আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
৫. অধ্যায়ঃ নামাজ
হাদীস নং: ৬৫৮
সালাত আদায়ের পর (অন্য) সালাতের অপেক্ষা করার প্রতি অনুপ্রেরণা
৬৫৮. হযরত আনাস (রা) থেকে নবী সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনটি রয়েছে কাফ্ফারাত, তিনটি দারাজাত, তিনটি মুনজিয়াত এবং তিনটি মুহলিকাত। কাফ্ফারাত হলঃ প্রচণ্ড শীতের মওসুমে পূর্ণরূপে উযু করা, এক সালাত আদায়ের পর অন্য সালাতের প্রতীক্ষা করা, জামাআতে সালাত আদায়ের প্রতি পদক্ষেপ। আর দারাজাত হলঃ খানা খাওয়ানো, অধিক সালামের প্রসার, লোকের নিদ্রাবস্থায় রাতে সালাত আদায়। মুনজিয়াত হল: ক্রোধ এবং সন্তুষ্টির সময় ভারসাম্য রক্ষা, দারিদ্র ও ধনাঢ্য অবস্থায় অবিচল থাকা, প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সর্বাবস্থায় আল্লাহ-ভীতি অবলম্বন করা। মুহলিকাত হল: অধিক কৃপণতা অবলম্বন, আত্মপূজারী হওয়া এবং নিজেকে উত্তম মনে করা।
(বাযযার নিজ শব্দযোগে, বায়হাকী এবং অন্যান্যরা হাদীসটি বর্ণনা করেন। তিনি একদল সাহাবা থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেন। সনদসমূহ যদিও ত্রুটিমুক্ত নয়, তবে সার্বিকভাবে হাদীসটি হাসান পর্যায়ের। আল্লাহই ভাল জানেন।)
(বাযযার নিজ শব্দযোগে, বায়হাকী এবং অন্যান্যরা হাদীসটি বর্ণনা করেন। তিনি একদল সাহাবা থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেন। সনদসমূহ যদিও ত্রুটিমুক্ত নয়, তবে সার্বিকভাবে হাদীসটি হাসান পর্যায়ের। আল্লাহই ভাল জানেন।)
التَّرْغِيب فِي انْتِظَار الصَّلَاة بعد الصَّلَاة
658 - وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أَنه قَالَ ثَلَاث كَفَّارَات وَثَلَاث دَرَجَات وَثَلَاث منجيات وَثَلَاث مهلكات
فَأَما الْكَفَّارَات فإسباغ الْوضُوء فِي السبرات وانتظار الصَّلَاة بعد الصَّلَاة وَنقل الْأَقْدَام إِلَى الْجَمَاعَات
وَأما الدَّرَجَات فإطعام الطَّعَام وإفشاء السَّلَام وَالصَّلَاة بِاللَّيْلِ وَالنَّاس نيام
وَأما المنجيات فالعدل فِي الْغَضَب وَالرِّضَا وَالْقَصْد فِي الْفقر والغنى وخشية الله فِي السِّرّ وَالْعَلَانِيَة
وَأما المهلكات فشح مُطَاع وَهوى مُتبع وَإِعْجَاب الْمَرْء بِنَفسِهِ
رَوَاهُ الْبَزَّار وَاللَّفْظ لَهُ وَالْبَيْهَقِيّ وَغَيرهمَا وَهُوَ مَرْوِيّ عَن جمَاعَة من الصَّحَابَة وَأَسَانِيده وَإِن كَانَ لَا يسلم شَيْء مِنْهَا من مقَال فَهُوَ بمجموعها حسن إِن شَاءَ الله تَعَالَى
فَأَما الْكَفَّارَات فإسباغ الْوضُوء فِي السبرات وانتظار الصَّلَاة بعد الصَّلَاة وَنقل الْأَقْدَام إِلَى الْجَمَاعَات
وَأما الدَّرَجَات فإطعام الطَّعَام وإفشاء السَّلَام وَالصَّلَاة بِاللَّيْلِ وَالنَّاس نيام
وَأما المنجيات فالعدل فِي الْغَضَب وَالرِّضَا وَالْقَصْد فِي الْفقر والغنى وخشية الله فِي السِّرّ وَالْعَلَانِيَة
وَأما المهلكات فشح مُطَاع وَهوى مُتبع وَإِعْجَاب الْمَرْء بِنَفسِهِ
رَوَاهُ الْبَزَّار وَاللَّفْظ لَهُ وَالْبَيْهَقِيّ وَغَيرهمَا وَهُوَ مَرْوِيّ عَن جمَاعَة من الصَّحَابَة وَأَسَانِيده وَإِن كَانَ لَا يسلم شَيْء مِنْهَا من مقَال فَهُوَ بمجموعها حسن إِن شَاءَ الله تَعَالَى
হাদীসের ব্যাখ্যা:
সালামের রেওয়াজদান
إفشاء السلام (সালামের প্রসার ঘটানো)। সালামের প্রসার ঘটানোর অর্থ বেশি বেশি সালাম দেওয়া। এমনভাবে এর প্রচার ও চর্চা করা, যাতে সালাম দেওয়া-নেওয়া সামাজিক রেওয়াজে পরিণত হয়ে যায়। তা সম্ভব হবে এভাবে যে, সালামের যতগুলো ক্ষেত্র আছে তার প্রত্যেকটিতেই আমরা সালাম বিনিময় করব। ঘরে প্রবেশকালে সালাম দেব। একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সালাম দেব। পরস্পর বিদায় গ্রহণকালে সালাম দেব। কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সালাম দেব। মজলিসে উপস্থিত হওয়ার সময় মজলিসের লোকদেরকে সালাম দেব। এমনিভাবে সালাম দেব বড় ছোটকে ও ছোট বড়কে। সালাম দেব পিতা-মাতাকে, ছেলেমেয়েকে, স্বামী তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রী তার স্বামীকে। নিজে আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করব। কাউকে সালাম দিতে লজ্জিত হব না, কুণ্ঠাবোধ করব না। যারা সালাম দেয় না তাদেরকে সালাম শেখাব। শিশুদেরকে সালামের তা'লীম দেব। ফোনালাপকালেও কথার সূচনা করব সালাম দ্বারা। আবার কথা শেষে সালাম দিয়েই ফোন রাখব। এভাবে নিজে সালামের চর্চা করার সাথে সাথে অন্যদেরকে সালাম দেওয়ার প্রতি উৎসাহ দিতে থাকলে এক পর্যায়ে ইসলামের এ সুন্নত সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, আমাদেরকে কেবল সালাম দিতে বা নিতেই বলা হয়নি; বরং সালামের প্রসার ঘটাতে, একে রেওয়াজে পরিণত করতে আদেশ করা হয়েছে। সর্বত্র সালামকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখার দ্বারাই এ আদেশ যথাযথভাবে পালন হতে পারে। আমরা জান্নাতকে আমাদের আসল ঠিকানা মনে করি। সে ঠিকানায় পৌঁছার জন্য এ প্রচেষ্টা এক শক্তিশালী অবলম্বন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেবল সালাম দিয়েই ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়; মুসলিম সমাজে যাতে সালামের ব্যাপক চর্চা হয়, সে চেষ্টা করাও জরুরি।
إفشاء السلام (সালামের প্রসার ঘটানো)। সালামের প্রসার ঘটানোর অর্থ বেশি বেশি সালাম দেওয়া। এমনভাবে এর প্রচার ও চর্চা করা, যাতে সালাম দেওয়া-নেওয়া সামাজিক রেওয়াজে পরিণত হয়ে যায়। তা সম্ভব হবে এভাবে যে, সালামের যতগুলো ক্ষেত্র আছে তার প্রত্যেকটিতেই আমরা সালাম বিনিময় করব। ঘরে প্রবেশকালে সালাম দেব। একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সালাম দেব। পরস্পর বিদায় গ্রহণকালে সালাম দেব। কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সালাম দেব। মজলিসে উপস্থিত হওয়ার সময় মজলিসের লোকদেরকে সালাম দেব। এমনিভাবে সালাম দেব বড় ছোটকে ও ছোট বড়কে। সালাম দেব পিতা-মাতাকে, ছেলেমেয়েকে, স্বামী তার স্ত্রীকে এবং স্ত্রী তার স্বামীকে। নিজে আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করব। কাউকে সালাম দিতে লজ্জিত হব না, কুণ্ঠাবোধ করব না। যারা সালাম দেয় না তাদেরকে সালাম শেখাব। শিশুদেরকে সালামের তা'লীম দেব। ফোনালাপকালেও কথার সূচনা করব সালাম দ্বারা। আবার কথা শেষে সালাম দিয়েই ফোন রাখব। এভাবে নিজে সালামের চর্চা করার সাথে সাথে অন্যদেরকে সালাম দেওয়ার প্রতি উৎসাহ দিতে থাকলে এক পর্যায়ে ইসলামের এ সুন্নত সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, আমাদেরকে কেবল সালাম দিতে বা নিতেই বলা হয়নি; বরং সালামের প্রসার ঘটাতে, একে রেওয়াজে পরিণত করতে আদেশ করা হয়েছে। সর্বত্র সালামকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখার দ্বারাই এ আদেশ যথাযথভাবে পালন হতে পারে। আমরা জান্নাতকে আমাদের আসল ঠিকানা মনে করি। সে ঠিকানায় পৌঁছার জন্য এ প্রচেষ্টা এক শক্তিশালী অবলম্বন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কেবল সালাম দিয়েই ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়; মুসলিম সমাজে যাতে সালামের ব্যাপক চর্চা হয়, সে চেষ্টা করাও জরুরি।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
