আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১২. অধ্যায়ঃ জিহাদ
হাদীস নং: ২১৩৫
শাহাদতের উৎসাহ দান ও শহীদের ফযীলত প্রসঙ্গে
২১৩৫. হযরত আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ শহীদ তিন ধরনের। ঐ ব্যক্তি যে নিজ জান-মাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে, কিন্তু সে যুদ্ধ করার ও নিজে নিহত হওয়ার ইচ্ছা রাখে না। সে কেবল মুসলমানদের সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে। সে যদি মৃত্যুমুখে পতিত হয় বা নিহত হয়, তার সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। তাকে কবর আযাব থেকে মুক্তি দেয়া হবে, মহাভীতি থেকে তাকে নিরাপদ রাখা হয়, তাকে জান্নাতী কুমারীর সাথে বিয়ে দেয়া হয়। তাকে মর্যাদাপূর্ণ কাপড় পরিয়ে দেয়া হয় এবং তার মাথায় চিরস্থায়ী সম্মানের মুকুট পরিয়ে দেয়া হয়।
দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যে সওয়াবের উদ্দেশ্যে আল্লাহর রাস্তায় নিজ জান-মাল নিয়ে গমন করে, সে শত্রু সংহারের ইচ্ছা রাখে কিন্তু নিহত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করে না। যদি সে মৃত্যুবরণ করে বা নিহত হয়, তাহলে হযরত ইব্রাহীম (আ)-এর সাথে সততার আসনে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তা'আলার সামনে বসে থাকবে। তৃতীয় ঐ ব্যক্তি যে তার জান-মাল নিয়ে সওয়াবের উদ্দেশ্যে জিহাদে গমন করে এবং সে শত্রু হত্যার ও নিজের নিহত হওয়ার ইচ্ছা রাখে। সে যদি স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করে বা নিহত হয়, তবে কিয়ামতের দিন উন্মুক্ত তরবারি ঘাড়ে লটকিয়ে সে হাযির হবে। লোকজন নতজানু অবস্থায় বসা থাকবে। সে বলতে থাকবে, সাবধান। তোমরা পথ ছেড়ে দাও। আমরা আমাদের জান-মাল মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করেছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ ঐ সত্তার কসম। যাঁর হাতে আমার জীবন, যদি একথা ইবরাহীম খলীলুল্লাহ্ (আ) বা অন্য কোন নবীকেও বলা হতো, তাহলে তাঁরাও এদের প্রাপ্য অধিকার দিতে গিয়ে রাস্তা থেকে সরে যেতেন। অবশেষে তারা আল্লাহর নূরের তৈরি আরশের নীচের উচ্চাসনে উপবেশন করে আল্লাহ কিভাবে মানুষের বিচার করবেন তা প্রত্যক্ষ করবে। এসব শহীদ মৃত্যুর কষ্ট অনুভব করবে না, তাদের কোন বরযখ জগতের তথা অন্তবর্তীকালের কোন দুঃশ্চিন্তা পোহাতে হবে না। হাশরের দিনে ইসরাফিলের শিংগার ফুৎকার তাদেরকে বিচলিত করবে না। হিসাব-নিকাশ, মীযানের মাপ ও পুলসিরাতের কোন চিন্তা তাদের থাকবে না। আল্লাহ কিভাবে মানুষের বিচার করবেন, তারা তা দেখতে থাকবে। তারা যাই চাইবে, তাই তাদেরকে দেয়া হবে। তারা যে বিষয়ে সুপারিশ করবে, তাই মঞ্জুর করা হবে। জান্নাতের অতি উৎকৃষ্ট নিয়ামতসমূহ তাদেরকে দেয়া হবে। জান্নাতের যে কোন স্থানে তারা স্থান নিতে পারবে।
(হাদীসটি বাযযার, বায়হাকী ও ইস্পাহানী বর্ণনা করেছেন। এটি গরীব হাদীস।)
দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যে সওয়াবের উদ্দেশ্যে আল্লাহর রাস্তায় নিজ জান-মাল নিয়ে গমন করে, সে শত্রু সংহারের ইচ্ছা রাখে কিন্তু নিহত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করে না। যদি সে মৃত্যুবরণ করে বা নিহত হয়, তাহলে হযরত ইব্রাহীম (আ)-এর সাথে সততার আসনে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তা'আলার সামনে বসে থাকবে। তৃতীয় ঐ ব্যক্তি যে তার জান-মাল নিয়ে সওয়াবের উদ্দেশ্যে জিহাদে গমন করে এবং সে শত্রু হত্যার ও নিজের নিহত হওয়ার ইচ্ছা রাখে। সে যদি স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করে বা নিহত হয়, তবে কিয়ামতের দিন উন্মুক্ত তরবারি ঘাড়ে লটকিয়ে সে হাযির হবে। লোকজন নতজানু অবস্থায় বসা থাকবে। সে বলতে থাকবে, সাবধান। তোমরা পথ ছেড়ে দাও। আমরা আমাদের জান-মাল মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করেছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ ঐ সত্তার কসম। যাঁর হাতে আমার জীবন, যদি একথা ইবরাহীম খলীলুল্লাহ্ (আ) বা অন্য কোন নবীকেও বলা হতো, তাহলে তাঁরাও এদের প্রাপ্য অধিকার দিতে গিয়ে রাস্তা থেকে সরে যেতেন। অবশেষে তারা আল্লাহর নূরের তৈরি আরশের নীচের উচ্চাসনে উপবেশন করে আল্লাহ কিভাবে মানুষের বিচার করবেন তা প্রত্যক্ষ করবে। এসব শহীদ মৃত্যুর কষ্ট অনুভব করবে না, তাদের কোন বরযখ জগতের তথা অন্তবর্তীকালের কোন দুঃশ্চিন্তা পোহাতে হবে না। হাশরের দিনে ইসরাফিলের শিংগার ফুৎকার তাদেরকে বিচলিত করবে না। হিসাব-নিকাশ, মীযানের মাপ ও পুলসিরাতের কোন চিন্তা তাদের থাকবে না। আল্লাহ কিভাবে মানুষের বিচার করবেন, তারা তা দেখতে থাকবে। তারা যাই চাইবে, তাই তাদেরকে দেয়া হবে। তারা যে বিষয়ে সুপারিশ করবে, তাই মঞ্জুর করা হবে। জান্নাতের অতি উৎকৃষ্ট নিয়ামতসমূহ তাদেরকে দেয়া হবে। জান্নাতের যে কোন স্থানে তারা স্থান নিতে পারবে।
(হাদীসটি বাযযার, বায়হাকী ও ইস্পাহানী বর্ণনা করেছেন। এটি গরীব হাদীস।)
التَّرْغِيب فِي الشَّهَادَة وَمَا جَاءَ فِي فضل الشُّهَدَاء
2135- وَرُوِيَ عَن أنس بن مَالك رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم الشُّهَدَاء ثَلَاثَة رجل خرج بِنَفسِهِ وَمَاله فِي سَبِيل الله لَا يُرِيد أَن يُقَاتل وَلَا يقتل يكثر سَواد الْمُسلمين فَإِن مَاتَ أَو قتل غفرت لَهُ ذنُوبه كلهَا وأجير من عَذَاب الْقَبْر ويؤمن من الْفَزع ويزوج من الْحور الْعين وحلت عَلَيْهِ حلَّة الْكَرَامَة وَيُوضَع على رَأسه تَاج الْوَقار والخلد وَالثَّانِي خرج بِنَفسِهِ وَمَاله محتسبا يُرِيد أَن يقتل وَلَا يقتل فَإِن مَاتَ أَو قتل كَانَت ركبته مَعَ إِبْرَاهِيم خَلِيل الرَّحْمَن عَلَيْهِ السَّلَام بَين يَدي الله تبَارك وَتَعَالَى {فِي مقْعد صدق عِنْد مليك مقتدر} الْقَمَر 55 وَالثَّالِث خرج بِنَفسِهِ وَمَاله محتسبا يُرِيد أَن يقتل وَيقتل فَإِن مَاتَ أَو قتل جَاءَ يَوْم الْقِيَامَة شاهرا سَيْفه وَاضعه على عَاتِقه وَالنَّاس جاثون على الركب يَقُول أَلا أفسحوا لنا فَإنَّا قد بذلنا دماءنا وَأَمْوَالنَا لله تبَارك وَتَعَالَى
قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَالَّذِي نَفسِي بِيَدِهِ لَو قَالَ ذَلِك لإِبْرَاهِيم خَلِيل الرَّحْمَن عَلَيْهِ السَّلَام أَو لنَبِيّ من الْأَنْبِيَاء لزحل لَهُم عَن الطَّرِيق لما يرى من وَاجِب حَقهم حَتَّى يَأْتُوا مَنَابِر من نور تَحت الْعَرْش فيجلسوا عَلَيْهَا ينظرُونَ كَيفَ يقْضى بَين النَّاس لَا يَجدونَ غم الْمَوْت وَلَا يغتمون فِي البرزخ وَلَا تفزعهم الصَّيْحَة وَلَا يهمهم الْحساب وَلَا الْمِيزَان وَلَا الصِّرَاط ينظرُونَ كَيفَ يقْضى بَين النَّاس وَلَا يسْأَلُون شَيْئا إِلَّا أعْطوا وَلَا يشفعون فِي شَيْء إِلَّا شفعوا فِيهِ ويعطون من الْجنَّة مَا أَحبُّوا ويتبوؤون من الْجنَّة حَيْثُ أَحبُّوا
رَوَاهُ الْبَزَّار وَالْبَيْهَقِيّ والأصبهاني وَهُوَ حَدِيث غَرِيب
قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَالَّذِي نَفسِي بِيَدِهِ لَو قَالَ ذَلِك لإِبْرَاهِيم خَلِيل الرَّحْمَن عَلَيْهِ السَّلَام أَو لنَبِيّ من الْأَنْبِيَاء لزحل لَهُم عَن الطَّرِيق لما يرى من وَاجِب حَقهم حَتَّى يَأْتُوا مَنَابِر من نور تَحت الْعَرْش فيجلسوا عَلَيْهَا ينظرُونَ كَيفَ يقْضى بَين النَّاس لَا يَجدونَ غم الْمَوْت وَلَا يغتمون فِي البرزخ وَلَا تفزعهم الصَّيْحَة وَلَا يهمهم الْحساب وَلَا الْمِيزَان وَلَا الصِّرَاط ينظرُونَ كَيفَ يقْضى بَين النَّاس وَلَا يسْأَلُون شَيْئا إِلَّا أعْطوا وَلَا يشفعون فِي شَيْء إِلَّا شفعوا فِيهِ ويعطون من الْجنَّة مَا أَحبُّوا ويتبوؤون من الْجنَّة حَيْثُ أَحبُّوا
رَوَاهُ الْبَزَّار وَالْبَيْهَقِيّ والأصبهاني وَهُوَ حَدِيث غَرِيب
