আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২২. অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
হাদীস নং: ৪১৫৮
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
কারো ঘরে প্রবেশের অনুমতি নেয়ার পূর্বে উঁকি মারার প্রতি ভীতি প্রদর্শন
৪১৫৮. হযরত সাহল ইবনে সা'দ সাঈদী (রা) থেকে বর্ণিত। একদা এক ব্যক্তি নবী (ﷺ)-এ হুজরাসমূহের কোন একটির দিকে উকি মেরে দেখল, আর তখন নবী (ﷺ)-এর হাতে একটি চিরুনী ছিল। যা দ্বারা তিনি তাঁর মাথা আঁচড়াতেন। তখন নবী (ﷺ) বলেন। আমি যদি জানতাম যে, তুমি উকি মারবে, তবে এটি দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। চোখের জন্য অনুমতির বিধান করা হয়েছে।
(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী ও নাসাঈ বর্ণিত।)
(বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী ও নাসাঈ বর্ণিত।)
كتاب الأدب
التَّرْهِيب أَن يطلع الْإِنْسَان فِي دَار قبل أَن يسْتَأْذن
4158- وَعَن سهل بن سعد السَّاعِدِيّ رَضِي الله عَنهُ أَن رجلا اطلع على رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من جُحر فِي حجرَة النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَمَعَ النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مدراة يحك بهَا رَأسه فَقَالَ النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَو علمت أَنَّك تنظر لطعنت بهَا فِي عَيْنك إِنَّمَا جعل الاسْتِئْذَان من أجل الْبَصَر
رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَالتِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ
رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَالتِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
অর্থাৎ বাইরের লোক যাতে ঘরের ভেতর দৃষ্টি দিতে না পারে, সেজন্যই অনুমতি গ্রহণের বিধান দেওয়া হয়েছে। এটা কারওই কাম্য নয় যে, বাইরের লোক ঘরের ভেতর দেখুক। বিশেষত এটা পর্দারও পরিপন্থি। কেউ যদি দরজা বরাবর দাঁড়িয়ে বা দরজার ফাঁক দিয়ে ঘরের ভেতর তাকায়, তবে ভেতরের মালামাল ও আসবাবপত্রই নয়; মহিলাদের প্রতিও দৃষ্টি পড়ে যেতে পারে। এর থেকে বাঁচার জন্যই নিয়ম করা হয়েছে যে, ঘরের লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে সরাসরি ভেতরের দিকে তাকাবে না। বরং দরজার এক পাশে দাঁড়িয়ে অনুমতি প্রার্থনা করবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বর্ণিত আছে-
أَتَى بَابَ قَوْم لَمْ يستقبل الْبَابَ مِنْ تِلْقَاءِ وَجْهِهِ، وَلَكِنْ مِنْ رَّكِّيهِ الْأَيْمَنِ، أَوإِذَا الْأَيسرِ، وَيَقُولُ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ، السَّلَامُ عَلَيْكُمْ
তিনি যখন লোকজনের (বাড়ির) দরজায় পৌছতেন, তখন দরজা বরাবর মুখ করে দাঁড়াতেন না। বরং দরজার ডান বা বাম খুঁটি বরাবর দাঁড়াতেন এবং বলতেন, আসসালামু আলাইকুম, আসসালামু আলাইকুম। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৮৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৬৩; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ : ৩৩১৯)
একবার এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে প্রবেশের অনুমতি চাইল। সে দাঁড়িয়ে ছিল দরজা বরাবর। নবী কারীম সাল্লাল্লাছ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন-
هَكَذَا - عَنْكَ - أَوْ هَكَذَا، فَإِنَّمَا الاسْتِأذَانُ مِنَ النَّظْرِ
'তুমি এভাবে দাঁড়াবে অথবা এভাবে ( অর্থাৎ ডানে বা বামে সরে দাঁড়াবে)। অনুমতি চাওয়ার নিয়ম তো দৃষ্টিপাতের অনুমতি কারণেই’। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৭৪; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৮৮২৫)
সুতরাং অনুমতি চাওয়ার সময় দরজা বরাবর দাঁড়ানো উচিত নয়। ঘরের ভেতরে দৃষ্টি দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। অনুমতি ছাড়া ঘরের ভেতর তাকানো সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটা অনুমতি ছাড়া ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ার মতো। সুতরাং এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَحِلُّ لِامْرِئٍ مُسْلِمٍ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى جَوْفِ بَيْتٍ حَتَّى يَسْتَأْذِنَ، فَإِنْ فَعَلَ فَقَدْ دَخَلَ
কোনও মুসলিম ব্যক্তির জন্য কারও ঘরের ভেতর দৃষ্টিপাত করা বৈধ নয়। যদি তা করে, তবে সে প্রবেশই করল। (বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ১০৯৩)
বস্তুত অন্যের ঘরের ভেতর দৃষ্টিপাত করা গুরুতর অপরাধ। এটা শাস্তিযোগ্য। হযরত আবু হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
من اطلع في بيت قوم بغير إذنهم، فقد حل لهم أن يفقئوا عينه
যে ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া লোকজনের ঘরে উকি মারে, তাদের জন্য তার চোখ ফুঁড়ে দেওয়া বৈধ হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম : ২১৫৮; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার: ৯৩৬; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ২০১৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৫৬; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৪৫০)
অর্থাৎ যে-কোনও ব্যক্তির এ অধিকার আছে যে, সে তার নিজেকে, তার মালামাল ও পরিবারের লোকজনকে অন্যের দৃষ্টি থেকে হেফাজত করবে। বিশেষত পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে ঘরের নারীদের হেফাজত করা গৃহকর্তার দায়িত্বও ঘটে। এজন্য গৃহকর্তা তার সম্ভাব্য যে-কোনও উপায় অবলম্বন করতে পারে। এর জন্য যদি দৃষ্টিদাতার চোখ ফুঁড়ে দেওয়ার অবকাশ আসে, তাতেও মানা নেই। এজন্য গৃহকর্তাকে বিচারেরও সম্মুখীন হতে হবে না। চোখ ফুঁড়ে দেওয়ার দায়ে তার উপর জরিমানাও আসবে না। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لو اطلع في بيتك أحد، ولم تأذن له، خذفته بحصاة، ففقأت عينه ما كان عليك من جناح
যদি কোনও ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া তোমার ঘরে উঁকি দেয় আর ছুঁড়ে তার চোখ ফুঁড়ে দাও, তবে তাতে তোমার কোনও অপরাধ হবেনা। (সহীহ বুখারী : ৬৮৮৮; সহীহ মুসলিম: ২১৫৮; সুনানে নাসাঈ: ৪৮৬১; মুসনাদুল হুমায়দী: ১১০৯; মুসনাদে আহমাদ: ৭৩১০; বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ১০৬৮; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার : ৯৩২; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৬০০৩; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৬২২৭; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৫৫)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও ঘরের ভেতর উঁকি দিয়ে দেখা জায়েয নয়।
খ. অন্যের ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে অনুমতি নিতে হবে।
أَتَى بَابَ قَوْم لَمْ يستقبل الْبَابَ مِنْ تِلْقَاءِ وَجْهِهِ، وَلَكِنْ مِنْ رَّكِّيهِ الْأَيْمَنِ، أَوإِذَا الْأَيسرِ، وَيَقُولُ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ، السَّلَامُ عَلَيْكُمْ
তিনি যখন লোকজনের (বাড়ির) দরজায় পৌছতেন, তখন দরজা বরাবর মুখ করে দাঁড়াতেন না। বরং দরজার ডান বা বাম খুঁটি বরাবর দাঁড়াতেন এবং বলতেন, আসসালামু আলাইকুম, আসসালামু আলাইকুম। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৮৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৬৩; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ : ৩৩১৯)
একবার এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে প্রবেশের অনুমতি চাইল। সে দাঁড়িয়ে ছিল দরজা বরাবর। নবী কারীম সাল্লাল্লাছ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন-
هَكَذَا - عَنْكَ - أَوْ هَكَذَا، فَإِنَّمَا الاسْتِأذَانُ مِنَ النَّظْرِ
'তুমি এভাবে দাঁড়াবে অথবা এভাবে ( অর্থাৎ ডানে বা বামে সরে দাঁড়াবে)। অনুমতি চাওয়ার নিয়ম তো দৃষ্টিপাতের অনুমতি কারণেই’। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৭৪; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৮৮২৫)
সুতরাং অনুমতি চাওয়ার সময় দরজা বরাবর দাঁড়ানো উচিত নয়। ঘরের ভেতরে দৃষ্টি দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। অনুমতি ছাড়া ঘরের ভেতর তাকানো সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটা অনুমতি ছাড়া ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ার মতো। সুতরাং এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَا يَحِلُّ لِامْرِئٍ مُسْلِمٍ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى جَوْفِ بَيْتٍ حَتَّى يَسْتَأْذِنَ، فَإِنْ فَعَلَ فَقَدْ دَخَلَ
কোনও মুসলিম ব্যক্তির জন্য কারও ঘরের ভেতর দৃষ্টিপাত করা বৈধ নয়। যদি তা করে, তবে সে প্রবেশই করল। (বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ১০৯৩)
বস্তুত অন্যের ঘরের ভেতর দৃষ্টিপাত করা গুরুতর অপরাধ। এটা শাস্তিযোগ্য। হযরত আবু হুরায়রা রাযি. বর্ণিত এক হাদীছে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
من اطلع في بيت قوم بغير إذنهم، فقد حل لهم أن يفقئوا عينه
যে ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া লোকজনের ঘরে উকি মারে, তাদের জন্য তার চোখ ফুঁড়ে দেওয়া বৈধ হয়ে যায়। (সহীহ মুসলিম : ২১৫৮; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার: ৯৩৬; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ২০১৬; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৫৬; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৪৫০)
অর্থাৎ যে-কোনও ব্যক্তির এ অধিকার আছে যে, সে তার নিজেকে, তার মালামাল ও পরিবারের লোকজনকে অন্যের দৃষ্টি থেকে হেফাজত করবে। বিশেষত পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে ঘরের নারীদের হেফাজত করা গৃহকর্তার দায়িত্বও ঘটে। এজন্য গৃহকর্তা তার সম্ভাব্য যে-কোনও উপায় অবলম্বন করতে পারে। এর জন্য যদি দৃষ্টিদাতার চোখ ফুঁড়ে দেওয়ার অবকাশ আসে, তাতেও মানা নেই। এজন্য গৃহকর্তাকে বিচারেরও সম্মুখীন হতে হবে না। চোখ ফুঁড়ে দেওয়ার দায়ে তার উপর জরিমানাও আসবে না। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لو اطلع في بيتك أحد، ولم تأذن له، خذفته بحصاة، ففقأت عينه ما كان عليك من جناح
যদি কোনও ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া তোমার ঘরে উঁকি দেয় আর ছুঁড়ে তার চোখ ফুঁড়ে দাও, তবে তাতে তোমার কোনও অপরাধ হবেনা। (সহীহ বুখারী : ৬৮৮৮; সহীহ মুসলিম: ২১৫৮; সুনানে নাসাঈ: ৪৮৬১; মুসনাদুল হুমায়দী: ১১০৯; মুসনাদে আহমাদ: ৭৩১০; বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ: ১০৬৮; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার : ৯৩২; সহীহ ইবনে হিব্বান: ৬০০৩; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত: ৬২২৭; বায়হাকী, আস সুনানুল কুবরা: ১৭৬৫৫)
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কারও ঘরের ভেতর উঁকি দিয়ে দেখা জায়েয নয়।
খ. অন্যের ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে অনুমতি নিতে হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)