আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৫- মসজিদ ও নামাযের স্থান সমূহের বর্ণনা

হাদীস নং: ১৪৩৫
আন্তর্জাতিক নং: ৬৮১
৫০. কাযা নামায আদায় এবং কাযার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব
১৪৩৫। শায়বান ইবনে ফাররুখ (রাহঃ) ......... আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক ভাষণে আমাদেরকে বললেন, তোমরা চলতে থাক অপরাহ্নে ও রাত্রিতে, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল সকালে পানির নিকট পৌছে যাবে। তারপর লোকেরা এমন ভাবে পথ চলতে লাগল যে, কেউ কারো দিকে তাকাচ্ছিল না। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-ও এভাবে চলছিলেন। এমনকি অর্ধরাত হয়ে গেল, আমি তাঁর পাশে ছিলাম। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর তন্দ্রা পেল। তিনি সওয়ারীর উপর থেকে চলতে লাগলেন। আমি তাঁর কাছে এসে তাকে না জাগিয়ে তাঁকে ঠেস দিলাম। ফলে তিনি সওয়ারীর উপর সোজা হয়ে গেলেন।

তিনি বলেন, তারপর চলতে থাকলেন। অবশেষে রাতের বেশী অংশ গত হলে তিনি সওয়ারীর উপর আবার একদিকে ঢুলতে লাগলেন। আমি তাঁকে না জাগিয়ে আবার ঠেস দিলাম। ফলে তিনি সওয়ারীর উপর সোজা হয়ে গেলেন। তারপর আবার চলতে লাগলেন। যখন সাহরীর শেষ সময় এলো তখন তিনি পূর্বের দুই বারের চাইতে এত অধিক ঢুলে পড়লেন যে, প্রায় পড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। আমি তাঁর কাছে গিয়ে তাকে আবার ঠেস দিলাম। তিনি মাথা তুলে জিজ্ঞাসা করলেন, এই কে? আমি বললাম, আবু কাতাদা। তিনি বললেন, তুমি কখন থেকে এভাবে আমার সাথে চলেছ? আমি বললাম, সারা রাত ধরে। তিনি বলেছেন, আল্লাহ তোমাকে হিফাযত করুন, যেহেতু তুমি আল্লাহর নবীকে হিফাযত করেছ।

তারপর বললেন, তুমি কি বুঝতে পাচ্ছ? আমরা কি লোকদের থেকে আড়ালে পড়ে গেছি? আবার বললেন, কাউকে কি দেখতে পাচ্ছ? আমি বললাম, এই একজন সওয়ার। আবার বললাম, এই আর একজন সওয়ার। এইরূপ আমরা সাতজন সওয়ারী একত্রিত হলাম। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রাস্তা থেকে একটু সরে গেলেন এবং (আরাম করার জন্য) মাথা রাখলেন তারপর বললেন, তোমরা আমাদের নামাযের সময়ের লক্ষ্য রাখবে। যারা জাগলেন তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ছিলেন। রোদ তার পিঠ স্পর্শ করছিল।

আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, আমরা সন্ত্রস্ত অবস্থায় উঠলম। তারপর তিনি বললেন, তোমরা আরোহণ কর। আমরা আরোহন করলাম এবং চলতে লাগলাম। এমন কি সূর্য যখন উপরে উঠল, তখন তিনি অবতরণ করলেন এবং উযুর পানির পাত্র চাইলেন। তা আমার কাছে ছিল এবং তাতে অল্প পানি ছিল। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন , রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সেই পানি থেকে ভালভাবে উযু করলেন। তিনি বলেন, তাতে কিছু পানি অবশিষ্ট রইল। তারপর আবু কাতাদা (রাযিঃ) কে বললেন, তুমি আমাদের জন্য তোমার এ উযুর পাত্রটি হিফাযতে রাখ। শীঘ্রই তা থেকে বিরাট ঘটনা প্রকাশ পেতে পারে। তারপর বিলাল (রাযিঃ) নামাযের আযান দিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দু’রাকআত নামায আদায় করলেন। অতঃপর ফজরের দু'রাক’আত (ফরয) আদায় করলেন। অন্যান্য দিনে যেমন ভাবে আদায় করেন, আজকেও সেভাবেই আদায় করলেন।

আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ও আমরা সওয়ার হয়ে চললাম। তিনি বলেন, আমরা একে অপরকে চুপে চুপে বলতে লাগলাম, আমরা নামাযের ব্যাপারে যে ক্রটি করেছি, তার কাফফারা কি হবে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আমার মধ্যে কি তোমাদের জন্য আদর্শ নেই? তারপর বললেন, ঘুমের ভিতর কোন শৈথিল্য দোষ নেই। শৈথিল্য দোষ তার, যে নামায আদায় করে না, এমন কি অন্য নামাযের সময় এসে পড়ে। কারো যদি এরূপ হয়, তবে তার উচিত সজাগ হওয়া মাত্র তা আদায় করে নেয়া। তারপর যখন দ্বিতীয়দিন আসবে, তখন যেন ঠিক সময় মত সেই নামায আদায় করে।

তারপর বললেন লোকেরা কি করছে বলে তোমরা মনে কর? অতঃপর নিজেই বললেন, ″ভোর হলে লোকেরা তাদের নবীকে দেখতে পেল না। আবু বকর ও উমর বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পিছনেই রয়েছেন। তিনি তোমাদের পেছনে ফেলে যেতে পারেন না। আর লোকেরা বলল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিশ্চয়ই তোমাদের সামনে রয়েছেন। তারা আবু বকর (রাযিঃ) ও উমর (রাযিঃ) এর কথা মেনে নিলেই ঠিক করত″।

আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, আমরা দুপূরের দিকে তাদের কাছে পৌছলাম। তখন সকল কিছু উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে লোকেরা বলতে লাগল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পিপাসায় আমরা মরে গেলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা ধ্বংস হবে না। তারপর বললেন, আমার পেয়ালাটি আন। তিনি বলেন, তারপর সেই উযুর পানির পাত্রটি তলব করলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা থেকে পানি ঢাললেন। আর আবু কাতাদা (রাযিঃ) লোকদের পান করাতে লাগলেন। লোকেরা পাত্রের পানি দেখে এতই ভিড় করল যে, সকলেই তাঁর উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ল।

তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা তোমাদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখ। তোমরা সকলেই তৃপ্তি লাভ করবে। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তারা তাই করল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পানি ঢালতে লাগলেন। আর আমি তাদের পান করাতে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত আমি ছাড়া আর কেউ বাদ রইল না। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পানি ঢেলে আমাকে বললেন, তুমি পান কর। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি পান করার আগে আমি পান করব না। তিনি বললেন, যে লোকদের পানি পান করায় সে সকলের শেষেই পান করে। তিনি বলেন, আমি পানি পান করলাম এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পান করলেন। আবু কাতাদা (রাযিঃ) বলেন, লোকেরা পানি পান করল আনন্দ ও তৃপ্তি সহকারে।

রাবী বলেন, [আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণনাকারী রাবী] আব্দুল্লাহ ইবনে রাবাহ বর্ণনা করেন, আমি জামে মসজিদে এই হাদীসটি বর্ণনা করছিলাম। এমন সময় ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) বললেন, হে যুবক! তুমি ভেবে দেখ, তুমি কী বলছ। কেননা আমি সে রাতে একজন আরোহী ছিলাম। আমি বললাম, নিশ্চয়ই আপনি হাদীসটি অধিক জানেন। তিনি বললেন, তুমি কোন গোত্রের লোক? আমি বললাম, আনসার। তিনি বললেন, তবে তুমি বর্ণনা কর। কারণ তুমি এ সম্পর্কে অবশ্য ভালই জান। তারপর আমি পূর্ণ হাদীসটি লোকদের কাছে বর্ণনা করলাম। ইমরান (রাযিঃ) বললেন, আমি সেই রাত্রে উপস্থিত ছিলাম; কিন্তু তুমি যেভাবে মনে রেখেছ অন্য কেউ এভাবে মনে রেখেছে বলে আমার জানা নেই।
باب قَضَاءِ الصَّلاَةِ الْفَائِتَةِ وَاسْتِحْبَابِ تَعْجِيلِ قَضَائِهَا
وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، - يَعْنِي ابْنَ الْمُغِيرَةِ - حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " إِنَّكُمْ تَسِيرُونَ عَشِيَّتَكُمْ وَلَيْلَتَكُمْ وَتَأْتُونَ الْمَاءَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ غَدًا " . فَانْطَلَقَ النَّاسُ لاَ يَلْوِي أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ - قَالَ أَبُو قَتَادَةَ - فَبَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسِيرُ حَتَّى ابْهَارَّ اللَّيْلُ وَأَنَا إِلَى جَنْبِهِ - قَالَ - فَنَعَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَالَ عَنْ رَاحِلَتِهِ فَأَتَيْتُهُ فَدَعَمْتُهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ أُوقِظَهُ حَتَّى اعْتَدَلَ عَلَى رَاحِلَتِهِ - قَالَ - ثُمَّ سَارَ حَتَّى تَهَوَّرَ اللَّيْلُ مَالَ عَنْ رَاحِلَتِهِ - قَالَ - فَدَعَمْتُهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ أُوقِظَهُ حَتَّى اعْتَدَلَ عَلَى رَاحِلَتِهِ - قَالَ - ثُمَّ سَارَ حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ السَّحَرِ مَالَ مَيْلَةً هِيَ أَشَدُّ مِنَ الْمَيْلَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ حَتَّى كَادَ يَنْجَفِلُ فَأَتَيْتُهُ فَدَعَمْتُهُ فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ " مَنْ هَذَا " . قُلْتُ أَبُو قَتَادَةَ . قَالَ " مَتَى كَانَ هَذَا مَسِيرَكَ مِنِّي " . قُلْتُ مَا زَالَ هَذَا مَسِيرِي مُنْذُ اللَّيْلَةِ . قَالَ " حَفِظَكَ اللَّهُ بِمَا حَفِظْتَ بِهِ نَبِيَّهُ " . ثُمَّ قَالَ " هَلْ تَرَانَا نَخْفَى عَلَى النَّاسِ " . ثُمَّ قَالَ " هَلْ تَرَى مِنْ أَحَدٍ " . قُلْتُ هَذَا رَاكِبٌ . ثُمَّ قُلْتُ هَذَا رَاكِبٌ آخَرُ . حَتَّى اجْتَمَعْنَا فَكُنَّا سَبْعَةَ رَكْبٍ - قَالَ - فَمَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الطَّرِيقِ فَوَضَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ قَالَ " احْفَظُوا عَلَيْنَا صَلاَتَنَا " . فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالشَّمْسُ فِي ظَهْرِهِ - قَالَ - فَقُمْنَا فَزِعِينَ ثُمَّ قَالَ " ارْكَبُوا " . فَرَكِبْنَا فَسِرْنَا حَتَّى إِذَا ارْتَفَعَتِ الشَّمْسُ نَزَلَ ثُمَّ دَعَا بِمِيضَأَةٍ كَانَتْ مَعِي فِيهَا شَىْءٌ مِنْ مَاءٍ - قَالَ - فَتَوَضَّأَ مِنْهَا وُضُوءًا دُونَ وُضُوءٍ - قَالَ - وَبَقِيَ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ مَاءٍ ثُمَّ قَالَ لأَبِي قَتَادَةَ " احْفَظْ عَلَيْنَا مِيضَأَتَكَ فَسَيَكُونُ لَهَا نَبَأٌ " . ثُمَّ أَذَّنَ بِلاَلٌ بِالصَّلاَةِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى الْغَدَاةَ فَصَنَعَ كَمَا كَانَ يَصْنَعُ كُلَّ يَوْمٍ - قَالَ - وَرَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَكِبْنَا مَعَهُ - قَالَ - فَجَعَلَ بَعْضُنَا يَهْمِسُ إِلَى بَعْضٍ مَا كَفَّارَةُ مَا صَنَعْنَا بِتَفْرِيطِنَا فِي صَلاَتِنَا ثُمَّ قَالَ " أَمَا لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ " . ثُمَّ قَالَ " أَمَا إِنَّهُ لَيْسَ فِي النَّوْمِ تَفْرِيطٌ إِنَّمَا التَّفْرِيطُ عَلَى مَنْ لَمْ يُصَلِّ الصَّلاَةَ حَتَّى يَجِيءَ وَقْتُ الصَّلاَةِ الأُخْرَى فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَلْيُصَلِّهَا حِينَ يَنْتَبِهُ لَهَا فَإِذَا كَانَ الْغَدُ فَلْيُصَلِّهَا عِنْدَ وَقْتِهَا " . ثُمَّ قَالَ " مَا تَرَوْنَ النَّاسَ صَنَعُوا " . قَالَ ثُمَّ قَالَ " أَصْبَحَ النَّاسُ فَقَدُوا نَبِيَّهُمْ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَكُمْ لَمْ يَكُنْ لِيُخَلِّفَكُمْ . وَقَالَ النَّاسُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَيْدِيكُمْ فَإِنْ يُطِيعُوا أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَرْشُدُوا " . قَالَ فَانْتَهَيْنَا إِلَى النَّاسِ حِينَ امْتَدَّ النَّهَارُ وَحَمِيَ كُلُّ شَىْءٍ وَهُمْ يَقُولُونَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْنَا عَطِشْنَا . فَقَالَ " لاَ هُلْكَ عَلَيْكُمْ " . ثُمَّ قَالَ " أَطْلِقُوا لِي غُمَرِي " . قَالَ وَدَعَا بِالْمِيضَأَةِ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُبُّ وَأَبُو قَتَادَةَ يَسْقِيهِمْ فَلَمْ يَعْدُ أَنْ رَأَى النَّاسُ مَاءً فِي الْمِيضَأَةِ تَكَابُّوا عَلَيْهَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَحْسِنُوا الْمَلأَ كُلُّكُمْ سَيَرْوَى " . قَالَ فَفَعَلُوا فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُبُّ وَأَسْقِيهِمْ حَتَّى مَا بَقِيَ غَيْرِي وَغَيْرُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - قَالَ - ثُمَّ صَبَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي " اشْرَبْ " . فَقُلْتُ لاَ أَشْرَبُ حَتَّى تَشْرَبَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " إِنَّ سَاقِيَ الْقَوْمِ آخِرُهُمْ شُرْبًا " . قَالَ فَشَرِبْتُ وَشَرِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم - قَالَ - فَأَتَى النَّاسُ الْمَاءَ جَامِّينَ رِوَاءً . قَالَ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَبَاحٍ إِنِّي لأُحَدِّثُ هَذَا الْحَدِيثَ فِي مَسْجِدِ الْجَامِعِ إِذْ قَالَ عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ انْظُرْ أَيُّهَا الْفَتَى كَيْفَ تُحَدِّثُ فَإِنِّي أَحَدُ الرَّكْبِ تِلْكَ اللَّيْلَةَ . قَالَ قُلْتُ فَأَنْتَ أَعْلَمُ بِالْحَدِيثِ . فَقَالَ مِمَّنْ أَنْتَ قُلْتُ مِنَ الأَنْصَارِ . قَالَ حَدِّثْ فَأَنْتُمْ أَعْلَمُ بِحَدِيثِكُمْ . قَالَ فَحَدَّثْتُ الْقَوْمَ فَقَالَ عِمْرَانُ لَقَدْ شَهِدْتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَمَا شَعَرْتُ أَنَّ أَحَدًا حَفِظَهُ كَمَا حَفِظْتُهُ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এটা একটা ইসলামী আদব যে, যে ব্যক্তি পানি, শরবত, দুধ, চা ইত্যাদি পরিবেশন করবে, সে নিজে পান করবে সকলের শেষে। এমনিভাবে খাদ্যদ্রব্য, ফল-ফলাদি বিতরণেও এ আদব অনুসরণীয়। অর্থাৎ বিতরণকারী নিজে খাবে সবার পরে। ইবনু রাসলান রহ. বলেন, এ হাদীছ দ্বারা ইশারা পাওয়া যায়, যে ব্যক্তি উম্মতের কোনও বিষয়ে দায়িত্বশীল হবে, তার কর্তব্য হবে আগে মানুষের উপকার-অপকারের দিকে লক্ষ রাখা। অর্থাৎ কিসে তাদের উপকার হয় এবং কীভাবে তাদের অনিষ্ট দূর করা যায়, সেটাই হবে তার প্রথম লক্ষ্যবস্তু। সে নিজ স্বার্থের উপর অন্যের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবে। নিজ সুবিধা-অসুবিধা চিন্তা করবে তাদের পরে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. মজলিসে যে ব্যক্তি পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন করবে, সে নিজে পান করবে সকলের পর।

খ. যে-কোনও বিষয়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রথমে অন্যদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে। নিজ স্বার্থ চিন্তা করবে সবার পরে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)