আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

২৪. অধ্যায়ঃ জানাযা

হাদীস নং: ৫৪২৭
অধ্যায়ঃ জানাযা
অনুচ্ছেদ
৫৪২৭. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ইয়াহুদী মহিলা আমার গৃহের দরজায় খাবার চাইতে আসল এবং বলল তোমরা আমাকে খাবার দাও আল্লাহ্ তোমাদেরকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং কবর-আযাবের ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন। আয়েশা (রা) বলেন, আমি মহিলাটিকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আসা পর্যন্ত ধরে রাখলাম। তারপর তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ। এই ইয়াহুদী মহিলা কি বলে? তিনি জানতে চাইলেন, সে কি বলে? আমি বললাম, সে বলে, আল্লাহ তোমাদেরকে দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং কবর-আযাবের ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন। আয়েশা (রা) বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) দাঁড়ালেন এবং তাঁর দু'হাত উপরের দিকে সম্প্রসারিত করে তুলে আল্লাহর কাছে দাজ্জালের ফিতনা ও কবর-আযাবের ফিতনা থেকে করুণ প্রার্থনা করতে লাগলেন। এরপর বললেন, দাজ্জালের ফিতনা সম্পর্কে প্রত্যেক নবীই তাঁর উম্মতকে তীতি প্রদর্শন করেছেন। আমি এক্ষুণি তোমাদেরকে এমন একটি কথা বলব, যা কোন নবী তাঁর উম্মতকে ভীতি প্রদর্শন করতে গিয়ে বলেন নি। নিশ্চয় দাজ্জাল হবে কানা, কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা কানা নন, তার দুই চোখের মাঝখানে 'কাফির' লিখা থাকবে, প্রত্যেক মু'মিন তা পড়তে পারবে। কবরের ফিতনা হচ্ছে, আমার ব্যাপারে কবরবাসীদের পরীক্ষা করা হবে এবং আমার সম্পর্কেই তাদের জিজ্ঞেস করা হবে। যখন লোকটি নেককার হয়, তাকে তার কবরে ভয়-ভীতি ব্যতিরেকে বসানো হয়। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তুমি ইসলাম সম্পর্কে কি বলতে হে? এরপর জিজ্ঞেস করা হয়, এ লোকটি কে? যিনি তোমাদের মাঝে ছিলেন। উত্তরে সে বলে, তিনি আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ, তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে (আমাদের কাছে) এসেছেন এবং আমরা তাঁর সত্যতা সমর্থন করেছি। তখন তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি সুড়ঙ্গ খুলে দেওয়া হয়। সে জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখে, জাহান্নামের লাভা একটির পর অপরটি আছড়ে পড়ছে। তাকে বলা হয়, তাকিয়ে দেখ, আল্লাহ্ তা'আলা তোমাকে যা থেকে রক্ষা করেছেন। এরপর জান্নাতের দিকে তার জন্য একটি সুড়ঙ্গ খুলে দেওয়া হয়। সে জান্নাতের সজীবতা ও তার নেয়ামতসমূহ প্রত্যক্ষ করে। তাকে বলা হয়, এটা তোমার জান্নাতের ঠিকানা, তাকে আরও বলা হয়, তুমি ইয়াকীন তথা দৃঢ় বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলে, ইয়াকীনের উপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে এবং ইয়াকীনের উপর ইনশাআল্লাহ তুমি পুনরুত্থিত হবে। আর যখন লোকটি বদকার হয় তখন তাকে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় তার কবরে বসানো হয় এবং তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তুমি (ইসলাম ও রাসূলুল্লাহ্ সম্পর্কে) কি বলতে হে? সে বলে, আমি মানুষকে একটি কথা বলতে শুনতাম, তখন তারা যা বলত, আমিও তাই বলতাম। তারপর জান্নাতের দিকে তার জন্য একটি সুড়ঙ্গ খুলে দেওয়া হয়, তখন সে জান্নাতের সজীবতা ও নিয়ামতসমূহ প্রত্যক্ষ করে। তখন (তাকে) বলা হয়, আল্লাহ্ তোমার থেকে যা দূর করে দিয়েছেন তা প্রত্যক্ষ কর। এরপর জাহান্নামের দিকে তার জন্য একটি সুড়ঙ্গ খুলে দেওয়া হয়। সে জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখে যে, তার শিখা একটির পর অপরটি আছড়ে পড়ছে। তাকে বলা হয়, এটা তোমার জাহান্নামের ঠিকানা। তুমি সন্দেহের উপর ছিলে, সন্দেহের উপর মৃত্যুবরণ করেছ এবং সন্দেহের উপরই ইনশা আল্লাহ্ পুনরুত্থিত হবে। এরপর তাকে আযাব দেওয়া হয়।
(আহমাদ (র) সহীহ সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)
كتاب الجنائز
فصل
5430- وَعَن عَائِشَة رَضِي الله عَنْهَا قَالَت جَاءَت يَهُودِيَّة استطعمت على بَابي فَقَالَت أَطْعمُونِي أعاذكم الله من فتْنَة الدَّجَّال وَمن فتْنَة عَذَاب الْقَبْر قَالَت فَلم أزل أحبسها حَتَّى جَاءَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقلت يَا رَسُول الله مَا تَقول هَذِه الْيَهُودِيَّة قَالَ وَمَا تَقول قلت تَقول أعاذكم الله من فتْنَة الدَّجَّال وَمن فتْنَة عَذَاب الْقَبْر قَالَت عَائِشَة فَقَامَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَرفع يَدَيْهِ مدا يستعيذ بِاللَّه من فتْنَة الدَّجَّال وَمن فتْنَة عَذَاب الْقَبْر ثمَّ قَالَ أما فتْنَة الدَّجَّال فَإِنَّهُ لم يكن نَبِي إِلَّا حذر أمته وَسَأُحَدِّثُكُمْ بِحَدِيث لم يحذرهُ نَبِي أمته إِنَّه أَعور وَإِن الله لَيْسَ بأعور مَكْتُوب بَين عَيْنَيْهِ كَافِر يقرأه كل مُؤمن فَأَما فتْنَة الْقَبْر فَبِي يفتنون وعني يسْأَلُون فَإِذا كَانَ الرجل الصَّالح أَجْلِس فِي قَبره غير فزع وَلَا مشعوف ثمَّ يُقَال لَهُ فَمَا كنت تَقول فِي الْإِسْلَام فَيُقَال مَا هَذَا الرجل الَّذِي كَانَ فِيكُم فَيَقُول مُحَمَّد رَسُول الله جَاءَ بِالْبَيِّنَاتِ من عِنْد الله فَصَدَّقْنَاهُ فيفرج لَهُ فُرْجَة قبل النَّار فَينْظر إِلَيْهَا يحطم بَعْضهَا بَعْضًا فَيُقَال لَهُ انْظُر إِلَى مَا وقاك الله ثمَّ تفرج لَهُ فُرْجَة إِلَى الْجنَّة فَينْظر إِلَى زهرتها وَمَا فِيهَا فَيُقَال لَهُ هَذَا مَقْعَدك مِنْهَا وَيُقَال على الْيَقِين كنت وَعَلِيهِ مت وَعَلِيهِ تبْعَث إِن شَاءَ الله وَإِذا كَانَ الرجل السوء أَجْلِس فِي قَبره فَزعًا مشعوفا فَيُقَال لَهُ فَمَا كنت تَقول فَيَقُول سَمِعت النَّاس يَقُولُونَ قولا فَقلت كَمَا قَالُوا فيفرج لَهُ فُرْجَة إِلَى الْجنَّة فَينْظر إِلَى زهرتها وَمَا فِيهَا فَيُقَال لَهُ انْظُر إِلَى مَا
صرف الله عَنْك ثمَّ يفرج لَهُ فُرْجَة قبل النَّار فَينْظر إِلَيْهَا يحطم بَعْضهَا بَعْضًا وَيُقَال هَذَا مَقْعَدك مِنْهَا على الشَّك كنت وَعَلِيهِ مت وَعَلِيهِ تبْعَث إِن شَاءَ الله ثمَّ يعذب

رَوَاهُ أَحْمد بِإِسْنَاد صَحِيح
قَوْله غير مشعوف هُوَ بشين مُعْجمَة بعْدهَا عين مُهْملَة وَآخره فَاء قَالَ أهل اللُّغَة الشعف هُوَ الْفَزع حَتَّى يذهب بِالْقَلْبِ
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব - হাদীস নং ৫৪২৭ | মুসলিম বাংলা