আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১১. অধ্যায়ঃ হজ্জ
হাদীস নং: ১৭১৬
অধ্যায়ঃ হজ্জ
অধ্যায়: হজ্জ
হজ্জ ও উমরার প্রতি উৎসাহ দান এবং এগুলো আদায় করতে বের হয়ে যারা মারা যায় তাদের প্রসঙ্গ
হজ্জ ও উমরার প্রতি উৎসাহ দান এবং এগুলো আদায় করতে বের হয়ে যারা মারা যায় তাদের প্রসঙ্গ
১৭১৬. হযরত ইবন উমর (রা) বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ আমি নবী করীম ﷺ -এর সাথে মিনার মসজিদে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় তাঁর নিকট আনসারদের এক ব্যক্তি ও সাকীফ গোত্রের এক ব্যক্তি আসল। তারা উভয়েই সালাম করল এবং বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ। আমরা আপনার নিকট একটি বিষয় জিজ্ঞাসা করতে, এসেছি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমরা যদি চাও তাহলে তোমরা কি ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে এসেছ, তা আমি বলে দিতে পারি। আর যদি তোমরা চাও, তাহলে আমি আগে কিছু বলব না। তোমরা জিজ্ঞাসা করবে আর আমি উত্তর দিয়ে যাব। তারা বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ। আপনিই বলুন। তখন সাকাফী লোকটি আনসারী লোকটিকে বলল, তুমি প্রশ্ন কর। তখন আনসারী লোকটি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ। আপনিই বলুন। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি আমার নিকট একথা জিজ্ঞেস করতে এসেছ যে, তুমি যে বায়তুল্লাহ শরীফের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছ, এতে তোমার কি পুণ্য হবে? তওয়াফের পরে যে দু'রাকাআত সালাত আদায় করেছ, এতে তুমি কি পাবে। সাফা ও মারওয়ার মাঝে তুমি যে তওয়াফ করেছ, এতে কি পাবে? আরাফার দিন বিকালে আরাফায় যে তুমি অবস্থান করেছ, এতে তোমার কি পুণ্য হবে? তুমি যে শয়তানকে কঙ্কর মেরেছ, এতে তুমি কি পাবে? তুমি যে কুরবানী করেছ এবং তওয়াফে যিয়ারত করেছ, এতে কি পাবে?
তখন লোকটি বলল, ঐ সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য দীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, এ সম্পর্কেই আমি জিজ্ঞেস করতে এসেছি। রাসুলুল্লাহ ﷺ তখন বললেন, তুমি যখন বায়তুল্লাহ শরীফের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেরিয়েছ, তখন তোমার। উটনীর পথ চলার প্রতি কদমে আল্লাহ একটি করে নেকী লিখে দিয়েছেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দিয়েছেন। তওয়াফের পর তোমার দু'রাকাআত নামায আদায় বনী ইসমাঈলের একটি দাস মুক্তির মত, সাফা-মারওয়ার মাঝে তোমার তাওয়াফটি যেন সত্তরটি দাস মুক্তকরণ। আর আরাফার বিকালের অবস্থান, তবে মনে রাখবে যে তখন আল্লাহ পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন এবং তোমাদেরকে নিয়ে ফিরিশতাদের সাথে গর্ব করেন। তিনি বলতে থাকেন। আমার বান্দারা ধূলিমলিন বদনে দূর-দূরান্ত থেকে আমার নিকট জান্নাতলাভের আশায় এসেছে। তোমাদের পাপরাশি যদি বালুকণার পরিমাণও হয় অথবা বৃষ্টির ফোঁটার সমানও হয় অথবা সাগরের ফেনা পরিমাণও হয়, তবুও আমি এগুলো ক্ষমা করে দেব। হে আমার বান্দারা। তোমরা এমন অবস্থায় ফিরে যাও যে, তোমাদেরকে এবং তোমরা যাদের জন্য সুপারিশ করেছ, সবাইকে মাফ করে দেয়া হয়েছে। তুমি যে শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ করেছ তার প্রতিটি কঙ্কর দানার পরিবর্তে একটি মারাত্মক ও কবীরা গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। আর তোমরা কুরবানী-এর পুণ্য তোমার প্রতিপালকের নিকট সঞ্চিত থাকবে। তোমার মাথা মুড়ানোর বিষয়টি, এর প্রতিটি চুলের বিনিময়ে তোমার একটি করে পুণ্য হবে এবং একটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হবে। তারপর তোমার বায়তুল্লাহর তওয়াফটি, এটি এমন অবস্থায় হবে যে, তোমার কোন গুনাহই নেই। একজন ফিরিশতা এসে তোমার পিঠে হাত রেখে বলবেন, ভবিষ্যতের জন্য কাজ করে যাও, তোমার অতীতের সব কিছু মাফ করে দেয়া হয়েছে।
(হাদীসটি তাবারানী তাঁর 'কবীর'-এ বর্ণনা করেছেন। বাযযারও এটি বর্ণনা করেন। বর্ণিত শব্দমালা তাঁরই। বাযযার বলেন, হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু আমার জানামতে এর চেয়ে উত্তম কোন সূত্র নেই। [সংকলক (র) বলেন : এ হাদীসটির সনদে কোন দোষ নেই। এর সকল বর্ণনাকারীই নির্ভরযোগ্য। এটি ইবন হিব্বানও তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। ইবন হিব্বানের বর্ণনাটি ইনশাআল্লাহ্ 'আরাফায় অবস্থান' শিরোনামে সামনে আসবে।)
তখন লোকটি বলল, ঐ সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য দীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, এ সম্পর্কেই আমি জিজ্ঞেস করতে এসেছি। রাসুলুল্লাহ ﷺ তখন বললেন, তুমি যখন বায়তুল্লাহ শরীফের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেরিয়েছ, তখন তোমার। উটনীর পথ চলার প্রতি কদমে আল্লাহ একটি করে নেকী লিখে দিয়েছেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দিয়েছেন। তওয়াফের পর তোমার দু'রাকাআত নামায আদায় বনী ইসমাঈলের একটি দাস মুক্তির মত, সাফা-মারওয়ার মাঝে তোমার তাওয়াফটি যেন সত্তরটি দাস মুক্তকরণ। আর আরাফার বিকালের অবস্থান, তবে মনে রাখবে যে তখন আল্লাহ পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন এবং তোমাদেরকে নিয়ে ফিরিশতাদের সাথে গর্ব করেন। তিনি বলতে থাকেন। আমার বান্দারা ধূলিমলিন বদনে দূর-দূরান্ত থেকে আমার নিকট জান্নাতলাভের আশায় এসেছে। তোমাদের পাপরাশি যদি বালুকণার পরিমাণও হয় অথবা বৃষ্টির ফোঁটার সমানও হয় অথবা সাগরের ফেনা পরিমাণও হয়, তবুও আমি এগুলো ক্ষমা করে দেব। হে আমার বান্দারা। তোমরা এমন অবস্থায় ফিরে যাও যে, তোমাদেরকে এবং তোমরা যাদের জন্য সুপারিশ করেছ, সবাইকে মাফ করে দেয়া হয়েছে। তুমি যে শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ করেছ তার প্রতিটি কঙ্কর দানার পরিবর্তে একটি মারাত্মক ও কবীরা গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। আর তোমরা কুরবানী-এর পুণ্য তোমার প্রতিপালকের নিকট সঞ্চিত থাকবে। তোমার মাথা মুড়ানোর বিষয়টি, এর প্রতিটি চুলের বিনিময়ে তোমার একটি করে পুণ্য হবে এবং একটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হবে। তারপর তোমার বায়তুল্লাহর তওয়াফটি, এটি এমন অবস্থায় হবে যে, তোমার কোন গুনাহই নেই। একজন ফিরিশতা এসে তোমার পিঠে হাত রেখে বলবেন, ভবিষ্যতের জন্য কাজ করে যাও, তোমার অতীতের সব কিছু মাফ করে দেয়া হয়েছে।
(হাদীসটি তাবারানী তাঁর 'কবীর'-এ বর্ণনা করেছেন। বাযযারও এটি বর্ণনা করেন। বর্ণিত শব্দমালা তাঁরই। বাযযার বলেন, হাদীসটি বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু আমার জানামতে এর চেয়ে উত্তম কোন সূত্র নেই। [সংকলক (র) বলেন : এ হাদীসটির সনদে কোন দোষ নেই। এর সকল বর্ণনাকারীই নির্ভরযোগ্য। এটি ইবন হিব্বানও তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। ইবন হিব্বানের বর্ণনাটি ইনশাআল্লাহ্ 'আরাফায় অবস্থান' শিরোনামে সামনে আসবে।)
كتاب الْحَج
كتاب الْحَج
التَّرْغِيب فِي الْحَج وَالْعمْرَة وَمَا جَاءَ فِيمَن خرج يقصدهما فَمَاتَ
التَّرْغِيب فِي الْحَج وَالْعمْرَة وَمَا جَاءَ فِيمَن خرج يقصدهما فَمَاتَ
1716- وروى ابْن عمر رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ كنت جَالِسا مَعَ النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فِي مَسْجِد منى فَأَتَاهُ رجل من الْأَنْصَار وَرجل من ثَقِيف فسلما ثمَّ قَالَا يَا رَسُول الله جِئْنَا نَسْأَلك فَقَالَ إِن شئتما أخبرتكما بِمَا جئتما تسألاني عَنهُ فعلت وَإِن شئتما أَن أمسك وتسألاني فعلت فَقَالَا أخبرنَا يَا رَسُول الله فَقَالَ الثَّقَفِيّ للْأَنْصَارِيِّ سل فَقَالَ أَخْبرنِي يَا رَسُول الله فَقَالَ جئتني تَسْأَلنِي عَن مخرجك من بَيْتك تؤم الْبَيْت الْحَرَام وَمَا لَك فِيهِ وَعَن ركعتيك بعد الطّواف وَمَا لَك فيهمَا وَعَن طوافك بَين الصَّفَا والمروة وَمَا لَك فِيهِ وَعَن وقوفك عَشِيَّة عَرَفَة وَمَا لَك فِيهِ وَعَن رميك الْجمار وَمَا لَك فِيهِ وَعَن نحرك وَمَا لَك فِيهِ مَعَ الْإِفَاضَة فَقَالَ وَالَّذِي بَعثك بِالْحَقِّ لعن هَذَا جِئْت أَسأَلك
قَالَ فَإنَّك إِذا خرجت من بَيْتك تؤم الْبَيْت الْحَرَام لَا تضع نَاقَتك خفا وَلَا ترفعه إِلَّا كتب الله لَك بِهِ حَسَنَة ومحا عَنْك خَطِيئَة وَأما ركعتاك بعد الطّواف كعتق رَقَبَة من بني إِسْمَاعِيل عَلَيْهِ السَّلَام وَأما طوافك بالصفا والمروة كعتق سبعين رَقَبَة وَأما وقوفك عَشِيَّة عَرَفَة فَإِن الله يهْبط إِلَى سَمَاء الدُّنْيَا فيباهي بكم الْمَلَائِكَة يَقُول عبَادي جاؤوني شعثا من كل فج عميق يرجون جنتي فَلَو كَانَت ذنوبكم كعدد الرمل أَو كقطر الْمَطَر أَو كزبد الْبَحْر لغفرتها أفيضوا عبَادي مغفورا لكم وَلمن شفعتم لَهُ وَأما رميك الْجمار فلك بِكُل حَصَاة رميتها تَكْفِير كَبِيرَة من الموبقات وَأما نحرك فمذخور لَك عِنْد رَبك وَأما حلاقك رَأسك فلك بِكُل شَعْرَة حلقتها حَسَنَة ويمحى عَنْك بهَا خَطِيئَة وَأما طوافك بِالْبَيْتِ بعد ذَلِك فَإنَّك تَطوف وَلَا ذَنْب لَك
يَأْتِي ملك حَتَّى يضع يَدَيْهِ بَين كتفيك فَيَقُول اعْمَلْ فِيمَا تسْتَقْبل فقد غفر لَك مَا مضى
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير وَالْبَزَّار وَاللَّفْظ لَهُ وَقَالَ وَقد رُوِيَ هَذَا الحَدِيث من وُجُوه وَلَا نعلم لَهُ أحسن من هَذَا الطَّرِيق
قَالَ المملي رَضِي الله عَنهُ وَهِي طَرِيق لَا بَأْس بهَا رواتها كلهم موثقون وَرَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه وَيَأْتِي لَفظه فِي الْوُقُوف إِن شَاءَ الله تَعَالَى
قَالَ فَإنَّك إِذا خرجت من بَيْتك تؤم الْبَيْت الْحَرَام لَا تضع نَاقَتك خفا وَلَا ترفعه إِلَّا كتب الله لَك بِهِ حَسَنَة ومحا عَنْك خَطِيئَة وَأما ركعتاك بعد الطّواف كعتق رَقَبَة من بني إِسْمَاعِيل عَلَيْهِ السَّلَام وَأما طوافك بالصفا والمروة كعتق سبعين رَقَبَة وَأما وقوفك عَشِيَّة عَرَفَة فَإِن الله يهْبط إِلَى سَمَاء الدُّنْيَا فيباهي بكم الْمَلَائِكَة يَقُول عبَادي جاؤوني شعثا من كل فج عميق يرجون جنتي فَلَو كَانَت ذنوبكم كعدد الرمل أَو كقطر الْمَطَر أَو كزبد الْبَحْر لغفرتها أفيضوا عبَادي مغفورا لكم وَلمن شفعتم لَهُ وَأما رميك الْجمار فلك بِكُل حَصَاة رميتها تَكْفِير كَبِيرَة من الموبقات وَأما نحرك فمذخور لَك عِنْد رَبك وَأما حلاقك رَأسك فلك بِكُل شَعْرَة حلقتها حَسَنَة ويمحى عَنْك بهَا خَطِيئَة وَأما طوافك بِالْبَيْتِ بعد ذَلِك فَإنَّك تَطوف وَلَا ذَنْب لَك
يَأْتِي ملك حَتَّى يضع يَدَيْهِ بَين كتفيك فَيَقُول اعْمَلْ فِيمَا تسْتَقْبل فقد غفر لَك مَا مضى
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيّ فِي الْكَبِير وَالْبَزَّار وَاللَّفْظ لَهُ وَقَالَ وَقد رُوِيَ هَذَا الحَدِيث من وُجُوه وَلَا نعلم لَهُ أحسن من هَذَا الطَّرِيق
قَالَ المملي رَضِي الله عَنهُ وَهِي طَرِيق لَا بَأْس بهَا رواتها كلهم موثقون وَرَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه وَيَأْتِي لَفظه فِي الْوُقُوف إِن شَاءَ الله تَعَالَى