শরহু মাআ’নিল আছার- ইমাম ত্বহাবী রহঃ
شرح معاني الآثار المختلفة المروية عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الأحكام
১১. শরীআত বিধিত দন্ডের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৭ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৪৯৯৩
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৯৪
অধ্যায়ঃ অপরাধ
১. ইচ্ছাকৃত হত্যা এবং যখম করার শাস্তি
১. ইচ্ছাকৃত হত্যা এবং যখম করার শাস্তি
৪৯৯৩-৯৪। মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ ইব্ন মায়মুন আল-বাগদাদী (রাহঃ) ও আবু বাকরা (রাহঃ) ….. আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা যখন তাঁর রাসূল(ﷺ) -কে মক্কা বিজয় দান করলেন, তখন হুযায়ল গােত্র বনু লায়স গােত্রের এক ব্যক্তিকে নিজেদের এক নিহতের বদলায়- যাকে জাহিলী যুগে হত্যা করা হয়েছিলাে- হত্যা করেছে। নবী(ﷺ) দাঁড়ালেন এবং ভাষণ দিলেন। তিনি তাঁর ভাষণে বললেন, কারাে কেউ যদি নিহত হয় তবে তার দু'টির একটি গ্রহণ করার ইখতিয়ার রয়েছেঃ হয়ত (হত্যাকারীকে) হত্যা করবে, নয়ত দিয়াত গ্রহণ করবে।
[এই হাদীসটিকে মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাহঃ) ও আবু বাকরা (রাহঃ) উভয়ে রিওয়ায়াত করেছেন, কিন্তু] শব্দগুলাে হচ্ছে মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাহঃ)-এর। আবু বাকরা (রাহঃ) স্বীয় রিওয়ায়াতে বলেছেন যে, খুযা'আ গােত্র বনু লায়স গােত্রের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এই হাদীসে ঐ কথাটি উল্লেখ হয়েছে, যা শুধু মানব হত্যায় ওয়াজিব হয়। আবু শুরায়হ্ খুযাঈ রা) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
[এই হাদীসটিকে মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাহঃ) ও আবু বাকরা (রাহঃ) উভয়ে রিওয়ায়াত করেছেন, কিন্তু] শব্দগুলাে হচ্ছে মুহাম্মাদ ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাহঃ)-এর। আবু বাকরা (রাহঃ) স্বীয় রিওয়ায়াতে বলেছেন যে, খুযা'আ গােত্র বনু লায়স গােত্রের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে।
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এই হাদীসে ঐ কথাটি উল্লেখ হয়েছে, যা শুধু মানব হত্যায় ওয়াজিব হয়। আবু শুরায়হ্ খুযাঈ রা) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
كِتَابُ الْجِنَايَاتِ: بَابُ مَا يَجِبُ فِي قَتْلِ الْعَمْدِ وَجِرَاحِ الْعَمْدِ
4993 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَيْمُونٍ الْبَغْدَادِيُّ قَالَ: ثنا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ. ح
4994 - وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ قَالَ: ثنا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: ثنا حَرْبُ بْنُ شَدَّادٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ: ثنا أَبُو سَلَمَةَ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو هُرَيْرَةَ قَالَ: " لَمَّا فَتَحَ اللهُ عَلَى رَسُولِهِ مَكَّةَ قَتَلَتْ هُذَيْلٌ رَجُلًا مِنْ بَنِي لَيْثٍ بِقَتِيلٍ كَانَ لَهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ. فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَطَبَ فَقَالَ فِي خُطْبَتِهِ: مَنْ قُتِلَ لَهُ قَتِيلٌ فَهُوَ بِخَيْرِ النَّظَرَيْنِ إِمَّا أَنْ يَقْتُلَ وَإِمَّا أَنْ يُودَى «وَاللَّفْظُ لِمُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ. وَقَالَ أَبُو بَكْرَةَ فِي حَدِيثِهِ» قَتَلَتْ خُزَاعَةُ رَجُلًا مِنْ بَنِي لَيْثٍ " قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ ذِكْرُ مَا يَجِبُ فِي النَّفْسِ خَاصَّةً وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلُ ذَلِكَ
4994 - وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرَةَ قَالَ: ثنا أَبُو دَاوُدَ قَالَ: ثنا حَرْبُ بْنُ شَدَّادٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ: ثنا أَبُو سَلَمَةَ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو هُرَيْرَةَ قَالَ: " لَمَّا فَتَحَ اللهُ عَلَى رَسُولِهِ مَكَّةَ قَتَلَتْ هُذَيْلٌ رَجُلًا مِنْ بَنِي لَيْثٍ بِقَتِيلٍ كَانَ لَهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ. فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَخَطَبَ فَقَالَ فِي خُطْبَتِهِ: مَنْ قُتِلَ لَهُ قَتِيلٌ فَهُوَ بِخَيْرِ النَّظَرَيْنِ إِمَّا أَنْ يَقْتُلَ وَإِمَّا أَنْ يُودَى «وَاللَّفْظُ لِمُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ. وَقَالَ أَبُو بَكْرَةَ فِي حَدِيثِهِ» قَتَلَتْ خُزَاعَةُ رَجُلًا مِنْ بَنِي لَيْثٍ " قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ ذِكْرُ مَا يَجِبُ فِي النَّفْسِ خَاصَّةً وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلُ ذَلِكَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৪৯৯৪
empty
৪৯৯৪।
4994 -

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৪৯৯৫
১. ইচ্ছাকৃত হত্যা এবং যখম করার শাস্তি
৪৯৯৫। মুহাম্মাদ ইব্ন খুযায়মা (রাহঃ) ….. আবু শুরায়হ কা'বী (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে স্বীয় ভাষণে বলেছেনঃ শুন, হে খুযা'আ সম্প্রদায়! তােমরা হুযায়ল গােত্রের এই লােকটিকে হত্যা করেছ। আমি তার দিয়াত আদায় করব। তবে আমার এই বক্তব্যের পরে কারাে যদি কেউ নিহত হয়, তার পরিজনদের এই দু'টির মধ্যে একটির অধিকার থাকবে, হয়ত দিয়াত গ্রহণ করবে, নয়ত (হত্যাকারীকে) হত্যা করবে।
অন্য সূত্রেও আবু শুরায়হ্ খুযাঈ (রাযিঃ) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে হত্যা অপেক্ষা নিম্ন পর্যায়ের অপরাধ অঙ্গহানী সম্পর্কে অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
অন্য সূত্রেও আবু শুরায়হ্ খুযাঈ (রাযিঃ) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে হত্যা অপেক্ষা নিম্ন পর্যায়ের অপরাধ অঙ্গহানী সম্পর্কে অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
4995 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خُزَيْمَةَ , قَالَ: ثنا مُسَدَّدٌ , قَالَ: ثنا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ , عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ , قَالَ: حَدَّثَنِي سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ , قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا شُرَيْحٍ الْكَعْبِيَّ , يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي خُطْبَتِهِ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ «أَلَا إِنَّكُمْ مَعْشَرَ خُزَاعَةَ قَتَلْتُمْ هَذَا الْقَتِيلَ مِنْ هُذَيْلٍ وَإِنِّي عَاقِلُهُ فَمَنْ قُتِلَ لَهُ بَعْدَ مَقَالَتِي قَتِيلٌ فَأَهْلُهُ بَيْنَ خِيرَتَيْنِ بَيْنَ أَنْ يَأْخُذُوا الْعَقْلَ وَبَيْنَ أَنْ يَقْتُلُوا» . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا دُونَ النَّفْسِ مِثْلُ ذَلِكَ أَيْضًا

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৪৯৯৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৯৯৭
১. ইচ্ছাকৃত হত্যা এবং যখম করার শাস্তি
৪৯৯৬-৯৭। আলী ইব্ন শায়বা (রাহঃ) ….. আবু শুরায়হ খুযাঈ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) বলেছেনঃ যে নিহত হয় অথবা যখমপ্রাপ্ত হয় তাহলে তার ওলী তিনটির যে কোন একটি গ্রহণ করতে পারবেঃ হয়ত ক্ষমা করে দিবে, অথবা কিসাস তথা বদলা নিবে, নয়ত দিয়াত গ্রহণ করবে। যদি সে কোন চতুর্থ জিনিস ইখতিয়ার করে তার হাত পাকড়াও কর (প্রতিরােধ কর)। যদি সে ওই তিনটির একটি গ্রহণ করার পর সীমালঙ্ন করে তা হলে তার জন্য জাহান্নাম, সেখানে অনন্তকাল ধরে অবস্থান করবে।
আলী ইব্ন মা’বাদ (রাহঃ) ….. আবু শুরায়হ (রাযিঃ) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। বস্তুত এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, ইচ্ছাকৃতভাবে জখম করার হুকুম ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করার হুকুমের অনুরূপ। কেননা এগুলাের প্রত্যেকটিতে কিসাস অথবা দিয়াত ওয়াজিব হয়।
বিশ্লেষণ
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এক দল আলিম এই দিকে গিয়েছেন যে, যখন কোন ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয় তখন তার ওলীর (অভিভাবক) জন্য ইখতিয়ার রয়েছেঃ হয়ত ক্ষমা করে দিবে, অথবা দিয়াত গ্রহণ করবে, নয়ত কিসাস বা বদলা নিবে, হত্যাকারী এতে সম্মত থাকুক অথবা না থাকুক। তাঁরা এ বিষয়ে (উল্লেখিত) এই সমস্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন।
পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এ বিষয়ে তাদের বিরোধিতা করে বলেছেন, হত্যাকারীর সম্মতি ব্যতীত সে দিয়াত গ্রহণ করতে পারবে না। তাদের দলীল হলাে তাঁর বক্তব্যঃ “অথবা সে দিয়াত গ্রহণ করবে” এর দ্বারা সেই বিষয়টিও উদ্দেশ্য হতে পারে যা প্রথমােক্ত মত পােষণকারীগণ বলেছেন এবং এই অর্থও হতে পারে যে, তার জন্য দিয়াত গ্রহণ করা জায়িয যদি তাকে দেয়া হয়। যেমন কোন ব্যক্তিকে বলা হলাে, স্বীয় ঋণের বিনিময়ে যদি ইচ্ছা কর দিরহাম গ্রহণ কর, নয়ত দীনার, অথবা যদি চাও আসবাব সামগ্রী গ্রহণ কর। এর দ্বারা এই উদ্দেশ্য নয় যে, সে (ঋণদাতা) এই সমস্ত জিনিস অবশ্যই নিবে, ঋণী ব্যক্তি এর উপর সম্মত থাকুক অথবা তা অপছন্দ করুক। বরং এতে শুধু বৈধতা উদ্দেশ্য যে, যদি তাকে দেয়া হয় তবে সে গ্রহণ করতে পারবে।
যদি কেউ প্রশ্ন করে যে, তাদের এ কথাটি উল্লেখ করার কি প্রয়ােজন ছিলাে? তাকে উত্তরে বলা হবে যে, ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
আলী ইব্ন মা’বাদ (রাহঃ) ….. আবু শুরায়হ (রাযিঃ) সূত্রে নবী(ﷺ) থেকে অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। বস্তুত এই হাদীসে ব্যক্ত হয়েছে যে, ইচ্ছাকৃতভাবে জখম করার হুকুম ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করার হুকুমের অনুরূপ। কেননা এগুলাের প্রত্যেকটিতে কিসাস অথবা দিয়াত ওয়াজিব হয়।
বিশ্লেষণ
আবু জা'ফর তাহাবী (রাহঃ) বলেনঃ এক দল আলিম এই দিকে গিয়েছেন যে, যখন কোন ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয় তখন তার ওলীর (অভিভাবক) জন্য ইখতিয়ার রয়েছেঃ হয়ত ক্ষমা করে দিবে, অথবা দিয়াত গ্রহণ করবে, নয়ত কিসাস বা বদলা নিবে, হত্যাকারী এতে সম্মত থাকুক অথবা না থাকুক। তাঁরা এ বিষয়ে (উল্লেখিত) এই সমস্ত হাদীস দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন।
পক্ষান্তরে অপরাপর আলিমগণ এ বিষয়ে তাদের বিরোধিতা করে বলেছেন, হত্যাকারীর সম্মতি ব্যতীত সে দিয়াত গ্রহণ করতে পারবে না। তাদের দলীল হলাে তাঁর বক্তব্যঃ “অথবা সে দিয়াত গ্রহণ করবে” এর দ্বারা সেই বিষয়টিও উদ্দেশ্য হতে পারে যা প্রথমােক্ত মত পােষণকারীগণ বলেছেন এবং এই অর্থও হতে পারে যে, তার জন্য দিয়াত গ্রহণ করা জায়িয যদি তাকে দেয়া হয়। যেমন কোন ব্যক্তিকে বলা হলাে, স্বীয় ঋণের বিনিময়ে যদি ইচ্ছা কর দিরহাম গ্রহণ কর, নয়ত দীনার, অথবা যদি চাও আসবাব সামগ্রী গ্রহণ কর। এর দ্বারা এই উদ্দেশ্য নয় যে, সে (ঋণদাতা) এই সমস্ত জিনিস অবশ্যই নিবে, ঋণী ব্যক্তি এর উপর সম্মত থাকুক অথবা তা অপছন্দ করুক। বরং এতে শুধু বৈধতা উদ্দেশ্য যে, যদি তাকে দেয়া হয় তবে সে গ্রহণ করতে পারবে।
যদি কেউ প্রশ্ন করে যে, তাদের এ কথাটি উল্লেখ করার কি প্রয়ােজন ছিলাে? তাকে উত্তরে বলা হবে যে, ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছেঃ
4996 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ شَيْبَةَ , قَالَ: ثنا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ , قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ , عَنِ الْحَارِثِ بْنِ فُضَيْلٍ , عَنْ سُفْيَانَ بْنِ أَبِي الْعَوْجَاءِ , عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ , قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «مَنْ أُصِيبَ بِدَمٍ أَوْ بِخَبْلٍ يَعْنِي [ص:175] بِالْخَبْلِ الْجِرَاحَ فَوَلِيُّهُ بِالْخِيَارِ بَيْنَ إِحْدَى ثَلَاثٍ بَيْنَ أَنْ يَعْفُوَ أَوْ يَقْتَصَّ أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ فَإِنْ أَتَى الرَّابِعَةَ فَخُذُوا عَلَى يَدَيْهِ فَإِنْ قَبِلَ وَاحِدَةً مِنْهُنَّ ثُمَّ عَدَا بَعْدَ ذَلِكَ فَلَهُ النَّارُ خَالِدًا فِيهَا مُخَلَّدًا» .
4997 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ , قَالَ: ثنا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ , قَالَ: ثنا عَبَّادٌ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ قَالَ: أَخْبَرَنِي الْحَارِثُ بْنُ فُضَيْلٍ , عَنْ سُفْيَانَ بْنِ أَبِي الْعَوْجَاءِ , عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ حُكْمَ الْجِرَاحِ الْعَمْدِ فِيمَا يَجِبُ فِي كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِنَ الْقِصَاصِ وَالدِّيَةِ. قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا قُتِلَ عَمْدًا فَوَلِيُّهُ بِالْخِيَارِ بَيْنَ أَنْ يَعْفُوَ أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ أَوْ يَقْتَصَّ رَضِيَ بِذَلِكَ الْقَاتِلُ أَوْ لَمْ يَرْضَ , وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ فَقَالُوا: لَيْسَ لَهُ أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ إِلَّا بِرِضَاءِ الْقَاتِلِ. وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لَهُمْ أَنَّ قَوْلَهُ «أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ» قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ عَلَى مَا قَالَ لِأَهْلِ الْمَقَالَةِ الْأُولَى وَيَجُوزُ أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ إِنْ أُعْطِيَهَا كَمَا يُقَالُ لِلرَّجُلِ «خُذْ بِدَيْنِكَ إِنْ شِئْتَ دَرَاهِمَ وَإِنْ شِئْتَ دَنَانِيرَ وَإِنْ شِئْتَ عُرُوضًا» وَلَيْسَ يُرَادُ بِذَلِكَ أَنَّهُ يَأْخُذُ ذَلِكَ رَضِيَ الَّذِي عَلَيْهِ الدَّيْنُ أَوْ كَرِهَ وَلَكِنْ يُرَادُ إِبَاحَةُ ذَلِكَ لَهُ إِنْ أُعْطِيَهُ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: وَمَا حَاجَتُهُمْ إِلَى ذِكْرِ هَذَا؟ قِيلَ لَهُ: لِمَا قَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا
4997 - حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مَعْبَدٍ , قَالَ: ثنا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ , قَالَ: ثنا عَبَّادٌ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ قَالَ: أَخْبَرَنِي الْحَارِثُ بْنُ فُضَيْلٍ , عَنْ سُفْيَانَ بْنِ أَبِي الْعَوْجَاءِ , عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ , عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِثْلَهُ فَفِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ حُكْمَ الْجِرَاحِ الْعَمْدِ فِيمَا يَجِبُ فِي كُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِنَ الْقِصَاصِ وَالدِّيَةِ. قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ: فَذَهَبَ قَوْمٌ إِلَى أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا قُتِلَ عَمْدًا فَوَلِيُّهُ بِالْخِيَارِ بَيْنَ أَنْ يَعْفُوَ أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ أَوْ يَقْتَصَّ رَضِيَ بِذَلِكَ الْقَاتِلُ أَوْ لَمْ يَرْضَ , وَاحْتَجُّوا فِي ذَلِكَ بِهَذِهِ الْآثَارِ وَخَالَفَهُمْ فِي ذَلِكَ آخَرُونَ فَقَالُوا: لَيْسَ لَهُ أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ إِلَّا بِرِضَاءِ الْقَاتِلِ. وَكَانَ مِنَ الْحُجَّةِ لَهُمْ أَنَّ قَوْلَهُ «أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ» قَدْ يَجُوزُ أَنْ يَكُونَ عَلَى مَا قَالَ لِأَهْلِ الْمَقَالَةِ الْأُولَى وَيَجُوزُ أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ إِنْ أُعْطِيَهَا كَمَا يُقَالُ لِلرَّجُلِ «خُذْ بِدَيْنِكَ إِنْ شِئْتَ دَرَاهِمَ وَإِنْ شِئْتَ دَنَانِيرَ وَإِنْ شِئْتَ عُرُوضًا» وَلَيْسَ يُرَادُ بِذَلِكَ أَنَّهُ يَأْخُذُ ذَلِكَ رَضِيَ الَّذِي عَلَيْهِ الدَّيْنُ أَوْ كَرِهَ وَلَكِنْ يُرَادُ إِبَاحَةُ ذَلِكَ لَهُ إِنْ أُعْطِيَهُ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: وَمَا حَاجَتُهُمْ إِلَى ذِكْرِ هَذَا؟ قِيلَ لَهُ: لِمَا قَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৪৯৯৭
empty
৪৯৯৭।
4997 -

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৪৯৯৮
১. ইচ্ছাকৃত হত্যা এবং যখম করার শাস্তি
৪৯৯৮। ইউনুস (রাহঃ) ….. ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, বনী ইসরাঈলদের মাঝে কিসাস ছিল, তাদের মাঝে দিয়াত ছিল না, আল্লাহ্ তা'আলা এই উম্মতের ব্যাপারে বলেছেনঃكُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى الْحَرُّ بِالْحُرِّ فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ
অর্থাৎঃ (হে মু'মিনগণ) নিহতদের ব্যাপারে তােমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেয়া হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি... কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে । (সূরাঃ ২ আয়াত ১৭৮) আর ইচ্ছাকৃত হত্যা করার অবস্থায় ক্ষমা হলাে দিয়াত গ্রহণ করা। বস্তুত এটা তােমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রথমােক্ত উম্মতদের অপেক্ষা (তােমাদের উপর) ভার লাঘব।
ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) বলছেন যে, বনী ইসরাঈলদের মাঝে দিয়াত ছিলনা। অর্থাৎ তাদের উপর দিয়াত গ্রহণ করা হারাম ছিল। অথবা এর কারণে কিসাস ছেড়ে দিবে যতক্ষণ না রক্ত প্রবাহিত করবে (অর্থাৎ রক্ত প্রবাহিত করা জরুরী ছিল) এটা তাদের উপর ফরয ছিল। আল্লাহ্ তা'আলা এই উম্মতের উপর সহজ করে দিয়েছেন এবং এই বাণী দ্বারা- فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ
(কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার দেয় আদায় বিধেয়- সূরাঃ ২ আয়াত ১৭৮) ঐ প্রথমােক্ত বিধানকে রহিত করে দিয়েছে। সততার সাথে আদায় করার অর্থ হলাে যখন এর আদায় করাটা ওয়াজিব হয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে আলােচনা করা হয়েছে তা আমি এই অনুচ্ছেদের যথাস্থানে অতি সত্বর বর্ণনা করব ইনশা আল্লাহ তা'আলা।
রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাদের জন্য ঐ বিষয়টি এই দিক দিয়েও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যার কোন পরিজন নিহত হয়, তার ইখতিয়ার রয়েছেঃ হয়ত কিসাস গ্রহণ করবে, অথবা ক্ষমা করে দিবে, নয়ত দিয়াত উসূল করবে, যা এই উম্মতের জন্য বৈধ করা হয়েছে। আর যখন তাদেরকে দিয়াত দেয়া হবে তখন তা তাদের জন্য গ্রহণ করাটা জায়িয। এই হাদীসটি একথারও সম্ভাবনা রাখে এবং কারাে জন্য জায়িয নেই যে, যখন কোন হাদীসে এরূপ সমানভাবে দুই সম্ভাবনা রাখে তখন একটিকে পরিত্যাগ করে হাদীসটিকে অপরটির উপর প্রয়ােগ করা। তবে হ্যাঁ, এর উপর অন্য কোন দলীল পাওয়া গেলে যা উক্ত অর্থ উদ্দেশ্য হওয়ার অনুকূলে প্রমাণ বহন করে (তখন সেই অর্থই উদ্দেশ্য নিবে)।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিক্তিক দলীলঃ বস্তুত এ বিষয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করেছি যে, সশ্লিষ্ট বিষয়ে এরূপ কোন কিছু পাই কি-না যা তা থেকে এক বিষয়বস্তুর উপর প্রমাণ বহন করবে। প্রথমােক্ত মত পােষণকারীগণ বলেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেনঃفَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ ذَلِكَ تَخْفِيفٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ
অর্থাৎঃ কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার দেয় আদায় বিধেয়। এটা তােমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে ভার লাঘব ও অনুগ্রহ। ….. (সূরাঃ ২ আয়াত ১৭৮)
সুতরাং আল্লাহ্ তা'আলা এই আয়াতে বলেছেন যে, ওলীর জন্য ক্ষমা করা এবং হত্যাকারী থেকে উত্তমভাবে দাবি করার অধিকার রয়েছে। তাঁরা এর দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন যে, ওলীদ্বয়ের যখন ক্ষমা করে দেয়ার অধিকার রয়েছে তাহলে সে হত্যাকারী থেকে দিয়াত নিতে পারবে। যদিও তার ক্ষমা করে দেয়ার প্রাক্কালে এই শর্ত ছিল না ।
তাদেরকে (জবাবে) বলা হবে যে, যা কিছু তােমরা উল্লেখ করেছ তাতে এ সম্পর্কে কোন দলীল নেই এবং এতে কয়েকটি বিষয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, যা থেকে একটি হলাে সেটি, যা তােমরা বর্ণনা করেছ। এটারও সম্ভাবনা আছে যে, “যাকে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কিছুটা ক্ষমা করা হয়” দ্বারা সেটাই উদ্দেশ্য, যা আমরা বলছি যে, তা হত্যাকারীর সম্মতিতে (কিসাস) ক্ষমা করে তার পরিবর্তে দিয়াত গ্রহণ করবে। আবার এই সম্ভাবনা রয়েছে যে, বক্ষমান এই আয়াত সেই খুন বা হত্যা সম্পর্কে যা এক দলের মাঝে শরীক হয় যে, যদি তাদের এক জন ক্ষমা করে দেয় তাহলে অবশিষ্টরা হত্যাকারী থেকে নিজ নিজ অংশের দিয়াত উত্তমভাবে দাবি করবে এবং সেও তাদেরকে তা উত্তমভাবে প্রদান করবে।
বস্তুত এগুলাে হলাে সেই সমস্ত অর্থাবলী, যা সংশ্লিষ্ট আয়াতের ব্যাপারে আলিমগণ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এগুলাে থেকে কোনটিই অপরটির বিরুদ্ধে প্রমাণ নয় যতক্ষণ না অপর কোন আয়াতে অন্য দলীল হবে, যার অর্থের উপরে সকলে একমত অথবা ‘সুন্নাহ’ কিংবা ‘ইজমা’ থেকে দলীল পাওয়া যাবে। নবী(ﷺ) থেকে বর্ণিত আবু শুরায়হ (রাযিঃ)-এর হাদীসে রয়েছে যে, সে তিনটির কোন একটির ইখতিয়ার প্রাপ্তঃ হয়ত ক্ষমা করে দিবে, অথবা কিসাস নিবে, নয় ত দিয়াত গ্রহণ করবে। এখানে তিনি(ﷺ) ক্ষমা করা এবং দিয়াত আদায় করা একটিকে অপরটি থেকে ভিন্ন সাব্যস্ত করেছেন।
এতে প্রমাণিত হলাে যে, যখন সে ক্ষমা করে দিবে তখন আর দিয়াত গ্রহণ হবে না এবং যখন খুন ক্ষমা করে দেয়া অবস্থায় দিয়াত আবশ্যক হয় না তখন এ দ্বারা সাব্যস্ত হলাে যে, যে বস্তু ওয়াজিব হলাে কিসাস। আর দিয়াত গ্রহণ করা কিসাসের বদল হিসাবে তার জন্য জায়িয সাব্যস্ত করা হয়েছে। বস্তুত যে সমস্ত জিনিস বদল হয় সেগুলাে আমাদের জানা মতে সেই সমস্ত লোকদের সম্মতিতে ওয়াজিব হয়, যাদের জন্য তা ওয়াজিব হয়। যখন কিসাসের বিষয়ে এটা সাব্যস্ত হলাে তাহলে যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি তাও সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আর আমাদের বিরােধীদের বক্তব্য খণ্ডিত হয়ে গেল।
যখন প্রথমােক্ত মত পােষণকারীদের বক্তব্যের সপক্ষে কোন দলীল নেই। তাই আমরা লক্ষ্য করছি যে, অন্যদের জন্য এরূপ কোন রিওয়ায়াত আছে কিনা, যা তাদের বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ বহন করে। নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত আমরা পেয়েছিঃ
অর্থাৎঃ (হে মু'মিনগণ) নিহতদের ব্যাপারে তােমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেয়া হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি... কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে । (সূরাঃ ২ আয়াত ১৭৮) আর ইচ্ছাকৃত হত্যা করার অবস্থায় ক্ষমা হলাে দিয়াত গ্রহণ করা। বস্তুত এটা তােমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রথমােক্ত উম্মতদের অপেক্ষা (তােমাদের উপর) ভার লাঘব।
ইব্ন আব্বাস (রাযিঃ) বলছেন যে, বনী ইসরাঈলদের মাঝে দিয়াত ছিলনা। অর্থাৎ তাদের উপর দিয়াত গ্রহণ করা হারাম ছিল। অথবা এর কারণে কিসাস ছেড়ে দিবে যতক্ষণ না রক্ত প্রবাহিত করবে (অর্থাৎ রক্ত প্রবাহিত করা জরুরী ছিল) এটা তাদের উপর ফরয ছিল। আল্লাহ্ তা'আলা এই উম্মতের উপর সহজ করে দিয়েছেন এবং এই বাণী দ্বারা- فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ
(কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার দেয় আদায় বিধেয়- সূরাঃ ২ আয়াত ১৭৮) ঐ প্রথমােক্ত বিধানকে রহিত করে দিয়েছে। সততার সাথে আদায় করার অর্থ হলাে যখন এর আদায় করাটা ওয়াজিব হয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে আলােচনা করা হয়েছে তা আমি এই অনুচ্ছেদের যথাস্থানে অতি সত্বর বর্ণনা করব ইনশা আল্লাহ তা'আলা।
রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাদের জন্য ঐ বিষয়টি এই দিক দিয়েও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যার কোন পরিজন নিহত হয়, তার ইখতিয়ার রয়েছেঃ হয়ত কিসাস গ্রহণ করবে, অথবা ক্ষমা করে দিবে, নয়ত দিয়াত উসূল করবে, যা এই উম্মতের জন্য বৈধ করা হয়েছে। আর যখন তাদেরকে দিয়াত দেয়া হবে তখন তা তাদের জন্য গ্রহণ করাটা জায়িয। এই হাদীসটি একথারও সম্ভাবনা রাখে এবং কারাে জন্য জায়িয নেই যে, যখন কোন হাদীসে এরূপ সমানভাবে দুই সম্ভাবনা রাখে তখন একটিকে পরিত্যাগ করে হাদীসটিকে অপরটির উপর প্রয়ােগ করা। তবে হ্যাঁ, এর উপর অন্য কোন দলীল পাওয়া গেলে যা উক্ত অর্থ উদ্দেশ্য হওয়ার অনুকূলে প্রমাণ বহন করে (তখন সেই অর্থই উদ্দেশ্য নিবে)।
ইমাম তাহাবী (রাহঃ)-এর যুক্তিভিক্তিক দলীলঃ বস্তুত এ বিষয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করেছি যে, সশ্লিষ্ট বিষয়ে এরূপ কোন কিছু পাই কি-না যা তা থেকে এক বিষয়বস্তুর উপর প্রমাণ বহন করবে। প্রথমােক্ত মত পােষণকারীগণ বলেছেন, আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেনঃفَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ ذَلِكَ تَخْفِيفٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ
অর্থাৎঃ কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার দেয় আদায় বিধেয়। এটা তােমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে ভার লাঘব ও অনুগ্রহ। ….. (সূরাঃ ২ আয়াত ১৭৮)
সুতরাং আল্লাহ্ তা'আলা এই আয়াতে বলেছেন যে, ওলীর জন্য ক্ষমা করা এবং হত্যাকারী থেকে উত্তমভাবে দাবি করার অধিকার রয়েছে। তাঁরা এর দ্বারা প্রমাণ পেশ করেছেন যে, ওলীদ্বয়ের যখন ক্ষমা করে দেয়ার অধিকার রয়েছে তাহলে সে হত্যাকারী থেকে দিয়াত নিতে পারবে। যদিও তার ক্ষমা করে দেয়ার প্রাক্কালে এই শর্ত ছিল না ।
তাদেরকে (জবাবে) বলা হবে যে, যা কিছু তােমরা উল্লেখ করেছ তাতে এ সম্পর্কে কোন দলীল নেই এবং এতে কয়েকটি বিষয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, যা থেকে একটি হলাে সেটি, যা তােমরা বর্ণনা করেছ। এটারও সম্ভাবনা আছে যে, “যাকে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কিছুটা ক্ষমা করা হয়” দ্বারা সেটাই উদ্দেশ্য, যা আমরা বলছি যে, তা হত্যাকারীর সম্মতিতে (কিসাস) ক্ষমা করে তার পরিবর্তে দিয়াত গ্রহণ করবে। আবার এই সম্ভাবনা রয়েছে যে, বক্ষমান এই আয়াত সেই খুন বা হত্যা সম্পর্কে যা এক দলের মাঝে শরীক হয় যে, যদি তাদের এক জন ক্ষমা করে দেয় তাহলে অবশিষ্টরা হত্যাকারী থেকে নিজ নিজ অংশের দিয়াত উত্তমভাবে দাবি করবে এবং সেও তাদেরকে তা উত্তমভাবে প্রদান করবে।
বস্তুত এগুলাে হলাে সেই সমস্ত অর্থাবলী, যা সংশ্লিষ্ট আয়াতের ব্যাপারে আলিমগণ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এগুলাে থেকে কোনটিই অপরটির বিরুদ্ধে প্রমাণ নয় যতক্ষণ না অপর কোন আয়াতে অন্য দলীল হবে, যার অর্থের উপরে সকলে একমত অথবা ‘সুন্নাহ’ কিংবা ‘ইজমা’ থেকে দলীল পাওয়া যাবে। নবী(ﷺ) থেকে বর্ণিত আবু শুরায়হ (রাযিঃ)-এর হাদীসে রয়েছে যে, সে তিনটির কোন একটির ইখতিয়ার প্রাপ্তঃ হয়ত ক্ষমা করে দিবে, অথবা কিসাস নিবে, নয় ত দিয়াত গ্রহণ করবে। এখানে তিনি(ﷺ) ক্ষমা করা এবং দিয়াত আদায় করা একটিকে অপরটি থেকে ভিন্ন সাব্যস্ত করেছেন।
এতে প্রমাণিত হলাে যে, যখন সে ক্ষমা করে দিবে তখন আর দিয়াত গ্রহণ হবে না এবং যখন খুন ক্ষমা করে দেয়া অবস্থায় দিয়াত আবশ্যক হয় না তখন এ দ্বারা সাব্যস্ত হলাে যে, যে বস্তু ওয়াজিব হলাে কিসাস। আর দিয়াত গ্রহণ করা কিসাসের বদল হিসাবে তার জন্য জায়িয সাব্যস্ত করা হয়েছে। বস্তুত যে সমস্ত জিনিস বদল হয় সেগুলাে আমাদের জানা মতে সেই সমস্ত লোকদের সম্মতিতে ওয়াজিব হয়, যাদের জন্য তা ওয়াজিব হয়। যখন কিসাসের বিষয়ে এটা সাব্যস্ত হলাে তাহলে যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি তাও সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আর আমাদের বিরােধীদের বক্তব্য খণ্ডিত হয়ে গেল।
যখন প্রথমােক্ত মত পােষণকারীদের বক্তব্যের সপক্ষে কোন দলীল নেই। তাই আমরা লক্ষ্য করছি যে, অন্যদের জন্য এরূপ কোন রিওয়ায়াত আছে কিনা, যা তাদের বক্তব্যের সপক্ষে প্রমাণ বহন করে। নিম্নোক্ত রিওয়ায়াত আমরা পেয়েছিঃ
4998 - حَدَّثَنَا يُونُسُ , قَالَ: ثنا سُفْيَانُ , عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ , عَنْ مُجَاهِدٍ , عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ , قَالَ: كَانَ الْقِصَاصُ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ وَلَمْ يَكُنْ فِيهِمْ دِيَةٌ. فَقَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ { «كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى» } [البقرة: 178] الْحَرُّ بِالْحُرِّ «إِلَى قَوْلِهِ {» فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ "} [البقرة: 178] وَالْعَفْوُ فِي أَنْ يَقْبَلَ الدِّيَةَ فِي الْعَمْدِ { «ذَلِكَ تَخْفِيفٌ مِنْ رَبِّكُمْ» } [البقرة: 178] مِمَّا كَانَ كُتِبَ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَأَخْبَرَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُمَا أَنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَمْ يَكُنْ فِيهِمْ دِيَةٌ , أَيْ: أَنَّ ذَلِكَ كَانَ حَرَامًا عَلَيْهِمْ أَنْ يَأْخُذُوهُ أَوْ يَتَعَرَّضُوا بِالدَّمِ بَدَلًا أَوْ يَتْرُكُوهُ حَتَّى يَسْفِكُوهُ وَأَنَّ ذَلِكَ مِمَّا كَانَ كُتِبَ عَلَيْهِمْ. فَخَفَّفَ اللهُ تَعَالَى عَنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ وَنَسَخَ ذَلِكَ الْحُكْمَ بِقَوْلِهِ { «فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ» } [البقرة: 178] مَعْنَاهُ إِذَا وَجَبَ الْأَدَاءُ. وَسَنُبَيِّنُ مَا قِيلَ فِي ذَلِكَ فِي مَوْضِعِهِ مِنْ هَذَا الْبَابِ إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى. فَبَيَّنَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَلِكَ أَيْضًا عَلَى هَذِهِ الْجِهَةِ فَقَالَ «مَنْ قُتِلَ لَهُ وَلِيٌّ فَهُوَ بِالْخِيَارِ بَيْنَ أَنْ يَقْتَصَّ أَوْ يَعْفُوَ أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ» الَّتِي أُبِيحَتْ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ وَجَعَلَ لَهُمْ أَخْذَهَا إِذَا أُعْطَوْهَا. [ص:176] هَذَا وَجْهٌ يَحْتَمِلُهُ هَذَا الْحَدِيثُ. وَلَيْسَ لِأَحَدٍ إِذَا كَانَ حَدِيثٌ مِثْلَ هَذَا يَحْتَمِلُ وَجْهَيْنِ مُتَكَافِئَيْنِ أَنْ يَعْطِفَهُ عَلَى أَحَدِهِمَا دُونَ الْآخَرِ إِلَّا بِدَلِيلٍ مِنْ غَيْرِهِ يَدُلُّ أَنَّ مَعْنَاهُ عَلَى مَا عَطَفَهُ عَلَيْهِ. فَنَظَرْنَا فِي ذَلِكَ هَلْ نَجِدُ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا يَدُلُّ عَلَى شَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ؟ فَقَالَ أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى: فَقَدْ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ { «فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاءٌ إِلَيْهِ بِإِحْسَانٍ ذَلِكَ تَخْفِيفٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ» } [البقرة: 178] الْآيَةَ. فَأَخْبَرَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي هَذِهِ الْآيَةِ أَنَّ لِلْوَلِيِّ أَنْ يَعْفُوَ أَوْ يَتَّبِعَ الْقَاتِلَ بِإِحْسَانٍ فَاسْتَدَلُّوا بِذَلِكَ أَنَّ لِلْوَلِيِّ - إِذَا عَفَا - أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ مِنَ الْقَاتِلِ وَإِنْ لَمْ يَكُنِ اشْتَرَطَ ذَلِكَ عَلَيْهِ فِي عَفْوِهِ عَنْهُ. قِيلَ لَهُمْ: مَا فِي هَذَا دَلِيلٌ عَلَى مَا ذَكَرْتُمْ وَقَدْ يَحْتَمِلُ ذَلِكَ وُجُوهًا أَحَدُهَا مَا وَصَفْتُمْ. وَيَحْتَمِلُ أَيْضًا {فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ} [البقرة: 178] عَلَى الْجِهَةِ الَّتِي قُلْنَا بِرِضَاءِ الْقَاتِلِ أَنْ يَعْفُوَ عَنْهُ عَلَى مَا يُؤْخَذُ مِنْهُ. وَقَدْ يَحْتَمِلُ أَيْضًا أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ فِي الدَّمِ الَّذِي يَكُونُ بَيْنَ جَمَاعَةٍ فَيَعْفُو أَحَدُهُمْ فَيَتَّبِعُ الْبَاقُونَ الْقَاتِلَ بِحِصَصِهِمْ مِنَ الدِّيَةِ بِالْمَعْرُوفِ وَيُؤَدِّي ذَلِكَ إِلَيْهِمْ بِإِحْسَانٍ. هَذِهِ تَأْوِيلَاتٌ قَدْ تَأَوَّلَتِ الْعُلَمَاءُ هَذِهِ الْآيَةَ عَلَيْهَا فَلَا حُجَّةَ فِيهَا لِبَعْضٍ عَلَى بَعْضٍ إِلَّا بِدَلِيلٍ آخَرَ فِي آيَةٍ أُخْرَى مُتَّفَقٌ عَلَى تَأْوِيلِهَا أَوْ سُنَّةٍ أَوْ إِجْمَاعٍ. وَفِي حَدِيثِ أَبِي شُرَيْحٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «فَهُوَ بِالْخِيَارِ بَيْنَ أَنْ يَعْفُوَ أَوْ يَقْتُلَ أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ» فَجَعَلَ عَفْوَهُ غَيْرَ أَخْذِهِ الدِّيَةَ. فَثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا عَفَا فَلَا دِيَةَ لَهُ وَإِذَا كَانَ لَا دِيَةَ لَهُ إِذَا عَفَا عَنِ الدَّمِ , ثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ الَّذِي كَانَ وَجَبَ لَهُ هُوَ الدَّمُ وَأَنَّ أَخْذَهُ الدِّيَةَ الَّتِي أُبِيحَتْ لَهُ هُوَ بِمَعْنَى أَخْذِهَا بَدَلًا مِنَ الْقَتْلِ. وَالْإِبْدَالُ مِنَ الْأَشْيَاءِ لَمْ نَجِدْهَا تَجِبُ إِلَّا بِرِضَاءِ مَنْ تَجِبُ عَلَيْهِ وَرِضَاءُ مَنْ تَجِبُ لَهُ. فَإِذَا ثَبَتَ ذَلِكَ فِي الْقَتْلِ ثَبَتَ مَا ذَكَرْنَا وَانْتَفَى مَا قَالَ الْمُخَالِفُ لَنَا. وَلَمَّا لَمْ يَكُنْ فِيمَا احْتَجَّ بِهِ أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى لِقَوْلِهِمْ مَا يَدُلُّ عَلَيْهِ نَظَرْنَا: هَلْ لِلْآخَرِينَ خَبَرٌ يَدُلُّ عَلَى مَا قَالُوا؟ فَإِذَا أَبُو بَكْرَةَ وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَدْ حَدَّثَانَا قَالَا: ثنا عَبْدُ اللهِ بْنُ بَكْرٍ السَّهْمِيُّ , ح

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৫০০০
১. ইচ্ছাকৃত হত্যা এবং যখম করার শাস্তি
৫০০০। আবু বাকরা (রাহঃ) ও ইবরাহীম ইব্ন মারযূক (রাহঃ) ….. আনাস ইব্ন মালিক ইব্ন নযর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁর ফুফু রুবাইয়্যা (রাযিঃ) স্বীয় দাসীকে চড় মেরে তার সামনের দাঁত ভেঙ্গে ফেলেন। তারা (রুবাইয়্যা রা-এর পরিজন) তাদের (দাসীর উত্তরাধিকার) নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করল। তারা অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করল, দিয়াত গ্রহণ করতেও অস্বীকৃতি জানালাে, শুধু কিসাসের দাবি করল। তারা স্বীয় মুকাদ্দামা রাসূলুল্লাহ্(ﷺ)-এর দরবারে পেশ করল। তিনি কিসাসের হুকুম প্রদান করলেন। আনাস ইব্ন নযর (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! রুবাইয়্যার দাঁত ভেঙ্গে ফেলা হবে? না, (ইয়া রাসূলাল্লাহ!) সেই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে হক সহকারে প্রেরণ করেছেন, তার দাঁত ভাঙ্গা হবে না। রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) বললেন, হে আনাস! আল্লাহর কিতাবের বিধান তাে কিসাস। অনন্তর তারা সম্মত হয়ে গেল এবং ক্ষমা করে দিল। আর রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) বললেন, অবশ্যই আল্লাহর কিছু বান্দা এরূপ রয়েছে যে, যদি তারা আল্লাহর উপর কসম করে তিনি তা পূর্ণ করেন। কতক রাবী কিছু অতিরিক্ত শব্দ নকল করেছে।
সুতরাং যে মহিলার দাঁত ভেঙ্গে গিয়েছিল রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) রুবাইয়্যা (রাযিঃ) -এর উপর এর কিসাসের ফায়সালা দিয়েছেন এবং তাকে কিসাস ও দিয়াত গ্রহণের শাঝে ইখতিয়ার প্রদান করেননি। আনাস ইব্ন নযর (রাযিঃ) যখন তা অস্বীকার করলেন, তখন তিনি তাকে দলীল দিয়ে বললেন, হে আনাস! আল্লাহর কিতাবের বিধান হলাে কিসাস। পরে লােকেরা ক্ষমা করে দিল এবং তাদের জন্য দিয়াতের ফায়সালা দেন নাই। এতে সাব্যস্ত হলাে যে, ইচ্ছাকৃত হত্যা করার অবস্থায় কুরআন ও সুন্নাহর বিধান মতে যা ওয়াজিব হয় তা হলাে শুধু কিসাস। কেননা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যদি তার কিসাস এবং ক্ষমা করার মাঝে ইখতিয়ার হত যে, সে এর বদলায় অপরাধী থেকে কিছু গ্রহণ করবে, তাহলে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাকে অবশ্যই ইখতিয়ার প্রদান করতেন এবং তাদেরকে জানিয়ে দিতেন যে, এ থেকে তাদের কি কি জিনিস ইখতিয়ার করার অধিকার আছে।
তােমরা কি লক্ষ্য করছ না যে, যদি কোন ব্যক্তি বিচারকের নিকট এরূপ মুকাদ্দামা নিয়ে যায়, যাতে তার জন্য দুটি বস্তুর একটি সাব্যস্ত হয়। বিচারকের নিকট তা প্রমাণিত হলাে তখন তিনি দুই বস্তুর কোন একটির পরিবর্তে অপরটির ফায়সালা করবেন না। বরং তিনি তার জন্য এই ফায়সালা করবেন যে, অমুক অমুক বস্তু থেকে যেটা তুমি পছন্দ কর গ্রহণ কর। অতঃপর সে যদি তাতে সীমালংঘন করে তাহলে ধরে নিতে হবে সে যেন ফায়সালা বুঝতে ত্রুটি করেছে।
বস্তুত রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) হলেন সর্বোত্তম বিচারক, যখন তিনি কিসাসের ফায়সালা দিয়েছেন এবং জানিয়ে দিয়েছেন যে, এটা আল্লাহ্ তা'আলার কিতাবের (কুরআন) ফায়সালা । তাই এতে সাব্যস্ত হলাে যে, এরূপ অবস্থায় শুধু কিসাস প্রজোয্য, অন্য কিছু নয়।
যখন এই হাদীসটি সাব্যস্ত হয়ে গেল, যেমনটি আমরা উল্লেখ করেছি। সুতরাং আবু শুরায়হ (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর হাদীসকেও এর অনুকূলবর্তী করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। সুতরাং যে দুই হাদীসে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর বক্তব্যকে এ অর্থে ধরা হবে যে, তার এই ইচ্ছাধিকার থাকবে, হয় সে ক্ষমা করবে, কিংবা কিসাস নেবে, কিংবা অপরাধীর দিয়াতের দণ্ড গ্রহণের সম্মতির শর্তে তার থেকে দিয়াত নেবে। যেন এই দুই হাদীসের বিষয়বস্তু এবং আনাস (ইব্ন নযর রা) এর হাদীসের বিষয়বস্তু সমন্বিত হয়ে যায়।
যদি কোন প্রশ্নকারী বলে যে, যুক্তি তাে প্রথমােক্ত মত পােষণকারীদের পক্ষে সহযােগিতা করে, তাহলে এভাবে যে, লােকদের উপর নিজেদেরকে জীবিত রাখা আবশ্যক। যখন সেই ব্যক্তি যার রক্ত প্রবাহিত (বদলা নেয়ার) করার অধিকার রয়েছে, সে বলবে আমি দিয়াত গ্রহণে এবং রক্ত প্রবাহিত না করতে সম্মত আছি। হত্যাকারীর উপর স্বীয় প্রাণ বাঁচান ওয়াজিব হবে। আর যখন এটা তার উপর ওয়াজিব তখন তার থেকে দিয়াত গ্রহণ করা হবে, যদিও সে অপছন্দ করে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দলীল হলাে যে, অবশ্যই লোকদের উপর স্বীয় প্রাণ রক্ষা করা আবশ্যক যেমনটি তুমি উল্লেখ করেছ। চাই তা দিয়াতের দ্বারা হােক বা তা ছাড়া অন্য কোন জিনিসের দ্বারা, বরং স্বীয় সমস্ত মালিকানা বস্তুর দ্বারা হােক। আমরা লক্ষ্য করছি যে, ফকীহ (ইসলামী আইনজ্ঞ)গণ এই বিষয়ে ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, যদি (নিহতের) ওলী হত্যাকারীকে বলে যে, আমি এ কথায় রাজি যে, তােমার এই বাড়ি নিয়ে নেব এবং তােমাকে হত্যা করব না। আল্লাহ্ এবং ঐ হত্যাকারীর মাঝে বিষয়টি সােপর্দ করে (নৈতিকভাবে) ঐ ব্যক্তির উপর আবশ্যক হবে যে, সে বাড়ি দিয়ে নিজের জান বাঁচাবে। কিন্তু এ বিষয়ে সকলের ঐকমত্য যে, যদি সে (হত্যাকারী) অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তার উপর জবরদস্তি করা যাবেনা এবং তার অসম্মতিতে বাড়ি নিয়ে ওলীকে দেয়া যাবেনা।
অনুরূপভাবে দিয়াতের বিষয়টি, যখন (নিহতের) ওলী এর দাবি করবে তখন নৈতিকভাবে হত্যাকারীর উপর ওয়াজিব হলাে সে তা আদায় করে স্বীয় জীবনকে রক্ষা করবে। কিন্তু যদি সে তা অস্বীকার করে তবে তার উপর জবরদস্তি করা যাবে না এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার থেকে তা নেয়া যাবে না।
অতঃপর আমরা প্রথমােক্ত মত পােষণকারীদের সেই কথার দিকে ফিরে যাচ্ছি যে, অপরাধীর অসম্মতিতেও ওলীর জন্য দিয়াত গ্রহণ করার অধিকার রয়েছে।
আমরা তাদেরকে বলব যে, এটা তিন অবস্থার কোন একটি থেকে মুক্ত নয়ঃ হয়ত এটা এজন্য হবে যে, হত্যাকারীর উপর কিসাস এবং দিয়াত উভয়টি আবশ্যক। সুতরাং যখন সে কিসাস ক্ষমা করে দিয়েছে তখন ক্ষমা করার কারণে তা বাতিল করে দিয়েছে। তাই তার জন্য এখন দিয়াত গ্রহণ করার অধিকার হবে। অথবা শুধু কিসাস ওয়াজিব হবে এবং সে ওই কিসাসের বদলে দিয়াত গ্রহণ করতে পারবে। অথবা দুটো বস্তু থেকে একটি বস্তু ওয়াজিব, কিসাস হবে নতুবা দিয়াত, তা থেকে যেটা ইচ্ছা ইখতিয়ার করবে। সুতরাং এই তিন অবস্থার কোন একটি থেকে মুক্ত হবে না।
বস্তুত তােমরা যদি বল যে, তার জন্য কিসাস এবং দিয়াত দু'টিই ওয়াজিব, তাহলে এটা ভ্রান্ত। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা কারাে উপর তার কাজ (অপরাধ) অপেক্ষা অধিক শাস্তি ওয়াজিব করেন নাই। আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْأَنْفَ بِالْأَنْفِ وَالْأُذُنَ بِالْأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ
অর্থাৎ তাদের জন্য ওতে বিধান দিয়েছিলাম যে, প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং যখমের বদলে অনুরূপ যখম। (সূরাঃ ৫, আয়াতঃ ৪৫)
আল্লাহ্ তা'আলা কোন অপরাধীর উপর তার অপরাধ অপেক্ষা অতিরিক্ত (কোন শাস্তি) ওয়াজিব করেন নাই। যদি এই বিষয়টি এরূপ হত তাহলে ওয়াজিব হবে যে, সে হত্যাও করবে এবং দিয়াতও গ্রহণ করবে। সুতরাং যখন হত্যা করার পরে দিয়াত গ্রহণ নেই তখন এতে প্রতীয়মান হয় যে, যা কিছু ওয়াজিব তােমাদের বক্তব্যের পরিপন্থী। যদি তােমরা বল যে, ওয়াজিব তাে শুধু কিসাস, কিন্তু সে এর পরিবর্তে দিয়াত গ্রহণ করতে পারে। বস্তুত আমরা এমন বিধান দেখতে পাই না যে, কোন পাওনাদার দেনাদারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেনার বদল তথা বিকল্প উসূল করবে। সুতরাং এই অর্থও বাতিল হয়ে গেল। যদি তােমরা বল যে, তার জন্য দু'টো থেকে একটি বস্তু ওয়াজিব, হয়ত কিসাস, নয়ত দিয়াত গ্রহণ। দু’টো থেকে যেটা পছন্দ করবে গ্রহণ করবে। কিন্তু তার জন্য আবশ্যক নয় যে, তা থেকে কোন একটিই গ্রহণ করবে, অন্যটি নিতে পারবে না। তার জন্য সমীচীন হলাে যে, যখন দু’টো থেকে নির্দিষ্ট কোন একটিকে ক্ষমা করে দিয়েছে তখন তার ক্ষমা করে দেয়াটা জায়িয না হওয়া। কেননা যা কিছু সে ক্ষমা করে দিয়েছে এটা নির্দিষ্টভাবে তার হক তথা অধিকার ছিল না। তাই সে তা বাতিল করতে পারবে। তার এ অধিকার ছিল যে, সে তা ইখতিয়ার করবে এভাবে সেটা তার হক হয়ে যেত অথবা অন্যটিকে ইখতিয়ার করবে এবং সেটা তার হক হয়ে যেত। সুতরাং যখন সে ঐ দুটো থেকে কোন একটিকে ইখতিয়ার করার এবং হুবহু সেটা ওয়াজিব হওয়ার পূর্বে অন্য হককে ক্ষমা করে দিবে, তার এ ক্ষমা করে দেয়াটা বাতিল বলে গণ্য হবে।
তােমরা কি লক্ষ্য করছ না যে, যদি কেউ কারাে পিতাকে ইচ্ছাকৃতভাবে যখম করে দেয় এবং সে স্বীয় পিতার যখমকারীকে ক্ষমা করে দেয়। অতঃপর তার পিতা সেই যখমের কারণে মৃত্যুবরণ করে এবং সে (পুত্র) ব্যতীত তার অন্য কোন উত্তরাধিকারীও নেই, তা হলে তার ক্ষমা করা বাতিল গণ্য হবে। কেননা সে ক্ষমা করে দেয়ার অধিকারপ্রাপ্ত হওয়ার পূর্বে ক্ষমা করেছে।
যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি যখন বিষয়টি এরূপ এবং কিসাস অথবা দিয়াত গ্রহণ করার পূর্বে হত্যাকারীকে ক্ষমা করা জায়িয। এতে প্রামণিত হলাে যে, ক্ষমা করার পূর্বে শুধু কিসাস ওয়াজিব ছিল, যদি তা ওয়াজিব না হত তাহলে সে ক্ষমা করার মাধ্যমে তা বাতিল করতে পারত না। যেমনিভাবে পুত্র স্বীয় পিতার রক্ত ওই সময় পর্যন্ত ক্ষমা করতে পারবে না, যতক্ষণ না তা তার জন্য ওয়াজিব হয়।
যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি এর সাব্যস্ততা এবং এই তিন অবস্থার খণ্ডনে প্রমাণিত হয় যে, ইচ্ছাকৃত হত্যাকারী অথবা ইচ্ছাকৃত যখমকারীর উপর শুধু কিসাস ওয়াজিব, অন্য কোন বস্তু অর্থাৎ দিয়াত ইত্যাদি আবশ্যক নয়। তবে হ্যাঁ, জীবিত হওয়ার অবস্থায় হত্যাকারী স্বয়ং এবং মৃত্যুবরণ করার অবস্থায় তার উত্তরাধিকারীগণ যদি কোন বস্তুর উপর আপােষ করে নেয় তাহলে সেই আপােষকৃত বস্তু ওয়াজিব হবে। আর দিয়াত অথবা অন্য কোন জিনিসের উপর আপােষ করা জায়িয হবে। আর এটাই হলাে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাযিঃ)-এর অভিমত।
সুতরাং যে মহিলার দাঁত ভেঙ্গে গিয়েছিল রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) রুবাইয়্যা (রাযিঃ) -এর উপর এর কিসাসের ফায়সালা দিয়েছেন এবং তাকে কিসাস ও দিয়াত গ্রহণের শাঝে ইখতিয়ার প্রদান করেননি। আনাস ইব্ন নযর (রাযিঃ) যখন তা অস্বীকার করলেন, তখন তিনি তাকে দলীল দিয়ে বললেন, হে আনাস! আল্লাহর কিতাবের বিধান হলাে কিসাস। পরে লােকেরা ক্ষমা করে দিল এবং তাদের জন্য দিয়াতের ফায়সালা দেন নাই। এতে সাব্যস্ত হলাে যে, ইচ্ছাকৃত হত্যা করার অবস্থায় কুরআন ও সুন্নাহর বিধান মতে যা ওয়াজিব হয় তা হলাে শুধু কিসাস। কেননা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যদি তার কিসাস এবং ক্ষমা করার মাঝে ইখতিয়ার হত যে, সে এর বদলায় অপরাধী থেকে কিছু গ্রহণ করবে, তাহলে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) তাকে অবশ্যই ইখতিয়ার প্রদান করতেন এবং তাদেরকে জানিয়ে দিতেন যে, এ থেকে তাদের কি কি জিনিস ইখতিয়ার করার অধিকার আছে।
তােমরা কি লক্ষ্য করছ না যে, যদি কোন ব্যক্তি বিচারকের নিকট এরূপ মুকাদ্দামা নিয়ে যায়, যাতে তার জন্য দুটি বস্তুর একটি সাব্যস্ত হয়। বিচারকের নিকট তা প্রমাণিত হলাে তখন তিনি দুই বস্তুর কোন একটির পরিবর্তে অপরটির ফায়সালা করবেন না। বরং তিনি তার জন্য এই ফায়সালা করবেন যে, অমুক অমুক বস্তু থেকে যেটা তুমি পছন্দ কর গ্রহণ কর। অতঃপর সে যদি তাতে সীমালংঘন করে তাহলে ধরে নিতে হবে সে যেন ফায়সালা বুঝতে ত্রুটি করেছে।
বস্তুত রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) হলেন সর্বোত্তম বিচারক, যখন তিনি কিসাসের ফায়সালা দিয়েছেন এবং জানিয়ে দিয়েছেন যে, এটা আল্লাহ্ তা'আলার কিতাবের (কুরআন) ফায়সালা । তাই এতে সাব্যস্ত হলাে যে, এরূপ অবস্থায় শুধু কিসাস প্রজোয্য, অন্য কিছু নয়।
যখন এই হাদীসটি সাব্যস্ত হয়ে গেল, যেমনটি আমরা উল্লেখ করেছি। সুতরাং আবু শুরায়হ (রাযিঃ) ও আবু হুরায়রা (রাযিঃ)-এর হাদীসকেও এর অনুকূলবর্তী করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। সুতরাং যে দুই হাদীসে রাসূলুল্লাহ্(ﷺ) -এর বক্তব্যকে এ অর্থে ধরা হবে যে, তার এই ইচ্ছাধিকার থাকবে, হয় সে ক্ষমা করবে, কিংবা কিসাস নেবে, কিংবা অপরাধীর দিয়াতের দণ্ড গ্রহণের সম্মতির শর্তে তার থেকে দিয়াত নেবে। যেন এই দুই হাদীসের বিষয়বস্তু এবং আনাস (ইব্ন নযর রা) এর হাদীসের বিষয়বস্তু সমন্বিত হয়ে যায়।
যদি কোন প্রশ্নকারী বলে যে, যুক্তি তাে প্রথমােক্ত মত পােষণকারীদের পক্ষে সহযােগিতা করে, তাহলে এভাবে যে, লােকদের উপর নিজেদেরকে জীবিত রাখা আবশ্যক। যখন সেই ব্যক্তি যার রক্ত প্রবাহিত (বদলা নেয়ার) করার অধিকার রয়েছে, সে বলবে আমি দিয়াত গ্রহণে এবং রক্ত প্রবাহিত না করতে সম্মত আছি। হত্যাকারীর উপর স্বীয় প্রাণ বাঁচান ওয়াজিব হবে। আর যখন এটা তার উপর ওয়াজিব তখন তার থেকে দিয়াত গ্রহণ করা হবে, যদিও সে অপছন্দ করে।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে দলীল হলাে যে, অবশ্যই লোকদের উপর স্বীয় প্রাণ রক্ষা করা আবশ্যক যেমনটি তুমি উল্লেখ করেছ। চাই তা দিয়াতের দ্বারা হােক বা তা ছাড়া অন্য কোন জিনিসের দ্বারা, বরং স্বীয় সমস্ত মালিকানা বস্তুর দ্বারা হােক। আমরা লক্ষ্য করছি যে, ফকীহ (ইসলামী আইনজ্ঞ)গণ এই বিষয়ে ঐকমত্য পােষণ করেছেন যে, যদি (নিহতের) ওলী হত্যাকারীকে বলে যে, আমি এ কথায় রাজি যে, তােমার এই বাড়ি নিয়ে নেব এবং তােমাকে হত্যা করব না। আল্লাহ্ এবং ঐ হত্যাকারীর মাঝে বিষয়টি সােপর্দ করে (নৈতিকভাবে) ঐ ব্যক্তির উপর আবশ্যক হবে যে, সে বাড়ি দিয়ে নিজের জান বাঁচাবে। কিন্তু এ বিষয়ে সকলের ঐকমত্য যে, যদি সে (হত্যাকারী) অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তার উপর জবরদস্তি করা যাবেনা এবং তার অসম্মতিতে বাড়ি নিয়ে ওলীকে দেয়া যাবেনা।
অনুরূপভাবে দিয়াতের বিষয়টি, যখন (নিহতের) ওলী এর দাবি করবে তখন নৈতিকভাবে হত্যাকারীর উপর ওয়াজিব হলাে সে তা আদায় করে স্বীয় জীবনকে রক্ষা করবে। কিন্তু যদি সে তা অস্বীকার করে তবে তার উপর জবরদস্তি করা যাবে না এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার থেকে তা নেয়া যাবে না।
অতঃপর আমরা প্রথমােক্ত মত পােষণকারীদের সেই কথার দিকে ফিরে যাচ্ছি যে, অপরাধীর অসম্মতিতেও ওলীর জন্য দিয়াত গ্রহণ করার অধিকার রয়েছে।
আমরা তাদেরকে বলব যে, এটা তিন অবস্থার কোন একটি থেকে মুক্ত নয়ঃ হয়ত এটা এজন্য হবে যে, হত্যাকারীর উপর কিসাস এবং দিয়াত উভয়টি আবশ্যক। সুতরাং যখন সে কিসাস ক্ষমা করে দিয়েছে তখন ক্ষমা করার কারণে তা বাতিল করে দিয়েছে। তাই তার জন্য এখন দিয়াত গ্রহণ করার অধিকার হবে। অথবা শুধু কিসাস ওয়াজিব হবে এবং সে ওই কিসাসের বদলে দিয়াত গ্রহণ করতে পারবে। অথবা দুটো বস্তু থেকে একটি বস্তু ওয়াজিব, কিসাস হবে নতুবা দিয়াত, তা থেকে যেটা ইচ্ছা ইখতিয়ার করবে। সুতরাং এই তিন অবস্থার কোন একটি থেকে মুক্ত হবে না।
বস্তুত তােমরা যদি বল যে, তার জন্য কিসাস এবং দিয়াত দু'টিই ওয়াজিব, তাহলে এটা ভ্রান্ত। কেননা আল্লাহ্ তা'আলা কারাে উপর তার কাজ (অপরাধ) অপেক্ষা অধিক শাস্তি ওয়াজিব করেন নাই। আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْأَنْفَ بِالْأَنْفِ وَالْأُذُنَ بِالْأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ
অর্থাৎ তাদের জন্য ওতে বিধান দিয়েছিলাম যে, প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং যখমের বদলে অনুরূপ যখম। (সূরাঃ ৫, আয়াতঃ ৪৫)
আল্লাহ্ তা'আলা কোন অপরাধীর উপর তার অপরাধ অপেক্ষা অতিরিক্ত (কোন শাস্তি) ওয়াজিব করেন নাই। যদি এই বিষয়টি এরূপ হত তাহলে ওয়াজিব হবে যে, সে হত্যাও করবে এবং দিয়াতও গ্রহণ করবে। সুতরাং যখন হত্যা করার পরে দিয়াত গ্রহণ নেই তখন এতে প্রতীয়মান হয় যে, যা কিছু ওয়াজিব তােমাদের বক্তব্যের পরিপন্থী। যদি তােমরা বল যে, ওয়াজিব তাে শুধু কিসাস, কিন্তু সে এর পরিবর্তে দিয়াত গ্রহণ করতে পারে। বস্তুত আমরা এমন বিধান দেখতে পাই না যে, কোন পাওনাদার দেনাদারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেনার বদল তথা বিকল্প উসূল করবে। সুতরাং এই অর্থও বাতিল হয়ে গেল। যদি তােমরা বল যে, তার জন্য দু'টো থেকে একটি বস্তু ওয়াজিব, হয়ত কিসাস, নয়ত দিয়াত গ্রহণ। দু’টো থেকে যেটা পছন্দ করবে গ্রহণ করবে। কিন্তু তার জন্য আবশ্যক নয় যে, তা থেকে কোন একটিই গ্রহণ করবে, অন্যটি নিতে পারবে না। তার জন্য সমীচীন হলাে যে, যখন দু’টো থেকে নির্দিষ্ট কোন একটিকে ক্ষমা করে দিয়েছে তখন তার ক্ষমা করে দেয়াটা জায়িয না হওয়া। কেননা যা কিছু সে ক্ষমা করে দিয়েছে এটা নির্দিষ্টভাবে তার হক তথা অধিকার ছিল না। তাই সে তা বাতিল করতে পারবে। তার এ অধিকার ছিল যে, সে তা ইখতিয়ার করবে এভাবে সেটা তার হক হয়ে যেত অথবা অন্যটিকে ইখতিয়ার করবে এবং সেটা তার হক হয়ে যেত। সুতরাং যখন সে ঐ দুটো থেকে কোন একটিকে ইখতিয়ার করার এবং হুবহু সেটা ওয়াজিব হওয়ার পূর্বে অন্য হককে ক্ষমা করে দিবে, তার এ ক্ষমা করে দেয়াটা বাতিল বলে গণ্য হবে।
তােমরা কি লক্ষ্য করছ না যে, যদি কেউ কারাে পিতাকে ইচ্ছাকৃতভাবে যখম করে দেয় এবং সে স্বীয় পিতার যখমকারীকে ক্ষমা করে দেয়। অতঃপর তার পিতা সেই যখমের কারণে মৃত্যুবরণ করে এবং সে (পুত্র) ব্যতীত তার অন্য কোন উত্তরাধিকারীও নেই, তা হলে তার ক্ষমা করা বাতিল গণ্য হবে। কেননা সে ক্ষমা করে দেয়ার অধিকারপ্রাপ্ত হওয়ার পূর্বে ক্ষমা করেছে।
যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি যখন বিষয়টি এরূপ এবং কিসাস অথবা দিয়াত গ্রহণ করার পূর্বে হত্যাকারীকে ক্ষমা করা জায়িয। এতে প্রামণিত হলাে যে, ক্ষমা করার পূর্বে শুধু কিসাস ওয়াজিব ছিল, যদি তা ওয়াজিব না হত তাহলে সে ক্ষমা করার মাধ্যমে তা বাতিল করতে পারত না। যেমনিভাবে পুত্র স্বীয় পিতার রক্ত ওই সময় পর্যন্ত ক্ষমা করতে পারবে না, যতক্ষণ না তা তার জন্য ওয়াজিব হয়।
যা কিছু আমরা উল্লেখ করেছি এর সাব্যস্ততা এবং এই তিন অবস্থার খণ্ডনে প্রমাণিত হয় যে, ইচ্ছাকৃত হত্যাকারী অথবা ইচ্ছাকৃত যখমকারীর উপর শুধু কিসাস ওয়াজিব, অন্য কোন বস্তু অর্থাৎ দিয়াত ইত্যাদি আবশ্যক নয়। তবে হ্যাঁ, জীবিত হওয়ার অবস্থায় হত্যাকারী স্বয়ং এবং মৃত্যুবরণ করার অবস্থায় তার উত্তরাধিকারীগণ যদি কোন বস্তুর উপর আপােষ করে নেয় তাহলে সেই আপােষকৃত বস্তু ওয়াজিব হবে। আর দিয়াত অথবা অন্য কোন জিনিসের উপর আপােষ করা জায়িয হবে। আর এটাই হলাে ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ইমাম আবু ইউসুফ (রাহঃ) ও ইমাম মুহাম্মাদ (রাযিঃ)-এর অভিমত।
5000 - وَحَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ قَالَا: ثنا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ عَنْ " أَنَسِ بْنِ مَالِكِ بْنِ النَّضْرِ أَنَّ عَمَّتَهُ الرُّبَيِّعَ لَطَمَتْ جَارِيَةً فَكَسَرَتْ ثَنِيَّتَهَا فَطَلَبُوا إِلَيْهِمُ الْعَفْوَ فَأَبَوْا، وَالْأَرْشَ، فَأَبَوْا إِلَّا الْقِصَاصَ. [ص:177] فَاخْتَصَمُوا إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْقِصَاصِ. فَقَالَ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ: يَا رَسُولَ اللهِ , أَتُكْسَرُ ثَنِيَّةُ الرُّبَيِّعِ، لَا وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَا تُكْسَرُ ثَنِيَّتُهَا. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَنَسُ، كِتَابُ اللهِ الْقِصَاصُ» فَرَضِيَ الْقَوْمُ فَعَفَوْا. وَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ مَنْ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ» يَزِيدُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ. فَلَمَّا كَانَ الْحُكْمُ الَّذِي حَكَمَ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الرُّبَيِّعِ لِلْمَنْزُوعَةِ ثَنِيَّتُهَا هُوَ الْقِصَاصُ وَلَمْ يُخَيِّرْهَا بَيْنَ الْقِصَاصِ وَأَخْذِ الدِّيَةِ وَهَاجَ أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ حِينَ أَبَى ذَلِكَ , فَقَالَ «يَا أَنَسُ كِتَابُ اللهِ الْقِصَاصُ» فَعَفَا الْقَوْمُ فَلَمْ يَقْضِ لَهُمْ بِالدِّيَةِ. ثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ الَّذِي يَجِبُ بِكِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَسُنَّةِ رَسُولِهِ فِي الْعَمْدِ هُوَ الْقِصَاصُ لِأَنَّهُ لَوْ كَانَ يَجِبُ لِلْمَجْنِيِّ عَلَيْهِ الْخِيَارُ بَيْنَ الْقِصَاصِ وَبَيْنَ الْعَفْوِ مِمَّا يَأْخُذُ بِهِ الْجَانِي إِذًا لَخَيَّرَهَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَأَعْلَمَهَا بِمَا لَهَا أَنْ تَخْتَارَهُ مِنْ ذَلِكَ. أَلَا تَرَى أَنَّ حَاكِمًا لَوْ تَقَدَّمَ إِلَيْهِ رَجُلٌ فِي شَيْءٍ يَجِبُ لَهُ فِيهِ أَحَدُ شَيْئَيْنِ فَثَبَتَ عِنْدَهُ حَقُّهُ أَنَّهُ لَا يَحْكُمُ لَهُ بِأَحَدِ الشَّيْئَيْنِ دُونَ الْآخَرِ وَإِنَّمَا يَحْكُمُ لَهُ بِأَنْ يَخْتَارَ مَا أَحَبَّ مِنْ كَذَا وَمِنْ كَذَا فَإِنْ تَعَدَّى ذَلِكَ فَقَدْ قَصُرَ عَنْ فَهْمِ الْحُكْمِ وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْكَمُ الْحُكَمَاءِ. فَلَمَّا حَكَمَ بِالْقِصَاصِ وَأَخْبَرَ أَنَّهُ كِتَابُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ثَبَتَ بِذَلِكَ أَنَّ الَّذِي فِي مِثْلِ ذَلِكَ هُوَ الْقِصَاصُ لَا غَيْرُهُ. فَلَمَّا ثَبَتَ هَذَا الْحَدِيثُ عَلَى مَا ذَكَرْنَا وَجَبَ أَنْ يُعْطَفَ عَلَيْهِ حَدِيثُ أَبِي شُرَيْحٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا. فَيُجْعَلَ قَوْلُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهِمَا «فَهُوَ بِالْخِيَارِ بَيْنَ أَنْ يَعْفُوَ أَوْ بَيْنَ أَنْ يَقْتَصَّ أَوْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ» عَلَى الرِّضَاءِ مِنَ الْجَانِي بِغُرْمِ الدِّيَةِ حَتَّى تَتَّفِقَ مَعَانِي هَذَيْنِ الْحَدِيثَيْنِ وَمَعْنَى حَدِيثِ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ. فَإِنْ قَالَ قَائِلٌ: فَإِنَّ النَّظَرَ يَدُلُّ عَلَى مَا قَالَ أَهْلُ الْمَقَالَةِ الْأُولَى وَذَلِكَ أَنَّ عَلَى النَّاسِ أَنْ يَسْتَحْيُوا أَنْفُسَهُمْ. فَإِذَا قَالَ الَّذِي لَهُ سَفْكُ الدَّمِ قَدْ رَضِيتُ بِأَخْذِ الدِّيَةِ وَتَرْكِ سَفْكِ الدَّمِ وَجَبَ عَلَى الْقَاتِلِ اسْتِحْيَاءُ نَفْسِهِ فَإِذَا وَجَبَ ذَلِكَ عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ مَالِهِ وَإِنْ كَرِهَ. فَالْحُجَّةُ عَلَيْهِ فِي ذَلِكَ أَنَّ عَلَى النَّاسِ اسْتِحْيَاءَ أَنْفُسِهِمْ كَمَا ذَكَرْتَ بِالدِّيَةِ وَبِمَا جَاوَزَ الدِّيَةَ وَجَمِيعَ مَا يَمْلِكُونَ. وَقَدْ رَأَيْنَاهُمْ أَجْمَعُوا أَنَّ الْوَلِيَّ لَوْ قَالَ لِلْقَاتِلِ قَدْ رَضِيتُ أَنْ آخُذَ دَارَكَ هَذِهِ عَلَى أَنْ لَا أَقْتُلَكَ أَنَّ الْوَاجِبَ [ص:178] عَلَى الْقَاتِلِ فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللهِ تَسْلِيمُ ذَلِكَ لَهُ وَحَقْنُ دَمِ نَفْسِهِ فَإِنْ أَبَى لَمْ يُجْبَرْ عَلَيْهِ بِاتِّفَاقِهِمْ عَلَى ذَلِكَ وَلَمْ يُؤْخَذْ مِنْهُ ذَلِكَ كُرْهًا فَيُدْفَعُ إِلَى الْوَلِيِّ. فَكَذَلِكَ الدِّيَةُ إِذَا طَلَبَهَا الْوَلِيُّ فَإِنَّهُ يَجِبُ عَلَى الْقَاتِلِ فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ رَبِّهِ أَنْ يَسْتَحِيَ نَفْسَهُ بِهَا وَإِنْ أَبَى ذَلِكَ لَمْ يُجْبَرْ عَلَيْهِ وَلَمْ يُؤْخَذْ مِنْهُ كُرْهًا. ثُمَّ رَجَعْنَا إِلَى أَهْلِ الْمَقَالَةِ الْأُولَى فِي قَوْلِهِمْ إِنَّ لِلْوَلِيِّ أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ وَإِنْ كَرِهَ ذَلِكَ الْجَانِي. فَنَقُولُ لَهُمْ: لَيْسَ يَخْلُو ذَلِكَ مِنْ أَحَدِ وُجُوهٍ ثَلَاثَةٍ: إِمَّا أَنْ يَكُونَ ذَلِكَ لِأَنَّ الَّذِي لَهُ عَلَى الْقَاتِلِ هُوَ الْقِصَاصُ وَالدِّيَةُ جَمِيعًا فَإِذَا عَفَا عَنِ الْقِصَاصِ فَأَبْطَلَهُ بِعَفْوِهِ كَانَ لَهُ أَخْذُ الدِّيَةِ. وَإِمَّا أَنْ يَكُونَ الَّذِي وَجَبَ لَهُ هُوَ الْقِصَاصُ خَاصَّةً وَلَهُ أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ بَدَلًا مِنْ ذَلِكَ الْقِصَاصِ. وَإِمَّا أَنْ يَكُونَ الَّذِي وَجَبَ لَهُ هُوَ أَحَدُ أَمْرَيْنِ إِمَّا الْقِصَاصُ وَإِمَّا الدِّيَةُ يَخْتَارُ مِنْ ذَلِكَ مَا شَاءَ لَيْسَ يَخْلُو ذَلِكَ مِنْ أَحَدِ هَذِهِ الثَّلَاثَةِ الْوُجُوهِ. فَإِنْ قُلْتُمُ: الَّذِي وَجَبَ لَهُ هُوَ الْقِصَاصُ وَالدِّيَةُ جَمِيعًا فَهَذَا فَاسِدٌ لِأَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ لَمْ يُوجِبْ عَلَى أَحَدٍ فَعَلَ فِعْلًا أَكْثَرَ مِمَّا فَعَلَ فَقَدْ قَالَ عَزَّ وَجَلَّ «وَكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ فِيهَا أَنَّ النَّفْسَ بِالنَّفْسِ وَالْعَيْنَ بِالْعَيْنِ وَالْأَنْفَ بِالْأَنْفِ وَالْأُذُنَ بِالْأُذُنِ وَالسِّنَّ بِالسِّنِّ وَالْجُرُوحَ قِصَاصٌ» . فَلَمْ يُوجِبِ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى أَحَدٍ بِفِعْلٍ يَفْعَلُهُ أَكْثَرَ مِمَّا فَعَلَ وَلَوْ كَانَ ذَلِكَ كَذَلِكَ لَوَجَبَ أَنْ يُقْتَلَ وَيَأْخُذَ الدِّيَةَ. فَلَمَّا لَمْ يَكُنْ لَهُ بَعْدَ قَتْلِهِ أَخَذُ الدِّيَةِ دَلَّ ذَلِكَ عَلَى أَنَّ الَّذِي كَانَ وَجَبَ لَهُ خِلَافُ مَا قُلْتُمْ. وَإِنْ قُلْتُمْ: إِنَّ الَّذِي وَجَبَ لَهُ هُوَ الْقِصَاصُ وَلَكِنْ لَهُ أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ بَدَلًا مِنْ ذَلِكَ الْقِصَاصِ فَإِنَّا لَا نَجِدُ حَقًّا لِرَجُلٍ يَكُونُ لَهُ أَنْ يَأْخُذَ بِهِ بَدَلًا بِغَيْرِ رِضَاءِ مَنْ عَلَيْهِ ذَلِكَ الْحَقُّ فَبَطَلَ هَذَا الْمَعْنَى أَيْضًا. وَإِنْ قُلْتُمْ: إِنَّ الَّذِي وَجَبَ لَهُ أَحَدُ أَمْرَيْنِ: إِمَّا الْقِصَاصُ وَإِمَّا الدِّيَةُ يَأْخُذُ مِنْهُمَا مَا أَحَبَّ وَلَمْ يَجِبْ لَهُ أَنْ يَأْخُذَ وَاحِدًا مِنْهُمَا دُونَ الْآخَرِ. فَإِنَّهُ يَنْبَغِي إِذَا عَفَا عَنْ أَحَدِهِمَا بِعَيْنِهِ أَنْ لَا يَجُوزَ عَفْوُهُ لِأَنَّ حَقَّهُ لَمْ يَكُنْ هُوَ الْمَعْفُوَّ عَنْهُ بِعَيْنِهِ فَيَكُونُ لَهُ إِبْطَالُهُ إِنَّمَا كَانَ لَهُ أَنْ يَخْتَارَهُ فَيَكُونُ هُوَ حَقَّهُ أَوْ يَخْتَارُ غَيْرَهُ فَيَكُونُ هُوَ حَقَّهُ فَإِذَا عَفَا عَنْ أَحَدِهِمَا قَبْلَ اخْتِيَارِهِ إِيَّاهُ وَقَبْلَ وُجُوبِهِ لَهُ بِعَيْنِهِ فَعَفْوُهُ بَاطِلٌ. أَلَا تَرَى أَنَّ رَجُلًا لَوْ جُرِحَ أَبُوهُ عَمْدًا فَعَفَا عَنْ جَارِحِ أَبِيهِ ثُمَّ مَاتَ أَبُوهُ مِنْ تِلْكَ الْجِرَاحَةِ وَلَا وَارِثَ لَهُ غَيْرُهُ أَنَّ عَفْوَهُ بَاطِلٌ لِأَنَّهُ إِنَّمَا عَفَا قَبْلَ وُجُوبِ الْمَعْفُوِّ عَنْهُ لَهُ. فَلَمَّا كَانَ مَا ذَكَرْنَا كَذَلِكَ وَكَانَ الْعَفْوُ مِنَ الْقَاتِلِ قَبْلَ اخْتِيَارِهِ الْقِصَاصَ أَوِ الدِّيَةَ جَائِزًا ثَبَتَ بِذَلِكَ [ص:179] أَنَّ الْقِصَاصَ قَدْ كَانَ وَجَبَ لَهُ بِعَيْنِهِ قَبْلَ عَفْوِهِ عَنْهُ وَلَوْلَا وُجُوبُهُ لَهُ إِذًا لَمَا كَانَ لَهُ إِبْطَالُهُ بِعَفْوِهِ كَمَا لَمْ يَجُزْ عَفْوُ الِابْنِ عَنْ دَمِ أَبِيهِ قَبْلَ وُجُوبِهِ لَهُ. فَفِي ثُبُوتِ مَا ذَكَرْنَا وَانْتِفَاءِ هَذِهِ الْوُجُوهِ الَّتِي وَصَفْنَا مَا يَدُلُّ أَنَّ الْوَاجِبَ عَلَى الْقَاتِلِ عَمْدًا أَوِ الْجَارِحَ عَمْدًا هُوَ الْقِصَاصُ لَا غَيْرُ ذَلِكَ مِنْ دِيَةٍ وَغَيْرِهَا إِلَّا أَنْ يَصْلُحَ هُوَ إِنْ كَانَ حَيًّا أَوْ وَارِثُهُ إِنْ كَانَ مَيْتًا , وَالَّذِي وَجَبَ ذَلِكَ عَلَيْهِ عَلَى شَيْءٍ , فَيَكُونُ الصُّلْحُ جَائِزًا عَلَى مَا اصْطَلَحَا عَلَيْهِ مِنْ دِيَةٍ أَوْ غَيْرِهَا. وَهَذَا قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ، وَأَبِي يُوسُفَ، وَمُحَمَّدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ أَجْمَعِينَ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
