আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
১৬- হজ্ব - উমরার অধ্যায়
হাদীস নং: ৩১১৫
আন্তর্জাতিক নং: ১৩৩৩-৬
৬৬. কাবা ঘর ভেঙ্গে পুননির্মাণ
৩১১৫। হান্নাদ ইবনুল সারী (রাহঃ) ......... আতা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াযীদ ইবনে মুআবিয়ার সময় কাবাঘর দগ্ধীভূত হয়েছিল- যখন সিরীয়া বাহিনী মক্কায় যুদ্ধে লিপ্ত ছিল (৬৩ হিজরী) এবং কাবার যা হবার তাই হল। হজ্জের মৌসুমে লোকদের আগমনের সময় আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) কাবাকে এই অবস্থায় রেখে দিলেন। তার উদ্দেশ্যে ছিল লোকদেরকে উদ্দীপ্ত করা অথবা তাদের মধ্যে সিরীয়াদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার মনোবল সৃষ্টি করা। লোকেরা সমবেত হলে তিনি বললেন, হে জনগণ! আমাকে কাবাঘর সম্পর্কে পরামর্শ দিন। আমি কি তা ভেঙ্গে ফেলে সম্পূর্ণ নতুনভাবে গড়ে তুলব, নাকি শুধু এর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করব?
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, আমার মনে একটি মতের উদয় হয়েছে, আমি মনে করি যে, শুধু ক্ষতিগ্রস্ত অংশ তুমি মেরামত করবে এবং লোকদের ইসলাম গ্রহণ ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নবুওয়াত লাভকালীন সময়ে কাবাঘর ও পাথরসমূহ যে অবস্থায় ছিল, তা সেই আবস্থায় রেখে দেবে। ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) বললেন, আপনাদের কারো ঘর অগ্নিদগ্ধ হলে তা সংস্কার না করা পর্যন্ত তিনি স্বস্তি লাভ করতে পারেন না। অতএব আপনাদের প্রতিপালকের ঘর কি করে এরূপ জীর্ণ অবস্থায় রাখা যেতে পারে? আমি আমার রব এর কাছে তিন দিন ইস্তিখারা করব (অভিপ্রায় অবগত হওয়ার জন্য)। অতঃপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। তিন দিন পর তিনি কাবাঘর ভেঙ্গে পূনর্নিমাণের দৃঢ় সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন।
লোকেরা আশঙ্কা করল যে, সর্ব প্রথম যে ব্যক্তি কাবার ছাদে উঠবে, সে হয়ত কোন আসমানী গযবে নিপতিত হবে। শেষ পর্যন্ত এক ব্যক্তি (ছাদ ভাঙ্গার জন্য) কাবার ছাদে উঠল এবং তার একটি পাথর নীচে ফেলল। লোকেরা যখন দেখল সে কোন বিপদে পড়েনি, তখন তারাও তাকে অনুসরণ করল এবং কাবাঘর ভেঙ্গে যমীনের সাথে মিশিয়ে দিল। অতঃপর ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) কতগুলো থাম স্থাপন করে এগুলোর সাথে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। অবশেষে কাবার দেওয়ালের গাঁথুনি উচ্চ হল।
ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) বললেন, অবশ্যই আমি আয়িশা (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছি, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ “লোকেরা যদি নিকট অতীতে কুফরী ত্যাগ না করত এবং আমার নিকটও কাবাকে পুনর্নিমাণ করার মত অর্থ-সামর্থ্যও নেই- তাহলে আমি অবশ্যই আল-হিজার (হাতীম) এর পাঁচ গজ স্থান কাবা ঘরের অন্তর্ভুক্ত করতাম এবং লোকদের প্রবেশের জন্য ও বের হওয়ার জন্য এর দুটি দরজা বানাতাম।
ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) বলেন, বর্তমানে আমার হাতে তা নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ আছে এবং লোকদের তরফ থেকেও কোন প্রতিবাদের আশঙ্কা নেই। রাবী বলেন, এরপর হাতীমের পাঁচ গজ এলাকা কাবার অন্তর্ভুক্ত করলেন। এভাবে তিনি (পুরাতন) ভিত উন্মোচন করলেন [যার উপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তা গড়েছিলেন] এবং লোকেরা তা অবলোকন করল। এই ভিতের উপর দেওয়াল গড়ে তোলা হল। কাবার দৈর্ঘ্য ছিল আঠার গজ। তা যখন (প্রস্থে) বাড়ানো হল, তখন (স্বাভাবিকভাবেই দৈর্ঘ্যে) তা ছোট হওয়ায় দৈর্ঘ্যে তা আরও দশ গজ বৃদ্ধি করা হল এবং এর দুটি দরজা নির্মাণ করা হল, একটি প্রবেশের জন্য এবং অপরটি প্রস্থানের জন্য।
ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) শহীদ হলে হাজ্জাজ (ইবনে ইউসূফ) আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানকে তা লিখে জানাল। সে আরও জানাল যে, ইবনে যুবাইর (কাবার ঘর) সেই ভিতের উপর নির্মাণ করেছে যা ছিল ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর ভিত এবং মক্কার বিশ্বস্ত লোকেরা তা যাচাই করে দেখেছে। আব্দুল মালিক তাকে লিখে পাঠালেন যে, কোন বিষয়ে ইবনে যুবাইরকে অভিযুক্ত করার প্রয়োজন আমাদের নেই। সে দৈর্ঘ্যে যতইকু বর্ধিত করেছে, তা বহাল রাখ এবং হাতীমের দিকে যতটুকু বর্ধিত করেছে, তা ভেঙ্গে পূর্বাবস্থায় নিয়ে আসো। আর সে যে (নতুন) দরজা খুলেছে তা বন্ধ করে দাও। এরপর হাজ্জাজ তা ভেঙ্গে পূর্বের ভিতের উপর পুননির্মাণ করে।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, আমার মনে একটি মতের উদয় হয়েছে, আমি মনে করি যে, শুধু ক্ষতিগ্রস্ত অংশ তুমি মেরামত করবে এবং লোকদের ইসলাম গ্রহণ ও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নবুওয়াত লাভকালীন সময়ে কাবাঘর ও পাথরসমূহ যে অবস্থায় ছিল, তা সেই আবস্থায় রেখে দেবে। ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) বললেন, আপনাদের কারো ঘর অগ্নিদগ্ধ হলে তা সংস্কার না করা পর্যন্ত তিনি স্বস্তি লাভ করতে পারেন না। অতএব আপনাদের প্রতিপালকের ঘর কি করে এরূপ জীর্ণ অবস্থায় রাখা যেতে পারে? আমি আমার রব এর কাছে তিন দিন ইস্তিখারা করব (অভিপ্রায় অবগত হওয়ার জন্য)। অতঃপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। তিন দিন পর তিনি কাবাঘর ভেঙ্গে পূনর্নিমাণের দৃঢ় সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন।
লোকেরা আশঙ্কা করল যে, সর্ব প্রথম যে ব্যক্তি কাবার ছাদে উঠবে, সে হয়ত কোন আসমানী গযবে নিপতিত হবে। শেষ পর্যন্ত এক ব্যক্তি (ছাদ ভাঙ্গার জন্য) কাবার ছাদে উঠল এবং তার একটি পাথর নীচে ফেলল। লোকেরা যখন দেখল সে কোন বিপদে পড়েনি, তখন তারাও তাকে অনুসরণ করল এবং কাবাঘর ভেঙ্গে যমীনের সাথে মিশিয়ে দিল। অতঃপর ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) কতগুলো থাম স্থাপন করে এগুলোর সাথে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। অবশেষে কাবার দেওয়ালের গাঁথুনি উচ্চ হল।
ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) বললেন, অবশ্যই আমি আয়িশা (রাযিঃ) কে বলতে শুনেছি, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ “লোকেরা যদি নিকট অতীতে কুফরী ত্যাগ না করত এবং আমার নিকটও কাবাকে পুনর্নিমাণ করার মত অর্থ-সামর্থ্যও নেই- তাহলে আমি অবশ্যই আল-হিজার (হাতীম) এর পাঁচ গজ স্থান কাবা ঘরের অন্তর্ভুক্ত করতাম এবং লোকদের প্রবেশের জন্য ও বের হওয়ার জন্য এর দুটি দরজা বানাতাম।
ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) বলেন, বর্তমানে আমার হাতে তা নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ আছে এবং লোকদের তরফ থেকেও কোন প্রতিবাদের আশঙ্কা নেই। রাবী বলেন, এরপর হাতীমের পাঁচ গজ এলাকা কাবার অন্তর্ভুক্ত করলেন। এভাবে তিনি (পুরাতন) ভিত উন্মোচন করলেন [যার উপর ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তা গড়েছিলেন] এবং লোকেরা তা অবলোকন করল। এই ভিতের উপর দেওয়াল গড়ে তোলা হল। কাবার দৈর্ঘ্য ছিল আঠার গজ। তা যখন (প্রস্থে) বাড়ানো হল, তখন (স্বাভাবিকভাবেই দৈর্ঘ্যে) তা ছোট হওয়ায় দৈর্ঘ্যে তা আরও দশ গজ বৃদ্ধি করা হল এবং এর দুটি দরজা নির্মাণ করা হল, একটি প্রবেশের জন্য এবং অপরটি প্রস্থানের জন্য।
ইবনে যুবাইর (রাযিঃ) শহীদ হলে হাজ্জাজ (ইবনে ইউসূফ) আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানকে তা লিখে জানাল। সে আরও জানাল যে, ইবনে যুবাইর (কাবার ঘর) সেই ভিতের উপর নির্মাণ করেছে যা ছিল ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর ভিত এবং মক্কার বিশ্বস্ত লোকেরা তা যাচাই করে দেখেছে। আব্দুল মালিক তাকে লিখে পাঠালেন যে, কোন বিষয়ে ইবনে যুবাইরকে অভিযুক্ত করার প্রয়োজন আমাদের নেই। সে দৈর্ঘ্যে যতইকু বর্ধিত করেছে, তা বহাল রাখ এবং হাতীমের দিকে যতটুকু বর্ধিত করেছে, তা ভেঙ্গে পূর্বাবস্থায় নিয়ে আসো। আর সে যে (নতুন) দরজা খুলেছে তা বন্ধ করে দাও। এরপর হাজ্জাজ তা ভেঙ্গে পূর্বের ভিতের উপর পুননির্মাণ করে।
باب نَقْضِ الْكَعْبَةِ وَبِنَائِهَا
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ عَطَاءٍ، قَالَ لَمَّا احْتَرَقَ الْبَيْتُ زَمَنَ يَزِيدَ بْنِ مُعَاوِيَةَ حِينَ غَزَاهَا أَهْلُ الشَّامِ فَكَانَ مِنْ أَمْرِهِ مَا كَانَ تَرَكَهُ ابْنُ الزُّبَيْرِ حَتَّى قَدِمَ النَّاسُ الْمَوْسِمَ يُرِيدُ أَنْ يُجَرِّئَهُمْ - أَوْ يُحَرِّبَهُمْ - عَلَى أَهْلِ الشَّامِ فَلَمَّا صَدَرَ النَّاسُ قَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَشِيرُوا عَلَىَّ فِي الْكَعْبَةِ أَنْقُضُهَا ثُمَّ أَبْنِي بِنَاءَهَا أَوْ أُصْلِحُ مَا وَهَى مِنْهَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَإِنِّي قَدْ فُرِقَ لِي رَأْىٌ فِيهَا أَرَى أَنْ تُصْلِحَ مَا وَهَى مِنْهَا وَتَدَعَ بَيْتًا أَسْلَمَ النَّاسُ عَلَيْهِ وَأَحْجَارًا أَسْلَمَ النَّاسُ عَلَيْهَا وَبُعِثَ عَلَيْهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ لَوْ كَانَ أَحَدُكُمُ احْتَرَقَ بَيْتُهُ مَا رَضِيَ حَتَّى يُجِدَّهُ فَكَيْفَ بَيْتُ رَبِّكُمْ إِنِّي مُسْتَخِيرٌ رَبِّي ثَلاَثًا ثُمَّ عَازِمٌ عَلَى أَمْرِي فَلَمَّا مَضَى الثَّلاَثُ أَجْمَعَ رَأْيَهُ عَلَى أَنْ يَنْقُضَهَا فَتَحَامَاهُ النَّاسُ أَنْ يَنْزِلَ بِأَوَّلِ النَّاسِ يَصْعَدُ فِيهِ أَمْرٌ مِنَ السَّمَاءِ حَتَّى صَعِدَهُ رَجُلٌ فَأَلْقَى مِنْهُ حِجَارَةً فَلَمَّا لَمْ يَرَهُ النَّاسُ أَصَابَهُ شَىْءٌ تَتَابَعُوا فَنَقَضُوهُ حَتَّى بَلَغُوا بِهِ الأَرْضَ فَجَعَلَ ابْنُ الزُّبَيْرِ أَعْمِدَةً فَسَتَّرَ عَلَيْهَا السُّتُورَ حَتَّى ارْتَفَعَ بِنَاؤُهُ . وَقَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ إِنِّي سَمِعْتُ عَائِشَةَ تَقُولُ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لَوْلاَ أَنَّ النَّاسَ حَدِيثٌ عَهْدُهُمْ بِكُفْرٍ وَلَيْسَ عِنْدِي مِنَ النَّفَقَةِ مَا يُقَوِّي عَلَى بِنَائِهِ لَكُنْتُ أَدْخَلْتُ فِيهِ مِنَ الْحِجْرِ خَمْسَ أَذْرُعٍ وَلَجَعَلْتُ لَهَا بَابًا يَدْخُلُ النَّاسُ مِنْهُ وَبَابًا يَخْرُجُونَ مِنْهُ " . قَالَ فَأَنَا الْيَوْمَ أَجِدُ مَا أُنْفِقُ وَلَسْتُ أَخَافُ النَّاسَ - قَالَ - فَزَادَ فِيهِ خَمْسَ أَذْرُعٍ مِنَ الْحِجْرِ حَتَّى أَبْدَى أُسًّا نَظَرَ النَّاسُ إِلَيْهِ فَبَنَى عَلَيْهِ الْبِنَاءَ وَكَانَ طُولُ الْكَعْبَةِ ثَمَانِيَ عَشْرَةَ ذِرَاعًا فَلَمَّا زَادَ فِيهِ اسْتَقْصَرَهُ فَزَادَ فِي طُولِهِ عَشَرَ أَذْرُعٍ وَجَعَلَ لَهُ بَابَيْنِ أَحَدُهُمَا يُدْخَلُ مِنْهُ وَالآخَرُ يُخْرَجُ مِنْهُ . فَلَمَّا قُتِلَ ابْنُ الزُّبَيْرِ كَتَبَ الْحَجَّاجُ إِلَى عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ يُخْبِرُهُ بِذَلِكَ وَيُخْبِرُهُ أَنَّ ابْنَ الزُّبَيْرِ قَدْ وَضَعَ الْبِنَاءَ عَلَى أُسٍّ نَظَرَ إِلَيْهِ الْعُدُولُ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ . فَكَتَبَ إِلَيْهِ عَبْدُ الْمَلِكِ إِنَّا لَسْنَا مِنْ تَلْطِيخِ ابْنِ الزُّبَيْرِ فِي شَىْءٍ أَمَّا مَا زَادَ فِي طُولِهِ فَأَقِرَّهُ وَأَمَّا مَا زَادَ فِيهِ مِنَ الْحِجْرِ فَرُدَّهُ إِلَى بِنَائِهِ وَسُدَّ الْبَابَ الَّذِي فَتَحَهُ . فَنَقَضَهُ وَأَعَادَهُ إِلَى بِنَائِهِ .
