মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩১- সাহাবায়ে কিরামের রাঃ মানাকিব ও ফাযায়েল - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৫ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৬০৪৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৪৯। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বসা ছিলেন। এমন সময় আমরা ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের শোরগোল ও হৈ চৈ শুনিতে পাইলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) উঠিয়া সেইদিকে গেলেন। তিনি গিয়া দেখিলেন, এক হাবশী (সুদানী) বালিকা নাচিতেছে। আর ছেলে-মেয়েরা তাহাকে ঘিরিয়া তামাশা দেখিতেছে। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ হে আয়েশা! এদিকে আস এবং (তামাশা) দেখ! (হযরত আয়েশা বলেন,) সুতরাং আমি গেলাম এবং আমার থুতনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কাঁধের উপর রাখিয়া তাঁহার কাঁধ ও মাথার মধ্যখান দিয়া ঐ বালিকাটির নাচ দেখিতে লাগিলাম। কিছুক্ষণ পরে তিনি আমাকে বলিলেন, তোমার কি তৃপ্তি হয় নাই, তোমার কি তৃপ্তি হয় নাই? আমি বলিতে লাগিলাম, না। আমার এই “না” বলার উদ্দেশ্য ছিল, দেখি তাঁহার অন্তরে আমার স্থান কতটুকু আছে। ঠিক এমন সময় হঠাৎ ওমর (রাঃ) সেখানে উপস্থিত হইলেন। ওমরকে দেখামাত্রই লোকজন তাঁহার নিকট হইতে এদিক-সেদিক সরিয়া পড়িল, তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেন, আমি দেখিতেছি, জিন ও ইনসানের শয়তানগুলি ওমরের ভয়ে পলায়ন করিয়াছে। হযরত আয়েশা বলেন, অতঃপর আমি ফিরিয়া আসিলাম। – তিরমিযী, আর তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ্ ও গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৫০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৫০। হযরত আনাস এবং ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, হযরত ওমর (রাঃ) বলিয়াছেন, তিনটি বিষয়ে আমার সিদ্ধান্ত আমার রবের সিদ্ধান্তের অনুরূপ হইয়াছে। (এক) আমি বলিয়াছিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! হযরত ইবরাহীমের দাঁড়ানোর স্থানটিকে আমরা যদি নামাযের জন্য নির্ধারণ করিয়া লইতাম। তখন নাযিল হইল— وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى (অর্থঃ নামায পড়ার জন্য ইবরাহীমের দাঁড়ানোর স্থানটিকে তোমরা নামাযের জন্য নির্ধারণ করিয়া লও)। (দুই) আমি বলিয়াছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার বিবিদের ঘরে নেককার ও বদকার হরেক রকমের লোক আসে। তাই আপনি যদি তাঁহাদেরকে পর্দা করিবার আদেশ করিতেন। ইহার পর পরই পর্দার আয়াত নাযিল হইল । (তিন) একবার নবী (ﷺ)-এর বিবিগণ (আয়েশা ও হাফসা) আত্মাভিমানবশত এক জোট হইয়াছিলেন। [ওমর (রাঃ) বলেন,] তখন আমি বলিলাম, (তোমরা নিজ আচরণ ত্যাগ কর, অন্যথায়) যদি নবী (ﷺ) তোমাদিগকে তালাক দিয়া দেন, তবে অচিরেই তাঁহার রব তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চাইতেও উত্তম স্ত্রী তাঁহাকে প্রদান করিতে পারেন। ইহার পর পরই অনুরূপ আয়াত নাযিল হইল।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৫১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৫১। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ)-এর এক রেওয়ায়তে আছে, হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, তিন ব্যাপারে আমি আমার রবের সহিত ঐক্যমত হইয়াছি। (১) মাকামে ইবরাহীমের ব্যাপারে। (২) পর্দার ব্যাপারে। (৩) বদরের কয়েদীদের ব্যাপারে। —মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৫২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৫২। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, বিশেষ চারটি কারণে হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) সমস্ত মানুষের উপর মর্যাদা প্রাপ্ত হইয়াছেন। (১) বদর যুদ্ধের কয়েদীদের আলোচনা প্রসঙ্গে তাহাদের তিনি হত্যা করিয়া ফেলিতে পরামর্শ দিয়াছিলেন। ইহার পর এই আয়াত নাযিল হইল— [আয়াতের অনুবাদঃ যদি পূর্ব হইতে আল্লাহর নিকট ইহা লিপিবদ্ধ না থাকিত, (অর্থাৎ, তোমরা এইরূপ করিবে তাহা হইলে (বদরী কয়েদীদের নিকট হইতে) যেই বিনিময় গ্রহণ করিয়াছ, তজ্জন্য তোমরা কঠিন আযাবে লিপ্ত হইতে]। (২) পর্দার ব্যাপারে তিনি নবী (ﷺ)-এর বিবিগণকে পরামর্শ দিয়াছিলেন, তাঁহারা যেন পর্দা মানিয়া চলে। ইহা শুনিয়া নবী-পত্নী হযরত যয়নব (রাঃ) বলিয়া উঠিলেন, হে খাত্তাবের পুত্র! তুমি আমাদের উপর পর্দার আদেশ জারি করিতেছ ; অথচ আমাদের ঘরেই ওহী নাযিল হয়। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা নাযিল করিলেন – ( আয়াতের অনুবাদঃ হে মানুষসকল! তোমরা যখন নবীর বিবিদের নিকট হইতে কোন জিনিস চাহিবে, তখন আড়ালে থাকিয়াই চাহিবে)। (৩) ওমর (রাঃ)-এর জন্য নবী (ﷺ) দো'আ করেন, হে আল্লাহ্! ওমরের দ্বারা ইসলামকে শক্তিশালী কর। (৪) হযরত আবু বকরের খেলাফত সম্পর্কে তাঁহার (ওমরের) অভিমত এবং তিনিই সর্বপ্রথম ব্যক্তি, যিনি তাঁহার হাতে বাইআত গ্রহণ করিয়াছেন। – আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৬০৫৩

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - উমার ফারূক (রাঃ)-এর মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য
৬০৫৩। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)] বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ জান্নাতের মধ্যে ঐ ব্যক্তির মর্যাদাই হইবে আমার উম্মতের সকলের উপরে। আবু সাঈদ বলেন, আল্লাহর কসম! “ঐ ব্যক্তি" দ্বারা আমরা ওমর ইবনুল খাত্তাব ব্যতীত অন্য কাহাকেও ধারণা করিতাম না। এমন কি তাঁহার ইনতেকাল পর্যন্ত আমাদের (সাহাবীদের) মধ্যে এই ধারণা বিদ্যমান ছিল। —ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান