কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

كتاب السنن للإمام أبي داود

২. নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন...

হাদীস নং:৯৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৯৩০
১৭৭. নামাযরত অবস্থায় হাঁচির জওয়াব দেওয়া।
৯৩০. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) ......... মুআবিয়া ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে নামায আদায় করি। এ সময় এক ব্যক্তি হাঁচি দিলে আমি “ইয়ারহামুকাল্লাহ” (আল্লাহ তোমার উপর রহম করুন) বলি। তখন অন্যান্য লোকেরা আমার প্রতি বক্র দৃষ্টিতে তাকায়। তখন আমি অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে তাদের বলি, তোমরা আমার প্রতি এরূপ বক্র দৃষ্টিতে তাকাচ্ছ কেন? তখন তারা আমার রানের উপর হাত মারছিল, ফলে আমি বুঝতে পারি যে, তারা আমাকে চুপ করতে বলেছে।

রাবী উসমান (রাহঃ) বলেন, আমি যখন বুঝতে পারলাম যে, তারা আমাকে চুপ থাকে বলেছে, তখন আমি নিজেই চুপ করে থাকলাম। নামায সমাপ্তির পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে মারেন নাই আমাকে ধমক বা গালিও দেন নাই। অতঃপর তিনি বলেন, মনে রাখবে এটা নামায, এর মধ্যে কথাবার্তা বলা অনুচিত। বরং নামাযের মধ্যে কেবল তাসবীহ, তাকবীর, কুরআনের আয়াত পাঠ করা যেতে পারে। অথবা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অনুরূপ কিছু বলেছেন।

তখন আমি বলি, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অন্ধকার যুগের অতি নিকটের লোক, আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহ করে আমাদের দ্বীন ইসলামের গ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে এখনও অনেক লোক এরূপ আছে যারা গণকের নিকট গমন করে থাকে। জবাবে তিনি বলেন, এটা এমন একটা ধারণা যা তাদের অন্তরে সৃষ্টি হয়ে থাকে, তা যেন তাদেরকে কোন কাজ থেকে বিরত না রাখে। তখন আমি বলি আমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, যারা রেখা টেনে ভাগ্য-বিধি নির্ধারণ করে থাকে। জবাবে তিনি বলেন, পূর্ববর্তী কোন কোন নবীও এর সাহায্য নিয়েছেন, কাজেই যার রেখা তার ভাগ্যের অনুকূল হবে, তা তার জন্য যথেষ্ট। তখন আমি বলি, আমার একটি দাসী আছে যে ওহুদ ও জাওনিয়াহ নামক স্থানে বকরী চরায়।

একদা আমি সেখানে গিয়ে দেখি নেকড়ে একটি বকরী নিয়ে গেছে এবং আমি আদম সন্তান হিসাবে এজন্য দুঃখিত ও রাগান্বিত হয়ে তাকে চপেটাঘাত করি। তা শুনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এটাকে ঘোরতর অপরাধ হিসাবে গণ্য করেন। তখন আমি বলি, আমি কি তাকে আযাদ করে দিব? তখন নবী করীম (ﷺ) সেই দাসীকে তাঁর নিকট আনার নির্দেশ দেন। তখন আমি তাকে তাঁর খিদমতে উপস্থিত করলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেন; আল্লাহ তাআলা কোথায় অবস্থান করেন? জবাবে সে বলে, আসমানে। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করেন, আমি কে? জবাবে দাসী বলে, আপনি আল্লাহর রাসূল। তখন তিনি বলেন, তাকে আযাদ করে দাও, কেননা সে একজন ঈমানদার স্ত্রীলোক।
باب تَشْمِيتِ الْعَاطِسِ فِي الصَّلاَةِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، ح وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، - الْمَعْنَى - عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ الْحَكَمِ السُّلَمِيِّ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقُلْتُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ فَرَمَانِي الْقَوْمُ بِأَبْصَارِهِمْ فَقُلْتُ وَاثُكْلَ أُمِّيَاهُ مَا شَأْنُكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَىَّ فَجَعَلُوا يَضْرِبُونَ بِأَيْدِيهِمْ عَلَى أَفْخَاذِهِمْ فَعَرَفْتُ أَنَّهُمْ يُصَمِّتُونِي - فَقَالَ عُثْمَانُ - فَلَمَّا رَأَيْتُهُمْ يُسَكِّتُونِي لَكِنِّي سَكَتُّ قَالَ فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - بِأَبِي وَأُمِّي - مَا ضَرَبَنِي وَلاَ كَهَرَنِي وَلاَ سَبَّنِي ثُمَّ قَالَ " إِنَّ هَذِهِ الصَّلاَةَ لاَ يَحِلُّ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ كَلاَمِ النَّاسِ هَذَا إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ " . أَوْ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا قَوْمٌ حَدِيثُ عَهْدٍ بِجَاهِلِيَّةٍ وَقَدْ جَاءَنَا اللَّهُ بِالإِسْلاَمِ وَمِنَّا رِجَالٌ يَأْتُونَ الْكُهَّانَ . قَالَ " فَلاَ تَأْتِهِمْ " . قَالَ قُلْتُ وَمِنَّا رِجَالٌ يَتَطَيَّرُونَ . قَالَ " ذَاكَ شَىْءٌ يَجِدُونَهُ فِي صُدُورِهِمْ فَلاَ يَصُدُّهُمْ " . قُلْتُ وَمِنَّا رِجَالٌ يَخُطُّونَ . قَالَ " كَانَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ يَخُطُّ فَمَنْ وَافَقَ خَطَّهُ فَذَاكَ " . قَالَ قُلْتُ جَارِيَةٌ لِي كَانَتْ تَرْعَى غُنَيْمَاتٍ قِبَلَ أُحُدٍ وَالْجَوَّانِيَّةِ إِذِ اطَّلَعْتُ عَلَيْهَا إِطْلاَعَةً فَإِذَا الذِّئْبُ قَدْ ذَهَبَ بِشَاةٍ مِنْهَا وَأَنَا مِنْ بَنِي آدَمَ آسَفُ كَمَا يَأْسَفُونَ لَكِنِّي صَكَكْتُهَا صَكَّةً فَعَظَّمَ ذَاكَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ أَفَلاَ أُعْتِقُهَا قَالَ " ائْتِنِي بِهَا " . قَالَ فَجِئْتُهُ بِهَا فَقَالَ " أَيْنَ اللَّهُ " . قَالَتْ فِي السَّمَاءِ . قَالَ " مَنْ أَنَا " . قَالَتْ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ . قَالَ " أَعْتِقْهَا فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ " .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান

explanationহাদীসের ব্যাখ্যা
হাদীস নং:৯৩১
আন্তর্জাতিক নং: ৯৩১
১৭৭. নামাযরত অবস্থায় হাঁচির জওয়াব দেওয়া।
৯৩১. মুহাম্মাদ ইবনে ইউনুস (রাহঃ) .... মুআবিয়া ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খিদমতে আগমনের পর আমাকে শরীয়তের হুকুম আহকাম সম্পর্কে শিক্ষাদান করা হয়। এ সময় আমায় এরূপ শিক্ষা দেয়া হয় যে, যখন তুমি হাঁচি দিবে তখন “আলহামদু লিল্লাহ” বলবে এবং যখন অন্য কাউকে হাঁচি দেয়ার পর “আলহামদু লিল্লাহ” বলতে শুনবে, তখন তুমি “ইয়ারহামুকাল্লা” বলবে। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে নামায আদায় করা কালে এক ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে “আলহামদুলিল্লাহ” বললে আমি তার জবাবে উচ্চস্বরে “ইয়ারহামুকাল্লা” বলি। তখন উপস্থিত জনগণ আমার প্রতি বক্র দৃষ্টিতে তাকাতে থাকে, যা আমার জন্য খুবই কষ্টদায়ক ছিল। তখন আমি তাদের সম্বোধন করে বলি: তোমরা প্রতি এরূপ দৃষ্টিতে কেন তাকাচ্ছ?

রাবী বলেন, অতঃপর লোকেরা তাসবীহ ও সুবহানাল্লাহ বলেন। অতঃপর নামায সমাপান্তে নবী করীম (ﷺ) বলেন, নামাযের সময় কে কথা বলেছ? জবাবে তাঁকে জানানো হয় যে, এই বেদুঈন লোকটি কথা বলেছে। রাবী বলেন, তখন নবী করীম (ﷺ) আমাকে কাছে ডেকে বলেনঃ মনে রেখ, নামাযের মধ্যে কেবল মাত্র কুরআন পাঠ ও আল্লাহর যিক্‌রই হয়ে থাকে। কাজেই যখন তুমি নামায আদায় করবে, তখন তোমার এরূপ অবস্থা হওয়া দরকার। রাবী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হতে অধিক দয়ালু ও বিনয়ী কোন শিক্ষক কখনও দেখি নাই।
باب تَشْمِيتِ الْعَاطِسِ فِي الصَّلاَةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُونُسَ النَّسَائِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ الْحَكَمِ السُّلَمِيِّ، قَالَ لَمَّا قَدِمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عُلِّمْتُ أُمُورًا مِنْ أُمُورِ الإِسْلاَمِ فَكَانَ فِيمَا عُلِّمْتُ أَنْ قَالَ لِي " إِذَا عَطَسْتَ فَاحْمَدِ اللَّهَ وَإِذَا عَطَسَ الْعَاطِسُ فَحَمِدَ اللَّهَ فَقُلْ يَرْحَمُكَ اللَّهُ " . قَالَ فَبَيْنَمَا أَنَا قَائِمٌ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلاَةِ إِذْ عَطَسَ رَجُلٌ فَحَمِدَ اللَّهَ فَقُلْتُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ رَافِعًا بِهَا صَوْتِي فَرَمَانِي النَّاسُ بِأَبْصَارِهِمْ حَتَّى احْتَمَلَنِي ذَلِكَ فَقُلْتُ مَا لَكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَىَّ بِأَعْيُنٍ شُزْرٍ قَالَ فَسَبَّحُوا فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةَ قَالَ " مَنِ الْمُتَكَلِّمُ " . قِيلَ هَذَا الأَعْرَابِيُّ فَدَعَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي " إِنَّمَا الصَّلاَةُ لِقِرَاءَةِ الْقُرْآنِ وَذِكْرِ اللَّهِ جَلَّ وَعَزَّ فَإِذَا كُنْتَ فِيهَا فَلْيَكُنْ ذَلِكَ شَأْنَكَ " . فَمَا رَأَيْتُ مُعَلِّمًا قَطُّ أَرْفَقَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান