কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

كتاب السنن للإمام ابن ماجة

৩৪. ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতপূর্ব আলামতের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৩৯৫১
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৫১
সংঘটিতব্য ফিতনা
৩৯৫১। মুহাম্মাদ ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইবন নুমায়র ও আলী ইবন মুহাম্মাদ (রাযিঃ)....মু'আয ইব্‌ন জাবাল (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সালাত আদায় করলেন এবং এতে তিনি অধিক সময় লাগালেন। যখন তিনি সালাত শেষ করলেন, তখন আমরা বললাম, অথবা রাবী বলেনঃ তারা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আজ আপনি সালাত দীর্ঘায়িত করেছেন। তিনি বললেনঃ আজ আমি রোগবত ( আগ্রহ ) রাহবত (ভয়ের) এর সালাত আদায় করেছি। আমি মহামহিমান্বিত আল্লাহর কাছে আমার উম্মাতের জন্য তিনটি জিনিস চাইছিলাম। তিনি আমাকে দুইটি মঞ্জুর করলেন। অপরটি মঞ্জুর করলেন না। আমি আল্লাহর কাছে চাইছিলাম যে, আমার উম্মাতের উপরে তাদের শত্রুপক্ষ যেন কোন প্রকার আধিপত্য বিস্তার না করে। তিনি তা কবূল করলেন। আমি প্রার্থনা জানিয়ে ছিলাম আমার গোটা উম্মাত যেন পানিতে ডুবে মারা না যায়। তিনি এটাও মঞ্জুর করলেন। আমি আল্লাহর কাছে চাইছিলাম যে, আমার উম্মাত যেন পরস্পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি এটা আমাকে ফেরৎ দিলেন অর্থাৎ কবুল করলেন না।
بَاب مَا يَكُونُ مِنْ الْفِتَنِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ رَجَاءٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَدَّادِ بْنِ الْهَادِ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَوْمًا صَلاَةً فَأَطَالَ فِيهَا فَلَمَّا انْصَرَفَ قُلْنَا - أَوْ قَالُوا - يَا رَسُولَ اللَّهِ أَطَلْتَ الْيَوْمَ الصَّلاَةَ قَالَ ‏ "‏ إِنِّي صَلَّيْتُ صَلاَةَ رَغْبَةٍ وَرَهْبَةٍ سَأَلْتُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لأُمَّتِي ثَلاَثًا فَأَعْطَانِي اثْنَتَيْنِ وَرَدَّ عَلَىَّ وَاحِدَةً سَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يُهْلِكَهُمْ غَرَقًا فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يَجْعَلَ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ فَرَدَّهَا عَلَىَّ ‏"‏ ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৯৫২
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৫২
সংঘটিতব্য ফিতনা
৩৯৫২। হিশাম ইব্‌ন আম্মার (রাযিঃ)....রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর আযাদকৃত গোলাম সাওবান (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ আমার জন্য যমীন (ভূপৃষ্ঠ) কে সংকোচন করা হলো, এমন কি আমি তার পূর্ব-পশ্চিম গোলার্ধের সবকিছু দেখলাম। আমাকে দু'টো কোষাগার ( ধন-রত্ন ভান্ডার) দেওয়া হয়েছে-হলুদ (অথবা রাবীর সন্দেহ লাল) এবং সাদা (অর্থাৎ স্বর্ণমুদ্রা এবং রৌপ্যমুদ্রা) আমাকে বলা হলো যে, আপনার রাজত্ব সেই সীমারেখা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, যতদূর পর্যন্ত আপনার জন্য ভূ-পৃষ্ঠকে সংকোচন করে দেখানো হয়েছে। অতঃপর আমি মহান আল্লাহ সকাশে তিনবার আরয করলাম, যেন আমার উম্মাতকে ব্যাপকভাবে দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস করা না হয় এবং তাদেরকে দল-উপদলে বিভক্ত না করার জন্য আবেদন জানালাম, সর্বোপরি তাদের একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারটিও নিবেদন করলাম। কিন্তু আমাকে বলা হলো যে, আমি যখন কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি, তা প্রত্যাখ্যাত হয় না। তবে আমি আপনার উম্মাতকে ক্ষুধা-পীড়িত করে ধ্বংস করবো না, তাদের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বের বিরোধী শক্তিকে একত্র করবো না। তবে তারা পরস্পরে সংঘর্ষে মশগুল হয়ে যাবে এবং একে অপরকে হত্যা করবে। আর যখন আমার উম্মাতেরা অস্ত্রধারণ করবে, তখন কিয়ামত পর্যন্ত সে তলোয়ার থামবে না। আমি আমার উম্মাতের উপরে সর্বাপেক্ষা অধিক আশংকা করছি পথভ্রষ্ট নেতৃবৃন্দ থেকে। অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মাতের কোন কোন শ্রেণী প্রতীমা পূজায় লিপ্ত হবে। অচিরেই আমাদের কতিপয় লোক মুশরিকদের সাথে আঁতাত করবে এবং কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ত্রিশজনের মত মিথ্যাবাদী দাজ্জালের অভ্যুদয় ঘটবে। তারা প্রত্যেকেই নিজকে নবী বলে দাবি করবে। আমার উম্মাতের মধ্যে একটা দল, সর্বক্ষণ সত্যের উপর বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। মহান আল্লাহর চূড়ান্ত মীমাংসা (অর্থাৎ কিয়ামত সংঘটিত) হওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধাবাদীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

আবুল হাসান (রাহঃ) বলেন, তঃপর আবু আব্দুল্লাহ (রাহঃ) এই হাদীস বর্ণনা শেষে বললেনঃ কতই না ভয়াবহ এই হাদীস।
بَاب مَا يَكُونُ مِنْ الْفِتَنِ
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ شَابُورَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّهُ حَدَّثَهُمْ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ الْجَرْمِيِّ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ الرَّحَبِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ زُوِيَتْ لِيَ الأَرْضُ حَتَّى رَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا وَأُعْطِيتُ الْكَنْزَيْنِ الأَصْفَرَ - أَوِ الأَحْمَرَ - وَالأَبْيَضَ - يَعْنِي الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ - وَقِيلَ لِي إِنَّ مُلْكَكَ إِلَى حَيْثُ زُوِيَ لَكَ وَإِنِّي سَأَلْتُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ ثَلاَثًا أَنْ لاَ يُسَلِّطَ عَلَى أُمَّتِي جُوعًا فَيُهْلِكَهُمْ بِهِ عَامَّةً وَأَنْ لاَ يَلْبِسَهُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَهُمْ بَأْسَ بَعْضٍ وَإِنَّهُ قِيلَ لِي إِذَا قَضَيْتُ قَضَاءً فَلاَ مَرَدَّ لَهُ وَإِنِّي لَنْ أُسَلِّطَ عَلَى أُمَّتِكَ جُوعًا فَيُهْلِكَهُمْ فِيهِ وَلَنْ أَجْمَعَ عَلَيْهِمْ مَنْ بَيْنَ أَقْطَارِهَا حَتَّى يُفْنِيَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا وَيَقْتُلَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا ‏.‏ وَإِذَا وُضِعَ السَّيْفُ فِي أُمَّتِي فَلَنْ يُرْفَعَ عَنْهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَإِنَّ مِمَّا أَتَخَوَّفُ عَلَى أُمَّتِي أَئِمَّةً مُضِلِّينَ وَسَتَعْبُدُ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِي الأَوْثَانَ وَسَتَلْحَقُ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِي بِالْمُشْرِكِيِنَ وَإِنَّ بَيْنَ يَدَىِ السَّاعَةِ دَجَّالِينَ كَذَّابِينَ قَرِيبًا مِنْ ثَلاَثِينَ كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ وَلَنْ تَزَالَ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي عَلَى الْحَقِّ مَنْصُورِينَ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو الْحَسَنِ لَمَّا فَرَغَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ مِنْ هَذَا الْحَدِيثِ قَالَ مَا أَهْوَلَهُ ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

rabi
বর্ণনাকারী:
হাদীস নং:৩৯৫৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৫৩
সংঘটিতব্য ফিতনা
৩৯৫৩। আবু বাকর ইব্‌ন আবু শায়রা (রাহঃ)....যায়নাব বিনতে জাহাশ (রাযিঃ) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘুম থেকে জাগলেন, তখন তাঁর চেহারা মুবারক ছিল রক্তিমাভ। তিনি 'লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু' (আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই), আরবের ধ্বংস অনিবার্য, ঐ মন্দের কারণে, যা নিকটবর্তী হয়েছে। (যুলকারনাইন) নির্মিত প্রাচীর ভেঙ্গে ইয়াজূজ ও মাজুজ বের হয়ে পড়েছে। এ সময় তিনি তাঁর হাতের আঙ্গুল দিয়ে একটি বৃত্ত সৃষ্টি করলেন।

যায়নাব (রাযিঃ) বললেনঃ আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি ধ্বংস হয়ে যাবো অথচ আমাদের মাঝে সৎলোক রয়েছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যখন মন্দ কাজের আধিক্য ছড়িয়ে পড়বে।
بَاب مَا يَكُونُ مِنْ الْفِتَنِ
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ زَيْنَبَ ابْنَةِ أُمِّ سَلَمَةَ، عَنْ حَبِيبَةَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ، أَنَّهَا قَالَتِ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مِنْ نَوْمِهِ وَهُوَ مُحْمَرٌّ وَجْهُهُ وَهُوَ يَقُولُ ‏"‏ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ فُتِحَ الْيَوْمَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ ‏"‏ ‏.‏ وَعَقَدَ بِيَدَيْهِ عَشَرَةً ‏.‏ قَالَتْ زَيْنَبُ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَهْلِكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ قَالَ ‏"‏ إِذَا كَثُرَ الْخَبَثُ ‏"‏ ‏.‏
হাদীস নং:৩৯৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৫৪
সংঘটিতব্য ফিতনা
৩৯৫৪। রাশিদ ইবন সাঈদ রামলী (রাহঃ)....... আবু উমামাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ অদূর ভবিষ্যতে এমন ফিত্না ছড়িয়ে পড়বে যে, সকালে মানুষ মু'মিন থাকবে এবং সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। তবে আল্লাহ যাকে ইলমের বদৌলতে জীবিত রাখবেন।
بَاب مَا يَكُونُ مِنْ الْفِتَنِ
حَدَّثَنَا رَاشِدُ بْنُ سَعِيدٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ سُلَيْمَانَ بْنِ أَبِي السَّائِبِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الْقَاسِمِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ سَتَكُونُ فِتَنٌ يُصْبِحُ الرَّجُلُ فِيهَا مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا إِلاَّ مَنْ أَحْيَاهُ اللَّهُ بِالْعِلْمِ ‏"‏ ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৯৫৫
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৫৫
সংঘটিতব্য ফিতনা
৩৯৫৫। মুহাম্মাদ ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইবন নুমায়র (রাহঃ)...হুযায়ফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। আমরা উমার (রাযিঃ)-এর নিকট বসাছিলাম । তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কার স্মরণ আছে ফিতনা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হাদীস ও রাবী হুযায়ফা (রাযিঃ) বললেন, আমার জানা আছে। উমার (রাযিঃ) বললেনঃ তুমি তো বেশ বাহাদুর । তিনি বললেনঃ তাহলে সে হাদীস কি ধরনের ছিল? তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছিঃ মানুষ ফিতনায় পতিত হবে তার স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি এবং পাড়া প্রতিবেশী দ্বারা। তবে এ সবের কাফ্ফারা হচ্ছে--সালাত, সিয়াম, সাদাকাহ্ সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ। অতঃপর উমার (রাযিঃ) বললেনঃ আমি এ ফিতনা সম্পর্কে জানতে চাইনি। বরং আমি তো সেই ফিত্না সম্পর্কে জানতে চেয়েছি, যা সমুদ্রের তরং্গমালার ন্যায় উদ্বেলিত হবে। হুযায়ফা (রাযিঃ) বললেন এই ফিতনা দ্বারা আপনি কি বুঝাতে চান, হে আমীরুল মু'মিনীন! আপনি ও সেই ফিতনার মাঝখানে তো একটা বন্ধ দরজা আছে। উমার (রাযিঃ) বললেন, সে দরজাটি কি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে, না উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে? হুযায়ফা (রাযিঃ) বললেনঃ না, বরং তা ভেঙ্গে দেওয়া হবে। তিনি (উমার রা) বললেন, অতঃপর তা বন্ধ করার মত যোগ্য পাত্র থাকবে না । (রাবী শাকীক বলেনঃ) আমরা হুযায়ফা (রাযিঃ)-এর (রাযিঃ)-এর কাছে জানতে চাইলাম উমার (রাযিঃ) কি এই দরজা সম্পর্কে জানতেন ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ (তিনি তা এমনভাবে জানতেন) যেমনিভাবে আগামী কালকের দিন গত হওয়ার পর রাত আসবে বলে জানেন। আমি তাকে একখানি হাদীস বর্ণনা করেছি যা ধোঁকা ও প্রতারণামূলক ছিল না। অতঃপর আমরা এই মনে করে হুযায়ফা (রাযিঃ) কে ভয় পাচ্ছিলাম যে, সে দরজাটি কে যার কারণে ফিতনা বন্ধ ছিল? আমরা মাসরুক (রাহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ। তিনি হুযায়ফা (রাযিঃ) বললেন, সে দরজাটি ছিল স্বয়ং উমার (রাযিঃ)।
بَاب مَا يَكُونُ مِنْ الْفِتَنِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَأَبِي، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ عُمَرَ فَقَالَ أَيُّكُمْ يَحْفَظُ حَدِيثَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي الْفِتْنَةِ قَالَ حُذَيْفَةُ فَقُلْتُ أَنَا ‏.‏ قَالَ إِنَّكَ لَجَرِيءٌ قَالَ كَيْفَ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ ‏ "‏ فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلاَةُ وَالصِّيَامُ وَالصَّدَقَةُ وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْىُ عَنِ الْمُنْكَرِ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ لَيْسَ هَذَا أُرِيدُ إِنَّمَا أُرِيدُ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ الْبَحْرِ ‏.‏ فَقَالَ مَالَكَ وَلَهَا يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا ‏.‏ قَالَ فَيُكْسَرُ الْبَابُ أَوْ يُفْتَحُ قَالَ لاَ بَلْ يُكْسَرُ ‏.‏ قَالَ ذَاكَ أَجْدَرُ أَنْ لاَ يُغْلَقَ ‏.‏ قُلْنَا لِحُذَيْفَةَ أَكَانَ عُمَرُ يَعْلَمُ مَنِ الْبَابُ قَالَ نَعَمْ كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ اللَّيْلَةَ إِنِّي حَدَّثْتُهُ حَدِيثًا لَيْسَ بِالأَغَالِيطِ ‏.‏ فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَهُ مَنِ الْبَابُ فَقُلْنَا لِمَسْرُوقٍ سَلْهُ فَسَأَلَهُ فَقَالَ عُمَرُ ‏.‏
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

হাদীস নং:৩৯৫৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩৯৫৬
সংঘটিতব্য ফিতনা
৩৯৫৬। আবু কুরায়ব (রাহঃ)....আব্দুর রহমান ইব্‌ন আব্দু রাব্বুল কা'বাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবন আ'স (রাযিঃ)-এর নিকট গেলাম। এ সময় তিনি কা'বা ঘরের ছায়ায় উপবিষ্ট ছিলেন এবং তার চতুর্দিকে লোকজন সমবেত ছিল। অতঃপর আমি তাকে বলতে শুনলাম যে, আমরা একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সাথে সফরে ছিলাম। তিনি এক জায়গায় অবতরণ করলেন। আমাদের কতক তাবু স্থাপন করছিলেন এবং কতক তীর নিক্ষেপের প্রশিক্ষণ রপ্ত করেছিলেন। ইত্যবসরে তাঁর মুয়াযাযিন সালাতের জন্য আহ্বান জানালেনঃ সালাতের জন্য একত্রিত হও। তখন আমরা সবাই সমবেত হলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দাঁড়ালেন এবং আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন তিনি বললেনঃ আমার পূর্বে এমন কোন নবী অতিবাহিত হননি, যিনি তার উম্মাতের জন্য কল্যাণকর কথা বাতলে দেননি এবং সে সব বিষয় থেকে ভয় দেখাননি যা তাদের জন্য মন্দ ও অকল্যাণকর মনে করছেন। আর তোমাদের এই উম্মাতের প্রথম অংশে রয়েছে নিরাপত্তা এবং পরবর্তী অংশে বালা মুসীবত আসতে থাকবে। অতঃপর এমন কার্যকলাপ শুরু হবে যাকে তোমরা মন্দ জ্ঞান কর। তারপর এমনভাবে ফিতনা আসতে থাকবে যে, একটা অপরটার চাইতে হালকা (লঘু) বলে মনে হবে অর্থাৎ প্রথমটার চাইতে পরবর্তীটা আরও ভয়াবহ হবে। মু'মিন ব্যক্তি বলতে থাকবে হায়, আফসোসে এই বিপর্যয়ে আমার ধ্বংস অনিবার্য। অতঃপর সে বিপর্যয় স্থগিত থাকবে এবং আরেকটি বিপর্যয় এসে খাড়া হবে। তখন মু'মিন ব্যক্তি বলবে, হায়, এরমধ্যে আমার ধ্বংস অনিবার্য। অতঃপর এই বিপর্যয়ও দূরীভূত হবে। সুতরাং যে ব্যক্তি ভাল মনে করে যে, সে জাহান্নাম থেকে নাজাত পাবে এবং জান্নাতে দাখিল হবে, সে যেন কোশেশ করে যে, মুত্যুকালে আল্লাহর প্রতি, কিয়ামত দিবসের প্রতি তার যেন ঈমান থাকে এবং লোকদের সাথে তদ্রূপ আচরণ করে, যেমনটি সে নিজের জন্য পছন্দ করে। যে ব্যক্তি কোন ইমামের হাতে বায়'আত গ্রহণ করে এবং অন্তরে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজের বায়'আতের হাত দিয়ে দিবে, সে যেন যথাসাধ্য তার আনুগত্য করে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ইমামের আবির্ভাব হলে এবং সে তার (পূর্ববর্তী ইমামের) সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে এবং নিজের বায়'আত গ্রহণের কথা বলে, তাহলে পরবর্তী আগন্তুক ইমামের গর্দনা উড়িয়ে দাও।

রাবী আব্দুর রহমান (রাযিঃ) বলেনঃ আমি (একথ শুনে) লোকদের ভিড় থেকে আমার মাথা বের করলাম এবং আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রাযিঃ)-কে বললাম, আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ করে বলছি, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট হতে এই কথা শুনেছেন? তিনি তার হাত দিয়ে কানের দিকে ইশারা করে বললেনঃ আমার দুই কান তাঁর নিকট থেকে শুনেছে এবং আমার কালব তা সংরক্ষণ করেছে।
بَاب مَا يَكُونُ مِنْ الْفِتَنِ
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ الْمُحَارِبِيُّ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ رَبِّ الْكَعْبَةِ، قَالَ انْتَهَيْتُ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ وَهُوَ جَالِسٌ فِي ظِلِّ الْكَعْبَةِ وَالنَّاسُ مُجْتَمِعُونَ عَلَيْهِ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ بَيْنَا نَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي سَفَرٍ إِذْ نَزَلَ مَنْزِلاً فَمِنَّا مَنْ يَضْرِبُ خِبَاءَهُ وَمِنَّا مَنْ يَنْتَضِلُ وَمِنَّا مَنْ هُوَ فِي جَشَرِهِ إِذْ نَادَى مُنَادِيهِ الصَّلاَةُ جَامِعَةٌ فَاجْتَمَعْنَا فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَخَطَبَنَا فَقَالَ ‏ "‏ إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ نَبِيٌّ قَبْلِي إِلاَّ كَانَ حَقًّا عَلَيْهِ أَنْ يَدُلَّ أُمَّتَهُ عَلَى مَا يَعْلَمُهُ خَيْرًا لَهُمْ وَيُنْذِرَهُمْ مَا يَعْلَمُهُ شَرًّا لَهُمْ وَإِنَّ أُمَّتَكُمْ هَذِهِ جُعِلَتْ عَافِيَتُهَا فِي أَوَّلِهَا وَإِنَّ آخِرَهُمْ يُصِيبُهُمْ بَلاَءٌ وَأُمُورٌ تُنْكِرُونَهَا ثُمَّ تَجِيءُ فِتَنٌ يُرَقِّقُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيَقُولُ الْمُؤْمِنُ هَذِهِ مُهْلِكَتِي ثُمَّ تَنْكَشِفُ ثُمَّ تَجِيءُ فِتْنَةٌ فَيَقُولُ الْمُؤْمِنُ هَذِهِ مُهْلِكَتِي ‏.‏ ثُمَّ تَنْكَشِفُ فَمَنْ سَرَّهُ أَنْ يُزَحْزَحَ عَنِ النَّارِ وَيُدْخَلَ الْجَنَّةَ فَلْتُدْرِكْهُ مَوْتَتُهُ وَهُوَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَلْيَأْتِ إِلَى النَّاسِ الَّذِي يُحِبُّ أَنْ يَأْتُوا إِلَيْهِ وَمَنْ بَايَعَ إِمَامًا فَأَعْطَاهُ صَفْقَةَ يَمِينِهِ وَثَمَرَةَ قَلْبِهِ فَلْيُطِعْهُ مَا اسْتَطَاعَ فَإِنْ جَاءَ آخَرُ يُنَازِعُهُ فَاضْرِبُوا عُنُقَ الآخَرِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَأَدْخَلْتُ رَأْسِي مِنْ بَيْنِ النَّاسِ فَقُلْتُ أَنْشُدُكَ اللَّهَ أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ فَأَشَارَ بِيَدِهِ إِلَى أُذُنَيْهِ فَقَالَ سَمِعَتْهُ أُذُنَاىَ وَوَعَاهُ قَلْبِي ‏.‏