শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام

১১. শরীআত বিধিত দন্ডের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৫০৩৪
৩. ‘ইচ্ছাসদৃশ’ হত্যা যাতে কিসাস নেই, সেটি কোনটি?
৫০৩৪। আলী ইব্‌ন শায়বা (রাযিঃ) ….. উকবা ইব্‌ন আউস সাদুসী (রাহঃ) এক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) আল মক্কা বিজয়ের দিন ভাষণ দিয়েছেন। তিনি তার ভাষণে বলেছেনঃ শােন, ইচ্ছাসদৃশ হত্যায় নিহত (ব্যক্তি) হলাে সে, যে কিনা চাবুক, লাঠি ও পাথর দ্বারা নিহত হয়। এতে পূর্ণ দিয়াত তথা একশতটি উট, যেগুলােতে চল্লিশটি গর্ভবতী উষ্ট্ৰী (অন্তর্ভুক্ত থাকবে)।

বিশ্লেষণ

ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ একদল আলিম এই হাদীসের (বিষয়বস্তুর) দিকে গিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তি কাউকে লাঠি অথবা পাথর দ্বারা হত্যা করেছ তার উপর কিসাস নেই । ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ও এই মত পােষণকারীদের অন্যতম। পক্ষান্তরে এ বিষয়ে অপরাপর আলিমগণ তাদের বিরােধিতা করেছেন। তাদের মধ্যে ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ) অন্যতম। তাঁরা বলেছেন, যদি কাঠ এরূপ হয় যা হত্যা করে ফেলে তাহলে এতে হত্যাকারীর উপর কিসাস (সাব্যস্ত) হবে এবং এটা ইচ্ছাকৃত হত্যা হিসাবে বিবেচিত হবে। আর যদি কাঠ এরূপ হয় যে, তা (সাধারণত) হত্যা করে না, তাহলে এতে দিয়াত সাব্যস্ত হবে এবং এটা প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা গণ্য হবে।

তাঁরা বলেছেন যে, প্রথমােক্ত মত পােষণকারীগণ নবী(ﷺ)-এর বক্তব্য “শােন! প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যার নিহত ব্যক্তি সে, যে কিনা চাবুক, লাঠি ও পাথর দ্বারা নিহত হয় এবং তাতে একশতটি উট (দিয়াত) হবে” দ্বারা আমাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করেছে, তাতে তাদের মতের সপক্ষে দলীল নেই। কেননা সম্ভবত নবী(ﷺ) তা দ্বারা সেই লাঠি উদ্দেশ্য নিয়েছেন, যা সাধারণত হত্যা করেনা এবং তা সেই চাবুকের অনুরূপ, যা হত্যা করে না। যদি তাঁর উদ্দেশ্য এটাই হয় তাহলে তা দ্বারা আমাদের বক্তব্য সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আর যদি তাঁর উদ্দেশ্য এটা না হয় বরং সেই বিষয়বস্তু উদ্দেশ্য হয়, যা তােমরা বলেছ, তাহলে আমরা হাদীসকে পরিত্যাগ করেছি এবং এর বিরােধিতা করেছি। কিন্তু আমরা এখনাে এই হাদীসের বিরােধিতা সাব্যস্ত করি নাই। কেননা আমরা বলছি যে, কিছু লাঠি এরূপ রয়েছে, যা দ্বারা হত্যা করার কারণে হত্যাকারীর উপর কিসাস ওয়াজিব হয় না। আর এই মর্ম যার উপর আমরা এই হাদীসকে প্রয়ােগ করেছি সেই মর্ম অপেক্ষা উত্তম যা প্রথমােক্ত মতপােষণকারীগণ প্রয়ােগ করেছে। কেননা আমরা এই হাদীস থেকে যে মর্ম উদ্দেশ্য নিয়েছি তা আনাস (রাযিঃ)-এর হাদীসের পরিপন্থী নয়। তিনি নবী(ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি ঐ ইয়াহুদীর উপর কিসাস ওয়াজিব সাব্যস্ত করেছন, যে কিনা এক বালিকার মাথা পাথর দিয়ে থেতলে দিয়েছিল। প্রথমােক্ত মতপােষণকারীগণ এ দ্বারা যে মর্ম উদ্দেশ্য নিয়েছেন তা সেই রিওয়ায়াতের পরিপন্থী এবং তা একে অস্বীকার করে। বস্তুত হাদীসের সেই মর্ম ও বিষয়বস্তু উদ্দেশ্য নেয়া, যা দ্বারা রিওয়ায়াতসমূহ পারস্পরিকভাভে সমন্বিত হয়ে যায়, সেই মর্মের উপর প্রয়ােগ করা অপেক্ষা অধিকতর সংগত যা দ্বারা পারস্পরিক বৈপরীত্য সাব্যস্ত হয়।

যদি কোন প্রশ্নকারী বলে যে, তােমরা বিগত অনুচ্ছেদে বলেছ যে, আনাস (রাযিঃ)-এর এই হাদীস রহিত। তাহলে তােমরা কিভাবে এখানে এর উপর আমলকে সাব্যস্ত করছ?

তাকে উত্তরে বলা হবে যে, আমরা এটা বলিনি যে, আনাস (রাযিঃ)-এর এই হাদীস ঐ হিসাবে রহিত, যা তােমরা উল্লেখ করেছ। যখন কিনা ঐ রিওয়ায়াত থেকে কিসাস এবং পাথর দ্বারা হত্যা করার আবশ্যকতা বা ওয়াজিব হওয়া প্রমাণিত হচ্ছে। আমি তাে এটা বলছি যে, সম্ভবত পাথর দ্বারা কিসাস গ্রহণ রহিত হয়ে গিয়েছে। যেমনটি এ বিষয়ে আমি দলীল উল্লেখ করেছি। আমাদের মতে আনাস (রাযিঃ)-এর হাদীস কিসাসকে ওয়াজিব করার ব্যাপারে রহিত নয়। তবে ওয়াজিব কিসাসের পদ্ধতি সম্পর্কে রহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমনটি আমরা বিগত অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছি।

যাদের মতে পাথর দ্বারা হত্যা করার কারণে কিসাস ওয়াজিব হয় না তাদের নিকট আনাস (রাযিঃ)-এর হাদীসের পরিপন্থী দলীল হলাে যে, সম্ভবত নবী(ﷺ) ঐ অবস্থায় আল্লাহ্ তা'আলার হক হিসাবে কিসাসকে ওয়াজিব বা আবশ্যক করেছেন এবং ইয়াহুদীকে ঐ ডাকাতের অনুরূপ সাব্যস্ত করেছেন, যার উপর আল্লাহ্ তা'আলার হদ (দণ্ড) সমূহ থেকে হদ আবশ্যক হয়। যদি এই বিষয়টি অনুরূপ হয় তাহলে ডাকাত যখন পাথর অথবা লাঠি দ্বারা (কাউকে) হত্যা করে তখন হত্যার ক্ষেত্রে কিসাস ওয়াজিব না হওয়ার মতপােষণকারী ব্যক্তির মতেও ডাকাতকে হত্যা করা ওয়াজিব হবে। মুজতাহিদ আলিমদের একদল এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যাকারীর ব্যাপারে বলেছেন যে, তার উপর দিয়াত (আবশ্যক) হবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত সে একাধিক বার এরূপ না করবে তাকে হত্যা করা হবে না। এরপর তাকে (হদ হিসাবে) হত্যা করা হবে এবং তা হবে আল্লাহ্ তা'আলার হদ।

সম্ভবত নবী(ﷺ)-ইয়াহুদীকে এই জন্য হত্যা করেছেন যা আনাস (রাযিঃ)-এর হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে। কেননা আল্লাহ্ তা'আলার জন্য তার হত্যা ওয়াজিব হয়ে গিয়েছিল। যেভাবে ডাকাতের হত্যা ওয়াজিব হয়। যদি বিষয়টি অনুরূপ হয় তাহলে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ডাকাতি করে এবং লাঠি অথবা পাথর দ্বারা হত্যা করে কিংবা শহরে এই কাজ করে তার বিধান ডাকাতের বিধানের অনুরূপ হবে। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি একাধিক বার শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে তাকেও হত্যা করা হবে।

তাঁর বক্তব্য মুতাবিক যুক্তির দাবি হলাে যে, যে ব্যক্তি একবার এরূপ করবে তাকে হত্যা করা ওয়াজিব হবে এবং এটা আল্লাহ তা'আলার একটি হদ সাব্যস্ত হবে। যেমনি তা বার বার করার দ্বারা হত্যা করা ওয়াজিব হয়। কেননা আমরা লক্ষ্য করছি যে, একবার হুরমত বা নিষিদ্ধতা ভঙ্গ করার দ্বারা হদসমূহও ওয়াজিব হয়। অতঃপর আবারাে যখন হুরমত ভাঙ্গা হয় তখন সেই জিনিসই ওয়াজিব হয় যা প্রথম বার ভাঙ্গার দ্বারা ওয়াজিব হয়েছিল।

সুতরাং যা কিছু আমরা বর্ণনা করেছি এর উপর যুক্তির দাবি হলাে যে, শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যাকারী অপরাধীর, হুকুমও অনুরূপ হবে এবং যে হুকুম প্রথমবার করার দ্বারা আবশ্যক হয় দ্বিতীয়বার অনুরূপ করার দ্বারা সেই হুকুম হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। বস্তুত এই অনুচ্ছেদে এটাই হলাে যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ। আমাদের উল্লেখিত বক্তব্য সাব্যস্ত হওয়ার অবস্থায় আনাস (রাযিঃ)-এর হাদীস সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রমাণ হওয়াটাও খতম হয়ে যায় যে কিনা বলে যে, যে ব্যক্তি কাউকে পাথর দ্বারা হত্যা করেছে তার উপর কিসাস নেই।

ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ)-এর এই বক্তব্যের সপক্ষে নিম্নোক্ত এই রিওয়ায়াতটি অন্যতম একটি দলীলঃ
بَابُ شِبْهِ الْعَمْدِ الَّذِي لَا قَوْدَ فِيهِ مَا هُوَ؟
5034 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ شَيْبَةَ قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى قَالَ: ثنا هُشَيْمٌ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ قَاسِمِ بْنِ رَبِيعَةَ بْنِ جَوْشَنٍ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ أَوْسٍ السَّدُوسِيِّ عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَطَبَ يَوْمَ فَتْحِ [ص:186] مَكَّةَ فَقَالَ فِي خُطْبَتِهِ أَلَا إِنَّ قَتِيلَ خَطَأِ الْعَمْدِ بِالسَّوْطِ وَالْعَصَا وَالْحَجَرِ , فِيهِ دِيَةٌ مُغَلَّظَةٌ مِائَةٌ مِنَ الْإِبِلِ مِنْهَا أَرْبَعُونَ خِلْفَةً فِي بُطُونِهَا أَوْلَادُهَا " قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالُوا: لَا قَوَدَ عَلَى مَنْ قَتَلَ رَجُلًا بِعَصًا أَوْ حَجَرٍ. وَمِمَّنْ قَالَ بِذَلِكَ أَبُو حَنِيفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ مِنْهُمْ أَبُو يُوسُفَ وَمُحَمَّدٌ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمَا فَقَالُوا: إِذَا كَانَتِ الْخَشَبَةُ مِثْلُهَا يَقْتُلُ فَعَلَى الْقَاتِلِ بِهَا الْقِصَاصُ وَذَلِكَ عَمْدٌ. وَإِنْ كَانَ مِثْلُهَا لَا يَقْتُلُ فَفِي ذَلِكَ الدِّيَةُ وَذَلِكَ شِبْهُ الْعَمْدِ. وَقَالُوا: لَيْسَ فِيمَا احْتَجَّ بِهِ عَلَيْنَا أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى مِنْ قَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَلَا إِنَّ قَتِيلَ خَطَأِ الْعَمْدِ بِالسَّوْطِ وَالْعَصَا وَالْحَجَرِ , فِيهِ مِائَةٌ مِنَ الْإِبِلِ» دَلِيلٌ عَلَى مَا قَالُوا , لِأَنَّهُ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرَادَ بِذَلِكَ الْعَصَا الَّتِي لَا تَقْتُلُ مِثْلُهَا الَّتِي هِيَ كَالسَّوْطِ الَّذِي لَا يَقْتُلُ مِثْلُهُ. فَإِنْ كَانَ أَرَادَ ذَلِكَ فَهُوَ الَّذِي قُلْنَا , وَإِنْ لَمْ يَكُنْ أَرَادَ ذَلِكَ وَأَرَادَ مَا قُلْتُمْ أَنْتُمْ فَقَدْ تَرَكْنَا الْحَدِيثَ وَخَالَفْنَاهُ. فَنَحْنُ بَعْدُ لَمْ نُثْبِتْ خِلَافَنَا لِهَذَا الْحَدِيثِ إِذْ كُنَّا نَقُولُ: إِنَّ مِنَ الْعَصَا مَا إِذَا قُتِلَ بِهِ لَمْ يَجِبْ بِهِ عَلَى الْقَاتِلِ قَوَدٌ. وَهَذَا الْمَعْنَى الَّذِي حَمَلْنَا عَلَيْهِ مَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَوْلَى مِمَّا حَمَلَهُ عَلَيْهِ أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى ; لِأَنَّ مَا حَمَلْنَاهُ عَلَيْهِ لَا يُضَادُّ حَدِيثَ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي إِيجَابِهِ الْقَوْدَ عَلَى الْيَهُودِيِّ الَّذِي رَضَخَ رَأْسَ الْجَارِيَةِ بِحَجَرٍ. وَمَا حَمَلَهُ عَلَيْهِ أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى يُضَادُّ ذَلِكَ وَيَنْفِيهِ. وَلَأَنْ يُحْمَلَ الْحَدِيثُ عَلَى مَا يُوَافِقُ بَعْضُهُ بَعْضًا أَوْلَى مِنْ أَنْ يُحْمَلَ عَلَى مَا يُضَادُّ بَعْضُهُ بَعْضًا. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَأَنْتَ قَدْ قُلْتَ إِنَّ حَدِيثَ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ هَذَا مَنْسُوخٌ فِي الْبَابِ الْأَوَّلِ فَكَيْفَ أَثْبَتَّ الْعَمَلَ بِهِ هَاهُنَا؟ قِيلَ لَهُ: لَمْ نَقُلْ إِنَّ حَدِيثَ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ هَذَا مَنْسُوخٌ مِنْ جِهَةِ مَا ذَكَرْتُ وَقَدْ ثَبَتَ وُجُوبُ الْقَوْدِ وَالْقَتْلِ بِالْحَجَرِ فِي حَدِيثِ أَنَسٍ. وَإِنَّمَا قُلْتُ: إِنَّ الْقِصَاصَ بِالْحَجَرِ قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ مَنْسُوخًا لِمَا قَدْ ذَكَرْتُ مِنَ الْحُجَّةِ فِي ذَلِكَ. فَحَدِيثُ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي إِيجَابِ الْقَوْدِ عِنْدَنَا غَيْرُ مَنْسُوخٍ. وَفِي كَيْفِيَّةِ الْقَوْدِ الْوَاجِبِ قَدْ يَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ مَنْسُوخًا عَلَى مَا فَسَّرْنَا وَبَيَّنَّا فِي الْبَابِ الَّذِي قَبْلَ هَذَا الْبَابِ. فَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لِلَّذِينَ قَالُوا: إِنَّ الْقَتْلَ بِالْحَجَرِ لَا يُوجِبُ الْقَوْدَ فِي دَفْعِ حَدِيثِ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ [ص:187] أَنَّهُ قَدْ يَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ مَا أَوْجَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْقَتْلِ فِي ذَلِكَ حَقًّا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَجَعَلَ الْيَهُودِيَّ كَقَاطِعِ الطَّرِيقِ الَّذِي يَكُونُ مَا وَجَبَ عَلَيْهِ حَدًّا مِنْ حُدُودِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ. فَإِنْ كَانَ ذَلِكَ كَذَلِكَ فَإِنَّ قَاطِعَ الطَّرِيقِ إِذَا قَتَلَ بِحَجَرٍ أَوْ بِعَصًا وَجَبَ عَلَيْهِ الْقَتْلُ فِي قَوْلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ لَا قَوْدَ عَلَى مَنْ قَتَلَ بِعَصًا , وَقَدْ قَالَ بِهَذَا الْقَوْلِ جَمَاعَةٌ مِنْ أَهْلِ النَّظَرِ. وَقَدْ قَالَ أَبُو حَنِيفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فِي الْخِنَاقِ إِنَّ عَلَيْهِ الدِّيَةَ وَأَنَّهُ لَا يُقْتَلُ إِلَّا أَنْ يَفْعَلَ ذَلِكَ غَيْرَ مَرَّةٍ فَيُقْتَلُ وَيَكُونُ ذَلِكَ حَدًّا مِنْ حُدُودِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ. فَقَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَتَلَ الْيَهُودِيَّ عَلَى مَا فِي حَدِيثِ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لِأَنَّهُ وَجَبَ عَلَيْهِ الْقَتْلُ لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ كَمَا يَجِبُ عَلَى قَاطِعِ الطَّرِيقِ. فَإِنْ كَانَ ذَلِكَ كَذَلِكَ فَإِنَّ أَبَا حَنِيفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُولُ: كُلُّ مَنْ قَطَعَ الطَّرِيقَ فَقَتَلَ بِعَصًا أَوْ حَجَرٍ أَوْ فَعَلَ ذَلِكَ فِي الْمِصْرِ يَكُونُ حُكْمُهُ فِيمَا فَعَلَ حُكْمَ قَاطِعِ الطَّرِيقِ , وَكَذَلِكَ الْخَنَّاقُ الَّذِي قَدْ فَعَلَ ذَلِكَ غَيْرَ مَرَّةٍ أَنَّهُ يُقْتَلُ. وَقَدْ كَانَ يَنْبَغِي فِي الْقِيَاسِ عَلَى قَوْلِهِ: أَنْ يَكُونَ يَجِبُ عَلَى مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ مَرَّةً وَاحِدَةً الْقَتْلُ وَيَكُونُ ذَلِكَ حَدًّا مِنْ حُدُودِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ كَمَا يَجِبُ إِذَا فَعَلَهُ مِرَارًا لِأَنَّا رَأَيْنَا الْحُدُودَ يُوجِبُهَا انْتِهَاكُ الْحُرْمَةِ مَرَّةً وَاحِدَةً ثُمَّ لَا يَجِبُ عَلَى مَنِ انْتَهَكَ تِلْكَ الْحُرْمَةَ ثَانِيَةً إِلَّا مَا وَجَبَ عَلَيْهِ فِي انْتِهَاكِهَا فِي الْبَدْءِ. فَكَانَ النَّظَرُ فِيمَا وَصَفْنَا أَنْ يَكُونَ الْجَانِي الْخَنَّاقُ كَذَلِكَ أَيْضًا وَأَنْ يَكُونَ حُكْمُهُ فِي أَوَّلِ مَرَّةٍ هُوَ حُكْمَهُ فِي آخِرِ مَرَّةٍ هَذَا هُوَ النَّظَرُ فِي هَذَا الْبَابِ. وَفِي ثُبُوتِ مَا ذَكَرْنَا مَا يَرْفَعُ أَنْ يَكُونَ فِي حَدِيثِ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ حُجَّةٌ عَلَى مَنْ يَقُولُ مَنْ قَتَلَ رَجُلًا بِحَجَرٍ فَلَا قَوْدَ عَلَيْهِ. وَكَانَ مِنْ حُجَّةِ أَبِي حَنِيفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَيْضًا فِي قَوْلِهِ هَذَا مَا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৫০৩৫
৩. ‘ইচ্ছাসদৃশ’ হত্যা যাতে কিসাস নেই, সেটি কোনটি?
৫০৩৫। ইউনুস (রাযিঃ) ….. আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযায়ল গােত্রের দুই মহিলা পরস্পরে ঝগড়ায় লিপ্ত হলাে। তাদের একজন অপরজনকে পাথর নিক্ষেপ করে তাকে এবং তার গর্ভস্থ (সন্তান)-কে হত্যা করে ফেলে। তারা বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর দরবারে নিয়ে গিয়ে উত্থাপন করলে তিনি ফায়সালা দিলেন যে, তার গর্ভস্থ সন্তানের দিয়াত হলাে একটি দাস বা দাসী। আর মহিলার দিয়াত ঐ দ্বিতীয় মহিলার খান্দানের উপর সাব্যস্ত করলেন এবং ঐ নিহতের সন্তান ও অপরাপর আত্মীয়দেরকে তার উত্তরাধিকারী করলেন। হামাল ইব্‌ন মালিক ইব্‌ন নাবিগা হুযালী (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আমি তার দিয়াত (মৃত্যুপণ) কিভাবে দিব, যে পানও করেনি, খায়ওনি, কথাও বলেনি এবং কাঁদেওনি? এরূপ ব্যাপার তাে বাতিলযােগ্য। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তার ছন্দময় ও অন্ত্যমিলযুক্ত বাক্যের কারণে বললেন, এ তাে গণকদের ভাইয়ের অন্তর্ভুক্ত।
5035 - حَدَّثَنَا يُونُسُ قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي يُونُسُ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيِّبِ، وَأَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: " اقْتَتَلَتِ امْرَأَتَانِ مِنْ هُذَيْلٍ فَضَرَبَتْ إِحْدَاهُمَا الْأُخْرَى بِحَجَرٍ فَقَتَلَتْهَا وَمَا فِي بَطْنِهَا فَاخْتَصَمُوا إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَضَى أَنَّ دِيَةَ جَنِينِهَا عَبْدٌ أَوْ وَلِيدَةٌ وَقَضَى بِدِيَةِ الْمَرْأَةِ عَلَى عَاقِلَتِهَا وَوَرِثَهَا وَلَدُهَا وَمَنْ مَعَهُمْ. فَقَالَ حَمَلُ بْنُ مَالِكِ بْنِ النَّابِغَةِ الْهُذَلِيُّ: يَا رَسُولَ اللهِ , كَيْفَ أَغْرَمُ مَنْ لَا شَرِبَ وَلَا أَكَلَ وَلَا نَطَقَ وَلَا اسْتَهَلَّ؟ فَمِثْلُ ذَلِكَ بَطَلَ. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا هَذَا مِنْ إِخْوَانِ الْكُهَّانِ مِنْ أَجْلِ سَجْعِهِ الَّذِي سَجَعَهُ "
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৫০৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ৫০৩৭
৩. ‘ইচ্ছাসদৃশ’ হত্যা যাতে কিসাস নেই, সেটি কোনটি?
৫০৩৬-৩৭। হুসাইন ইব্‌ন নসর (রাহঃ) ..... মুগীরা ইব্‌ন শু'বা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, দুই (সতীন) মহিলা একদিন একজন অপরজনকে তাঁবুর খুঁটি ছুঁড়ে মারে এবং সে তাকে হত্যা করে। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) হত্যাকারিণী মহিলার খান্দানের (পিতৃপক্ষীয় আত্মীয়দের) উপর দিয়াতের ফায়সালা দিলেন। আর তার গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষেত্রে ‘গুররা' বা একটি দাস অথবা দাসী প্রদানের সিদ্ধান্ত দিলেন। এক বেদুঈন বলল, (হে রাসূল(ﷺ)! আমি কি তার দিয়াত দিব, যে কিনা খায়ওনি, পানও করেনি, শব্দও করেনি এবং কাঁদেওনি? এরূপ ব্যাপার তাে বাতিলযােগ্য। তিনি বললেন, সে তাে বেদুঈনদের ন্যায় ছন্দময় বাক্য উচ্চারণ করেছে।


মুহাম্মাদ ইব্‌ন খুযায়মা (রাযিঃ) ..... মুগীরা (রাযিঃ) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এই সমস্ত রিওয়ায়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, নবী(ﷺ) হত্যাকারিণী মহিলাকে পাথর অথবা তাবুর খুঁটির দ্বারা হত্যা করেন নাই। অথচ তাবুর খুঁটি সেই সমস্ত বস্তুর অন্তর্ভুক্ত, যা দ্বারা হত্যা করা যায়। এতে প্রতীয়মান হয় যে, যে ব্যক্তি কাঠ দ্বারা নিহত হয় তার কিসাস নেই, যদিও অনুরূপ কাঠ দ্বারা হত্যা করা হয়।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের বিরােধীদের দলীল হলাে যে, হামাল (ইবন মালিক রা) নবী(ﷺ) থেকে এর পরিপন্থী রিওয়ায়াত করেছেনঃ
5036 - حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ نَصْرٍ قَالَ: ثنا الْفِرْيَابِيُّ قَالَ: ثنا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ نَضْلَةَ الْخُزَاعِيِّ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ «أَنَّ امْرَأَتَيْنِ ضَرَبَتْ إِحْدَاهُمَا الْأُخْرَى بِعَمُودِ الْفُسْطَاطِ فَقَتَلَتْهَا. فَقَضَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالدِّيَةِ عَلَى عَصَبَةِ الْقَاتِلَةِ وَقَضَى مَا فِي بَطْنِهَا بِغُرَّةٍ وَالْغُرَّةُ عَبْدٌ أَوْ أَمَةٌ. فَقَالَ الْأَعْرَابِيُّ أَغْرَمُ مَنْ لَا طَعِمَ وَلَا شَرِبَ وَلَا صَاحَ وَلَا اسْتَهَلَّ وَمِثْلُ ذَلِكَ يُطَلُّ. فَقَالَ سَجْعٌ كَسَجْعِ الْأَعْرَابِ»

5037 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ , قَالَ أَخْبَرَنَا زَائِدَةُ , عَنْ مَنْصُورٍ , عَنْ إِبْرَاهِيمَ , عَنْ عُبَيْدِ بْنِ نَضْلَةَ , عَنِ الْمُغِيرَةِ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ قَالُوا: فَهَذِهِ الْآثَارُ تُخْبِرُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَقْتُلِ الْمَرْأَةَ الْقَاتِلَةَ بِالْحَجَرِ وَلَا بِعَمُودِ الْفُسْطَاطِ وَعَمُودُ الْفُسْطَاطِ يَقْتُلُ مِثْلُهُ فَدَلَّ ذَلِكَ عَلَى أَنَّهُ لَا قَوَدَ عَلَى مَنْ قَتَلَ بِخَشَبَةٍ وَإِنْ كَانَ مِثْلُهَا يَقْتُلُ. فَكَانَ مِنْ حُجَّةِ مَنْ خَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ أَنْ قَالَ: فَقَدْ رَوَى حَمَلٌ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِلَافَ هَذَا فَذَكَرَ مَا
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৫০৩৭
আন্তর্জাতিক নং: ৫০৩৯
৩. ‘ইচ্ছাসদৃশ’ হত্যা যাতে কিসাস নেই, সেটি কোনটি?
৫০৩৮-৩৯। ইব্‌ন মারযূক (রাহঃ) ….. ইব্‌ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমার ইব্‌ন খাত্তাব (রাযিঃ) লােকদেরকে কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) গর্ভস্থ সন্তানের ব্যাপারে কি ফয়সালা দিয়েছেন? হামাল ইব্‌ন মালিক ইব্‌ন নাবিগা (রাযিঃ) বললেন, আমি দুই মহিলার মাঝে ছিলাম। তাদের একজন অপরজনকে কীলক বা তাবুর খুঁটি ছুঁড়ে মারে এবং তাকে ও তার গর্ভস্থ সন্তানকে হত্যা করে। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) গর্ভস্থ সন্তানের (হত্যার) ক্ষেত্রে গুররা (দাস বা দাসী) দিয়াত প্রদানের এবং ঐ হত্যাকারিণী (মহিলা) কে নিহত মহিলার স্থানে (বদলায়) হত্যা করার ফয়সালা দেন।


মুহাম্মাদ ইব্‌ন নাে’মান (রাহঃ) ..... ইব্‌ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তিনি তার এ কথা নকল করেন নাই যে, “ঐ হত্যাকারিণীকে নিহত মহিলার স্থানে হত্যা করা হবে।”

বস্তুত এই হামাল ইব্‌ন মালিক (রাযিঃ) নবী(ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করছেন যে, তিনি ওই (হত্যাকারিণী) মহিলাকে হত্যা করেছেন, যে কি না অপর মহিলাকে কীলক মেরে হত্যা করেছিল। অতএব তিনি আবু হুরায়রা (রাযিঃ) এবং মুগীরা ইব্‌ন শু’বা (রাযিঃ)-এর ঐ রিওয়ায়াতের বিরােধিতা করেছেন, যাতে তাঁরা নবী(ﷺ)-এর ফয়সালা নকল করেছেন যে, তিনি তাতে দিয়াত আবশ্যক করেছেন। তাই এভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রিওয়ায়াত সমূহ পারস্পরিক বরাবর হয়ে গেল। সুতরাং যখন রিওয়ায়াতসমূহ পারস্পরিক বরাবর ও প্রতিদ্বন্দ্বী হলাে তখন এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে, যেন আমরা দুই অভিমত থেকে বিশুদ্ধতরটি বের করতে সক্ষম হই।

সুতরাং আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কিয়াস করে একটি সর্বসম্মত মূলনীতি পেয়েছি যে, কেউ কাউকে ইচ্ছাকৃত লৌহ দ্বারা হত্যা করলে তার উপর কিসাস আবশ্যক এবং এ ক্ষেত্রে সে গােনাহগারও হবে। কিন্তু অধিকাংশ আলিমের মতে তার উপর কাফ্ফারা নেই। যদি সে ভুলে তাকে হত্যা করে তাহলে তার আকেলা' বা পিতৃবংশীয় লােকদের উপর দিয়াত আবশ্যক হবে এবং তার উপর কাফ্ফারা আসবে, গােনাহ হবে না। সুতরাং কাফ্ফারা সেখানে আবশ্যক হবে যেখানে গােনাহ উঠে যায় এবং কাফফারা ওখানে উঠে যাবে যেখানে গােনাহ অনিবার্য হয়। অতঃপর প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যার প্রতি লক্ষ্য করেছি যে, এ বিষয়ে সকলের ঐকমত্য যে, এতে দিয়াত রয়েছে এবং কাফ্ফারাও ওয়াজিব। তবে এর (প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা) সঙ্গাঁ কি, এ নিয়ে তাঁরা (ফকীহগণ) মতবিরােধ করেছেনঃ কেউ বলেছেন, কেউ কাউকে ইচ্ছাকৃত কোন হাতিয়ার ব্যতীত হত্যা করাকে প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা বলা হয়। পক্ষান্তরে অপর একদল বলেন, কেউ কাউকে এরূপ বস্তু দ্বারা হত্যা করা, যা তার ধারণা মতে তাকে (সাধারণত) হত্যা করে না, যেমন সে কোন ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে চাবুক বা এরূপ অন্য কোন বস্তু নিক্ষেপ করে, যে অনুরূপ বস্তু দ্বারা (সাধারণত) হত্যা হয় না, অতঃপর সে এ দ্বারা মরে যায়। তাদের মতে এটা হলাে প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা। যদি তার উপর বার বার চাবুক মারে এবং তা ঐ জিনিসের ন্যায় হয়ে যায় যা দ্বারা হত্যা করা যায় তাহলে এটা ইচ্ছাকৃত হত্যা হয়ে যাবে এবং এতে তার উপর কিসাস ওয়াজিব হবে। সুতরাং তাদের থেকে যিনি প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যাকে ওই দুই শ্রেণীর মধ্য থেকে এক শ্রেণীর মুতাবিক সাব্যস্ত করেছ তারা তাতে কাফ্ফারা ওয়াজিব করেছে। আমরা লক্ষ্য করছি যে, উভয় দলের কাফ্ফারা সেখানে ওয়াজিব হয় যেখানে গােনাহ হয় না। আর যেখানে গােনাহ হয় সেখানে কাফ্ফারা বিলুপ্ত হয়ে যায়। যে ব্যক্তি পাথর বা লাঠি অথবা অনুরূপ কোন বস্তু দ্বারা হত্যা করে তাহলে তার ও আল্লাহর মাঝের বিষয় হিসাবে সে গােনাহগার সাব্যস্ত হবে। যেমন কেউ কাউকে লৌহ (হাতিয়ার) দ্বারা হত্যা করে। যে ব্যক্তি কাউকে চাবুক দ্বারা হত্যা করে, যে অনুরূপ বস্তু দ্বারা হত্যা করা হয় না, তাহলে তার উপর হত্যার গােনাহ হবেনা। তবে হ্যাঁ প্রহারের গােনাহ হবে। বােধ হয় যেন তার থেকে হত্যার গােনাহ উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। কেননা সে এর ইচ্ছা করে নাই এবং প্রহারের গােনাহ তার উপর লিখে দেয়া হবে। কেননা সে এর ইচ্ছা করেছিল। । সুতরাং কিয়াস ও যুক্তি হলাে যে, প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা যাতে সকলের ঐকমত্য যে, এতে প্রাণের কাফ্ফারা রয়েছে, তা হলাে যাতে গােনাহ নেই। আর তা এরূপ বস্তু দ্বারা হত্যা করা, যা দ্বারা সাধারণত হত্যা করা হয় না। বস্তুত এর দ্বারা প্রহার করার ইচ্ছা করা হয়, প্রাণের ধ্বংস ইচ্ছা করা হয় না, কিন্তু এর দ্বারা প্রাণনাশ হয়ে যায়। সুতরাং এতে এই মত পােষণকারীদের মতাদর্শ সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আর এটা ইমাম আবু ইউসূফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।

উমার ইব্‌ন খাত্তাব (রাযিঃ) থেকেও সংশ্লিষ্ট বিষয়টি বর্ণিত আছেঃ
5038 -حَدَّثَنَا ابْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: ثنا أَبُو عَاصِمٍ عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ نَشَدَ النَّاسَ أَيْ سَأَلَهُمْ وَأَقْسَمَ عَلَيْهِمْ قَضَاءَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْجَنِينِ. فَقَامَ حَمَلُ بْنُ مَالِكِ بْنِ النَّابِغَةِ فَقَالَ: إِنِّي كُنْتُ بَيْنَ امْرَأَتَيْنِ وَإِنَّ إِحْدَاهُمَا ضَرَبَتِ الْأُخْرَى بِمِسْطَحٍ فَقَتَلَتْهَا وَجَنِينَهَا فَقَضَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْجَنِينِ بِغُرَّةٍ وَأَنْ تُقْتَلَ مَكَانَهَا ".

5039 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ النُّعْمَانِ , قَالَ: ثنا الْحُمَيْدِيُّ , قَالَ: ثنا هِشَامُ بْنُ سُلَيْمَانَ الْمَخْزُومِيُّ , عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ , عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ , عَنْ طَاوُسٍ , عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ , مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ قَوْلَهُ وَأَنْ تُقْتَلَ مَكَانَهَا فَهَذَا حَمَلُ بْنُ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَرْوِي عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَتَلَ الْمَرْأَةَ بِالَّتِي قَتَلَتْهَا بِالْمِسْطَحِ. فَقَدْ خَالَفَ أَبَا هُرَيْرَةَ وَالْمُغِيرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِيمَا رَوَيَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ قَضَائِهِ بِالدِّيَةِ فِي ذَلِكَ. فَقَدْ تَكَافَأَتِ الْأَخْبَارُ فِي ذَلِكَ. فَلَمَّا تَكَافَأَتْ وَاخْتَلَفَتْ وَجَبَ النَّظَرُ فِي ذَلِكَ لِنَسْتَخْرِجَ مِنَ الْقَوْلَيْنِ قَوْلًا صَحِيحًا فَاعْتَبَرْنَا ذَلِكَ. فَوَجَدْنَا الْأَصْلَ الْمُجْمَعَ عَلَيْهِ أَنَّ مَنْ قَتَلَ رَجُلًا بِحَدِيدَةٍ عَمْدًا فَعَلَيْهِ الْقَوَدُ وَهُوَ آثِمٌ فِي ذَلِكَ وَلَا كَفَّارَةَ عَلَيْهِ فِي قَوْلِ أَكْثَرِ الْعُلَمَاءِ. وَإِذَا قَتَلَهُ خَطَأً فَالدِّيَةُ عَلَى عَاقِلَتِهِ وَالْكَفَّارَةُ عَلَيْهِ وَلَا إِثْمَ عَلَيْهِ فَكَانَتِ الْكَفَّارَةُ تَجِبُ حَيْثُ يَرْتَفِعُ الْإِثْمُ. [ص:189] وَتَرْتَفِعُ الْكَفَّارَةُ حَيْثُ يَجِبُ الْإِثْمُ. وَرَأَيْنَا شِبْهَ الْعَمْدِ قَدْ أَجْمَعُوا أَنَّ الدِّيَةَ فِيهِ وَأَنَّ الْكَفَّارَةَ فِيهِ وَاجِبَةٌ وَاخْتَلَفُوا فِي كَيْفِيَّتِهَا مَا هِيَ؟ فَقَالَ قَائِلُونَ: هُوَ الرَّجُلُ يَقْتُلُ رَجُلًا مُتَعَمِّدًا بِغَيْرِ سِلَاحٍ. وَقَالَ آخَرُونَ: هُوَ الرَّجُلُ يَقْتُلُ الرَّجُلَ بِالشَّيْءِ الَّذِي لَا يَرَى أَنَّهُ يَقْتُلُهُ كَأَنَّهُ يَتَعَمَّدُ ضَرْبَ رَجُلٍ بِسَوْطٍ أَوْ بِشَيْءٍ لَا يَقْتُلُ مِثْلَهُ فَيَمُوتُ مِنْ ذَلِكَ فَهَذَا شِبْهُ الْعَمْدِ عِنْدَهُمْ. فَإِنْ كَرَّرَ عَلَيْهِ الضَّرْبَ بِالسَّوْطِ مِرَارًا حَتَّى كَانَ ذَلِكَ مِمَّا قَدْ يَقْتُلُ مِثْلُهُ كَانَ ذَلِكَ عَمْدًا وَوَجَبَ عَلَيْهِ فِيهِ الْقَوَدُ. وَكُلُّ مَنْ جَعَلَ مِنْهُمْ شِبْهَ الْعَمْدِ عَلَى جِنْسٍ مِنْ هَذَيْنِ الْجِنْسَيْنِ أَوْجَبَ فِيهِ الْكَفَّارَةَ. وَقَدْ رَأَيْنَا الْكَفَّارَةَ فِيمَا قَدْ أَجْمَعَ عَلَيْهِ الْفَرِيقَانِ تَجِبُ حَيْثُ لَا يَجِبُ الْإِثْمُ وَتَنْتَفِي حَيْثُ يَكُونُ الْإِثْمُ وَكَانَ الْقَاتِلُ بِحَجَرٍ أَوْ بِعَصًا أَوْ مِثْلِ ذَلِكَ يَقْتُلُ عَلَيْهِ إِثْمُ النَّفْسِ وَهُوَ فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ رَبِّهِ كَمَنْ قَتَلَ رَجُلًا بِحَدِيدَةٍ وَكَانَ مَنْ قَتَلَ رَجُلًا بِسَوْطٍ لَيْسَ مِثْلُهُ يَقْتُلُ غَيْرَ آثِمٍ إِثْمَ الْقَتْلِ وَلَكِنَّهُ آثِمٌ إِثْمَ الضَّرْبِ فَكَانَ إِثْمُ الْقَتْلِ فِي هَذَا عَنْهُ مَرْفُوعًا لِأَنَّهُ لَمْ يَرُدَّهُ وَإِثْمُ الضَّرْبِ عَلَيْهِ مَكْتُوبٌ لِأَنَّهُ قَصَدَهُ وَأَرَادَهُ. فَكَانَ النَّظَرُ أَنْ يَكُونَ شِبْهُ الْعَمْدِ الَّذِي قَدْ أُجْمِعَ أَنَّ فِيهِ كَفَّارَةً فِي النَّفْسِ هُوَ مَا لَا إِثْمَ فِيهِ وَهُوَ الْقَتْلُ بِمَا لَيْسَ مِثْلُهُ يَقْتُلُ الَّذِي يَتَعَمَّدُ بِهِ الضَّرْبَ وَلَا يُرَادُ بِهِ تَلَفُ النَّفْسِ فَيَأْتِي ذَلِكَ عَلَى تَلَفِ النَّفْسِ. فَقَدْ ثَبَتَ بِذَلِكَ قَوْلُ أَهْلِ هَذِهِ الْمَقَالَةِ وَهُوَ قَوْلُ أَبِي يُوسُفَ وَمُحَمَّدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمَا. وَقَدْ رُوِيَ ذَلِكَ أَيْضًا عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৫০৩৯
empty
৫০৩৯।
5039 -
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান