আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

২৫. অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত

হাদীস নং: ৫৪৮৪
অধ্যায়ঃ পুনরুত্থান ও কিয়ামাত
পরিচ্ছেদ: হিসাব-নিকাশের আলোচনা
৫৪৮৪. হযরত জাবির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের কছে বেরিয়ে এসে বললেন, এইমাত্র আমাদের বন্ধু জিবরীল (আ) আমার কাছ থেকে বেরিয়ে গেলেন। তিনি বললেনঃ ‘হে মুহাম্মদ সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন সহকারে প্রেরণ করেছেন, নিশ্চয় আল্লাহর বান্দাদের থেকে কোন এক বান্দা সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত এমন এক পর্বতের চূড়ায় বসে পাঁচশ বছর অবধি আল্লাহর ইবাদত করেছে, যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ত্রিশ হাত-ত্রিশ হাত (৩০ X ৩০) এবং তার প্রত্যেক দিকে ঘিরে রয়েছে চার হাজার ফরসখ (১২০০০ মাইল) সমুদ্র। সে পর্বত চূড়ায় রয়েছে এর জন্য আঙ্গুরের প্রস্থ পরিমান একটি মিঠা পানির ঝর্ণা। সে ঝর্ণা থেকে মিঠা পানি প্রবাহিত হয়ে পর্বতের পাদদেশে জমা হয় এবং একটি ডালিম গাছ প্রতি রাত্রে তার জন্য একটি ডালিমের ফলন দেয়। সে দিনের বেলায় ইবাদত করে। যখন সন্ধ্যা হয়, তখন সে নিচে নেমে উযূ করে এবং সে ডালিমটি নিয়ে খায়, তারপর সালাতের উদ্দ্যেশ্য দাঁড়িয়ে যায়। (এভাবে তার জীবন কেটে গেল) তারপর মৃত্যুর সময় সে তার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করল, যাতে তিনি তাকে সিজদারত অবস্থায় মৃত্যু দেন এবং ভূমি বা কোন কিছুকে যেন তাঁর এ অবস্থা বিনষ্ট করার সুযোগ না দেন এবং এভাবে তাকে সিজদারত অবস্থায়ই পুনরুত্থিত করেন। তিনি (জিবরীল আ), আল্লাহ তাআলা তাই করলেন। এখন যখন আমরা (পৃথিবীতে) অবতরণ করি এবং (অকাশে)। আরোহন করি তখন। আর তার উপর দিয়েই গমনাগমন করি। তার ব্যাপারে আমরা লাওহে মাহফুজের মধ্যে দেখতে পাই যে, ওকে কিয়ামতের দিন পুনরুত্থিত করা হবে এবং তাকে অল্লাহ তাআলার সামনে দণ্ডায়মান করা হবে। অতপর আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর সম্পর্কে বলবেন, তোমরা আমার বান্দাকে আমার দয়ায় জান্নাতে দাখিল কর। সে বলবে, প্রভু! বরং আমার আমলের বিনিময়ে। তারপর তিনি বলবেন, তোমরা আমার বান্দাকে আমার দয়ায় জান্নাতে দাখিল কর। সে বলবে, প্রভু! বরং আমার আমলের বিনিময়ে। এরপর অল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা আমার বান্দার প্রতি আমার প্রদত্ত নিয়ামত ও তার আমলের অনুগত কর। তখন দেখা যাবে যে কেবল এক দর্শনেন্দ্রিয়ের নিয়ামতই তার পাঁচশ বছরের ইবাদতকে গিলে নিয়েছে এবং শরীরে অবশিষ্ট এ প্রতঙ্গের নিয়ামত তার জন্য অবশিষ্ট রয়ে গেছে।
এবার অল্লাহ্ তা'আলা বলবেন, তোমরা আমার বান্দাকে জাহান্নামে দাখিল কর। সেমতে তাকে জাহান্নামের নিকে হেঁচড়িয়ে নেওয়া হবে। তখন সে ডেকে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! তোমার দয়ায় আমাকে জান্নাতে দাখিল কর। তিনি বলবেন, তাকে ফিরিয়ে আন। সুতরাং তাকে আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড় করানো হলে তখন তিনি বলবেনঃ হে আমার বান্দা। তুই তো কিছুই ছিলে না, কে তোকে সৃষ্টি করেছে? সে বলবে প্রভু তুমিই। তিনি আবার জিজ্ঞেস করবেন, কে তোকে পাঁচশ বছর ইবাদত করার শক্তি দিয়েছিল? সে বলবে, প্রভু তুমিই। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, কে তোকে সমুদ্রের মাঝখানে একটি পর্বতে উপনীত করেছিল, তোর জন্য লবণাক্ত পানির মধ্য থেকে মিঠা পানি বের করে দিয়েছিল। তোর জন্য প্রত্যেক রাত্রে একটি করে ডালিম সৃষ্টি করে দিয়েছিল, অথচ ডালিম বছরে একবারই উৎপন্ন হয় এবং তুই কার কাছে প্রার্থনা করেছিলে যে- তিনি যেন তোকে সিজদারত অবস্থায় মৃত্যু দেন, যার ফলে তিনি তাই করেছিলেন? সে বলবে, হে প্রভু তুমিই। তিনি বলবেন, এসব আমার দয়ায়ই হয়েছিল এবং আমি আমার দয়ায় তোকে জান্নাতে দাখিল করব। (ফিরিশতাকূল।) তোমরা আমার বান্দাকে জান্নাতে দাখিল কর। হে আমার বান্দা! তুই ভাল বান্দাই ছিলে। তারপর আল্লাহ্ তা'আলা তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। জিব্রীল (আ) বলেন, হে মুহাম্মদ (ﷺ) সবকিছু আল্লাহর রহমতেই হয়।
(হাকিম সুলায়মান-এর সূত্রে মুহাম্মদ ইবন মুনকাদির-এর মধ্যস্থতায় জাবির থেকে হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন, এর সনদ সহীহ।)
كتاب البعث
فصل في ذكر الحساب وغيره
5484- وَعَن جَابر رَضِي الله عَنهُ قَالَ خرج علينا رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ خرج من عِنْدِي خليلي جِبْرِيل آنِفا فَقَالَ يَا مُحَمَّد وَالَّذِي بَعثك بِالْحَقِّ إِن لله عبدا من عباده عبد الله خَمْسمِائَة سنة على رَأس جبل فِي الْبَحْر عرضه وَطوله ثَلَاثُونَ ذِرَاعا فِي ثَلَاثِينَ ذِرَاعا وَالْبَحْر مُحِيط بِهِ أَرْبَعَة آلَاف فَرسَخ من كل نَاحيَة وَأخرج لَهُ عينا عذبة بِعرْض الْأصْبع تفيض بِمَاء عذب فيستنقع فِي أَسْفَل الْجَبَل وشجرة رمان تخرج لَهُ فِي كل لَيْلَة رمانة يتعبد يَوْمه فَإِذا أَمْسَى نزل فَأصَاب من الْوضُوء وَأخذ تِلْكَ الرمانة فَأكلهَا ثمَّ قَامَ لصلاته فَسَأَلَ
ربه عِنْد وَقت الْأَجَل أَن يقبضهُ سَاجِدا وَأَن لَا يَجْعَل للْأَرْض وَلَا لشَيْء يُفْسِدهُ عَلَيْهِ سَبِيلا حَتَّى يَبْعَثهُ الله وَهُوَ ساجد قَالَ فَفعل فَنحْن نمر عَلَيْهِ إِذا هبطنا وَإِذا عرجنا فنجد لَهُ فِي الْعلم أَنه يبْعَث يَوْم الْقِيَامَة فَيُوقف بَين يَدي الله فَيَقُول لَهُ الرب أدخلُوا عَبدِي الْجنَّة برحمتي فَيَقُول رب بل بعملي فَيَقُول أدخلُوا عَبدِي الْجنَّة برحمتي فَيَقُول رب بل بعملي فَيَقُول الله قايسوا عَبدِي بنعمتي عَلَيْهِ وبعمله فتوجد نعْمَة الْبَصَر قد أحاطت بِعبَادة خَمْسمِائَة سنة وَبقيت نعْمَة الْجَسَد فضلا عَلَيْهِ فَيَقُول أدخلُوا عَبدِي النَّار فيجر إِلَى النَّار فينادي رب بِرَحْمَتك أدخلني الْجنَّة فَيَقُول ردُّوهُ فَيُوقف بَين يَدَيْهِ فَيَقُول يَا عَبدِي من خلقك وَلم تَكُ شَيْئا فَيَقُول أَنْت يَا رب فَيَقُول من قواك لعبادة خَمْسمِائَة سنة فَيَقُول أَنْت يَا رب فَيَقُول من أنزلك فِي جبل وسط اللجة وَأخرج لَك المَاء العذب من المَاء المالح وَأخرج لَك كل لَيْلَة رمانة وَإِنَّمَا تخرج مرّة فِي السّنة وَسَأَلته أَن يقبضك سَاجِدا فَفعل فَيَقُول أَنْت يَا رب قَالَ فَذَلِك برحمتي وبرحمتي أدْخلك الْجنَّة أدخلُوا عَبدِي الْجنَّة فَنعم العَبْد كنت يَا عَبدِي فَأدْخلهُ الله الْجنَّة
قَالَ جِبْرِيل إِنَّمَا الْأَشْيَاء برحمة الله يَا مُحَمَّد

رَوَاهُ الْحَاكِم عَن سُلَيْمَان بن هرم عَن مُحَمَّد بن الْمُنْكَدر عَن جَابر وَقَالَ صَحِيح الْإِسْنَاد
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান