কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
كتاب السنن للإمام أبي داود
৩৫. সুন্নাহের গুরুত্ব ও আকাঈদ অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৫ টি
অনুসন্ধান করুন...
হাদীস নং:৪৬৭৫
আন্তর্জাতিক নং: ৪৭৫০
২৬. কবরের প্রশ্ন ও শাস্তির বর্ণনা।
৪৬৭৫. আবুল ওয়ালীদ তায়ালিসী (রাহঃ) ......... বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন যখন কোন মুসলমানকে কবরে প্রশ্ন করা হয়, আর সে এরূপ সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর রাসূল। এ কথা আল্লাহর ঐ বাণীর বাস্তবতাঃ মহান আল্লাহ ঈমানদারদের দুনিয়া ও আখিরাতে প্রতিষ্ঠিত রাখেন সত্য কথার উপর।
باب فِي الْمَسْأَلَةِ فِي الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ : " إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا سُئِلَ فِي الْقَبْرِ فَشَهِدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَلِكَ قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ( يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ ) .
হাদীস নং:৪৬৭৬
আন্তর্জাতিক নং: ৪৭৫১
২৬. কবরের প্রশ্ন ও শাস্তির বর্ণনা।
৪৬৭৬. মুহাম্মাদ ইবনে সুলাইমান (রাহঃ) .... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নাজ্জার গোত্রের একটি খেজুরের বাগানে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি একটা শব্দ শুনে ভীত হয়ে পড়েন এবং বলেনঃ এ কবরগুলি কাদের? তারা বলেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! এরা জাহিলী যুগে মারা গেছে। তখন নবী (ﷺ) বলেনঃ তোমরা আল্লাহর কবরের আযাব ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর। তখন তারা বলেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কেন এরূপ করবে।
তখন নবী (ﷺ) বলেন যখন কোন মু’মিন ব্যক্তিকে তার কবরে রাখা হয়, তখন একজন ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ তুমি কার ইবাদত করতে? তখন মহান আল্লাহ তাকে হিদায়াত দান করেন। তখন সে বলেঃ আমি আল্লাহর ইবাদত করতাম। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হবেঃ তুমি এ ব্যক্তির (মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর) ব্যাপারে কিরূপ ধারণা পোষণ করতে? তখন সে বলবেঃ তিনি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। এরপর তাকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে না। এরপর তাকে এমন একস্থানে নেয়া হয়, যা তার জন্য জাহান্নামে বানানো হয়েছিল। তখন তাকে বলা হবেঃ এটা এটা তোমার জাহান্নামের ঘর ছিল। আল্লাহ তোমাকে এ থেকে রক্ষা করেছেন এবং তোমার উপর রহম করেছেন এবং এর বিনিময়ে তোমার জন্য জান্নাতে একটা চিরস্থায়ী ঘর দান করেছেন। তখন সে বলেঃ আমাকে ছেড়ে দাও, যাতে আমি আমার পরিবার-পরিজনদের এ সুসংবাদ দিতে পারি। তখন তাকে বলা হয়ঃ তুমি শান্ত হও।
অপরপক্ষে যখন কোন কাফিরকে কবরে রাখা হয়, তখন তার কাছে একজন ফিরিশতা আসে এবং ধমকের সুরে জিজ্ঞাসা করেঃ তুমি কার ইবাদত করতে? সে বলবেঃ আমি জানি না। তখন তাকে বলা হয়ঃ তুমি নিজেও জ্ঞান অর্জন করনি। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ এ ব্যক্তির ব্যাপারে তোমার ধারণা কিরূপ ছিল? তখন সে বলেঃ তাঁর ব্যাপারে লোকদের যেরূপ ধারণা ছিল, আমার ধারণাও সেরূপ। এ কথা শুনে ফিরিশতা তার মাথায় লোহার মুগুর দিয়ে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করে, ফলে সে এত জোরে চিৎকার করে যে, জ্বীন ও ইনসান ব্যতীত সে চিৎকার সব সৃষ্ট জীব শুনতে পায়।
তখন নবী (ﷺ) বলেন যখন কোন মু’মিন ব্যক্তিকে তার কবরে রাখা হয়, তখন একজন ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ তুমি কার ইবাদত করতে? তখন মহান আল্লাহ তাকে হিদায়াত দান করেন। তখন সে বলেঃ আমি আল্লাহর ইবাদত করতাম। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হবেঃ তুমি এ ব্যক্তির (মুহাম্মাদ (ﷺ)-এর) ব্যাপারে কিরূপ ধারণা পোষণ করতে? তখন সে বলবেঃ তিনি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। এরপর তাকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করা হবে না। এরপর তাকে এমন একস্থানে নেয়া হয়, যা তার জন্য জাহান্নামে বানানো হয়েছিল। তখন তাকে বলা হবেঃ এটা এটা তোমার জাহান্নামের ঘর ছিল। আল্লাহ তোমাকে এ থেকে রক্ষা করেছেন এবং তোমার উপর রহম করেছেন এবং এর বিনিময়ে তোমার জন্য জান্নাতে একটা চিরস্থায়ী ঘর দান করেছেন। তখন সে বলেঃ আমাকে ছেড়ে দাও, যাতে আমি আমার পরিবার-পরিজনদের এ সুসংবাদ দিতে পারি। তখন তাকে বলা হয়ঃ তুমি শান্ত হও।
অপরপক্ষে যখন কোন কাফিরকে কবরে রাখা হয়, তখন তার কাছে একজন ফিরিশতা আসে এবং ধমকের সুরে জিজ্ঞাসা করেঃ তুমি কার ইবাদত করতে? সে বলবেঃ আমি জানি না। তখন তাকে বলা হয়ঃ তুমি নিজেও জ্ঞান অর্জন করনি। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়ঃ এ ব্যক্তির ব্যাপারে তোমার ধারণা কিরূপ ছিল? তখন সে বলেঃ তাঁর ব্যাপারে লোকদের যেরূপ ধারণা ছিল, আমার ধারণাও সেরূপ। এ কথা শুনে ফিরিশতা তার মাথায় লোহার মুগুর দিয়ে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করে, ফলে সে এত জোরে চিৎকার করে যে, জ্বীন ও ইনসান ব্যতীত সে চিৎকার সব সৃষ্ট জীব শুনতে পায়।
باب فِي الْمَسْأَلَةِ فِي الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ الْخَفَّافُ أَبُو نَصْرٍ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ : إِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ نَخْلاً لِبَنِي النَّجَّارِ فَسَمِعَ صَوْتًا فَفَزِعَ فَقَالَ : " مَنْ أَصْحَابُ هَذِهِ الْقُبُورِ " . قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ نَاسٌ مَاتُوا فِي الْجَاهِلِيَّةِ . فَقَالَ : " تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ " . قَالُوا : وَمِمَّ ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ : " إِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ أَتَاهُ مَلَكٌ فَيَقُولُ لَهُ : مَا كُنْتَ تَعْبُدُ فَإِنِ اللَّهُ هَدَاهُ قَالَ : كُنْتُ أَعْبُدُ اللَّهَ . فَيُقَالُ لَهُ : مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ : هُوَ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ فَمَا يُسْأَلُ عَنْ شَىْءٍ غَيْرَهَا فَيُنْطَلَقُ بِهِ إِلَى بَيْتٍ كَانَ لَهُ فِي النَّارِ، فَيُقَالُ لَهُ : هَذَا بَيْتُكَ كَانَ لَكَ فِي النَّارِ وَلَكِنَّ اللَّهَ عَصَمَكَ وَرَحِمَكَ فَأَبْدَلَكَ بِهِ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ فَيَقُولُ : دَعُونِي حَتَّى أَذْهَبَ فَأُبَشِّرَ أَهْلِي . فَيُقَالُ لَهُ : اسْكُنْ . وَإِنَّ الْكَافِرَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ أَتَاهُ مَلَكٌ فَيَنْتَهِرُهُ فَيَقُولُ لَهُ : مَا كُنْتَ تَعْبُدُ فَيَقُولُ : لاَ أَدْرِي . فَيُقَالُ لَهُ : لاَ دَرَيْتَ وَلاَ تَلَيْتَ . فَيُقَالُ لَهُ : فَمَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ فَيَقُولُ : كُنْتُ أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ . فَيَضْرِبُهُ بِمِطْرَاقٍ مِنْ حَدِيدٍ بَيْنَ أُذُنَيْهِ فَيَصِيحُ صَيْحَةً يَسْمَعُهَا الْخَلْقُ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ " .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৪৬৭৭
আন্তর্জাতিক নং: ৪৭৫২
২৬. কবরের প্রশ্ন ও শাস্তির বর্ণনা।
৪৬৭৭. মুহাম্মাদ ইবনে সুলাইমান (রাহঃ) .... আব্দুল ওয়াহাব (রাহঃ) উপরোক্ত সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ যখন কোন ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয় এবং লোকেরা তাকে দাফন করে ফিরে আসে, আর সে (মৃত ব্যক্তি) তাদের জুতার শব্দও শুনতে পায়; সে সময় তার কাছে দু’জন ফিরিশতা এসে প্রশ্ন করে। এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে, যাতে কাফির ও মুনাফিক শব্দের উল্লেখ আছে। এরপর দু’জন ফিরিশতা তাকে জিজ্ঞাসা করে। এখানে মুনাফিক শব্দটি অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে। রাবী আরো বলেনঃ সে শব্দ তার আশপাশে যারা থাকে, সবাই শোনে; জ্বীন ও ইনসান ব্যতীত।
باب فِي الْمَسْأَلَةِ فِي الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، بِمِثْلِ هَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ قَالَ : " إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ، فَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ فَيَقُولاَنِ لَهُ " . فَذَكَرَ قَرِيبًا مِنْ حَدِيثِ الأَوَّلِ قَالَ فِيهِ : " وَأَمَّا الْكَافِرُ وَالْمُنَافِقُ فَيَقُولاَنِ لَهُ " . زَادَ : " الْمُنَافِقُ " . وَقَالَ : " يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ غَيْرَ الثَّقَلَيْنِ " .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নং:৪৬৭৮
আন্তর্জাতিক নং: ৪৭৫৩
২৬. কবরের প্রশ্ন ও শাস্তির বর্ণনা।
৪৬৭৮. উছমান ইবনে আবি শাঈবা (রাহঃ) .... বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সঙ্গে একজন আনসার সাহাবীর জানাযার নামাযে শরীক হই, এমন কি তার কবরের কাছে যাই, যা তখনও তৈরী হয়নি। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সেখানে বসেন এবং আমরা ও তাঁর সাথে তাঁর চারদিকে শান্তভাবে বসে পড়ি, যেন আমাদের মাথার উপর পাখি বসা। এ সময় নবী (ﷺ)-এর হাতে একখণ্ড কাঠ ছিল, যা দিয়ে তিনি যমীনের উপর আঘাত করছিলেন। এরপর তিনি মাথা উঁচু করে দুই বা তিনবার বলেনঃ তোমরা কবরের আযাব থেকে আল্লাহর কাছে নাজাত চাও।
রাবী জারীরের বর্ণনায় এরূপ অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে যে, দাফনের পর লোকেরা যখন ফিরে যায় এবং সে লোক তাদের শব্দ শুনতে পায়, সে সময় তাকে এরূপ প্রশ্ন করা হয়ঃ হে ব্যক্তি! তোমার রব কে? তোমার দ্বীন কি এবং তোমার নবী কে?
রাবী হান্নাদ (রাহঃ) বলেনঃ নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তখন তার কাছে দু’জন ফিরিশতা আসে এবং তাকে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করেঃ তোমার রব কে? তখন সে বলেঃ আল্লাহ আমার রব। তখন তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ তোমার দ্বীন কী? সে বলেঃ আমার দ্বীন ইসলাম। এরপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ এ ব্যক্তি কে, যাকে তোমাদের কাছে পাঠান হয়েছিল? তখন সে বলেঃ ইনি হলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। তখন ফিরিশতারা আবার জিজ্ঞাসা করেঃ তুমি এ কিরূপে জানলে? তখন সে বলেঃ আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, এর উপর ঈমান এনেছি এবং একে সত্য বলে মনে করি। রাবী জারীর বলেন, আল্লাহর বাণীঃ ″আল্লাহ তাআলা মু’মিনদের ইহজীবন ও পরজীবনে শাশ্বত- বাণীর (কালিমার) উপর দূর রাখেন।″ এর অর্থ ইহাই।
রাবী বলেনঃ এরপর আসমান থেকে একজন আহবানকারী এরূপ ঘোষণা দিতে থাকেঃ আমার বান্দা সত্য বলেছে, তার কবরে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের দিকে একটা দরজা খুলে দাও। রাবী বলেনঃ তখন তার কবরে জান্নাতের মৃদুমন্দ বাতাস ও খোশবু আসতে থাকে এবং সে ব্যক্তির কবরকে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত বিস্তৃত করে দেয়া হয়।
এরপর তিনি কাফির ব্যক্তির মৃত্যুর অবস্থা বর্ণনা করে বলেনঃ কবরে রাখার পর তার আত্মাকে দেহের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তখন দু’জন ফিরিশতা এসে তাকে বসায় এবং প্রশ্ন করেঃ তোমার রব কে? তখন সে বলেঃ হা - হা - লা - আদরী; অর্থাৎ আফসোস, আমি তো জানি না। এরপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ তোমার দ্বীন কী? সে বলেঃ আফসোস আমি জানি না। এরপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ এ ব্যক্তি কে, যাকে দুনিয়াতে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল? তখন সে বলেঃ হায় আফসোস! আমি জানি না।
তখন আসমান থেকে একজন ঘোষণাকারী এরূপ বলতে থাকেঃ সে মিথ্যা বলেছে। তার কবরে আগুনের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে আগুনের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার কবর থেকে জাহান্নামের দিকে একটা দরজা খুলে দাও; যাতে তার কবরে জাহান্নামের আগুনের প্রচণ্ড তাপ ও ভাঁপ আসতে থাকে। এরপর কবর তার জন্য এতই সংকুচিত হয়ে যায় যে, তার পাজরের একপাশ অপরপাশে চলে যায়।
রাবী জারীর আরো বর্ণনা করেনঃ এরপর সে ব্যক্তির জন্য একজন অন্ধ ও বধির ফিরিশতাকে নিয়োগ করা হয় এবং তার হাতে এমন একটা লোহার মুগুর থাকে, যদি তা দিয়ে দুনিয়ার কোন পাহাড়ের উপর আঘাত করা হয়, তবে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে মাটিতে পরিণত হবে। এরপর সে ফিরিশতা মুগুর দিয়ে তাকে এমনভাবে পিটাতে থাকে, যার শব্দ জ্বীন ও ইনসান ব্যতীত পূর্ব-পশ্চিমের সমস্ত মাখলূক (সৃষ্টজীব) শুনতে পায় এবং তার দেহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ধূলায় পরিণত হয়। এরপর তার মধ্যে পুনরায় রুহ ফুঁকে দেয়া হয়।
রাবী জারীরের বর্ণনায় এরূপ অতিরিক্ত বর্ণিত হয়েছে যে, দাফনের পর লোকেরা যখন ফিরে যায় এবং সে লোক তাদের শব্দ শুনতে পায়, সে সময় তাকে এরূপ প্রশ্ন করা হয়ঃ হে ব্যক্তি! তোমার রব কে? তোমার দ্বীন কি এবং তোমার নবী কে?
রাবী হান্নাদ (রাহঃ) বলেনঃ নবী (ﷺ) বলেছেনঃ তখন তার কাছে দু’জন ফিরিশতা আসে এবং তাকে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করেঃ তোমার রব কে? তখন সে বলেঃ আল্লাহ আমার রব। তখন তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ তোমার দ্বীন কী? সে বলেঃ আমার দ্বীন ইসলাম। এরপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ এ ব্যক্তি কে, যাকে তোমাদের কাছে পাঠান হয়েছিল? তখন সে বলেঃ ইনি হলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। তখন ফিরিশতারা আবার জিজ্ঞাসা করেঃ তুমি এ কিরূপে জানলে? তখন সে বলেঃ আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, এর উপর ঈমান এনেছি এবং একে সত্য বলে মনে করি। রাবী জারীর বলেন, আল্লাহর বাণীঃ ″আল্লাহ তাআলা মু’মিনদের ইহজীবন ও পরজীবনে শাশ্বত- বাণীর (কালিমার) উপর দূর রাখেন।″ এর অর্থ ইহাই।
রাবী বলেনঃ এরপর আসমান থেকে একজন আহবানকারী এরূপ ঘোষণা দিতে থাকেঃ আমার বান্দা সত্য বলেছে, তার কবরে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের দিকে একটা দরজা খুলে দাও। রাবী বলেনঃ তখন তার কবরে জান্নাতের মৃদুমন্দ বাতাস ও খোশবু আসতে থাকে এবং সে ব্যক্তির কবরকে দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত বিস্তৃত করে দেয়া হয়।
এরপর তিনি কাফির ব্যক্তির মৃত্যুর অবস্থা বর্ণনা করে বলেনঃ কবরে রাখার পর তার আত্মাকে দেহের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। তখন দু’জন ফিরিশতা এসে তাকে বসায় এবং প্রশ্ন করেঃ তোমার রব কে? তখন সে বলেঃ হা - হা - লা - আদরী; অর্থাৎ আফসোস, আমি তো জানি না। এরপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ তোমার দ্বীন কী? সে বলেঃ আফসোস আমি জানি না। এরপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করেঃ এ ব্যক্তি কে, যাকে দুনিয়াতে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল? তখন সে বলেঃ হায় আফসোস! আমি জানি না।
তখন আসমান থেকে একজন ঘোষণাকারী এরূপ বলতে থাকেঃ সে মিথ্যা বলেছে। তার কবরে আগুনের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে আগুনের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার কবর থেকে জাহান্নামের দিকে একটা দরজা খুলে দাও; যাতে তার কবরে জাহান্নামের আগুনের প্রচণ্ড তাপ ও ভাঁপ আসতে থাকে। এরপর কবর তার জন্য এতই সংকুচিত হয়ে যায় যে, তার পাজরের একপাশ অপরপাশে চলে যায়।
রাবী জারীর আরো বর্ণনা করেনঃ এরপর সে ব্যক্তির জন্য একজন অন্ধ ও বধির ফিরিশতাকে নিয়োগ করা হয় এবং তার হাতে এমন একটা লোহার মুগুর থাকে, যদি তা দিয়ে দুনিয়ার কোন পাহাড়ের উপর আঘাত করা হয়, তবে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে মাটিতে পরিণত হবে। এরপর সে ফিরিশতা মুগুর দিয়ে তাকে এমনভাবে পিটাতে থাকে, যার শব্দ জ্বীন ও ইনসান ব্যতীত পূর্ব-পশ্চিমের সমস্ত মাখলূক (সৃষ্টজীব) শুনতে পায় এবং তার দেহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ধূলায় পরিণত হয়। এরপর তার মধ্যে পুনরায় রুহ ফুঁকে দেয়া হয়।
باب فِي الْمَسْأَلَةِ فِي الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، - وَهَذَا لَفْظُ هَنَّادٍ - عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ الْمِنْهَالِ، عَنْ زَاذَانَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ : خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي جَنَازَةِ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ، فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَبْرِ وَلَمَّا يُلْحَدْ، فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَلَسْنَا حَوْلَهُ كَأَنَّمَا عَلَى رُءُوسِنَا الطَّيْرُ، وَفِي يَدِهِ عُودٌ يَنْكُتُ بِهِ فِي الأَرْضِ، فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ : " اسْتَعِيذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ " . مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا - زَادَ فِي حَدِيثِ جَرِيرٍ هَا هُنَا - وَقَالَ : " وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ خَفْقَ نِعَالِهِمْ إِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِينَ حِينَ يُقَالُ لَهُ : يَا هَذَا مَنْ رَبُّكَ وَمَا دِينُكَ وَمَنْ نَبِيُّكَ " . قَالَ هَنَّادٌ قَالَ : " وَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُولاَنِ لَهُ : مَنْ رَبُّكَ فَيَقُولُ : رَبِّيَ اللَّهُ . فَيَقُولاَنِ لَهُ : مَا دِينُكَ فَيَقُولُ : دِينِي الإِسْلاَمُ . فَيَقُولاَنِ لَهُ : مَا هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ قَالَ فَيَقُولُ : هُوَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَيَقُولاَنِ : وَمَا يُدْرِيكَ فَيَقُولُ : قَرَأْتُ كِتَابَ اللَّهِ فَآمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُ " . زَادَ فِي حَدِيثِ جَرِيرٍ : " فَذَلِكَ قَوْلُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ( يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا ) " . الآيَةَ . ثُمَّ اتَّفَقَا قَالَ : " فَيُنَادِي مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ : أَنْ قَدْ صَدَقَ عَبْدِي فَأَفْرِشُوهُ مِنَ الْجَنَّةِ، وَافْتَحُوا لَهُ بَابًا إِلَى الْجَنَّةِ وَأَلْبِسُوهُ مِنَ الْجَنَّةِ " . قَالَ : " فَيَأْتِيهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيبِهَا " . قَالَ : " وَيُفْتَحُ لَهُ فِيهَا مَدَّ بَصَرِهِ " . قَالَ : " وَإِنَّ الْكَافِرَ " . فَذَكَرَ مَوْتَهُ قَالَ : " وَتُعَادُ رُوحُهُ فِي جَسَدِهِ وَيَأْتِيهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُولاَنِ : مَنْ رَبُّكَ فَيَقُولُ : هَاهْ هَاهْ هَاهْ لاَ أَدْرِي . فَيَقُولاَنِ لَهُ : مَا دِينُكَ فَيَقُولُ : هَاهْ هَاهْ لاَ أَدْرِي . فَيَقُولاَنِ : مَا هَذَا الرَّجُلُ الَّذِي بُعِثَ فِيكُمْ فَيَقُولُ : هَاهْ هَاهْ لاَ أَدْرِي . فَيُنَادِي مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ : أَنْ كَذَبَ فَأَفْرِشُوهُ مِنَ النَّارِ وَأَلْبِسُوهُ مِنَ النَّارِ، وَافْتَحُوا لَهُ بَابًا إِلَى النَّارِ " . قَالَ : " فَيَأْتِيهِ مِنْ حَرِّهَا وَسَمُومِهَا " . قَالَ : " وَيُضَيَّقُ عَلَيْهِ قَبْرُهُ حَتَّى تَخْتَلِفَ فِيهِ أَضْلاَعُهُ " . زَادَ فِي حَدِيثِ جَرِيرٍ قَالَ : " ثُمَّ يُقَيَّضُ لَهُ أَعْمَى أَبْكَمُ مَعَهُ مِرْزَبَّةٌ مِنْ حَدِيدٍ، لَوْ ضُرِبَ بِهَا جَبَلٌ لَصَارَ تُرَابًا " . قَالَ : " فَيَضْرِبُهُ بِهَا ضَرْبَةً يَسْمَعُهَا مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ إِلاَّ الثَّقَلَيْنِ فَيَصِيرُ تُرَابًا " . قَالَ : " ثُمَّ تُعَادُ فِيهِ الرُّوحُ " .
হাদীস নং:৪৬৭৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪৭৫৪
২৬. কবরের প্রশ্ন ও শাস্তির বর্ণনা।
৪৬৭৯. হান্নাদ ইবনে সারী (রাহঃ) ..... আবু আমর (রাহঃ) অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ আমি বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ)-কে নবী করীম (ﷺ) হতে এরূপ বর্ণনা করতে শুনেছি। এরপর পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
باب فِي الْمَسْأَلَةِ فِي الْقَبْرِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا الْمِنْهَالُ، عَنْ أَبِي عُمَرَ، : زَاذَانَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَذَكَرَ نَحْوَهُ .

তাহকীক:
তাহকীক চলমান