মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৯৪৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৪৮। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর ওফাতের পর সাহাবাগণ যখন তাঁহাকে গোসল দেওয়ার ইচ্ছা করিলেন, তখন (মতবিরোধ দেখা দিল,) তাহারা বলিলেন, আমরা কি অন্যান্য মৃতের ন্যায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর গায়ের জামা খুলিয়া গোসল দিব? নাকি তাঁহার উপর নিজ জামা-কাপড় রাখিয়া গোসল দিব? এই ব্যাপারে যখন মতবিরোধ চরমে উঠিল, তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাঁহাদের উপর নিদ্রা চাপাইয়া দিলেন। (অর্থাৎ, সকলে ঝিমাইয়া পড়িলেন।) ফলে তাঁহাদের মধ্যে এমন একজন লোকও বাকী ছিল না, যাহার থুতি নিজের বক্ষের সাথে যাইয়া লাগে নাই। অতঃপর ঘরের এক পার্শ্ব হইতে জনৈক উক্তিকারী বলিয়া উঠিলেন, সেই উক্তিকারী কে? লোকেরা তাহাকে চিনিতে পারেন নাই। তোমরা নবী (ﷺ)কে নিজ জামা-কাপড় পরিহিত অবস্থায় গোসল দাও। অতঃপর তাঁহারা উঠিয়া নবী (ﷺ)-কে জামাসমেত গোসল দিলেন। তাঁহারা জামার উপর দিয়া পানি ঢালিয়া দিলেন এবং জামা দ্বারা দেহ মোবারককে মলিয়া দিলেন। —বায়হাকী দালায়েলুন নবুওত গ্রন্থে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৯৪৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৪৯। ইবনুল মুনকাদার (রহঃ) হইতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আযাদকৃত গোলাম সাফীনা (রাঃ) রোম এলাকায় মুসলিম সেনাদল হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িয়াছিলেন অথবা শত্রুরা তাঁহাকে কয়েদ করিয়া ফেলিয়াছিল। অতঃপর তিনি (শত্রুর কবল হইতে) পালাইয়া সেনাদলের অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। এমন সময় হঠাৎ তিনি একটি সিংহের সম্মুখীন হইলেন। তখন তিনি সিংহটিকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, হে আবুল হারেস! (সিংহের উপনাম,) আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আযাদকৃত গোলাম। আর আমার ব্যাপার হইল এই এই— (অর্থাৎ, কাফেররা আমাকে বন্দী করিয়াছিল। এখন আমি তাহাদের কবল হইতে ছুটিয়া আসিয়া আমার সেনাদলের রাস্তা হারাইয়া ফেলিয়াছি।) এই কথা শুনিয়া সিংহটি (আনুগত্যের ভঙ্গিতে) স্বীয় লেজ নাড়িতে নাড়িতে (যেমন কুকুর তাহার প্রভুর সম্মুখে লেজ নাড়ে) তাঁহার সম্মুখে অগ্রসর হইয়া পার্শ্বে আসিয়া দাঁড়াইল। সিংহটি যখন কোন ভীতিজনক আওয়ায় শুনিতে পাইত, তখন সেইদিকে ছুটিয়া যাইত (অর্থাৎ, সেই আশংকাজনক শত্রুকে প্রতিহত করিত।) অতঃপর ফিরিয়া আসিয়া সাফীনার পাশে পাশে চলিত। অবশেষে তাঁহাকে সেনাদলের নিকটে পৌঁছাইয়া দিয়া সিংহটি ফিরিয়া চলিয়া গেল। —শরহে সুন্নাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৯৫০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৫০। হযরত আবুল জাওযা (রহঃ) বলেন, একবার মদীনাবাসীগণ ভীষণ অনাবৃষ্টির কবলে পতিত হইলেন, তখন তাঁহারা হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট এই বিপদের কথা উল্লেখ করিলেন। তিনি বলিলেন, তোমরা নবী (ﷺ)-এর কবরে যাও এবং তাঁহার হুজরার ছাদের আকাশের দিকে কয়েকটি ছিদ্র করিয়া দাও; যেন তাঁহার এবং আসমানের মধ্যখানে কোন আড়াল না থাকে। অতঃপর লোকেরা গিয়া তাহাই করিল। ইহাতে প্রবল বৃষ্টি বর্ষণ হইল। এমন কি যমীনে প্রচুর ঘাস জন্মিল এবং উটগুলি খুব মোটা-তাজা ও চর্বিদার হইয়া উঠিল। এই জন্য লোকেরা সেই বৎসরকে “আমাল ফতক” (পশুপালের হৃষ্টপুষ্ট হওয়ার বৎসর) নামে আখ্যায়িত করিল। —দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৯৫১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৫১। হযরত সাঈদ ইবনে আব্দুল আযীয (রহঃ) বলেন, 'হাররার' ফেতনার সময় তিন দিন তিন রাত নবী (ﷺ)-এর মসজিদে নামাযের আযানও হয় নাই এবং একামতও দেওয়া হয় নাই। সেই সময় (প্রসিদ্ধ তাবেয়ী) হযরত সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যেব (রহঃ) মসজিদে নববীর অভ্যন্তরে আটকা পড়িয়াছিলেন। এবং তিনি নামাযের সময় নির্ণয় করিতেন কেবলমাত্র নবী (ﷺ)-এর রওযা শরীফের ভিতর হইতে নির্গত একটি গুনগুন শব্দ দ্বারা, যাহা তিনি শুনিতে পাইতেন। —দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৯৫২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৫২। আবু খালদাহ্ (রহঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত আবুল আলিয়াকে জিজ্ঞাসা করিলাম; হযরত আনাস (রাঃ) নবী (ﷺ) হইতে কোন হাদীস শুনিয়াছেন কি? তিনি বলিলেন, তিনি তো দশটি বৎসর তাঁহার খেদমত করিয়াছেন। নবী (ﷺ) তাঁহার জন্য দো'আ করিয়াছেন। তাঁহার একটি বাগান ছিল, উহাতে বৎসরে দুইবার ফল আসিত এবং উহাতে এমন কিছু ফুল ছিল, যাহা হইতে মেশক-কস্তুরীর ঘ্রাণ আসিত। —তিরমিযী এবং তিনি বলেন, এই হাদীসটি হাসান গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৯৫৩

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৫৩। উরওয়া ইবনে যুবায়র (রহঃ) হইতে বর্ণিত যে, আরওয়া বিনতে আওস (নামক এক মহিলা তৎকালীন মদীনার শাসক) মারওয়ান ইবনে হাকামের কাছে সাঈদ ইবনে যায়দ ইবনে আমর ইবনে নোফাইলের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের করে এবং সে দাবী করে যে, তিনি তাহার কিছু যমীন দখল করিয়া নিয়াছেন। (এই অভিযোগের প্রতিবাদে) সাঈদ বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে এই সম্পর্কে একটি হাদীস শুনার পরও আমি কি তাহার যমীনের কিছু অংশ দখল করিতে পারি? তখন মারওয়ান বলিলেন, সেই হাদীসটি কি যাহা আপনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে শুনিয়াছেন? সাঈদ বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, যেই ব্যক্তি কাহারও এক বিঘত পরিমাণ জমি অন্যায়ভাবে কাড়িয়া লইবে, (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ্ তা'আলা উহাকে সাত তবক পর্যন্ত বেড়ী বানাইয়া তাহার গলায় ঝুলাইয়া দিবেন। এই কথা শুনিয়া মারওয়ান তাঁহাকে বলিলেন, এই হাদীস শোনার পর আমি আর কোন প্রমাণ আপনার নিকট হইতে চাহিব না। অতঃপর সাঈদ এই দো'আ করিলেন, হে আল্লাহ্! এই মহিলাটি যদি তাহার দাবীতে মিথ্যাবাদী হয়, তাহা হইলে আপনি তাহার চক্ষু অন্ধ করিয়া দিন এবং উক্ত জমিতেই তাহাকে ধ্বংস করুন। বর্ণনাকারী উরওয়া বলেন, মৃত্যুর পূর্বেই সেই মহিলাটি অন্ধ হইয়া গিয়াছিল এবং একদা সে তাহার উক্ত জমিতে হ্যাঁটিতেছিল, হঠাৎ সে তথায় একটি গর্তে পড়িয়া মৃত্যুবরণ করিল। —মোত্তাঃ
আর মুসলিমের এক রেওয়ায়ত, যাহা মুহাম্মাদ ইবনে যায়দ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে উক্ত হাদীসের মর্মার্থে বর্ণিত, (উহাতে এই কথাটিও উল্লেখ আছে যে,) তিনি (মুহাম্মাদ ইবনে যায়দ) উক্ত মহিলাটিকে অন্ধ অবস্থায় দেখিয়াছেন, সে দেওয়াল হাড়াইয়া চলিত এবং বলিত, আমার উপর সাঈদের বদ দো'আ লাগিয়াছে। অতঃপর একদা উক্ত মহিলাটি তাহার ঘরের সেই বিবাদময় জমির একটি কূপের নিকট দিয়া যাইতেই উহাতে পড়িয়া গেল এবং উহাই তাহার কবর হইল ।
আর মুসলিমের এক রেওয়ায়ত, যাহা মুহাম্মাদ ইবনে যায়দ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে উক্ত হাদীসের মর্মার্থে বর্ণিত, (উহাতে এই কথাটিও উল্লেখ আছে যে,) তিনি (মুহাম্মাদ ইবনে যায়দ) উক্ত মহিলাটিকে অন্ধ অবস্থায় দেখিয়াছেন, সে দেওয়াল হাড়াইয়া চলিত এবং বলিত, আমার উপর সাঈদের বদ দো'আ লাগিয়াছে। অতঃপর একদা উক্ত মহিলাটি তাহার ঘরের সেই বিবাদময় জমির একটি কূপের নিকট দিয়া যাইতেই উহাতে পড়িয়া গেল এবং উহাই তাহার কবর হইল ।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান