শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ

شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام

১১. শরীআত বিধিত দন্ডের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৫০৪২
৪. প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা প্রাণের (হত্যা) অপেক্ষা নিম্ন পর্যায়ের অঙ্গ হানিতেও হয় কি না , যেমনিভাবে প্রাণের মধ্যে হয়?

ইমাম আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ যদি কেউ বলে যে, যখন রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) থেকে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে, কখনাে প্রাণ হত্যায় প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যাও হয়। তাহলে অনুরূপভাবে প্রাণ অপেক্ষা নিম্ন পর্যায়ের অঙ্গহানিতেও প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা হবে। তিনি এ বিষয়ে সেই সমস্ত রিওয়ায়াত উল্লেখ করেছেন, যা আমরা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) থেকে রিওয়ায়াত করেছি। তাতে তিনি বলেছেনঃ শােন! ইচ্ছাকৃত হত্যায় নিহত ব্যক্তি সে, যে কিনা চাবুক, লাঠি ও পাথর দ্বারা নিহত হয়েছে, তাতে দিয়াত হবে একশতটি উট, যেগুলাের মাঝে চল্লিশটি হবে গর্ভবতী উষ্ট্রী।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আমাদের দলীল হলাে যে, নবী(ﷺ) থেকে প্রাণ হত্যার ব্যাপারে সেটিই বর্ণিত আছে, যা ঐ হাদীসে রয়েছে। কিন্তু প্রাণের (হত্যা) অপেক্ষা নিম্ন পর্যায়ের অঙ্গহানিতে তাঁর থেকে এর পরিপন্থী বর্ণিত আছে। আর সেই রিওয়ায়াতটি আমরা নিজস্ব সনদে এই গ্রন্থের শুরুতে রুবাইয়্যা (রাযিঃ)-এর ঘটনায় নকল করেছি। তিনি একবার এক দাসীকে থাপ্পড় মেরে তার সম্মুখের দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। অনন্তর তারা (দাসীর পরিজন) রাসূলুল্লাহ্(ﷺ)-এর দরবারে অভিযােগ দায়ের করলে তিনি কিসাসের নির্দেশ দেন।
আমরা লক্ষ্য করেছি যে, যদি থাপ্পড় মারা দ্বারা হত্যার (ন্যায় অপরাধ সংঘটিত) হয় তাহলে তাতে কিসাস ওয়াজিব হয় না। পক্ষান্তরে হত্যা অপেক্ষা নিম্নপর্যায়ের অঙ্গহানিতে কিসাস ওয়াজিব হয়। এতে প্রমাণিত হলাে যে, যে আমল প্রাণের (হত্যার) বিষয়ে প্রায় ইচ্ছাকৃত হত্যা সাব্যস্ত হয়, তা প্রাণের (হত্যা) অপেক্ষা নিম্ন পর্যায়ে (অঙ্গহানিতে) ইচ্ছাকৃত (হত্যা) হয়ে যায়। এই রিওয়ায়াতসমূহের বিশুদ্ধকরণ দ্বারা এটাই সাব্যস্ত হয়। আর ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত এটাই।

৫. কোন বক্তি মৃত্যুর সময় (মুমূর্ষ অবস্থায়) বলল, আমি যদি মরে যাই তাহলে অমুক আমাকে হত্যা করেছে

আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ আমরা পূর্বে এই গ্রন্থের শুরুতে রিওয়ায়াত বর্ণনা করে এসেছি যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) যখন ওই বালিকাকে জিজ্ঞাসা করলেন, যার মাথা (পাথর দ্বারা) থেতলে দেয়া হয়েছিল যে, কে তােমার মাথা চূর্ণ করেছে, অমুক ব্যক্তি? তখন সে মাথা নেড়ে ইশারায় (বলল) হ্যাঁ, অনন্তর রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তার (চূর্ণকারীর) মাথা দুই পাথরের মাঝে চূর্ণ করে দেয়ার নির্দেশ দিলেন।

বিশ্লেষণ

একদল আলিম এই হাদীসের উপর আমলের দাবি করে বলছেন যে, যে ব্যক্তি মৃত্যু অবস্থায় দাবি করেছে যে, তাকে অমুকে হত্যা করেছে অতঃপর সে মৃত্যুবরণ করেছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার বক্তব্য গ্রহণ করা হবে এবং যাকে হত্যাকারী বলে উল্লেখ করেছে তাকে (কিসাসরূপে) হত্যা করা হবে। পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এ বিষয়ে তাদের বিরােধিতা করে বলেছেন যে, সম্ভবত নবী(ﷺ) ইয়াহুদীকেও জিজ্ঞাসা করেছেন এবং সে ঐ বিষয়ে স্বীকারােক্তি জ্ঞাপন করেছে, যা ওই বালিকা তার বিরুদ্ধে দাবি করেছিল। সুতরাং তিনি তার স্বীকারােক্তির কারণে তাকে হত্যা করেছেন, বালিকার দাবির কারণে নয়।

অতএব আমরা এ বিষয়ে বর্ণিত রিওয়ায়াতসমূহে দেখেছি যে, আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাতে কোন দলীল পাই কিনা? তাতে দেখা গেলােঃ
৫০৪২। ইব্‌ন আবী দাউদ (রাহঃ) ….. আনাস (রাযিঃ) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করে কিছু অতিরিক্ত বাক্য নকল করে বলেছেন যে, তিনি সেই (ইয়াহুদী) কে জিজ্ঞাসা করেছেন। তখন সে বালিকার দাবি মুতাবিক স্বীকারােক্তি জ্ঞাপন করেছে। অনন্তর তিনি তার মাথা দুই পাথরের মাঝে থেতলে দিয়েছেন।
بَابُ شِبْهِ الْعَمْدِ هَلْ يَكُونُ فِيمَا دُونَ النَّفْسِ كَمَا يَكُونُ فِي النَّفْسِ؟ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: لَمَّا ثَبَتَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ النَّفْسَ قَدْ يَكُونُ فِيهَا شِبْهُ عَمْدٍ كَانَ كَذَلِكَ فِيمَا دُونَ النَّفْسِ وَذَكَرَ فِي ذَلِكَ الْآثَارَ الَّتِي قَدْ رَوَيْنَاهَا عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّتِي فِيهَا " أَلَا إِنَّ قَتِيلَ خَطَأِ الْعَمْدِ بِالسَّوْطِ وَالْعَصَا وَالْحَجَرِ فِيهِ مِائَةٌ مِنَ الْإِبِلِ مِنْهَا أَرْبَعُونَ خِلْفَةً فِي بُطُونِهَا أَوْلَادُهَا «. فَكَانَ مِنْ حُجَّتِنَا عَلَيْهِ فِي ذَلِكَ أَنَّهُ قَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي النَّفْسِ مَا قَدْ رُوِيَ عَنْهُ فِيهَا. وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ فِيمَا دُونَ النَّفْسِ مَا يُخَالِفُ ذَلِكَ وَهُوَ مَا قَدْ ذَكَرْنَاهُ بِإِسْنَادِهِ فِي أَوَّلِ هَذَا الْكِتَابِ فِي خَبَرِ» الرُّبَيِّعِ أَنَّهَا لَطَمْتُ جَارِيَةً فَكَسَرْتُ ثَنِيَّتَهَا فَاخْتَصَمُوا إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَ بِالْقِصَاصِ ". وَقَدْ رَأَيْنَا اللَّطْمَةَ إِذَا أَتَتْ عَلَى النَّفْسِ لَمْ يَجِبْ فِيهَا قَوَدٌ وَرَأَيْنَاهَا فِيمَا دُونَ النَّفْسِ قَدْ أَوْجَبَتِ الْقَوَدَ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ مَا كَانَ فِي النَّفْسِ شِبْهُ عَمْدٍ أَنَّهُ فِيمَا دُونَ النَّفْسِ عَمْدٌ عَلَى تَصْحِيحِ هَذِهِ الْآثَارِ. وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ وَأَبِي يُوسُفَ وَمُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ رِضْوَانُ اللهِ عَلَيْهِمْ أَجْمَعِينَ

بَابُ الرَّجُلِ يَقُولُ عِنْدَ مَوْتِهِ: إِنْ مِتُّ فَفُلَانٌ قَتَلَنِي قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: قَدْ رَوَيْنَا فِيمَا تَقَدَّمَ مِنْ هَذَا الْكِتَابِ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا سَأَلَ الْجَارِيَةَ الَّتِي رُضِخَ رَأْسُهَا مَنْ رَضَخَ رَأْسَكَ أَفُلَانٌ هُوَ؟ فَأَوْمَتْ بِرَأْسِهَا أَيْ نَعَمْ فَأَمَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَضْخِ رَأْسِهِ بَيْنَ حَجَرَيْنِ» . فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ فَزَعَمُوا أَنَّهُمْ قَلَّدُوهُ وَقَالُوا: مَنِ ادَّعَى - وَهُوَ فِي حَالِ الْمَوْتِ - أَنَّ فُلَانًا قَتَلَهُ ثُمَّ مَاتَ قَبْلَ قَوْلِهِ فِي ذَلِكَ وَقَتَلَ الَّذِي ذَكَرَ أَنَّهُ قَتَلَهُ. وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ فَقَالُوا: قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَأَلَ الْيَهُودِيَّ فَأَقَرَّ بِمَا ادَّعَتِ الْجَارِيَةُ عَلَيْهِ مِنْ ذَلِكَ فَقَتَلَهُ بِإِقْرَارِهِ لَا بِدَعْوَى الْجَارِيَةِ. فَاعْتَبَرْنَا الْآثَارَ الَّتِي قَدْ جَاءَتْ فِي ذَلِكَ: هَلْ نَجِدُ فِيهَا عَلَى شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ دَلِيلًا؟
5042 - فَإِذَا ابْنُ أَبِي دَاوُدَ
قَدْ حَدَّثَنَا قَالَ: ثنا أَبُو عُمَرَ الْحَوْضِيُّ قَالَ: ثنا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ وَزَادَ قَالَ: فَسَأَلَهُ فَأَقَرَّ بِمَا ادَّعَتْ فَرَضَخَ رَأْسَهُ بَيْنَ حَجَرَيْنِ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৫০৪৩
৫. কোন বক্তি মৃত্যুর সময় (মুমূর্ষ অবস্থায়) বলল, আমি যদি মরে যাই তাহলে অমুক আমাকে হত্যা করেছে
৫০৪৩। ফাহাদ (রাহঃ) ….. আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ইয়াহুদী এক বালিকার মাথা দুই পাথরের মাঝে থেতলে দিয়েছিল। তাকে (বালিকাকে) জিজ্ঞাসা করা হলাে যে, তােমার সঙ্গে এই আচরণ কে করেছে, তবে সে কি অমুক? তবে সে কি অমুক? এভাবে বলতে বলতে অবশেষে তারা ইয়াহুদীর (নাম) উল্লেখ করল । অনন্তর তাকে উপস্থিত করা হলে সে স্বীকারােক্তি করল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর নির্দেশে তার মাথা দুই পাথরের মাঝে থেতলে দেয়া হয়।

সুতরাং এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) ওই ইয়াহুদীকে তার স্বীকারােক্তির ভিত্তিতে বালিকার দাবি অনুযায়ী হত্যা করেছেন। শুধু বালিকার দাবির উপরে (তাকে হত্যা করা) হয় নাই।
এই বিষয়টি ইজমা তথা তাদের ঐকমত্যের মাঝেও বর্ণনা করা হয়েছেঃ তােমরা কি লক্ষ্য করছ না যে, যদি কোন ব্যক্তি কারাে বিরুদ্ধে হত্যা ইত্যাদীর দাবি করে (অতঃপর বিচারক) বিবাদীর নিকট এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে এবং সে মাথা নেড়ে ইশারা করল যে হ্যাঁ! এতে সে স্বীকারােক্তিকারী গণ্য হবে না। সুতরাং যখন বিবাদীর মাথা নেড়ে ইশারা দ্বারা হ্যাঁ করা স্বীকারােক্তি হয় না যে, এতে তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে । তাহলে ফরিয়াদীর মাথার ইশারায় কোন হক বা অধিকার প্রমাণিত না হওয়াটা অধিক সংগতঃ
5043 - حَدَّثَنَا فَهْدٌ قَالَ: ثنا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ قَالَ: ثنا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ " أَنَّ يَهُودِيًّا رَضَخَ رَأْسَ جَارِيَةٍ بَيْنَ حَجَرَيْنِ فَقِيلَ لَهَا: مَنْ فَعَلَ بِكِ هَذَا؟ أَفُلَانٌ؟ أَفُلَانٌ؟ حَتَّى ذَكَرُوا الْيَهُودِيَّ فَأُتِيَ بِهِ فَاعْتَرَفَ فَأَمَرَ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَضَخَ رَأْسَهُ بَيْنَ حَجَرَيْنِ " فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا قَتَلَهُ بِإِقْرَارِهِ بِمَا ادَّعَى عَلَيْهِ لَا بِدَعْوَى الْجَارِيَةِ. وَقَدْ بَيَّنَ ذَلِكَ أَيْضًا مَا قَدْ أَجْمَعُوا عَلَيْهِ. [ص:191] أَلَا تَرَى أَنَّ رَجُلًا لَوِ ادَّعَى عَلَى رَجُلٍ دَعْوَى قَتْلًا أَوْ غَيْرَهُ فَسَأَلَ الْمُدَّعَى عَلَيْهِ عَنْ ذَلِكَ فَأَوْمَأَ بِرَأْسِهِ أَيْ: نَعَمْ أَنَّهُ لَا يَكُونُ بِذَلِكَ مُقِرًّا. فَإِذَا كَانَ إِيمَاءُ الْمُدَّعَى عَلَيْهِ بِرَأْسِهِ لَا يَكُونُ مِنْهُ إِقْرَارًا يَجِبُ بِهِ عَلَيْهِ حَقٌّ كَانَ إِيمَاءُ الْمُدَّعِي بِرَأْسِهِ أَحْرَى أَنْ لَا يُوجِبَ لَهُ حَقًّا. وَقَدْ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৫০৪৪
আন্তর্জাতিক নং: ৫০৪৫
৫. কোন বক্তি মৃত্যুর সময় (মুমূর্ষ অবস্থায়) বলল, আমি যদি মরে যাই তাহলে অমুক আমাকে হত্যা করেছে
৫০৪৪-৪৫। ইউনুস (রাহঃ) ….. ইব্‌ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাকে বলেছেন যে, যদি লোকদের শুধু তাদের দাবি মুতাবিক (দলীল ব্যতীত হক ইত্যাদি) দেয়া হয় তাহলে লােকেরা অন্যের খুন ও সম্পদের দাবি করবে। কিন্তু বিবাদীর উপর কসম নির্ধারিত।

বস্তুত রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) নিষেধ করেছেন যে, কাউকে শুধু তার দাবি অনুযায়ী খুন (এর হক) অথবা সম্পদ দেয়া হবে এবং ফরিয়াদীর জন্য এতে কোন কিছুই ওয়াজিব সাব্যস্ত করা হয় নাই, কিন্তু (বিবাদীর) কসমের সঙ্গে। রিওয়ায়াতসমূহের মর্মগত বিশুদ্ধকরণ নীতিতে এটাই হলাে এই অনুচ্ছেদের বিশ্লেষণ।

যুক্তিভিত্তিক দলীল
যুক্তির নিরিখে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশ্লেষণ এই যে, এ বিষয়ে সকল ফকীহ একমত যে, কোন ব্যক্তি যদি মৃত্যুর সময় দাবি করে যে, অমুকের দায়িত্বে তার কিছু দিরহাম (পাওনা) রয়েছে। অতঃপর সে মারা যায়, তাহলে তার একথা গ্রহণযােগ্য হবে না। এবং তার এ দাবি সুস্থতার অবস্থার দাবির অনুরূপ অগ্রহণযােগ্য হবে। তাই এর উপর যুক্তির দাবি হলাে যে, এ অবস্থায় খুনের দাবিরও সেই হুকুম প্রযােজ্য হবে, যা সুস্থতার অবস্থায় হয়ে থাকে।

এটা ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ), ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাহঃ)-এর অভিমত।


নসর ইব্‌ন মারযূক (রাহঃ) ..... ইব্‌ন আবী মুলায়কা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তায়িফে আব্দুল্লাহ্ ইব্‌ন যুবাইর (রাযিঃ)-এর পক্ষ থেকে হাকিম (প্রশাসক) নিযুক্ত ছিলাম। আমি ইব্‌ন আব্বাস (রাযিঃ) -এর খিদমতে দুই মহিলার মুকাদ্দামা লিখে পাঠালাম যে, তারা উভয়ে এক গৃহে তাদের রেশম (এর কাপড়) সেলাই করছিলাে। তাদের একজন অপরজনের হাতে সুঁই ফুটিয়ে তাকে যখম করে দিয়েছিল। সে বেরিয়ে আসল এবং রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিলাে। হুজরাতে (কামরাতে) কিছু লােক কথাবার্তা বলছিলাে। (যখমপ্রাপ্ত মহিলা) বলল, ওই মহিলা আমাকে যখম করেছে। অতপর মহিলা তা অস্বীকার করল। অনন্তর আমি বিষয়টি সম্পর্কে ইব্‌ন আব্বাস (রাযিঃ)-এর নিকট লিখলাম। তিনি আমাকে (উত্তরে) লিখলেন যে, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বিবাদীর উপর কসমের ফায়সালা প্রদান করেছেন। আর যদি লােকদেরকে শুধু তাদের দাবি অনুযায়ী (দলীল ব্যতীত) দেয়া হয় তাহলে লােকেরা অপরের খুন এবং সম্পদসমূহের দাবি করবে। তুমি তাকে ডেকে তার সম্মুখে এ আয়াতটি পড়ে দাওঃ إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلًا

অর্থাৎ যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রয় করে। (সূরাঃ ৩ আয়াতঃ ৭৭) বললেন, আমি তার সম্মুখে আয়াত পড়েছি এবং সে স্বীকার করেছে। নাফি' (রাহঃ) বলেন, আমার ধারণা যে, এ বিষয়টি ইব্‌ন আব্বাস (রাযিঃ)-এর নিকট পৌঁছেছে এবং এটা তাঁকে আনন্দিত করেছে।

তােমরা কি লক্ষ্য করছনা যে, ইব্‌ন আব্বাস (রাযিঃ) এই যখম করার হুকুমকে ঐ সমস্ত জিনিসের হুকুমের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন যা লােকেরা একে অপরের উপর দাবি করে। আল্লাহ্ সর্বাধিক জ্ঞাত।
5044 - حَدَّثَنَا يُونُسُ قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ يُعْطَى النَّاسُ بِدَعْوَاهُمْ لَادَّعَى نَاسٌ دِمَاءَ رِجَالٍ وَأَمْوَالَهُمْ وَلَكِنَّ الْيَمِينَ عَلَى الْمُدَّعَى عَلَيْهِ» . فَمَنَعَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُعْطَى أَحَدٌ بِدَعْوَاهُ دَمًا أَوْ مَالًا وَلَمْ يُوجِبْ لِلْمُدَّعَى فِيهِ بِدَعْوَاهُ إِلَّا بِالْيَمِينِ. فَهَذَا حُكْمُ هَذَا الْبَابِ مِنْ طَرِيقِ تَصْحِيحِ مَعَانِي الْآثَارِ. وَأَمَّا وَجْهُ ذَلِكَ مِنْ طَرِيقِ النَّظَرِ فَإِنَّهُمْ قَدْ أَجْمَعُوا أَنَّ رَجُلًا لَوِ ادَّعَى فِي حَالِ مَوْتِهِ أَنَّ لَهُ عَلَى رَجُلٍ دَرَاهِمَ ثُمَّ مَاتَ أَنَّ ذَلِكَ غَيْرُ مَقْبُولٍ مِنْهُ وَأَنَّهُ فِي ذَلِكَ كَهُوَ فِي دَعْوَاهُ فِي حَالِ الصِّحَّةِ. فَالنَّظَرُ عَلَى ذَلِكَ أَنْ يَكُونَ كَذَلِكَ هُوَ فِي دَعْوَاهُ الدَّمَ فِي تِلْكَ الْحَالِ كَهُوَ فِي دَعْوَاهُ ذَلِكَ فِي حَالِ الصِّحَّةِ. وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ وَأَبِي يُوسُفَ وَمُحَمَّدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ أَجْمَعِينَ وَقَدْ

5045 - حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: ثنا خَالِدُ بْنُ نِزَارٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا نَافِعٌ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ قَالَ: كُنْتُ عَامِلًا لِابْنِ الزُّبَيْرِ عَلَى الطَّائِفِ فَكَتَبْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فِي امْرَأَتَيْنِ كَانَتَا فِي بَيْتٍ تَخْرِزَانِ حَرِيرًا لَهُمَا فَأَصَابَتْ إِحْدَاهُمَا يَدَ صَاحِبَتِهَا بِالْإِشْفَى فَجَرَحَتْهَا فَخَرَجَتْ وَهِيَ تَدْمَى وَفِي الْحُجْرَةِ حِدَاتٌ فَقَالَتْ: أَصَابَتْنِي فَأَنْكَرَتْ ذَلِكَ الْأُخْرَى. فَكَتَبْتُ فِي ذَلِكَ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَكَتَبَ إِلَيَّ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَضَى أَنَّ الْيَمِينَ عَلَى الْمُدَّعَى عَلَيْهِ وَلَوْ أَنَّ النَّاسَ أُعْطُوا بِدَعْوَاهُمْ لَادَّعَى نَاسٌ مِنَ النَّاسِ دِمَاءَ رِجَالٍ وَأَمْوَالَهُمْ فَادْعُهَا فَاقْرَأْ هَذِهِ الْآيَةَ عَلَيْهَا { «إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلًا» } [آل عمران: 77] الْآيَةَ فَقَرَأْتُ عَلَيْهَا الْآيَةَ فَاعْتَرَفَتْ " قَالَ نَافِعٌ: فَحَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ: فَبَلَغَ ذَلِكَ ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَرَّهُ. أَفَلَا تَرَى أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَدْ رَدَّ حُكْمَهَا فِي ذَلِكَ إِلَى حُكْمِ سَائِرِ مَا يَدَّعِي النَّاسُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَاللهُ أَعْلَمُ
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৫০৪৫
empty
৫০৪৫।
5045 -
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান