মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৯ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৬১৬৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৬৪। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ হাসান এবং হোসাইন ইহারা দুইজন দুনিয়াতে আমার দুইটি সুগন্ধময় ফুলস্বরূপ। —তিরমিযী, আর এই হাদীসটি (শাব্দিক সামান্য পরিবর্তনসহ) প্রথম পরিচ্ছেদেও বর্ণিত হইয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৬৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৬৫। হযরত উসামা ইবনে যায়দ (রাঃ) বলেন, একদা কোন এক প্রয়োজনে রাতের বেলায় আমি নবী (ﷺ)-এর খেদমতে গেলাম। তখন নবী (ﷺ) এমন অবস্থায় ঘর হইতে বাহির হইলেন যে, (মনে হইল,) তিনি চাদর দ্বারা গায়ের সাথে কি একটি জিনিস জড়াইয়া রাখিয়াছেন, কিন্তু আমি বুঝিতে পারি নাই সেই জিনিসটি কি? অতঃপর যখন আমি প্রয়োজন সারিয়া তাঁহার নিকট হইতে অবসর হইলাম, তখন জিজ্ঞাসা করিলাম, (ইয়া রাসূলাল্লাহ্!) চাদরের ভিতরে আপনি কি জিনিস জড়াইয়া রাখিয়াছেন? তখন তিনি চাদরখানা সরাইয়া ফেলিলে দেখিলাম, হাসান ও হোসাইন দুইজন তাঁহার দুই উরুতে বসিয়া রহিয়াছেন। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ ইহারা দুইজন আমার পুত্র ও আমার তনয়ার পুত্র। “হে আল্লাহ্ আমি ইহাদের দুইজনকেই ভালবাসি। সুতরাং, আপনিও তাহাদের দুইজনকে ভালবাসুন। আর যাহারা এই দুইজনকে ভালবাসিবে, আপনি তাহাদিগকেও ভালবাসুন।” —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৬৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৬৬। হযরত সালমা (রাঃ) বলেন, একদা আমি উম্মে সালামা (রাঃ)-এর নিকট গিয়া দেখিলাম, তিনি কাঁদিতেছেন। জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি কেন কাঁদিতেছেন? তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে এমন অবস্থায় দেখিয়াছি, অর্থাৎ, স্বপ্নে – তাঁহার মাথা ও দাড়ি ধুলাবালিতে মিশ্রিত। অতঃপর আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! আপনার এই অবস্থা কেন, আপনার কি হইয়াছে? তিনি বলিলেনঃ এই মাত্র আমি হোসাইনের শাহাদতের স্থানে উপস্থিত হইয়া ছিলাম। —তিরমিযী, তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৬৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৬৭। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করা হইল, আপনি আপনার আহলে বায়তের মধ্যে কাহাকে সর্বাধিক ভালবাসেন? তিনি বলিলেনঃ হাসান ও হোসাইনকে। এবং তিনি ফাতেমার উদ্দেশ্যে বলিতেন, আমার পুত্রদ্বয়কে ডাকিয়া দাও। তাহারা আসিলে তিনি তাহাদিগকে শুঁকিতেন (অর্থাৎ, চুমা দিতেন) এবং উভয়কে নিজের সাথে জড়াইয়া ধরিতেন। —তিরমিযী, আর তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৬৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৬৮। হযরত বুরায়দা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাদের সম্মুখে ভাষণ দিতেছিলেন। এমন সময় হঠাৎ হাসান ও হোসাইন সেইখানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তাঁহাদের উভয়ের গায়ে ছিল লাল বর্ণের দুইটি জামা। তাঁহারা এমনভাবে চলিতেছিলেন যেন পড়িয়া যাইতেছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মিম্বর হইতে নামিয়া গেলেন এবং তাঁহাদিগকে উঠাইয়া আনিয়া নিজের সম্মুখে বসাইয়া রাখিলেন। অতঃপর বলিলেনঃ আল্লাহ্ সত্যই বলিয়াছেন, “তোমাদের মাল সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিগণ ফেতনা।” আমি এই বাচ্চা দুইটির দিকে তাকাইয়া দেখিলাম যে, ইহারা হ্যাঁটিতেছে এবং পড়িয়া যাইতেছে, সুতরাং আমি আর স্থির থাকিতে পারিলাম না। অবশেষে আমি আলোচনা বন্ধ করিয়া দিলাম এবং ইহাদিগকে উঠাইয়া আনিলাম। —তিরমিযী, আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৬৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৬৯। হযরত ইয়া'লা ইবনে মুররাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ হোসাইন আমা হইতে আর আমি হোসাইন হইতে। যে হোসাইনকে ভালবাসিবে আল্লাহ্ তাহাকে ভালবাসিবেন। হোসাইন বংশসমূহের মধ্যে একটি বংশ। — তিরমিযীঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭০। হযরত আলী (রাঃ) বলিয়াছেন, হাসান হইলেন (চেহারা-আকৃতি-অবয়বে) মাথা হইতে বক্ষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সদৃশ। আর হোসাইন হইলেন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর বক্ষের নীচের অংশের সদৃশ। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭১। হযরত হোযায়ফা (রাঃ) বলেন, একদা আমি আমার আম্মাকে বলিলাম, আমাকে অনুমতি দিন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাছে গিয়া তাঁহার সহিত মাগরিবের নামায আদায় করি এবং আমার নিজের ও আপনার মাগফেরাতের জন্য তাঁহার নিকট দো'আর আবেদন করি। (রাবী বলেন, আমার মা অনুমতি দিলেন।) অতঃপর আমি নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিলাম এবং তাহার সাথে মাগরিবের নামায আদায় করিলাম। তিনি ইহার পর (নফল) নামায পড়িতে থাকেন। অবশেষে এশার নামায আদায় করিয়া যখন তিনি গৃহাভিমুখে রওয়ানা হইলেন, তখন আমিও তাঁহার পিছনে পিছনে রওয়ানা হইলাম । তিনি আমার (পায়ের) আওয়াজ শুনিতে পাইয়া বলিলেনঃ কে, হোযায়ফা ? বলিলাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, কি প্রয়োজনে আসিয়াছ? আল্লাহ্ তোমাকে এবং তোমার মাতাকে মাফ করুন । (হে হোযায়ফা!) ইনি ফিরিশতা, যিনি এই রাত্রির পূর্বে আর কখনও ভূপৃষ্ঠে অবতরণ করেন নাই। তিনি তাঁহার পরওয়ারদেগারের কাছে অনুমতি চান যে, আমাকে সালাম করিবেন এবং আমাকে এই সুসংবাদটি জানাইয়া দিবেন যে, ফাতেমা জান্নাতী মহিলাদের সরদার আর হাসান এবং হোসাইন দুইজনই জান্নাতী যুবকদের সরদার। —তিরমিযী এবং তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭২। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হাসান ইবনে আলীকে নিজের কাঁধের উপর বসাইয়া রাখিয়াছিলেন। তখন এক ব্যক্তি বলিয়া উঠিল, হে বালক! কত উত্তম সওয়ারীতেই না তুমি আরোহণ করিয়াছ? তখন নবী (ﷺ) বলিলেন আরে আরোহীও তো উত্তম বটে। — তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭৩। হযরত ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত যে, তিনি হযরত উসামা ইবনে যায়দের জন্য (বাৎসরিক ভাতা) সাড়ে তিন হাজার দিরহাম নির্ধারণ করিলেন এবং (নিজের পুত্র) আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমরের জন্য নির্ধারণ করিলেন তিন হাজার। তখন আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর তাঁহার পিতাকে বলিলেন; কেন আপনি উসামাকে আমার উপর প্রাধান্য দিয়াছেন ? আল্লাহর কসম! কোন অভিযানেই উসামা আমার অগ্রগামী ছিলেন না। উত্তরে হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, ইহার কারণ হইল এই যে, তোমার পিতা (আমি ওমর) অপেক্ষা তাহার পিতা (যায়দ) রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট অধিক প্রিয় ছিলেন। এতদ্ভিন্ন তোমা অপেক্ষা হযরত উসামা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট বেশী প্রিয় ছিলেন। সুতরাং আমি আমার প্রিয়জনের উপর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর প্রিয়জনকে প্রাধান্য দিয়াছি। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭৪। হযরত জাবালা ইবনে হারেসা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত হইয়া বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার ভাই যায়দকে আমার সাথে পাঠাইয়া দিন। জবাবে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ এই তো যায়দ। যদি সে তোমার সাথে চলিয়া যাইতে চায়, আমি তাহাকে বাধা দিব না। এই কথা শুনিয়া যায়দ বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আল্লাহর কসম! আপনার উপর আমি অন্য আর কাহাকেও প্রাধান্য দিব না। (যায়দের এই কথা শুনিয়া) জাবালা বলেন, পরবর্তীতে আমি বুঝিতে পারিলাম, আমার সিদ্ধান্ত অপেক্ষা আমার ভাই যায়দের সিদ্ধান্তই ছিল উত্তম। – তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭৫। হযরত উসামা ইবনে যায়দ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর রোগ যখন খুব বাড়িয়া গেল, তখন আমি ও অন্যান্য লোকেরা মদীনায় অবতরণ করিলাম। অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গেলাম। এই সময় তিনি নীরব হইয়া রহিয়াছিলেন। কথাবার্তা বলিতে পারিতেছিলেন না। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমার গায়ের উপর তাঁহার উভয় হাত রাখিলেন। তারপর হাত দুইটি উপরে উঠাইলেন। তখন আমি বুঝিতে পারিলাম যে, তিনি আমার জন্য দো'আ করিতেছেন। —তিরমিযী, আর তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭৬। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা নবী (ﷺ) উসামার নাকের শ্লেষ্মা দূর করিতে চাহিলে আয়েশা (রাঃ) বলিলেন, আপনি ইহা রাখুন; এই কাজটি আমিই করিব। তখন নবী (ﷺ) বলিলেনঃ হে আয়েশা ! তুমি উসামাকে স্নেহ করিও। কেননা, আমি তাহাকে অত্যধিক ভালবাসি। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭৭। হযরত উসামা (রাঃ) বলেন, একদা আমি [নবী করীম (ﷺ)-এর ঘরের দরজায়] বসা ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ হযরত আলী ও আব্বাস (রাঃ) আসিয়া ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাহিলেন। তখন তাঁহারা দুইজনে উসামাকে বলিলেন, আমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট যাওয়ার অনুমতি লইয়া আস। (উসামা বলেন,) আমি যাইয়া বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আলী ও আব্বাস আপনার অনুমতি চাহিতেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ (হে উসামা !) তুমি কি জান, তাঁহারা দুইজন কেন আসিয়াছে ? আমি বলিলাম, জি-না, আমি জানি না। নবী (ﷺ) বলিলেন, কিন্তু আমি জানি, আচ্ছা তাহাদিগকে আসিতে বল। অতঃপর তাঁহারা উভয়ে প্রবেশ করিলেন। এইবার তাঁহারা উভয়ে বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ । আমরা আপনাকে এই কথাটি জিজ্ঞাসা করিতে আসিয়াছি, আপনার আহলে বায়তের মধ্যে কে আপনার নিকট অধিক প্রিয়? উত্তরে তিনি বলিলেন, ফাতেমা বিনতে মুহাম্মাদ (ﷺ)। তাঁহারা বলিলেন, আপনার পরিবার সম্পর্কে আমরা জিজ্ঞাসা করিতে আসি নাই। তিনি বলিলেন, আমার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই আমার নিকট সর্বাপেক্ষা অধিক প্রিয়, যাহার প্রতি আল্লাহ্ অনুগ্রহ করিয়াছেন এবং আমিও তাহার প্রতি অনুগ্রহ করিয়াছি, সে হইল উসামা ইবনে যায়দ। তাঁহারা পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, তাঁহার পরে কে? তিনি বলিলেন, অতঃপর আলী ইবনে আবু তালিব। অতঃপর আব্বাস বলিয়া উঠিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি আপনার চাচাকে সকলের শেষে রাখিলেন? নবী (ﷺ) বলিলেন, আলী তো হিজরতে আপনার অগ্রগামী রহিয়াছে। —তিরমিযী। আর أَنَّ عَمَّ الرَّجُلِ صِنْوُ أَبِيهِ হাদীসটি যাকাত পর্বে বর্ণিত হইয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭৮

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭৮। হযরত ওকবা ইবনে হারেস (রাঃ) বলেন, হযরত আবু বকর [(রাঃ) তাঁহার খেলাফত যুগে] একদিন আসরের নামাযের পর বাহির হইয়া পায়চারি করিতেছিলেন, তাঁহার সাথে হযরত আলী (রাঃ)-ও ছিলেন। আবু বকর দেখিলেন, হাসান অন্যান্য বাচ্চাদের সহিত খেলাধুলা করিতেছেন, তখন তিনি তাঁহাকে তুলিয়া নিজের কাঁধে বসাইলেন এবং বলিলেন, আমার পিতা কোরবান হউন, ইনি তো নবী (ﷺ)-এর অবিকল সদৃশ। আলীর সাথে কোন সাদৃশ্য নাই, তখন আলী হাসিতেছিলেন। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৭৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৭৯। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, যখন হযরত হোসাইনের পবিত্র শির (কুফার আমীর) ওবায়দুল্লাহ্ ইবনে যিয়াদের নিকট আনা হইল এবং তাহা একটি বড় খাঞ্চায় রাখা হইল, তখন (হতভাগা) ইবনে যিয়াদ তাঁহার মুখের মধ্যে (ছড়ি দ্বারা) টোকা দিতে লাগিল এবং তাঁহার সৌন্দর্য সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করিল। হযরত আনাস বলেন, তখন আমি বলিলাম, আল্লাহর কসম! হোসাইনের আকৃতি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আকৃতির সাথে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। আর তখন তাঁহার চুল ও দাড়ির মধ্যে “ওয়াসমা” ঘাসের খেযাব লাগান ছিল। —বুখারী
আর তিরমিযীর রেওয়ায়তে আছে—হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আমি ইবনে যিয়াদের নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় হযরত হোসাইনের পবিত্র শির আনা হইল, তখন ইবনে যিয়াদ হাতের ছড়ি দ্বারা তাঁহার নাকের মধ্যে আঘাত করিতে করিতে তিরস্কারের সুরে বলিল, এতো সুন্দর চেহারা আমি কখনও দেখি নাই। (আনাস বলেন,) তখন আমি তাহার কথার প্রতিবাদে বলিলাম, সাবধান! হোসাইন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আকৃতির সাথে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ ছিলেন। তিরমিযী, আর তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি সহীহ্, হাসান ও গরীব।
আর তিরমিযীর রেওয়ায়তে আছে—হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, আমি ইবনে যিয়াদের নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় হযরত হোসাইনের পবিত্র শির আনা হইল, তখন ইবনে যিয়াদ হাতের ছড়ি দ্বারা তাঁহার নাকের মধ্যে আঘাত করিতে করিতে তিরস্কারের সুরে বলিল, এতো সুন্দর চেহারা আমি কখনও দেখি নাই। (আনাস বলেন,) তখন আমি তাহার কথার প্রতিবাদে বলিলাম, সাবধান! হোসাইন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আকৃতির সাথে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ণ ছিলেন। তিরমিযী, আর তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি সহীহ্, হাসান ও গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৮০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৮০। হযরত উম্মুল ফযল বিনতে হারেস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট যাইয়া বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আজ রাত্রে আমি খারাপ একটি স্বপ্ন দেখিয়াছি। তিনি বলিলেন, সেই স্বপ্নটা কি? উম্মুল ফযল বলিলেন, উহা অতি ভয়ানক। তিনি পুনরায় বলিলেন, আরে বল না, সেই স্বপ্নটা কি? তখন উম্মুল ফযল বলিলেন, আমি দেখিয়াছি, আপনার দেহ মুবারক হইতে যেন এক টুকরা গোশত কর্তন করা হইয়াছে এবং উহা আমার কোলে রাখা হইয়াছে। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ তুমি খুব উত্তম ও চমৎকার স্বপ্নই দেখিয়াছ। ইন্শাআল্লাহ্ কন্যা ফাতেমা একটি ছেলে সন্তান প্রসব করিবে, যাহা তোমার কোলেই রাখা হইবে। সুতরাং কিছু দিন পর ফাতেমার গর্ভে হোসাইন জন্মগ্রহণ করিলেন এবং তাহাকে আমার কোলেই রাখা হইল, যেমনটি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছিলেন।
(উম্মুল ফযল বলেন,) ইহার পর একদিন আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গেলাম এবং বাচ্চাটিকে (শিশু হোসাইনকে) তাঁহার কোলে রাখিলাম। অতঃপর আমি (অন্য মনষ্কে) আরেক দিকে দেখিতেছিলাম। হঠাৎ এইদিকে ফিরিয়া তাকাইতেই দেখিলাম, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চক্ষুদ্বয় হইতে অশ্রু প্রবাহিত হইতেছে। উম্মুল ফযল বলেন, তখন আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, হে আল্লাহর নবী! আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কোরবান হউন, আপনার কি হইয়াছে ? তিনি বলিলেন, এইমাত্র হযরত জিবরাঈল (আঃ) আসিয়া আমাকে বলিয়া গেলেন যে, অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতেরা আমার এই পুত্রটিকে কতল করিবে। [নবী (ﷺ) বলেন,] আমি বিস্ময় প্রকাশে জিবরাঈলকে জিজ্ঞাসা করিলাম, আমার এই পুত্রটিকে কি তাহারা কতল করিবে? জিবরাঈল বলিলেন, হ্যাঁ এবং ঐ জায়গার লাল মাটি আনিয়াও আমাকে দেখাইয়াছেন, যেইখানে তাহাকে কতল করা হইবে।
(উম্মুল ফযল বলেন,) ইহার পর একদিন আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গেলাম এবং বাচ্চাটিকে (শিশু হোসাইনকে) তাঁহার কোলে রাখিলাম। অতঃপর আমি (অন্য মনষ্কে) আরেক দিকে দেখিতেছিলাম। হঠাৎ এইদিকে ফিরিয়া তাকাইতেই দেখিলাম, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর চক্ষুদ্বয় হইতে অশ্রু প্রবাহিত হইতেছে। উম্মুল ফযল বলেন, তখন আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, হে আল্লাহর নবী! আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কোরবান হউন, আপনার কি হইয়াছে ? তিনি বলিলেন, এইমাত্র হযরত জিবরাঈল (আঃ) আসিয়া আমাকে বলিয়া গেলেন যে, অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতেরা আমার এই পুত্রটিকে কতল করিবে। [নবী (ﷺ) বলেন,] আমি বিস্ময় প্রকাশে জিবরাঈলকে জিজ্ঞাসা করিলাম, আমার এই পুত্রটিকে কি তাহারা কতল করিবে? জিবরাঈল বলিলেন, হ্যাঁ এবং ঐ জায়গার লাল মাটি আনিয়াও আমাকে দেখাইয়াছেন, যেইখানে তাহাকে কতল করা হইবে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৮১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৮১। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ঘুমন্ত ব্যক্তি যেইভাবে কিছু দেখে, অনুরূপভাবে আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে একদা দ্বিপ্রহরে ধুলাবালি আবৃত এলোমেলো অবস্থায় দেখিলাম। তাহার হাতের মধ্যে রক্তে পরিপূর্ণ একটি শিশি। আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি কোরবান হউন। ইহা কি ? তিনি বলিলেনঃ ইহা হোসাইন এবং তাহার সঙ্গীদের রক্ত, যাহা আমি আজকের দিন অত্র শিশিতে উঠাইয়া রাখিতেছি। হযরত ইবনে আব্বাস বলেন, আমি স্বপ্নের সেই সময়টি স্মরণে রাখি। পরে দেখিতে পাইলাম, হযরত হোসাইন ঠিক সেই ওয়াক্তেই নিহত হইয়াছেন। — হাদীস দুইটি বায়হাকী দালায়েলুন নবুওত গ্রন্থে ও আহমদ শেষের হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬১৮২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর পরিবার-পরিজনদের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬১৮২। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমরা আল্লাহকে মহব্বত কর। কেননা, তিনি তোমাদের প্রতি খাদ্যসামগ্রীর মাধ্যমে অনুগ্রহ করিয়া থাকেন। আর আমাকে ভালবাস, যেহেতু আমি আল্লাহর হাবীব। আর আমার আহলে বায়তকে ভালবাস আমার মহব্বতে। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান