আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
৭. অধ্যায়ঃ জুম‘আর নামাজ
হাদীস নং: ১০৭০
অধ্যায়ঃ জুম‘আর নামাজ
সকাল সকাল (যথাসময়ে) জুমু‘আর সালাতে উপস্থিত হওয়ার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং যে ব্যক্তি বিনা ওযরে বিলম্বে আসে তার বর্ণনা
১০৭০. হযরত আলী ইবন আবূ তালিব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: জুমু'আতে দেরী করাবার জন্য শয়তান বেরিয়ে লোকদের বাজারের দিকে নিয়ে যায়। আর ফিরিশতাগণ মসজিদের দরজাসমূহে অবস্থান নিয়ে লোকদের মর্যাদাক্রম লেখেন, এভাবে প্রথম আগমনকারী, তারপর আগমনকারী এমন কি ইমাম (খুতবাদানের জন্য) বেরিয়ে আসেন। কাজেই যে ব্যক্তি ইমামের কাছে বসে নীরবে মনোযোগ সহকারে (খুতবা) শুনল এবং অনর্থক বাক্যালাপ করল না, তাকে দেওয়া হবে দ্বিগুণ সওয়াব। আর যে ব্যক্তি ইমামের থেকে দূরে বসে নীরবে মনোযোগ সহকারে (খুতবা) শুনল, তাকে দেওয়া হবে একগুণ সওয়াব। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইমামের কাছে বসে অনর্থক কাজ করল, নীরবও থাকল না এবং মনোযোগ সহকারে (খুতবাও) শুনল না, তাকে দেওয়া হবে পাপের দ্বিগুণ বোঝা। আর যে ব্যক্তি বলবেঃ চুপ কর; সে প্রকারান্তরে কথা বলল। কাজেই যে কথা বলেছে, তার জুমু'আ আদায় হয় না। এরপর তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে এরূপ বলতে শুনেছি।
(আহমদ নিজ শব্দযোগে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবূ দাউদের শব্দমালা হচ্ছে: জুমুআর দিন শয়তান স্বীয় ঢালসহ বাজারে ঘুরে বেড়ায় আর লোকজনকে বিভিন্ন প্রয়োজনের বেড়াজালে সালাত থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করে এবং জুমু'আয় উপস্থিত হতে বিলম্ব ঘটায়। পক্ষান্তরে, জুমু'আর দিন ফিরিশতাগণ নথিপত্র সহ আগমন করেন এবং মসজিদের দরজাসমূহে অবস্থান নেন এবং প্রত্যেক ব্যক্তির আগমনের সময় পর্যায়ক্রমে তাদের নাম লিখে নেন। এমনকি ইমাম খুতবাদানের জন্য মিম্বরের উপর আরোহণ করা পর্যন্ত তাঁরা এ কাজ চালিয়ে যান। ইমাম খুতবা দেওয়া শুরু করলে যে ব্যক্তি নীরবে বসে মনোযোগ সহকারে তা শোনে, সে দু'টি প্রতিদান লাভ করে। আর যে ব্যক্তি এতদূরে বসে যে, ইমামের খুতবা শুনতে পায় না, তবুও সে নীরব থাকে এবং অনর্থক বাক্যালাপ করে না, সে একটি প্রতিদান লাভ করে। আর যে ব্যক্তি এমন স্থানে বসে, যেখানে থেকে ইমামের খুতবা ও তাকে দেখতে পায় না এবং অনর্থক কাজে লিপ্ত হয় এবং নীরব থাকে না, সে দুটি গুনাহ করল। আর সে যদি এমন জায়গায় বসে, যেখানে থেকে ইচ্ছা করলে ইমামের খুতবা শুনতে ও তাকে দেখতেও পারে, কিন্তু সে এরূপ না করে অনর্থক কাজ করল এবং নীরব থাকল না, সে গুনাহগার হবে। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমু'আর দিন (ইমামের খুতবাদানের সময়) অন্যকে চুপ থাকতে বলে, সেও অনর্থন কাজে লিপ্ত হল। আর যে ব্যক্তি এরূপ অনর্থক কাজে লিপ্ত হয়, সে জুমু'আর দিনের ফযীলত পাবে না। শেষ পর্যায়ে তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে এরূপ বলতে শুনেছি।
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] এ বর্ণনার সনদদ্বয়ের রাবীর নাম জানা যায়নি।
[الربايث] মানুষকে যে কাজ তার মূল উদ্দেশ্য থেকে বিরত রাখে তাকে الربايث বলে। এর অর্থ : শয়তান তাদের জুমু'আর ফযীলত থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে পার্থিব কাজের প্রতি আকৃষ্ট করে।
খাত্তাবী বলেন): শব্দটি ترابيث নয়, বরং শব্দটি হল ربايث বর্ণনাকারীর শব্দ فيرمون النَّاس ঠিক নয়। মূলত শব্দটি فيريثون النَّاس তিনি বলেন, আমার কাছে অনুরূপ বর্ণনা করা হয়েছে।
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] খাত্তাবী-এর উদ্দেশ্য হল আহমদের বর্ণনার দিকে ইংগিত করা।
(আহমদ নিজ শব্দযোগে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবূ দাউদের শব্দমালা হচ্ছে: জুমুআর দিন শয়তান স্বীয় ঢালসহ বাজারে ঘুরে বেড়ায় আর লোকজনকে বিভিন্ন প্রয়োজনের বেড়াজালে সালাত থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করে এবং জুমু'আয় উপস্থিত হতে বিলম্ব ঘটায়। পক্ষান্তরে, জুমু'আর দিন ফিরিশতাগণ নথিপত্র সহ আগমন করেন এবং মসজিদের দরজাসমূহে অবস্থান নেন এবং প্রত্যেক ব্যক্তির আগমনের সময় পর্যায়ক্রমে তাদের নাম লিখে নেন। এমনকি ইমাম খুতবাদানের জন্য মিম্বরের উপর আরোহণ করা পর্যন্ত তাঁরা এ কাজ চালিয়ে যান। ইমাম খুতবা দেওয়া শুরু করলে যে ব্যক্তি নীরবে বসে মনোযোগ সহকারে তা শোনে, সে দু'টি প্রতিদান লাভ করে। আর যে ব্যক্তি এতদূরে বসে যে, ইমামের খুতবা শুনতে পায় না, তবুও সে নীরব থাকে এবং অনর্থক বাক্যালাপ করে না, সে একটি প্রতিদান লাভ করে। আর যে ব্যক্তি এমন স্থানে বসে, যেখানে থেকে ইমামের খুতবা ও তাকে দেখতে পায় না এবং অনর্থক কাজে লিপ্ত হয় এবং নীরব থাকে না, সে দুটি গুনাহ করল। আর সে যদি এমন জায়গায় বসে, যেখানে থেকে ইচ্ছা করলে ইমামের খুতবা শুনতে ও তাকে দেখতেও পারে, কিন্তু সে এরূপ না করে অনর্থক কাজ করল এবং নীরব থাকল না, সে গুনাহগার হবে। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমু'আর দিন (ইমামের খুতবাদানের সময়) অন্যকে চুপ থাকতে বলে, সেও অনর্থন কাজে লিপ্ত হল। আর যে ব্যক্তি এরূপ অনর্থক কাজে লিপ্ত হয়, সে জুমু'আর দিনের ফযীলত পাবে না। শেষ পর্যায়ে তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে এরূপ বলতে শুনেছি।
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] এ বর্ণনার সনদদ্বয়ের রাবীর নাম জানা যায়নি।
[الربايث] মানুষকে যে কাজ তার মূল উদ্দেশ্য থেকে বিরত রাখে তাকে الربايث বলে। এর অর্থ : শয়তান তাদের জুমু'আর ফযীলত থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে পার্থিব কাজের প্রতি আকৃষ্ট করে।
খাত্তাবী বলেন): শব্দটি ترابيث নয়, বরং শব্দটি হল ربايث বর্ণনাকারীর শব্দ فيرمون النَّاس ঠিক নয়। মূলত শব্দটি فيريثون النَّاس তিনি বলেন, আমার কাছে অনুরূপ বর্ণনা করা হয়েছে।
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেনঃ] খাত্তাবী-এর উদ্দেশ্য হল আহমদের বর্ণনার দিকে ইংগিত করা।
كتاب الْجُمُعَة
التَّرْغِيب فِي التبكير إِلَى الْجُمُعَة وَمَا جَاءَ فِيمَن يتَأَخَّر عَن التبكير من غير عذر
1070 - وَعَن عَليّ بن أبي طَالب رَضِي الله عَنهُ قَالَ إِذا كَانَ يَوْم الْجُمُعَة خرجت الشَّيَاطِين يريثون النَّاس إِلَى أسواقهم وتقعد الْمَلَائِكَة على أَبْوَاب الْمَسَاجِد يَكْتُبُونَ النَّاس على قدر مَنَازِلهمْ السَّابِق وَالْمُصَلي وَالَّذِي يَلِيهِ حَتَّى يخرج الإِمَام فَمن دنا من الإِمَام فأنصت واستمع وَلم يلغ كَانَ لَهُ كفلان من الْأجر وَمن نأى فاستمع وأنصت وَلم يلغ كَانَ لَهُ كفل من الْأجر وَمن دنا من الإِمَام فلغا وَلم ينصت وَلم يستمع كَانَ عَلَيْهِ كفلان من الْوزر وَمن قَالَ صه فقد تكلم وَمن تكلم فَلَا جُمُعَة لَهُ ثمَّ قَالَ هَكَذَا سَمِعت نَبِيكُم صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول
رَوَاهُ أَحْمد وَهَذَا لَفظه
وَأَبُو دَاوُد وَلَفظه إِذا كَانَ يَوْم الْجُمُعَة غَدَتْ الشَّيَاطِين براياتها إِلَى الْأَسْوَاق فيرمون النَّاس بالترابيث أَو الربايث ويثبطونهم عَن الْجُمُعَة وتغدو الْمَلَائِكَة فَيَجْلِسُونَ على أَبْوَاب الْمَسَاجِد ويكتبون الرجل من سَاعَة وَالرجل من ساعتين حَتَّى يخرج الإِمَام فَإِذا جلس مَجْلِسا يستمكن فِيهِ من الِاسْتِمَاع وَالنَّظَر فأنصت وَلم يلغ كَانَ لَهُ كفلان من الْأجر فَإِن نأى حَيْثُ لَا يسمع فأنصت وَلم يلغ كَانَ لَهُ كفل من الْأجر فَإِن جلس مَجْلِسا لَا يستمكن فِيهِ من الِاسْتِمَاع وَالنَّظَر فلغا وَلم ينصت كَانَ لَهُ كفلان من وزر فَإِن جلس مَجْلِسا يستمكن فِيهِ من الِاسْتِمَاع وَالنَّظَر ولغا وَلم ينصت كَانَ لَهُ كفل من وزر قَالَ وَمن قَالَ لصَاحبه يَوْم الْجُمُعَة أنصت فقد لَغَا وَمن لَغَا لَيْسَ لَهُ فِي جمعته شَيْء
ثمَّ قَالَ فِي آخر ذَلِك سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول ذَلِك
قَالَ الْحَافِظ وَفِي إسنادهما راو لم يسم
الربايث بالراء وَالْبَاء الْمُوَحدَة ثمَّ ألف وياء مثناة تَحت بعْدهَا ثاء مُثَلّثَة جمع ربيثة وَهِي الْأَمر الَّذِي يحبس الْمَرْء عَن مقْصده ويثبطه عَنهُ وَمَعْنَاهُ أَن الشَّيَاطِين تشغلهم وتقعدهم عَن السَّعْي إِلَى الْجُمُعَة إِلَى أَن تمْضِي الْأَوْقَات الفاضلة
قَالَ الْخطابِيّ الترابيث لَيْسَ بِشَيْء إِنَّمَا هُوَ الربايث وَقَوله فيرمون النَّاس إِنَّمَا هُوَ فيريثون النَّاس
قَالَ وَكَذَلِكَ رُوِيَ لنا فِي غير هَذَا الحَدِيث
قَالَ الْحَافِظ يُشِير إِلَى لفظ رِوَايَة أَحْمد الْمَذْكُورَة
رَوَاهُ أَحْمد وَهَذَا لَفظه
وَأَبُو دَاوُد وَلَفظه إِذا كَانَ يَوْم الْجُمُعَة غَدَتْ الشَّيَاطِين براياتها إِلَى الْأَسْوَاق فيرمون النَّاس بالترابيث أَو الربايث ويثبطونهم عَن الْجُمُعَة وتغدو الْمَلَائِكَة فَيَجْلِسُونَ على أَبْوَاب الْمَسَاجِد ويكتبون الرجل من سَاعَة وَالرجل من ساعتين حَتَّى يخرج الإِمَام فَإِذا جلس مَجْلِسا يستمكن فِيهِ من الِاسْتِمَاع وَالنَّظَر فأنصت وَلم يلغ كَانَ لَهُ كفلان من الْأجر فَإِن نأى حَيْثُ لَا يسمع فأنصت وَلم يلغ كَانَ لَهُ كفل من الْأجر فَإِن جلس مَجْلِسا لَا يستمكن فِيهِ من الِاسْتِمَاع وَالنَّظَر فلغا وَلم ينصت كَانَ لَهُ كفلان من وزر فَإِن جلس مَجْلِسا يستمكن فِيهِ من الِاسْتِمَاع وَالنَّظَر ولغا وَلم ينصت كَانَ لَهُ كفل من وزر قَالَ وَمن قَالَ لصَاحبه يَوْم الْجُمُعَة أنصت فقد لَغَا وَمن لَغَا لَيْسَ لَهُ فِي جمعته شَيْء
ثمَّ قَالَ فِي آخر ذَلِك سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول ذَلِك
قَالَ الْحَافِظ وَفِي إسنادهما راو لم يسم
الربايث بالراء وَالْبَاء الْمُوَحدَة ثمَّ ألف وياء مثناة تَحت بعْدهَا ثاء مُثَلّثَة جمع ربيثة وَهِي الْأَمر الَّذِي يحبس الْمَرْء عَن مقْصده ويثبطه عَنهُ وَمَعْنَاهُ أَن الشَّيَاطِين تشغلهم وتقعدهم عَن السَّعْي إِلَى الْجُمُعَة إِلَى أَن تمْضِي الْأَوْقَات الفاضلة
قَالَ الْخطابِيّ الترابيث لَيْسَ بِشَيْء إِنَّمَا هُوَ الربايث وَقَوله فيرمون النَّاس إِنَّمَا هُوَ فيريثون النَّاس
قَالَ وَكَذَلِكَ رُوِيَ لنا فِي غير هَذَا الحَدِيث
قَالَ الْحَافِظ يُشِير إِلَى لفظ رِوَايَة أَحْمد الْمَذْكُورَة