আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

২৪. অধ্যায়ঃ জানাযা

হাদীস নং: ৫৪২৮
অধ্যায়ঃ জানাযা
অনুচ্ছেদ
৫৪২৮. হযরত বারা' ইবন আযিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে জনৈক আনসারের জানাযায় গেলাম এবং আমরা কবর পর্যন্ত পৌছলাম। যখন তাঁকে একটু পরে দাফন করা হবে, এমন সময় হলো, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বসলেন, আমরাও তাঁর পাশে এভাবে বসলাম, যেন আমাদের মাথার উপর পাখি বসে রয়েছে। তাঁর হাতে ছিল একটি ছড়ি, তদ্দ্বারা তিনি মাটি খোঁচাতে লাগলেন। এরপর মাথা তুলে বললেন, তোমরা কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর। তিনি দু'বার বা তিনবার তা' বললেন।
অপর এক রিওয়ায়েতে এ অংশটুকু বেশি আছে, তিনি আরও বললেন, "মৃত ব্যক্তি তাদের (দাফনকারীদের) জুতোর শব্দ শুনতে পায়, যখন তারা পেছন ফিরে চলে আসে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ওহে, তোমার প্রতিপালক কে? তোমার দ্বীন কি? এবং তোমার নবী কে?"
আরেক রিওয়ায়েতে আছে, তার কাছে দু'জন ফিরিশতা এসে তাকে বসায় এবং তাকে লক্ষ্য করে বলে: "তোমার প্রতিপালক কে? সে বলে, আমার প্রতিপালক আল্লাহ্। এরপর তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার দ্বীন কি? সে বলে, আমার দ্বীন ইসলাম। তারপর তারা তাকে জিজ্ঞেস করে এ লোকটি কে, যিনি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছেন? সে বলে, তিনি আল্লাহর রাসূল। তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, তুমি কিভাবে তা জানলে? সে বলে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, তা বিশ্বাস করেছি এবংতার সত্যতা সমর্থন করেছি।"
অন্য এক রিওয়ায়েতে এ অংশটুকু বেশি আছে। আল্লাহ্ তা'আলার সেই বাণী হচ্ছে:
يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ যারা শাশ্বত বাণীতে বিশ্বাসী তাদেরকে দুনিয়ার জীবনে এবং পরকালে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন" (১৪ঃ ২৭)। তখন আকাশ থেকে একজন আহ্বানকারী ডেকে বলে, নিশ্চয় আমার বান্দা সত্য বলেছে। সুতরাং তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোষাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও, যাতে তার কাছে জান্নাতের বাতাস ও সুগন্ধি পৌঁছে এবং তার দৃষ্টি শক্তির সীমা পর্যন্ত তার কবর তার জন্য প্রশস্ত করে দেওয়া হয়। তারপর তিনি কাফিরের মৃত্যুর আলোচনা করে বললেন, তারপর তার দেহে তার প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং দু'জন ফিরিস্তা তার কাছে এসে তাকে বসায়। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার প্রতিপালক কে? সে বলে, এ-এ- আমি জানি না। তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার দ্বীন কি? সে বলে, এ-এ- আমি জানি না। তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, এ লোকটি কে, যিনি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছেন? সে বলে, এ- এ- আমি জানি না। তখন আকাশ থেকে একজন আহবানকারী ডেকে বলে, সে মিথ্যা বলেছে। সুতরাং তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জাহান্নামের পোষাক পরিয়ে দাও এবং জাহান্নামের দিকে তার জন্য একটি দরজা খুলে দাও, যাতে তার কাছে জাহান্নামের তাপ ও গরম বাতাস পৌছে এবং তার জন্য তার কবর এভাবে সংকীর্ণ করে দেওয়া হয় যে, তার পাঁজরের হাঁড়গুলো একটা অপরটার ফাঁকে ঢুকে পড়ে।
আরেক রিওয়ায়েতে এ অংশটুকু বেশি আছে, অতঃপর তার জন্য অন্ধ ও মূক একজন ফিরিশতা নিযুক্ত করা হয়, যার কাছে থাকে লোহার হাতুড়ী। যদি উক্ত হাতুড়ী দ্বারা পর্বতের উপর আঘাত করা হয়, তবে তা ধূলিতে পরিণত হয়ে যাবে। তারপর তাকে সে ফিরিশতা উক্ত হাতুড়ী দ্বারা এভাবে আঘাত করে যে, জিন ও মানব ব্যতীত পূর্ব দিগন্ত ও পশ্চিম দিগন্তের মধ্যবর্তী সমগ্র সৃষ্টিজগৎ সে আঘাতের শব্দ শুনতে পায়। ফলে সে ধূলিতে পরিণত হয়ে যায়। এরপর তার মধ্যে আবার প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
(আবু দাউদ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আহমাদ এমন একটি সনদে এর চেয়ে দীর্ঘ আকারে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, যার সকল বর্ণনাকারী সহীহ হাদীসের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। আহমাদ বর্ণিত রিওয়ায়েতের ভাষা এইঃ তিনি বলেন: "আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে গেলাম। তারপর তিনি পূর্ববৎ বর্ণনা দিয়ে বলেন, তারপর তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মাথা তুলে বললেন, তোমরা কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর। কথাটি তিনি দু'বার বা তিনবার বললেন। এরপর বললেন, মু'মিন বান্দা যখন দুনিয়ার অন্তিম মুহূর্তে এবং পরকালের সূচনা পর্বে পৌঁছে, তখন আকাশ থেকে সূর্যের মত উজ্জ্বল চেহারা বিশিষ্ট কিছু ফিরিশতা তার কাছে অবতীর্ণ হয়, তাদের কাছে থাকে জান্নাতের কাফন ও জান্নাতের সুগন্ধি। তাঁরা তার দৃষ্টি সীমার মধ্যে। এরপর মৃত্যুর ফিরিশতা আসে এবং তার শিয়রের কাছে বসে বলেন হে পবিত্র প্রাণ। তুমি আল্লাহর মাগফিরাত ও সন্তুষ্টির দিকে বের হয়ে আস। তিনি বলেন তারপর প্রাণ বের হয় এবং এভাবে বেয়ে পড়ে। যেভাবে মশকের সুখ থেকে পানির ফোঁটা বেয়ে পড়ে। তখন ফিরিশতা তাকে নিয়ে নেয় এবং নেওয়ার পর চোখের পলক পরিমাণ সময়ও তার হাতে রাখে না। তাকে নিয়ে সেই কাফনের মধ্যে এবং সেই সুগন্ধির মধ্যে রেখে দেয় এবং পৃথিবীতে যত মেশকের সুগন্ধি পাওয়া যায় তন্মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট মেশকের সুগন্ধির মত হয়ে সেখান থেকে বের হয়। তিনি বলেন, তারপর তারা তাকে নিয়ে উর্ধ্বে গমন করে এবং তারা ফিরিশতাদের যে দলের পাশ দিয়েই যায়, তারা জিজ্ঞেস করে, এ পবিত্রটি কে? তারা তার দুনিয়ায় যে সব নাম বলা হত, তন্মধ্যে সর্বোত্তম নামটি ব্যবহার করে বলে, অমুখের ছেলে অমুক। এভাবে তারা নিকটবর্তী আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে এবং তারা তার জন্য দরজা খুলতে বলে। তখন তার জন্য দরজা খোলা হয়। অতঃপর প্রত্যেক আকাশ থেকে তার নিকটবর্তী ফিরিশতাগণ পরবর্তী আকাশ পর্যন্ত তাকে এগিয়ে দেয়। এভাবে সে সপ্তমাকাশ পর্যন্ত পৌঁছে। তখন আল্লাহ তা'আলা বলেন, তোমরা আমার বান্দার ভাগ্য ইল্লিয়ীনের মধ্যে লিপিবদ্ধ কর এবং তাকে পৃথিবীতে তার দেহে ফিরিয়ে দাও। তারপর দু'জন ফিরিশতা তার কাছে এসে তাকে বসায়। তারপর তাকে লক্ষ্য করে বলে। তোমার প্রতিপালক কে? সে বলে, আমার প্রতিপালক আল্লাহ। তারা জিজ্ঞেস করে, তোমার দ্বীন কি? সে বলে, আমার দ্বীন ইসলাম। তারা জিজ্ঞেস করে এলাকাটি কে? যিনি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছেন। সে বলে, আল্লাহর রাসূল। তারা জিজ্ঞেস করে, তুমি কিভাবে তা জানলে? সে বলে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, তার প্রতি ঈমান
এনেছি এবং তার সত্যতা সমর্থন করেছি। তখন আকাশ থেকে একজন আহবানকারী ডেকে বলে, আমার বান্দাহ সত্য বলেছে। সুতরাং তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। তিনি বলেন, ফলে তার কাছে জান্নাতের মৃদু বায়ু ও সুগন্ধি আসতে থাকে এবং তার জন্য তার কবর দৃষ্টি সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এবং সুন্দর চেহারা বিশিষ্ট, সুন্দর পোষাক পরিহিত ও সুগন্ধিময় এক ব্যক্তি তার কাছে আসে এবং তাকে বলে, তুমি তোমার জন্য আনন্দদায়ক সুসংবাদ গ্রহণ কর। তোমাকে (জীবৎকালে) এ দিবসের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত। সে জিজ্ঞেস করে, তুমি কে? তোমার সুন্দর চেহারা কল্যাণ বয়ে আনে। লোকটি বলে, আমি তোমার নেক আমল। সে বলে, হে আমার প্রতিপালক কিয়ামত কায়েম কর। হে আমার প্রতিপালক! কিয়ামত কায়েম কর, যাতে করে আমি আমার পরিবার ও সম্পদের কাছে ফিরে যেতে পারি।
পক্ষান্তরে, কাফির যখন দুনিয়ার অন্তিম মুহূর্তে এবং আখিরাতের সূচনা পর্বে পৌছে তখন তার কাছে কুৎসিত চেহারা বিশিষ্ট কিছু ফিরিশতা আসে। তাদের কাছে থাকে চট। তারা তার দৃষ্টি সীমার মধ্যে বসে। এরপর মৃত্যুর ফিরিশতা এসে তার শিয়রের কাছে বসে। অতঃপর বলে, হে অপবিত্র আত্মা। আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভের দিকে বের হয়ে আয়। তখন সে তার দেহে বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়। তারপর তাকে এভাবে টেনে বের করা হয়, যেভাবে ভেজা পশম থেকে লৌহ শলাকা টেনে বের করা হয়। এরপর সে প্রাণটি নিয়ে নেয়। নিয়ে নেওয়ার পর চোখের পলক পরিমাণ সময়ও তার হাতে রাখে না। নিয়ে তাকে সেই চটের মধ্যে রাখে এবং সেখান থেকে পৃথিবীতে যত দুর্গন্ধ রয়েছে তন্মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য দুর্গন্দময়ের রূপে বের হয়। তারা তাকে নিয়ে ঊর্ধ্বে গমন করে। তখন তারা ফিরিশতাদের যে দলের পাশ দিয়েই যায়, তারা জিজ্ঞেস করে, এ দুর্গন্ধটি কিসের। তারা দুনিয়াতে তার যেসব নাম বলা হত তন্মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণ্য নামটি ব্যবহার করে বলে, অমুকের পুত্র অমুক। এভাবে তাকে দুনিয়ায় নিকটবর্তী আকাশ পর্যন্ত পৌছানো হয়। তখন তার জন্য দরজা খুলতে বলা হয়। সুতরাং তার জন্য দরজা খুলে দেয়া হয় না। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)
لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَلَا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى يَلِجَ الْجَمَلُ فِي سَمِّ الْخِيَاطِ তিলাওয়াত করলেন: তাদের জন্য আকাশের দরজা খোলা হবে না এবং তারা জান্নাতেও প্রবেশ করবেনা, যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্রে উট প্রবেশ করে। (৭:৪০) তখন আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, তোমরা তার ভাগ্য নিম্নতম ভূস্তরে সিজ্জীনে লিপিবদ্ধ কর। তারপর তার প্রাণকে বিতাড়িত করা হয় এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ
وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَكَأَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَاءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ أَوْ تَهْوِي بِهِ الرِّيحُ فِي مَكَانٍ سَحِيقٍ যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে যেন আকাশ থেকে (ভূবনে) পড়ে। তারপর 'তাকে পাখি ছুঁ মেরে নিয়ে নেয় অথবা বায়ু তাকে সুদূর স্থানে উড়িয়ে নিয়ে যায়।” (২২ঃ ৩১) তারপর তার প্রাণ তার দেহে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং দু'জন ফিরিশতা তার কাছে এসে তাকে বসায়। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার প্রতিপালক কে হে? সে বলে, এ-এ-- আমি জানি না। তিনি বলেন, এর তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার দ্বীন কি? সে বলে, এ-- এ- আমি জানি না। তিনি বলেন, তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, এ লোকটি কে, যিনি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন? সে বলে, এ-- এ.. আমি জানি না। তখন আকাশ থেকে একজন আহ্বানকারী ডেকে বলে, সে মিথ্যা বলেছে। সুতরাং তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও, তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। ফলে জাহান্নামের উত্তাপ ও গরম বায়ু তার কাছে আসতে থাকে এবং তার জন্য তার কবর এভাবে সংকীর্ণ করে দেওয়া হয় যে, তার পাঁজর একটা অপরটার ফাঁকে ঢুকে পড়ে। তারপর কুৎসিত চেহারা বিশিষ্ট, ময়লাযুক্ত পোষাক পরিহিত পুঁতে দূর্গন্ধময় এক ব্যক্তি তার কাছে আসে এবং বলে, তুমি তোমার জন্য অসন্তুষ্টিকর সংবাদ গ্রহণ কর। এটাই সেই দিবস যার ভয় তোমাকে দেখানো হত। সে জিজ্ঞেস করে, তুমি কে? তোমার কুৎসিত চেহারা অকল্যাণ বয়ে আনে। লোকটি বলে, আমি তোমার বদ্‌আমল। তখন সে বলে, হে আমার প্রতিপালক! কিয়ামত কায়েম করো না। তাঁর অপর রিওয়ায়েতে একই অর্থবোধক ভিন্ন একটি হাদীস বর্ণিত আছে। এতে এ অংশটুকু বেশি আছেঃ "অতঃপর কুৎসিত চেহারা বিশিষ্ট, ময়লাযুক্ত কাপড় পরিহিত, পুঁতি দুর্গন্ধময় এক আগমনকারী আসে এবং বলে, তুমি আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা ও চিরস্থায়ী আযাবের সনদ গ্রহণ কর। সে বলে, আল্লাহ্ তোমাকে অকল্যাণের সনদ দিন, তুমি কে? আগমনকারী বলে, আমি তোমার বদ আমল। তুমি আল্লাহর আনুগত্যের ও তাঁর মন্থর বিরুদ্ধাচরণে খুব চটপটে ছিলে। সুতরাং আল্লাহ্ তোমাকে মন্দ সাজা দিয়েছেন। তারপর তার জন্য একজন অন্ধ, বধির ও মুক ফিরিশতা নিযুক্ত করা হয়, তার হাতে থাকে লোহার হাতুড়ী তদ্দ্বারা যদি পর্বতকে আঘাত করা হয়, তবে তা ধূলিতে পরিণত হয়ে যায়। (সে গুর্জ দ্বারা) তাকে এভাবে আঘাত করে যে, সে ধূলিতে পরিণত হয়ে যায়। পুনরায় তাকে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তাকে আরেকটি আঘাত করা হয়, ফলে সে এমনভাবে চিৎকার করে যে, জিন ও মানবও ব্যতীত সবকিছু সে শব্দ শুনে।
রাবী বারা' বলেন, তারপর তার জন্য জাহান্নামের একটি দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং তার জন্যে জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দেওয়া হয়।
[হাফিয (র) বলেনঃ] এ হাদীসটি হাসান হাদীস। পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে যে, এ হাদীসের সকল বর্ণনাকারী সহীহ হাদীসের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। এ হাদীস মিনহাল ইব্‌ন আমর-এর সনদে যাযান-এর সূত্রে বারা ইবন আযিব (রা)-থেকে বর্ণিত বলে খ্যাত। আবু মুসা ইস্পাহানী অনুরূপ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বুখারী (র) মিনহালের সূত্রে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। ইবন মুঈন বলেন, মিনহাল নির্ভরযোগ্য। আহমাদ ইজলী বলেন, তিনি কূফার অধিবাসী একজন নির্ভরযোগ্য রাবী। আহমাদ ইবন হাম্বল (র) বলেন, শু'বা তাঁকে মুহাম্মদের উপর নির্ভর করে পরিত্যাগ করেছেন। আব্দুর রহমান ইব্‌ন আবু হাতিম বলেন, তাঁর ঘর থেকে সুরের সাথে কিরা'আতের শব্দ শোনা গেছে। আব্দুল্লাহ ইবন আহমাদ ইবন হাম্বল বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, আবু বিশর আমার কাছে মিনহালের চেয়ে অধিক প্রিয়। যাযান একজন প্রখ্যাত নির্ভরযোগ্য রাবী। কেউ কেউ তাকে দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন। মুসলিম স্বীয় 'সহীহ্'-এ তাঁর সূত্রে দু'টো হাদীস বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী মিনহালের সনদে আহমাদের রিওয়ায়েতের মতই হাদীসটি বর্ণনা করে তিনি বলেন, হাদীসটি সহীহ সনদ বিশিষ্ট। ঈসা ইবন মুসায়্যিব আদী ইবন সাবিত-এর সনদে বারা' (রা)-এর সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। উক্ত রিওয়ায়েতে সে দু'জন ফিরিশতার নাম উল্লেখ করেছেন। তাতে মু'মিনের আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, তারপর তাকে তার ঠিকানায় ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং তার কাছে মুনকার নাকীর নামক দুই ফিরিশতা আসে। তারা তাদের ছেদন দন্ত দ্বারা মাটি খনন করে এবং তাদের ঠোঁট দ্বারা ভূমিকে প্রশস্ত করে। তারপর তাকে উঠিয়ে বসায় এবং তাকে জিজ্ঞেস করা হয়। ওহে! তোমার প্রতিপালক কে? এভাবে তিনি হাদীসটি উল্লেখ করেছেন।
কাফিরের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারপর মুনকার-নাকীর নামক দু'জন ফিরিশতা তার কাছে আসে তারা তাদের নাব দন্ত দ্বারা মাটি খনন করে এবং তার ঠোঁট দ্বারা ভূমিকে প্রশস্ত করে, তাদের আওয়াজ মহা বজ্রনাদের মত, তাদের চক্ষু দৃষ্টিশক্তি লোপকারী বিদ্যুতের মত। তারা তাকে উঠিয়ে বসায়। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ওহে তোমার প্রতিপালক কে? সে বলে, আমি জানি না। তখন কবরের দিক থেকে তাকে ডেকে বলা হয়, তুমি জান না। এবং তাকে তারা লোহার হাতুড়ী দিয়ে আঘাত করে। উদাহরণও অস্তাচলের মধ্যবর্তী যত সৃষ্টি রয়েছে তাদের সবার উপর যদি এক সাথে সে আঘাত করা হত, তবে তারা সকলেই তাকে সমবেতভাবেও তাকে কম জ্ঞান করত না। যার ফলে তার কবর অগ্নিপূর্ণ হয়ে যাবে এবং তার কবর এভাবে সংকীর্ণ করে দেওয়া হবে যে, তার পাঁজরের হাড়গুলো একটা অপরটার মধ্যে ঢুকে পড়বে।
كتاب الجنائز
فصل
5431- وَعَن الْبَراء بن عَازِب رَضِي الله عَنهُ قَالَ خرجنَا مَعَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فِي جَنَازَة رجل من الْأَنْصَار فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَبْر وَلما يلْحد بعد فَجَلَسَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَجَلَسْنَا حوله كَأَنَّمَا على رؤوسنا الطير وَبِيَدِهِ عود ينكت بِهِ فِي الأَرْض فَرفع رَأسه فَقَالَ تعوذوا بِاللَّه من عَذَاب الْقَبْر مرَّتَيْنِ أَو ثَلَاثًا
زَاد فِي رِوَايَة وَقَالَ إِن الْمَيِّت يسمع خَفق نعَالهمْ إِذا ولوا مُدبرين حِين يُقَال لَهُ يَا هَذَا من رَبك وَمَا دينك وَمن نبيك
وَفِي رِوَايَة ويأتيه ملكان فيجلسانه فَيَقُولَانِ لَهُ من رَبك فَيَقُول رَبِّي الله فَيَقُولَانِ لَهُ وَمَا دينك فَيَقُول ديني الْإِسْلَام فَيَقُولَانِ لَهُ مَا هَذَا الرجل الَّذِي بعث فِيكُم فَيَقُول هُوَ رَسُول الله فَيَقُولَانِ لَهُ وَمَا يدْريك فَيَقُول قَرَأت كتاب الله وَآمَنت وصدقت
زَاد فِي رِوَايَة فَذَلِك قَوْله يثبت الله الَّذين آمنُوا بالْقَوْل الثَّابِت فِي الْحَيَاة الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَة إِبْرَاهِيم 72 فينادي مُنَاد من السَّمَاء أَن صدق عَبدِي فافرشوه من الْجنَّة وألبسوه من الْجنَّة وافتحوا لَهُ بَابا إِلَى الْجنَّة فيأتيه من روحها وطيبها ويفسح لَهُ فِي قَبره مد بَصَره وَإِن الْكَافِر فَذكر مَوته قَالَ فتعاد روحه فِي جسده ويأتيه ملكان فيجلسانه فَيَقُولَانِ من رَبك فَيَقُول هاه هاه لَا أَدْرِي فَيَقُولَانِ مَا دينك فَيَقُول هاه هاه لَا أَدْرِي فَيَقُولَانِ لَهُ مَا هَذَا الرجل الَّذِي بعث فِيكُم فَيَقُول هاه هاه لَا أَدْرِي فينادي مُنَاد من السَّمَاء أَن قد كذب فافرشوه من النَّار وألبسوه من النَّار وافتحوا لَهُ بَابا إِلَى النَّار فيأتيه من حرهَا وسمومها ويضيق عَلَيْهِ قَبره حَتَّى تخْتَلف فِيهِ أضلاعه
زَاد فِي رِوَايَة ثمَّ يقيض لَهُ أعمى أبكم مَعَه مرزبة من حَدِيد لَو ضرب بهَا جبلا لصار تُرَابا فيضربه بهَا ضَرْبَة يسْمعهَا من بَين الْمشرق وَالْمغْرب إِلَّا الثقلَيْن فَيصير تُرَابا ثمَّ تُعَاد فِيهِ الرّوح
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَرَوَاهُ أَحْمد بِإِسْنَاد رُوَاته مُحْتَج بهم فِي الصَّحِيح أطول من هَذَا وَلَفظه قَالَ خرجنَا مَعَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَذكر مثله إِلَى أَن قَالَ فَرفع رَأسه فَقَالَ استعيذوا بِاللَّه من عَذَاب الْقَبْر مرَّتَيْنِ أَو ثَلَاثًا ثمَّ قَالَ إِن العَبْد الْمُؤمن إِذا كَانَ فِي انْقِطَاع من الدُّنْيَا وإقبال من الْآخِرَة نزل إِلَيْهِ مَلَائِكَة من السَّمَاء بيض الْوُجُوه كَأَن وُجُوههم الشَّمْس مَعَهم كفن من أكفان الْجنَّة وحنوط من حنوط الْجنَّة حَتَّى يجلسوا مِنْهُ مد الْبَصَر وَيَجِيء ملك الْمَوْت عَلَيْهِ السَّلَام حَتَّى يجلس عِنْد رَأسه فَيَقُول أيتها النَّفس الطّيبَة اخْرُجِي إِلَى مغْفرَة من الله ورضوان قَالَ فَتخرج فتسيل كَمَا تسيل القطرة من فِي السقاء فيأخذها فَإِذا أَخذهَا لم يدعوها فِي يَده طرفَة عين حَتَّى يأخذوها فيجعلوها فِي ذَلِك الْكَفَن وَفِي ذَلِك الحنوط وَيخرج مِنْهُ كأطيب نفحة مسك وجدت على وَجه الأَرْض قَالَ فيصعدون بهَا فَلَا يَمرونَ على ملاء من الْمَلَائِكَة إِلَّا قَالُوا مَا هَذَا الرّوح الطّيب فَيَقُولَانِ فلَان ابْن فلَان بِأَحْسَن أَسْمَائِهِ الَّتِي كَانَ يُسمى بهَا فِي الدُّنْيَا حَتَّى ينْتَهوا بهَا إِلَى السَّمَاء الدُّنْيَا فيستفتحون لَهُ فَيفتح لَهُ فيشيعه من كل سَمَاء مقربوها إِلَى السَّمَاء الَّتِي تَلِيهَا حَتَّى ينتهى بهَا إِلَى السَّمَاء السَّابِعَة فَيَقُول الله عز وَجل اكتبوا كتاب عَبدِي فِي عليين وأعيدوه إِلَى الأَرْض فِي جسده فيأتيه ملكان فيجلسانه فَيَقُولَانِ من رَبك فَيَقُول رَبِّي الله فَيَقُولَانِ مَا دينك فَيَقُول ديني الْإِسْلَام فَيَقُولَانِ مَا هَذَا الرجل الَّذِي بعث فِيكُم فَيَقُول هُوَ رَسُول الله فَيَقُولَانِ مَا يدْريك فَيَقُول قَرَأت كتاب الله وَآمَنت بِهِ وصدقته فينادي مُنَاد من السَّمَاء أَن قد صدق عَبدِي فأفرشوه من الْجنَّة وافتحوا لَهُ بَابا إِلَى الْجنَّة
قَالَ فيأتيه من روحها وطيبها ويفسح لَهُ فِي قَبره مد بَصَره
قَالَ ويأتيه رجل حسن الْوَجْه حسن الثِّيَاب طيب الرّيح فَيَقُول أبشر بِالَّذِي يَسُرك هَذَا يَوْمك الَّذِي كنت توعد فَيَقُول من أَنْت فوجهك الْوَجْه الْحسن يَجِيء بِالْخَيرِ فَيَقُول أَنا عَمَلك الصَّالح فَيَقُول رب أقِم السَّاعَة رب أقِم السَّاعَة حَتَّى أرجع إِلَى أَهلِي وَمَالِي وَإِن العَبْد الْكَافِر إِذا كَانَ فِي انْقِطَاع من الدُّنْيَا وإقبال من الْآخِرَة نزل إِلَيْهِ مَلَائِكَة سود الْوُجُوه مَعَهم المسوح فَيَجْلِسُونَ مِنْهُ مد الْبَصَر ثمَّ يَجِيء ملك الْمَوْت حَتَّى يجلس عِنْد رَأسه فَيَقُول أيتها النَّفس الخبيثة اخْرُجِي إِلَى سخط من الله وَغَضب فَتفرق فِي جسده فينتزعها كَمَا ينتزع السفود من الصُّوف المبلول فيأخذها فَإِذا أَخذهَا لم يدعوها فِي يَده طرفَة عين حَتَّى يجعلوها فِي تِلْكَ المسوح وَتخرج مِنْهَا كأنتن
جيفة وجدت على وَجه الأَرْض فيصعدون بهَا فَلَا يَمرونَ بهَا على ملاء من الْمَلَائِكَة إِلَّا قَالُوا مَا هَذِه الرّيح الخبيثة فَيَقُولُونَ فلَان ابْن فلَان بأقبح أَسْمَائِهِ الَّتِي كَانَ يُسمى بهَا فِي الدُّنْيَا حَتَّى ينتهى بهَا إِلَى السَّمَاء الدُّنْيَا فيستفتح لَهُ فَلَا يفتح لَهُ ثمَّ قَرَأَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَا تفتح لَهُم أَبْوَاب السَّمَاء وَلَا يدْخلُونَ الْجنَّة حَتَّى يلج الْجمل فِي سم الْخياط الْأَعْرَاف 04 فَيَقُول الله عز وَجل اكتبوا كِتَابه فِي سِجِّين فِي الأَرْض السُّفْلى ثمَّ تطرح روحه طرحا ثمَّ قَرَأَ وَمن يُشْرك بِاللَّه فَكَأَنَّمَا خر من السَّمَاء فتخطفه الطير أَو تهوي بِهِ الرّيح فِي مَكَان سحيق الْحَج 13 فتعاد روحه فِي جسده ويأتيه ملكانه فيجلسانه فَيَقُولَانِ لَهُ من رَبك فَيَقُول هاه هاه لَا أَدْرِي
قَالَ فَيَقُولَانِ لَهُ مَا دينك فَيَقُول هاه هاه لَا أَدْرِي
قَالَ فَيَقُولَانِ لَهُ مَا هَذَا الرجل الَّذِي بعث فِيكُم فَيَقُول هاه هاه لَا أَدْرِي فينادي مُنَاد من السَّمَاء أَن كذب فأفرشوه من النَّار وافتحوا لَهُ بَابا إِلَى النَّار فيأتيه من حرهَا وسمومها ويضيق عَلَيْهِ قَبره حَتَّى تخْتَلف فِيهِ أضلاعهد ويأتيه رجل قَبِيح الْوَجْه قَبِيح الثِّيَاب منتن الرّيح فَيَقُول أبشر بِالَّذِي يسوؤك هَذَا يَوْمك الَّذِي كنت توعد فَيَقُول من أَنْت فوجهك الْوَجْه الْقَبِيح يَجِيء بِالشَّرِّ فَيَقُول أَنا عَمَلك الْخَبيث فَيَقُول رب لَا تقم السَّاعَة
وَفِي رِوَايَة لَهُ بِمَعْنَاهُ وَزَاد فيأتيه آتٍ قَبِيح الْوَجْه قَبِيح الثِّيَاب منتن الرّيح فَيَقُول أبشر بهوان من الله وَعَذَاب مُقيم فَيَقُول بشرك الله بِالشَّرِّ من أَنْت فَيَقُول أَنا عَمَلك الْخَبيث كنت بطيئا عَن طَاعَة الله سَرِيعا فِي مَعْصِيَته فجزاك الله بشر ثمَّ يقيض لَهُ أعمى أَصمّ أبكم فِي يَده مرزبة لَو ضرب بهَا جبل كَانَ تُرَابا فيضربه ضَرْبَة فَيصير تُرَابا ثمَّ يُعِيدهُ الله كَمَا كَانَ فيضربه ضَرْبَة أُخْرَى فَيَصِيح صَيْحَة يسمعهُ كل شَيْء إِلَّا الثقلَيْن
قَالَ الْبَراء ثمَّ يفتح لَهُ بَاب من النَّار ويمهد لَهُ من فرش النَّار
قَالَ الْحَافِظ هَذَا الحَدِيث حَدِيث حسن رُوَاته مُحْتَج بهم فِي الصَّحِيح كَمَا تقدم وَهُوَ مَشْهُور بالمنهال بن عَمْرو عَن زَاذَان عَن الْبَراء كَذَا قَالَ أَبُو مُوسَى الْأَصْبَهَانِيّ رَحمَه الله والمنهال روى لَهُ البُخَارِيّ حَدِيثا وَاحِدًا
وَقَالَ ابْن معِين الْمنْهَال ثِقَة
وَقَالَ أَحْمد الْعجلِيّ كُوفِي ثِقَة
وَقَالَ أَحْمد بن حَنْبَل تَركه شُعْبَة على مُحَمَّد
قَالَ عبد الرَّحْمَن بن أبي حَاتِم لِأَنَّهُ سمع من دَاره صَوت قِرَاءَة بالتطريب وَقَالَ عبد الله بن أَحْمد بن حَنْبَل
سَمِعت أبي يَقُول أَبُو بشر أحب إِلَيّ من الْمنْهَال وزاذان ثِقَة مَشْهُور ألانه بَعضهم وروى لَهُ مُسلم حديثين فِي صَحِيحه وَرَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ من طَرِيق الْمنْهَال بِنَحْوِ رِوَايَة أَحْمد ثمَّ قَالَ وَهَذَا حَدِيث صَحِيح الْإِسْنَاد وَقد رَوَاهُ عِيسَى بن الْمسيب عَن عدي بن ثَابت عَن الْبَراء عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَذكر فِيهِ اسْم الْملكَيْنِ فَقَالَ فِي ذكر الْمُؤمن فَيرد إِلَى مضجعه فيأتيه مُنكر وَنَكِير يثيران الأَرْض بأنيابهما ويلجفان الأَرْض بشفاههما فيجلسانه ثمَّ يُقَال لَهُ يَا هَذَا من رَبك فَذكره وَقَالَ فِي ذكر الْكَافِر فيأتيه مُنكر وَنَكِير يثيران الأَرْض بأنيابهما ويلجفان الأَرْض بشفاههما أصواتهما كالرعد القاصف وأبصارهما كالبرق الخاطف فيجلسانه ثمَّ يُقَال يَا هَذَا من رَبك فَيَقُول لَا أَدْرِي فينادى من جَانب الْقَبْر لَا دَريت ويضربانه بمرزبة من حَدِيد لَو اجْتمع عَلَيْهَا من بَين الْخَافِقين لم يقلوها يشتعل مِنْهَا قَبره نَارا ويضيق عَلَيْهِ قَبره حَتَّى تخْتَلف أضلاعه
قَوْله هاه هاه هِيَ كلمة تقال فِي الضحك وَفِي الإبعاد وَقد تقال للتوجع وَهُوَ أليق بِمَعْنى الحَدِيث وَالله أعلم

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হাদীছে যে আয়াতটি উল্লেখ করা হয়েছে তা দ্বারা বোঝা যায়, যারা সুদৃঢ় কথা অর্থাৎ কালেমায়ে তায়্যিবার উপর ঈমান আনবে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে দুনিয়ায়ও দীনের উপর মজবুত রাখবেন অর্থাৎ প্রকৃত ঈমানদার কোনও পরিস্থিতিতেই বিভ্রান্তির শিকার হবে না। বিপথগামিতার কোনও ডাকে তারা সাড়া দেবে না। এমনিভাবে কবর ও হাশর তথা আখিরাতের প্রতিটি ঘাঁটিতে আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে অবিচল রাখবেন। কবরের প্রশ্ন ও হাশরের ময়দানের বিভীষিকাময় পরিস্থিতি, কোনও অবস্থায়ই তারা দিশেহারা হবে না। আল্লাহ তা'আলা প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদেরকে সাহায্য করবেন। কবর আখিরাতের প্রথম ঘাঁটি। এখানে যে ব্যক্তি মুনকার নাকীরের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে, কবর তার জন্য জান্নাতের টুকরায় পরিণত হবে। এখানে যে শান্তি পেয়ে যাবে, পরবর্তী সকল ঘাঁটি তার জন্য আসান হয়ে যাবে। বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা তা বোঝা যায়। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে ওই সৌভাগ্যবানদের মধ্যে শামিল রাখুন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কবরের সাওয়াল-জাওয়াব সত্য। এতে বিশ্বাস রাখা জরুরি।

খ. কবরে মুনকার-নাকীরের প্রশ্নের যাতে সঠিক উত্তর দেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে আমাদের কর্তব্য কালেমায়ে তায়্যিবার প্রতি অবিচল ঈমান রাখা এবং এর দাবি অনুযায়ী শরী'আত মোতাবেক জীবনযাপন করা। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাওফীক দিন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব - হাদীস নং ৫৪২৮ | মুসলিম বাংলা