কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

كتاب السنن للإمام أبي داود

৩. যাকাতের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:১৬৩৯
আন্তর্জাতিক নং: ১৬৩৯
২৬. যে অবস্থায় যাঞ্ছা করা বৈধ।
১৬৩৯. হাফস ইবনে উমর (রাহঃ) ..... যায়দ ইবনে উকবা আল-ফাযারী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ ভিক্ষাবৃত্তি হল ক্ষতবিক্ষতকারী জিনিস-যার সাহায্যে কোন ব্যক্তি নিজের মুখমণ্ডল ক্ষতবিক্ষত করে। অতএব যার ইচ্ছা সে নিজের মানসম্মান বজায় রাখুক এবং যার ইচ্ছা নিজের লজ্জা-শরম ত্যাগ করুক। কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধানের নিকট কিছু যাচ্ঞা করা বৈধ, অথবা অনন্যোপায় অবস্থায় যাচ্ঞা করা বৈধ।
باب مَا تَجُوزُ فِيهِ الْمَسْأَلَةُ
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ النَّمَرِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ عُقْبَةَ الْفَزَارِيِّ، عَنْ سَمُرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمَسَائِلُ كُدُوحٌ يَكْدَحُ بِهَا الرَّجُلُ وَجْهَهُ فَمَنْ شَاءَ أَبْقَى عَلَى وَجْهِهِ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَ إِلاَّ أَنْ يَسْأَلَ الرَّجُلُ ذَا سُلْطَانٍ أَوْ فِي أَمْرٍ لاَ يَجِدُ مِنْهُ بُدًّا " .
হাদীস নং:১৬৪০
আন্তর্জাতিক নং: ১৬৪০
২৬. যে অবস্থায় যাঞ্ছা করা বৈধ।
১৬৪০. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) ..... কাবীসা ইবনে মুখারিক আল-হিলালী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (এক জনের) ঋণের জামিন হলাম। আমি নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট এলে তিনি বলেনঃ হে কাবীসা! তুমি যাকাতের মাল আসা পর্যন্ত অপেক্ষা কর। আর আমি তা থেকে তোমাকে কিছু দেওয়ার নির্দেশ দিব। অতঃপর তিনি বলেন, হে কাবীসা! তিন শ্রেনীর লোক ব্যতীত কারো জন্য যাচ্ঞা করা হালাল নয়।

(১) যে ব্যক্তি যামিন হয়েছে তার জন্য তা পরিশোধিত না হওয়া পর্যন্ত অন্যের সাহায্য চাওয়া হালাল, অতঃপর সে তা পরিত্যাগ করবে।

(২) যদি কোন ব্যক্তির ধন-সম্পদ দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বিনষ্ট হয়, তবে সে ব্যক্তির জন্য এ বিপদ হতে নিষ্কৃতি লাভ না করা পর্যন্ত যাচ্ঞা করা হালাল।

(৩) ঐ ব্যক্তি যে ধনী হওয়া সত্ত্বেও দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে অভাবগ্রস্ত ও সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছে। প্রমাণস্বরূপ যদি তার স্থানীয় তিনজন ব্যক্তি বলে যে, অমুক ব্যক্তিটি সর্বহারা হয়ে গিয়াছে তখন সেই ব্যক্তির জন্য চাওয়া (ভিক্ষা করা) ততক্ষণ পর্যন্ত বৈধ-যতক্ষণ না সে জীবন ধারণে স্বচ্ছল ও স্বাবলম্বী হয়।

অতঃপর তিনি বলেনঃ হে কাবীসা! উপরোক্ত তিন শ্রেনীর লোক ব্যতীত অন্যদের জন্য ভিক্ষা করা হারাম। যদি কেউ করে, তবে সে হারাম খায়।
باب مَا تَجُوزُ فِيهِ الْمَسْأَلَةُ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ هَارُونَ بْنِ رِيَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي كِنَانَةُ بْنُ نُعَيْمٍ الْعَدَوِيُّ، عَنْ قَبِيصَةَ بْنِ مُخَارِقٍ الْهِلاَلِيِّ، قَالَ تَحَمَّلْتُ حَمَالَةً فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَقِمْ يَا قَبِيصَةُ حَتَّى تَأْتِيَنَا الصَّدَقَةُ فَنَأْمُرَ لَكَ بِهَا " . ثُمَّ قَالَ " يَا قَبِيصَةُ إِنَّ الْمَسْأَلَةَ لاَ تَحِلُّ إِلاَّ لأَحَدِ ثَلاَثَةٍ رَجُلٌ تَحَمَّلَ حَمَالَةً فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيبَهَا ثُمَّ يُمْسِكُ وَرَجُلٌ أَصَابَتْهُ جَائِحَةٌ فَاجْتَاحَتْ مَالَهُ فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ " . أَوْ قَالَ " سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ " . " وَرَجُلٌ أَصَابَتْهُ فَاقَةٌ حَتَّى يَقُولَ ثَلاَثَةٌ مِنْ ذَوِي الْحِجَا مِنْ قَوْمِهِ قَدْ أَصَابَتْ فُلاَنًا الْفَاقَةُ فَحَلَّتْ لَهُ الْمَسْأَلَةُ فَسَأَلَ حَتَّى يُصِيبَ قِوَامًا مِنْ عَيْشٍ - أَوْ سِدَادًا مِنْ عَيْشٍ - ثُمَّ يُمْسِكُ وَمَا سِوَاهُنَّ مِنَ الْمَسْأَلَةِ يَا قَبِيصَةُ سُحْتٌ يَأْكُلُهَا صَاحِبُهَا سُحْتًا " .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীস নং:১৬৪১
আন্তর্জাতিক নং: ১৬৪১
২৬. যে অবস্থায় যাঞ্ছা করা বৈধ।
১৬৪১. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসলামা (রাহঃ) ..... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক আনসারী ব্যক্তি নবী করীম (ﷺ)-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে কিছু সাহায্য প্রার্থনা করে। তখন তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেনঃ তোমার ঘরে কি কিছু নাই? সে বলেঃ হ্যাঁ, একটি কম্বল মাত্র যার অর্ধেক আমি পরিধান করি এবং বাকী অর্ধেক বিছিয়ে শয়ন করি। আর আছে একটি পেয়ালা, যাতে আমি পানি পান করি। তিনি বলেনঃ উভয় বস্তু আমার নিকট নিয়ে আস। রাবী বলেনঃ সে তা আনয়ন করলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা স্বহস্তে ধারণ পূর্বক (নিলামের ডাকের মত) বলেনঃ কে এই দুটি ক্রয় করতে ইচ্ছুক? এক ব্যক্তি বলে, আমি তা এক দিরহামের বিনিময়ে গ্রহণ করতে চাই।

অতঃপর তিনি বলেনঃ এক দিরহামের অধিক কে দিবে? তিনি দুই বা তিনবার এইরূপ উচ্চারণ করেন। তখন এক ব্যক্তি বলে, আমি তা দুই দিরহামের বিনিময়ে গ্রহণ করব। তিনি সেই ব্যক্তিকে তা প্রদান করেন এবং বিনিময়ে দুইটি দিরহাম গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি তা আনসারীর হাতে তুলে দিয়ে বলেনঃ এর একটি দিরহাম দিয়ে কিছু খাদ্য ক্রয় করে তোমার পরিবার-পরিজনদের দাও; আর বাকী এক দিরহাম দিয়ে একটি কুঠার কিনে আমার নিকট আস। লোকটি কুঠার কিনে আনলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) স্বহস্তে তাতে হাতল লাগিয়ে তার হাতে দিয়ে বলেনঃ এখন তুমি যাও এবং জঙ্গল হতে কাঠ কেটে এনে বিক্রী কর। আর আমি যেন তোমাকে পনের দিন না দেখি।

অতঃপর সে চলে গেল এবং কাঠ কেটে এনে বিক্রয় করতে থাকে। অতঃপর সে (পনের দিন পর) আসল। সে তখন প্রাপ্ত হয়েছিল দশটি দিরহাম যা দিয়ে সে কিছু কাপড় এবং কিছু খাদ্য ক্রয় করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ ভিক্ষাবৃত্তির চাইতে এটা তোমার জন্য উত্তম। কেননা ভিক্ষাবৃত্তির ফলে কিয়ামতের দিন তোমার চেহারা ক্ষত-বিক্ষত হত। ভিক্ষা চাওয়া তিন শ্রেনীর ব্যক্তি ব্যতীত অন্যদের জন্য হালাল নয়ঃ (১) ধূলা-মলিন নিঃস্ব ভিক্ষুকের জন্য, (২) প্রচন্ড ঋণের চাপে জর্জরিত ব্যক্তির জন্য এবং (৩) যার উপর দিয়াত (রক্তপণ) আছে, অথচ তা পরিশোধের অক্ষমতার কারণে নিজের জীবন বিপন্ন— এ ধরনের ব্যক্তিরা যাচ্ঞা করতে পারে।
باب مَا تَجُوزُ فِيهِ الْمَسْأَلَةُ
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ الأَخْضَرِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ أَبِي بَكْرٍ الْحَنَفِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَنْصَارِ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُهُ فَقَالَ " أَمَا فِي بَيْتِكَ شَىْءٌ " . قَالَ بَلَى حِلْسٌ نَلْبَسُ بَعْضَهُ وَنَبْسُطُ بَعْضَهُ وَقَعْبٌ نَشْرَبُ فِيهِ مِنَ الْمَاءِ . قَالَ " ائْتِنِي بِهِمَا " . فَأَتَاهُ بِهِمَا فَأَخَذَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ وَقَالَ " مَنْ يَشْتَرِي هَذَيْنِ " . قَالَ رَجُلٌ أَنَا آخُذُهُمَا بِدِرْهَمٍ . قَالَ " مَنْ يَزِيدُ عَلَى دِرْهَمٍ " . مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا قَالَ رَجُلٌ أَنَا آخُذُهُمَا بِدِرْهَمَيْنِ . فَأَعْطَاهُمَا إِيَّاهُ وَأَخَذَ الدِّرْهَمَيْنِ وَأَعْطَاهُمَا الأَنْصَارِيَّ وَقَالَ " اشْتَرِ بِأَحَدِهِمَا طَعَامًا فَانْبِذْهُ إِلَى أَهْلِكَ وَاشْتَرِ بِالآخَرِ قَدُومًا فَأْتِنِي بِهِ " . فَأَتَاهُ بِهِ فَشَدَّ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عُودًا بِيَدِهِ ثُمَّ قَالَ لَهُ " اذْهَبْ فَاحْتَطِبْ وَبِعْ وَلاَ أَرَيَنَّكَ خَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا " . فَذَهَبَ الرَّجُلُ يَحْتَطِبُ وَيَبِيعُ فَجَاءَ وَقَدْ أَصَابَ عَشَرَةَ دَرَاهِمَ فَاشْتَرَى بِبَعْضِهَا ثَوْبًا وَبِبَعْضِهَا طَعَامًا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " هَذَا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تَجِيءَ الْمَسْأَلَةُ نُكْتَةً فِي وَجْهِكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّ الْمَسْأَلَةَ لاَ تَصْلُحُ إِلاَّ لِثَلاَثَةٍ لِذِي فَقْرٍ مُدْقِعٍ أَوْ لِذِي غُرْمٍ مُفْظِعٍ أَوْ لِذِي دَمٍ مُوجِعٍ " .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান