আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

المسند الصحيح لمسلم

৫- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১০ টি

হাদীস নং: ১৪৩৩
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮০-১
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৩। হারামালা ইবনে ইয়াহয়া তুজীবী (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খায়বর যুদ্ধ থেকে ফেরার সময় রাত্রে সফর করলেন। অবশেষে যখন তাঁর তন্দ্রা পেল, তখন তিনি শেষ রাত্রে (এক স্থানে) মনযিল করলেন এবং বিলাল (রাযিঃ) কে নির্দেশ দিলেন, তুমি আমাদের জন্য এ রাতের প্রতি লক্ষ্য রাখ। তারপর বিলাল (রাযিঃ) নামায আদায় করেন যা তার সামার্থ ছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও সাহাবায়ে কিরাম ঘুমিয়ে পড়েন। ফজরের সময় ঘনিয়ে এলে বিলাল (রাযিঃ) পূর্ব দিকে মুখ করে তাঁর বাহনের উপর হেলান দিয়ে বসে পড়লেন। বিলালের চোখ নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। তখন তিনি তার সওয়ারীতে হেলান দেয়া অবস্থায়ই ছিলেন। ফলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বিলাল (রাযিঃ) বা সাহাবীদের কেউই জাগলেন না, যতক্ষণ না সূর্যের কিরণ তাঁদের উপর পতিত হল।

তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সর্বপ্রথম জাগলেন, এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পেরেশান হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন হে বিলাল! বিলাল বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান। আপনার আত্মা যিনি ধরে রেখেছেন, আমার তিনিধরে রেখেছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, সওয়ারীগুলোকে এখান থেকে নিয়ে চল। তারপর কিছুদূর নেয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উযু করলেন এবং বিলাল (রাযিঃ)-কে আদেশ দিলেন। তিনি নামাযের ইকামত দিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদের নিয়ে ফজরের নামায আদায় করে বললেন, তোমাদের কেউ যদি নামায ভুলে যায়, তবে স্মরণমাত্র যেন আদায় করে নেয়। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي ″আমার স্মরণে নামায কায়েম কর″। ইউনুস (রাহঃ) বলেন, এর স্থলে ইবনে শিহাব لِلذِّكْرَى পাঠ করতেন।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَفَلَ مِنْ غَزْوَةِ خَيْبَرَ سَارَ لَيْلَهُ حَتَّى إِذَا أَدْرَكَهُ الْكَرَى عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلاَلٍ " اكْلأْ لَنَا اللَّيْلَ " . فَصَلَّى بِلاَلٌ مَا قُدِّرَ لَهُ وَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ فَلَمَّا تَقَارَبَ الْفَجْرُ اسْتَنَدَ بِلاَلٌ إِلَى رَاحِلَتِهِ مُوَاجِهَ الْفَجْرِ فَغَلَبَتْ بِلاَلاً عَيْنَاهُ وَهُوَ مُسْتَنِدٌ إِلَى رَاحِلَتِهِ فَلَمْ يَسْتَيْقِظْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ بِلاَلٌ وَلاَ أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِ حَتَّى ضَرَبَتْهُمُ الشَّمْسُ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَوَّلَهُمُ اسْتِيقَاظًا فَفَزِعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " أَىْ بِلاَلُ " . فَقَالَ بِلاَلٌ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ - بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ - بِنَفْسِكَ قَالَ " اقْتَادُوا " . فَاقْتَادُوا رَوَاحِلَهُمْ شَيْئًا ثُمَّ تَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَ بِلاَلاً فَأَقَامَ الصَّلاَةَ فَصَلَّى بِهِمُ الصُّبْحَ فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ قَالَ " مَنْ نَسِيَ الصَّلاَةَ فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ قَالَ ( أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي) " . قَالَ يُونُسُ وَكَانَ ابْنُ شِهَابٍ يَقْرَؤُهَا لِلذِّكْرَى .
হাদীস নং: ১৪৩৪
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮০-২
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৪। মুহাম্মাদ ইবনে হাতিম (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে আমরা একবার শেষ রাত্রে ঘুমিয়ে পড়লাম। সূর্যোদয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা জাগতে পারলাম না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা সকলেই নিজ সওয়ারীর মাথায় ধরে নিয়ে চল। কেননা এই মনযিলে আমাদের কাছে শয়তান এসে পড়েছে। বর্ণনাকারী বলেন,-আমরা তা-ই করলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পানি আনিয়ে উযু করলেন এবং দুটি সিজদা করলেন; আর ইয়াকুব বলেন, দু’রাকআত নামায আদায় করলেন। এরপর নামাযের ইকামত দেয়া হলো এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফজরের নামায আদায় করলেন।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَيَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ يَحْيَى، - قَالَ ابْنُ حَاتِمٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، - حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ عَرَّسْنَا مَعَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ نَسْتَيْقِظْ حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لِيَأْخُذْ كُلُّ رَجُلٍ بِرَأْسِ رَاحِلَتِهِ فَإِنَّ هَذَا مَنْزِلٌ حَضَرَنَا فِيهِ الشَّيْطَانُ " . قَالَ فَفَعَلْنَا ثُمَّ دَعَا بِالْمَاءِ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ - وَقَالَ يَعْقُوبُ ثُمَّ صَلَّى سَجْدَتَيْنِ - ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَصَلَّى الْغَدَاةَ .
হাদীস নং: ১৪৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮১
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৫। শায়বান ইবনে ফাররুখ (রাহঃ) ......... আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক ভাষণে আমাদেরকে বললেন, তোমরা চলতে থাক অপরাহ্নে ও রাত্রিতে, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল সকালে পানির নিকট পৌছে যাবে। তারপর লোকেরা এমন ভাবে পথ চলতে লাগল যে, কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছিল না। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-ও এভাবে চলছিলেন। এমনকি অর্ধরাত হয়ে গেল, আমি তাঁর পাশে ছিলাম। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর তন্দ্রা পেল। তিনি সওয়ারীর উপর থেকে চলতে লাগলেন। আমি তাঁর কাছে এসে তাকে না জাগিয়ে তাঁকে ঠেস দিলাম। ফলে তিনি সওয়ারীর উপর সোজা হয়ে গেলেন।

তিনি বলেন, তারপর চলতে থাকলেন। অবশেষে রাতের বেশী অংশ গত হলে তিনি সওয়ারীর উপর আবার একদিকে ঢুলতে লাগলেন। আমি তাঁকে না জাগিয়ে আবার ঠেস দিলাম। ফলে তিনি সওয়ারীর উপর সোজা হয়ে গেলেন। তারপর আবার চলতে লাগলেন। যখন সাহরীর শেষ সময় এলো তখন তিনি পূর্বের দুই বারের চাইতে এত অধিক ঢুলে পড়লেন যে, প্রায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। আমি তাঁর কাছে গিয়ে তাকে আবার ঠেস দিলাম। তিনি মাথা তুলে জিজ্ঞাসা করলেন, এই কে? আমি বললাম, আবু কাতাদা। তিনি বললেন, তুমি কখন থেকে এভাবে আমার সাথে চলেছ? আমি বললাম, সারা রাত ধরে। তিনি বলেছেন, আল্লাহ তোমাকে হিফাযত করুন, যেহেতু তুমি আল্লাহর নবীকে হিফাযত করেছ।

তারপর বললেন, তুমি কি বুঝতে পাচ্ছ? আমরা কি লোকদের থেকে আড়ালে পড়ে গেছি? আবার বললেন, কাউকে কি দেখতে পাচ্ছ? আমি বললাম, এই একজন সওয়ার। আবার বললাম, এই আর একজন সওয়ার। এইরূপ আমরা সাতজন সওয়ারী একত্রিত হলাম। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রাস্তা থেকে একটু সরে গেলেন এবং (আরাম করার জন্য) মাথা রাখলেন তারপর বললেন, তোমরা আমাদের নামাযের সময়ের লক্ষ্য রাখবে। যারা জাগলেন তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন। রোদ তার পিঠ স্পর্শ করছিল।

আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, আমরা সন্ত্রস্ত অবস্থায় উঠলম। তারপর তিনি বললেন, তোমরা আরোহণ কর। আমরা আরোহন করলাম এবং চলতে লাগলাম। এমন কি সূর্য যখন উপরে উঠল, তখন তিনি অবতরণ করলেন এবং উযুর পানির পাত্র চাইলেন। তা আমার কাছে ছিল এবং তাতে অল্প পানি ছিল। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন , রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সেই পানি থেকে ভালভাবে উযু করলেন। তিনি বলেন, তাতে কিছু পানি অবশিষ্ট রইল। তারপর আবু কাতাদা (রাযিঃ) কে বললেন, তুমি আমাদের জন্য তোমার এ উযুর পাত্রটি হিফাযতে রাখ। শীঘ্রই তা থেকে বিরাট ঘটনা প্রকাশ পেতে পারে। তারপর বিলাল (রাযিঃ) নামাযের আযান দিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দু’রাকআত নামায আদায় করলেন। অতঃপর ফজরের দু'রাক’আত (ফরয) আদায় করলেন। অন্যান্য দিনে যেমন ভাবে আদায় করেন, আজকেও সেভাবেই আদায় করলেন।

আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও আমরা সওয়ার হয়ে চললাম। তিনি বলেন, আমরা একে অপরকে চুপে চুপে বলতে লাগলাম, আমরা নামাযের ব্যাপারে যে ক্রটি করেছি, তার কাফফারা কি হবে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার মধ্যে কি তোমাদের জন্য আদর্শ নেই? তারপর বললেন, ঘুমের ভিতর কোন শৈথিল্য দোষ নেই। শৈথিল্য দোষ তার, যে নামায আদায় করে না, এমন কি অন্য নামাযের সময় এসে পড়ে। কারো যদি এরূপ হয়, তবে তার উচিত সজাগ হওয়া মাত্র তা আদায় করে নেয়া। তারপর যখন দ্বিতীয়দিন আসবে, তখন যেন ঠিক সময় মত সেই নামায আদায় করে।

তারপর বললেন লোকেরা কি করছে বলে তোমরা মনে কর? অতঃপর নিজেই বললেন, ″ভোর হলে লোকেরা তাদের নবীকে দেখতে পেল না। আবু বকর ও উমর বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পিছনেই রয়েছেন। তিনি তোমাদের পেছনে ফেলে যেতে পারেন না। আর লোকেরা বলল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিশ্চয়ই তোমাদের সামনে রয়েছেন। তারা আবু বকর (রাযিঃ) ও উমর (রাযিঃ) এর কথা মেনে নিলেই ঠিক করত″।

আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, আমরা দুপূরের দিকে তাদের কাছে পৌছলাম। তখন সকল কিছু উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে লোকেরা বলতে লাগল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পিপাসায় আমরা মরে গেলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা ধ্বংস হবে না। তারপর বললেন, আমার পেয়ালাটি আন। তিনি বলেন, তারপর সেই উযুর পানির পাত্রটি তলব করলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা থেকে পানি ঢাললেন। আর আবু কাতাদা (রাযিঃ) লোকদের পান করাতে লাগলেন। লোকেরা পাত্রের পানি দেখে এতই ভিড় করল যে, সকলেই তাঁর উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল।

তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা তোমাদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখ। তোমরা সকলেই তৃপ্তি লাভ করবে। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তারা তাই করল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পানি ঢালতে লাগলেন। আর আমি তাদের পান করাতে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত আমি ছাড়া আর কেউ বাদ রইল না। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পানি ঢেলে আমাকে বললেন, তুমি পান কর। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি পান করার আগে আমি পান করব না। তিনি বললেন, যে লোকদের পানি পান করায় সে সকলের শেষেই পান করে। তিনি বলেন, আমি পানি পান করলাম এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পান করলেন। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, লোকেরা পানি পান করল আনন্দ ও তৃপ্তি সহকারে।

রাবী বলেন, [আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনাকারী রাবী] আব্দুল্লাহ ইবনে রাবাহ বর্ণনা করেন, আমি জামে মসজিদে এই হাদীসটি বর্ণনা করছিলাম। এমন সময় ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) বললেন, হে যুবক! তুমি ভেবে দেখ, তুমি কী বলছ। কেননা আমি সে রাতে একজন আরোহী ছিলাম। আমি বললাম, নিশ্চয়ই আপনি হাদীসটি অধিক জানেন। তিনি বললেন, তুমি কোন গোত্রের লোক? আমি বললাম, আনসার। তিনি বললেন, তবে তুমি বর্ণনা কর। কারণ তুমি এ সম্পর্কে অবশ্য ভালই জান। তারপর আমি পূর্ণ হাদীসটি লোকদের কাছে বর্ণনা করলাম। ইমরান (রাযিঃ) বললেন, আমি সেই রাত্রে উপস্থিত ছিলাম; কিন্তু তুমি যেভাবে মনে রেখেছ অন্য কেউ এভাবে মনে রেখেছে বলে আমার জানা নেই।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، - يَعْنِي ابْنَ الْمُغِيرَةِ - حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " إِنَّكُمْ تَسِيرُونَ عَشِيَّتَكُمْ وَلَيْلَتَكُمْ وَتَأْتُونَ الْمَاءَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ غَدًا " . فَانْطَلَقَ النَّاسُ لاَ يَلْوِي أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ - قَالَ أَبُو قَتَادَةَ - فَبَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسِيرُ حَتَّى ابْهَارَّ اللَّيْلُ وَأَنَا إِلَى جَنْبِهِ - قَالَ - فَنَعَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَالَ عَنْ رَاحِلَتِهِ فَأَتَيْتُهُ فَدَعَمْتُهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ أُوقِظَهُ حَتَّى اعْتَدَلَ عَلَى رَاحِلَتِهِ - قَالَ - ثُمَّ سَارَ حَتَّى تَهَوَّرَ اللَّيْلُ مَالَ عَنْ رَاحِلَتِهِ - قَالَ - فَدَعَمْتُهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ أُوقِظَهُ حَتَّى اعْتَدَلَ عَلَى رَاحِلَتِهِ - قَالَ - ثُمَّ سَارَ حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ السَّحَرِ مَالَ مَيْلَةً هِيَ أَشَدُّ مِنَ الْمَيْلَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ حَتَّى كَادَ يَنْجَفِلُ فَأَتَيْتُهُ فَدَعَمْتُهُ فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ " مَنْ هَذَا " . قُلْتُ أَبُو قَتَادَةَ . قَالَ " مَتَى كَانَ هَذَا مَسِيرَكَ مِنِّي " . قُلْتُ مَا زَالَ هَذَا مَسِيرِي مُنْذُ اللَّيْلَةِ . قَالَ " حَفِظَكَ اللَّهُ بِمَا حَفِظْتَ بِهِ نَبِيَّهُ " . ثُمَّ قَالَ " هَلْ تَرَانَا نَخْفَى عَلَى النَّاسِ " . ثُمَّ قَالَ " هَلْ تَرَى مِنْ أَحَدٍ " . قُلْتُ هَذَا رَاكِبٌ . ثُمَّ قُلْتُ هَذَا رَاكِبٌ آخَرُ . حَتَّى اجْتَمَعْنَا فَكُنَّا سَبْعَةَ رَكْبٍ - قَالَ - فَمَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الطَّرِيقِ فَوَضَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ قَالَ " احْفَظُوا عَلَيْنَا صَلاَتَنَا " . فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالشَّمْسُ فِي ظَهْرِهِ - قَالَ - فَقُمْنَا فَزِعِينَ ثُمَّ قَالَ " ارْكَبُوا " . فَرَكِبْنَا فَسِرْنَا حَتَّى إِذَا ارْتَفَعَتِ الشَّمْسُ نَزَلَ ثُمَّ دَعَا بِمِيضَأَةٍ كَانَتْ مَعِي فِيهَا شَىْءٌ مِنْ مَاءٍ - قَالَ - فَتَوَضَّأَ مِنْهَا وُضُوءًا دُونَ وُضُوءٍ - قَالَ - وَبَقِيَ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ مَاءٍ ثُمَّ قَالَ لأَبِي قَتَادَةَ " احْفَظْ عَلَيْنَا مِيضَأَتَكَ فَسَيَكُونُ لَهَا نَبَأٌ " . ثُمَّ أَذَّنَ بِلاَلٌ بِالصَّلاَةِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى الْغَدَاةَ فَصَنَعَ كَمَا كَانَ يَصْنَعُ كُلَّ يَوْمٍ - قَالَ - وَرَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَكِبْنَا مَعَهُ - قَالَ - فَجَعَلَ بَعْضُنَا يَهْمِسُ إِلَى بَعْضٍ مَا كَفَّارَةُ مَا صَنَعْنَا بِتَفْرِيطِنَا فِي صَلاَتِنَا ثُمَّ قَالَ " أَمَا لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ " . ثُمَّ قَالَ " أَمَا إِنَّهُ لَيْسَ فِي النَّوْمِ تَفْرِيطٌ إِنَّمَا التَّفْرِيطُ عَلَى مَنْ لَمْ يُصَلِّ الصَّلاَةَ حَتَّى يَجِيءَ وَقْتُ الصَّلاَةِ الأُخْرَى فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَلْيُصَلِّهَا حِينَ يَنْتَبِهُ لَهَا فَإِذَا كَانَ الْغَدُ فَلْيُصَلِّهَا عِنْدَ وَقْتِهَا " . ثُمَّ قَالَ " مَا تَرَوْنَ النَّاسَ صَنَعُوا " . قَالَ ثُمَّ قَالَ " أَصْبَحَ النَّاسُ فَقَدُوا نَبِيَّهُمْ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَكُمْ لَمْ يَكُنْ لِيُخَلِّفَكُمْ . وَقَالَ النَّاسُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَيْدِيكُمْ فَإِنْ يُطِيعُوا أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَرْشُدُوا " . قَالَ فَانْتَهَيْنَا إِلَى النَّاسِ حِينَ امْتَدَّ النَّهَارُ وَحَمِيَ كُلُّ شَىْءٍ وَهُمْ يَقُولُونَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْنَا عَطِشْنَا . فَقَالَ " لاَ هُلْكَ عَلَيْكُمْ " . ثُمَّ قَالَ " أَطْلِقُوا لِي غُمَرِي " . قَالَ وَدَعَا بِالْمِيضَأَةِ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُبُّ وَأَبُو قَتَادَةَ يَسْقِيهِمْ فَلَمْ يَعْدُ أَنْ رَأَى النَّاسُ مَاءً فِي الْمِيضَأَةِ تَكَابُّوا عَلَيْهَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَحْسِنُوا الْمَلأَ كُلُّكُمْ سَيَرْوَى " . قَالَ فَفَعَلُوا فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُبُّ وَأَسْقِيهِمْ حَتَّى مَا بَقِيَ غَيْرِي وَغَيْرُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - قَالَ - ثُمَّ صَبَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي " اشْرَبْ " . فَقُلْتُ لاَ أَشْرَبُ حَتَّى تَشْرَبَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " إِنَّ سَاقِيَ الْقَوْمِ آخِرُهُمْ شُرْبًا " . قَالَ فَشَرِبْتُ وَشَرِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - قَالَ - فَأَتَى النَّاسُ الْمَاءَ جَامِّينَ رِوَاءً . قَالَ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَبَاحٍ إِنِّي لأُحَدِّثُ هَذَا الْحَدِيثَ فِي مَسْجِدِ الْجَامِعِ إِذْ قَالَ عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ انْظُرْ أَيُّهَا الْفَتَى كَيْفَ تُحَدِّثُ فَإِنِّي أَحَدُ الرَّكْبِ تِلْكَ اللَّيْلَةَ . قَالَ قُلْتُ فَأَنْتَ أَعْلَمُ بِالْحَدِيثِ . فَقَالَ مِمَّنْ أَنْتَ قُلْتُ مِنَ الأَنْصَارِ . قَالَ حَدِّثْ فَأَنْتُمْ أَعْلَمُ بِحَدِيثِكُمْ . قَالَ فَحَدَّثْتُ الْقَوْمَ فَقَالَ عِمْرَانُ لَقَدْ شَهِدْتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَمَا شَعَرْتُ أَنَّ أَحَدًا حَفِظَهُ كَمَا حَفِظْتُهُ .
হাদীস নং: ১৪৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮২-১
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৬। আহমাদ ইবনে সাঈদ ইবনে সাখর আদ-দারিমী (রাহঃ) ......... ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কেন এক সফরে আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা রাতে পথ চলতে ছিলাম। যখন প্রভাতের কাছাকাছি সময় হল তখন আমরা মনযিল করলাম। আমাদের চোখ বুজে গেল এমন কি সূর্য উঠে গেল। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে আবু বকর (রাযিঃ) সর্বপ্রথম জেগে উঠলেন। আমাদের অভ্যাস ছিল যে, যখন নবী (ﷺ) ঘুমাতেন তখন তার ঘুম থেকে তাঁকে জাগাতাম না, যতক্ষণ না নিজে জেগে উঠতেন। এরপর উমর (রাযিঃ) জেগে উঠলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে তাকবীর দিতে লাগলেন। ফলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জেগে উঠলেন। মাথা তুলে দেখতে পেলেন যে, সূর্য উদিত হয়েছে।

তিনি বললেন, তোমরা চল। তখন তিনি আমাদের নিয়ে চললেন। যখন সুর্যের আলো পরিষ্কার হয়ে গেল তখন তিনি অবতরণ করলেন এবং আমাদের নিয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন। লোকদের মধ্য থেকে একজন আলাদা রইল। সে আমাদের সঙ্গে নামায আদায় করল না। নামায শেষ করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন হে অমুক! কিসে তোমাকে আমার সাথে নামায আদায় থেকে বিরত রাখল? সে বলল, ইয়া নবী আল্লাহ, আমি জুনুবী হয়ে গেছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে মাটি দ্বারা তায়াম্মুমের আদেশ করলেন। সে মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নামায আদায় করল।

এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কয়েকজন আরোহীসহ আমাকে পানির তালাশে আগে পাঠিয়ে দিলেন। আমরা ভীষণ পিপাসার্ত হয়েছিলাম। আমরা যখন পথ চলছিলাম, তখন আমরা এক মহিলাকে দেখতে পেলাম। সে উটের পিঠে দুটি পানির মশকের মধ্যে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, পানি কোথায় আছে? সে বলল, অনেক অনেক দূরে, তোমরা পানি পাবে না। আমরা বললাম, তোমার বাড়ী থেকে পানির স্থানের দুরত্ব কতটুকু? সে বলল, একদিন ও একরাতের পথ। আমরা বললাম, তুমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে চলো। সে বলল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে? আমরা তার সঙ্গে আর কথা না বাড়িয়ে তাকে সঙ্গে নিয়ে চললাম এবং তাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সামনে নিয়ে গেলাম। তিনিও তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। সে তাঁর কাছে সেরূপই বলল, যেমন আমাদের কাছে বলেছিল। সে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে এও জানাল যে, সে একজন বিধবা, তার কয়েকজন ইয়াতীম বাচ্চা রয়েছে।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার পানি বাহক উটটি সম্পর্কে নির্দেশ দিলে সেটি বসানো হল। তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মশক দুটির উপরের মুখ দুটিতে কুল্লির পানি ঢেলে দিলেন। তারপর আমরা ৪০ জন পিপাসার্ত ব্যক্তি তৃপ্তি করে পানি পান করলাম এবং আমাদের সঙ্গে যে মশক ও পাত্র ছিল, তা ভরে নিলাম। আমাদের সে সঙ্গীটিকেও গোসলের পানি দিলাম। সেও ভালভাবে গোসল করল তবে আমাদের উটগুলোকে পানি পান করাইনি। এদিকে মশক দুটি পানিতে ফেটে পড়ার উপক্রম হচ্ছিল।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে বললেন, তোমাদের সঙ্গে যার যা আছে নিয়ে এসো। আমারা তাঁর জন্য রুটি টুকরা ও খেজুর একত্রিত করলাম। আর তাঁর জন্য এগুলো একটি পোটলায় বেঁধে দেওয়া হল। মহিলাকে বললেন, তুমি যাও আর এগুলি তোমার পরিবারকে এবং তোমার ইয়াতীমদের খাওয়াও। আর জেনে রাখ, আমরা তোমার পানি কমাইনি। তারপর সে যখন তার পরিবারের কাছে এল তখন বলল, আমি আজ মানুষের মধ্যে সবচাইতে বড় যাদুকরের সাক্ষাত পেয়েছিলাম, অথবা, তার ধারণা অনুযায়ী, তিনি নবী। তার ব্যাপার ছিল এইরূপ, এইরূপ। ফলে আল্লাহ তাআলা সেই মহিলার বদৌলতে তার গোত্রটিকে হিদায়াত করলেন। মহিলাটিও ইসলাম গ্রহণ করল এবং তারাও ইসলাম গ্রহণ করল।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ صَخْرٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ، حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ زَرِيرٍ الْعُطَارِدِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيَّ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَسِيرٍ لَهُ فَأَدْلَجْنَا لَيْلَتَنَا حَتَّى إِذَا كَانَ فِي وَجْهِ الصُّبْحِ عَرَّسْنَا فَغَلَبَتْنَا أَعْيُنُنَا حَتَّى بَزَغَتِ الشَّمْسُ - قَالَ - فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ مِنَّا أَبُو بَكْرٍ وَكُنَّا لاَ نُوقِظُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَنَامِهِ إِذَا نَامَ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ عُمَرُ فَقَامَ عِنْدَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ صَوْتَهُ بِالتَّكْبِيرِ حَتَّى اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا رَفَعَ رَأْسَهُ وَرَأَى الشَّمْسَ قَدْ بَزَغَتْ قَالَ " ارْتَحِلُوا " . فَسَارَ بِنَا حَتَّى إِذَا ابْيَضَّتِ الشَّمْسُ نَزَلَ فَصَلَّى بِنَا الْغَدَاةَ فَاعْتَزَلَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّ مَعَنَا فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَا فُلاَنُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا " . قَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَصَابَتْنِي جَنَابَةٌ . فَأَمَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَيَمَّمَ بِالصَّعِيدِ فَصَلَّى ثُمَّ عَجَّلَنِي فِي رَكْبٍ بَيْنَ يَدَيْهِ نَطْلُبُ الْمَاءَ وَقَدْ عَطِشْنَا عَطَشًا شَدِيدًا . فَبَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ إِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ سَادِلَةٍ رِجْلَيْهَا بَيْنَ مَزَادَتَيْنِ فَقُلْنَا لَهَا أَيْنَ الْمَاءُ قَالَتْ أَيْهَاهْ أَيْهَاهْ لاَ مَاءَ لَكُمْ . قُلْنَا فَكَمْ بَيْنَ أَهْلِكِ وَبَيْنَ الْمَاءِ . قَالَتْ مَسِيرَةُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ . قُلْنَا انْطَلِقِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَتْ وَمَا رَسُولُ اللَّهِ فَلَمْ نُمَلِّكْهَا مِنْ أَمْرِهَا شَيْئًا حَتَّى انْطَلَقْنَا بِهَا فَاسْتَقْبَلْنَا بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهَا فَأَخْبَرَتْهُ مِثْلَ الَّذِي أَخْبَرَتْنَا وَأَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا مُوتِمَةٌ لَهَا صِبْيَانٌ أَيْتَامٌ فَأَمَرَ بِرَاوِيَتِهَا فَأُنِيخَتْ فَمَجَّ فِي الْعَزْلاَوَيْنِ الْعُلْيَاوَيْنِ ثُمَّ بَعَثَ بِرَاوِيَتِهَا فَشَرِبْنَا وَنَحْنُ أَرْبَعُونَ رَجُلاً عِطَاشٌ حَتَّى رَوِينَا وَمَلأْنَا كُلَّ قِرْبَةٍ مَعَنَا وَإِدَاوَةٍ وَغَسَّلْنَا صَاحِبَنَا غَيْرَ أَنَّا لَمْ نَسْقِ بَعِيرًا وَهِيَ تَكَادُ تَنْضَرِجُ مِنَ الْمَاءِ - يَعْنِي الْمَزَادَتَيْنِ - ثُمَّ قَالَ " هَاتُوا مَا كَانَ عِنْدَكُمْ " . فَجَمَعْنَا لَهَا مِنْ كِسَرٍ وَتَمْرٍ وَصَرَّ لَهَا صُرَّةً فَقَالَ لَهَا " اذْهَبِي فَأَطْعِمِي هَذَا عِيَالَكِ وَاعْلَمِي أَنَّا لَمْ نَرْزَأْ مِنْ مَائِكِ " . فَلَمَّا أَتَتْ أَهْلَهَا قَالَتْ لَقَدْ لَقِيتُ أَسْحَرَ الْبَشَرِ أَوْ إِنَّهُ لَنَبِيٌّ كَمَا زَعَمَ كَانَ مِنْ أَمْرِهِ ذَيْتَ وَذَيْتَ . فَهَدَى اللَّهُ ذَاكَ الصِّرْمَ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ فَأَسْلَمَتْ وَأَسْلَمُوا .
হাদীস নং: ১৪৩৭
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮২-২
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৭। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম আল হানযালী (রাহঃ) ......... ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা এক সফরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা রাতে পথ চলছিলাম। রাত যখন শেষ হয়ে এলো এবং প্রভাত নিকটবর্তী হল, তখন আমরা শুয়ে পড়লাম। তখন সেই ঘটনা ঘটল, মুসাফিরের জন্য যার চেয়ে আনন্দের কোন ঘটনা হতে পারে না। তারপর সূর্য কিরণ ছাড়া আমাদের কেউ জাগাতে পারেনি। পরে কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সহ সালম ইবনে যারীরের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেনা

উক্ত হাদীসে এই বর্ণনাও রয়েছে যে, উমর (রাযিঃ) জেগে উঠে লোকদের অবস্থা দেখলেন। তিনি ছিলেন উচ্চকণ্ঠের অধিকারী এবং খুবই শক্তিশালী। তারপর তিনি উচ্চঃস্বরে তাকবীর দিতে লাগলেন। তাঁর শব্দের উচ্চঃস্বরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জেগে উঠলেন। তাঁর জাগার পর লোকেরা তাদের অবস্থা সম্পর্কে নানা অভিযোগ করতে লাগল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, কোন ক্ষতি নেই, এই স্থান ত্যাগ কর। পরবর্তী অংশ উক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، حَدَّثَنَا عَوْفُ بْنُ أَبِي جَمِيلَةَ الأَعْرَابِيُّ، عَنْ أَبِي رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيِّ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَسَرَيْنَا لَيْلَةً حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ قُبَيْلَ الصُّبْحِ وَقَعْنَا تِلْكَ الْوَقْعَةَ الَّتِي لاَ وَقْعَةَ عِنْدَ الْمُسَافِرِ أَحْلَى مِنْهَا فَمَا أَيْقَظَنَا إِلاَّ حَرُّ الشَّمْسِ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِ حَدِيثِ سَلْمِ بْنِ زَرِيرٍ وَزَادَ وَنَقَصَ . وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَرَأَى مَا أَصَابَ النَّاسَ وَكَانَ أَجْوَفَ جَلِيدًا فَكَبَّرَ وَرَفَعَ صَوْتَهُ بِالتَّكْبِيرِ حَتَّى اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِشِدَّةِ صَوْتِهِ بِالتَّكْبِيرِ فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَكَوْا إِلَيْهِ الَّذِي أَصَابَهُمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ ضَيْرَ ارْتَحِلُوا " . وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ .
হাদীস নং: ১৪৩৮
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮৩
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৮। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন কোন সফরে থাকতেন এবং তখন শেষরাতে নিদ্রা যেতেন, তখন ডান কাতে শুতেন। আর যখন ভোরের পূর্বক্ষণে নিদ্রা যেতেন তখন বাহু খাড়া করে হাতের উপর মাথা রাখতেন।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ فِي سَفَرٍ فَعَرَّسَ بِلَيْلٍ اضْطَجَعَ عَلَى يَمِينِهِ وَإِذَا عَرَّسَ قُبَيْلَ الصُّبْحِ نَصَبَ ذِرَاعَهُ وَوَضَعَ رَأْسَهُ عَلَى كَفِّهِ .
হাদীস নং: ১৪৩৯
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮৪-১
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৯। হাদ্দাব ইবনে খালিদ (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নামাযের কথা ভুলে যায়, স্মরণ হওয়া মাত্র সে তা আদায় করে নেবে। এর কোন কাফফারার প্রয়োজন নেই। বরং আদায় করাই কাফফারা। কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي “আমার স্মরণে নামায কায়েম কর।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
حَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ " . قَالَ قَتَادَةُ وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي .
হাদীস নং: ১৪৪০
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮৪-২
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৪০। ইয়াহয়া ইবনে ইয়াহয়া (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত উক্ত হাদীসটিতে ″এ ছাড়া তার কোন কাফফারার প্রয়োজন নাই″ অংশটি উল্লেখ করেন নাই।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنَاهُ يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَسَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، جَمِيعًا عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَذْكُرْ " لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ " .
হাদীস নং: ১৪৪১
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮৪-৩
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৪১। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি নামাযের কথা ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তবে এর কাফফারা হলো স্মরণ হওয়ামাত্র তা আদায় করে নেয়া।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ نَسِيَ صَلاَةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَكَفَّارَتُهَا أَنْ يُصَلِّيَهَا إِذَا ذَكَرَهَا " .
হাদীস নং: ১৪৪২
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮৪-৪
- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৪২। নসর ইবনে আলী জাহযামী (রাহঃ) ......... আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি ঘুমিয়ে পড়ে অথবা ভুলে যায় তাহলে তার স্মরণ হওয়া মাত্রই তা আদায় করে নিবে। কেননা আল্লাহ বলেছেন, ″আমার স্মরণে নামায আদায় কর″।
كتاب المساجد ومواضع الصلاة
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا الْمُثَنَّى، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي " .