصِّرَاط يَقُول رب سلم سلم حَتَّى تعجز أَعمال الْعباد حَتَّى يَجِيء الرجل فَلَا يَسْتَطِيع السّير إِلَّا
زاحفا قَالَ وَفِي حافتي الصِّرَاط كلاليب معلقَة مأمورة تَأْخُذ من أمرت بِهِ فمخدوش نَاجٍ ومكدوش فِي النَّار وَالَّذِي نفس أبي هُرَيْرَة بِيَدِهِ إِن قَعْر جَهَنَّم لسَبْعين خَرِيفًا
رَوَاهُ مُسلم وَيَأْتِي بِتَمَامِهِ فِي الشَّفَاعَة إِن شَاءَ الله وَتقدم حَدِيث ابْن مَسْعُود فِي الْحَشْر وَفِيه والصراط كَحَد السَّيْف دحض مزلة قَالَ فيمرون على قدر نورهم فَمنهمْ من يمر كانقضاض الْكَوْكَب وَمِنْهُم من يمر كالطرف وَمِنْهُم من يمر كَالرِّيحِ وَمِنْهُم من يمر كشد الرجل ويرمل رملا فيمرون على قدر أَعْمَالهم حَتَّى يمر الَّذِي نوره على إِبْهَام قَدَمَيْهِ تَخِر يَد وَتعلق يَد وتخر رجل وَتعلق رجل فتصيب جوانبه النَّار
رَوَاهُ ابْن أبي الدُّنْيَا وَالطَّبَرَانِيّ وَالْحَاكِم وَاللَّفْظ لَهُ وروى الْحَاكِم أَيْضا بِإِسْنَاد ذكر أَنه على شَرط مُسلم عَن الْمسيب قَالَ سَأَلت مرّة عَن قَوْله تَعَالَى وَإِن مِنْكُم إِلَّا واردها فَحَدثني أَن ابْن مَسْعُود حَدثهمْ أَن رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ يرد النَّاس ثمَّ يصدرون عَنْهَا بأعمالهم وأولهم كلمح الْبَرْق ثمَّ كلمح الرّيح ثمَّ كحضر الْفرس ثمَّ كالراكب فِي رَحْله ثمَّ كشد الرجل ثمَّ كمشيه