মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৩ টি
হাদীস নং: ৫৯৫৫
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
তৃতীয় অনুচ্ছেদ - কারামাত সম্পর্কে বর্ণনা
৫৯৫৫। নুবায়হা ইবনে ওয়াহব (রহঃ) বলেন, একদা হযরত কা'ব (রাঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট গেলেন। সেইখানে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সম্পর্কে আলোচনা হইতে থাকিলে হযরত কা'ব বলিলেন, এমন কোন দিন অতিবাহিত হয় না, যেইদিন ভোরে সত্তর হাজার ফিরিশতা আসমান হইতে অবতরণ করেন না। এমন কি তাহারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর রওযা শরীফকে বেষ্টন করিয়া নিজেদের পাখাকে বিছাইয়া দেন। (অর্থাৎ, এইভাবে বিনয় প্রকাশের মাধ্যমে রওযা শরীফের সম্মান প্রদর্শন করেন) এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর প্রতি দরূদ পাঠ করিতে থাকেন। অবশেষে সন্ধ্যা হইলে তাহারা উর্ধ্বে গমন করেন। আবার সেই পরিমাণ ফিরিশতা অবতরণ করেন এবং তাহারাও ঐরূপ করেন। (এই সিলসিলা চলিতে থাকিবে।) অবশেষে যখন যমীন ফাটিয়া যাইবে, তখন তিনি রওযা শরীফ হইতে সত্তর হাজার ফিরিশতার সমারোহে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হইবেন। —দারেমী
كتاب الفضائل والشمائل
وَعَنْ نُبَيْهَةَ بْنِ وَهْبٍ أَنَّ كَعْبًا دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ فَذَكَرُوا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ كَعْبٌ: مَا مِنْ يَوْمٍ يَطْلُعُ إِلَّا نَزَلَ سَبْعُونَ أَلْفًا مِنَ الْمَلَائِكَةِ حَتَّى يَحُفُّوا بِقَبْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَضْرِبُونَ بِأَجْنِحَتِهِمْ وَيُصَلُّونَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى إِذَا أَمْسَوْا عَرَجُوا وَهَبَطَ مِثْلُهُمْ فَصَنَعُوا مِثْلَ ذَلِكَ حَتَّى إِذَا انْشَقَّتْ عَنْهُ الْأَرْضُ خَرَجَ فِي سَبْعِينَ أَلْفًا مِنَ الْمَلَائِكَةِ يَزُفُّونَهُ. رَوَاهُ الدَّارِمِيُّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৯৫৬
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ওফাতের পর সাহাবীদের মক্কাহ্ হতে হিজরত করা সম্পর্কে
৫৯৫৬। হযরত বারা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের মধ্যে সর্বপ্রথম যাহারা হিজরত করিয়া মদীনায় আমাদের কাছে আসিয়াছিলেন, তাহারা হইলেন হযরত মুসআব ইবনে উমায়র এবং (আব্দুল্লাহ্) ইবনে উম্মে মাকতুম (রাঃ)। তাহারা দুইজন আসিয়াই আমাদিগকে কোরআন (মজীদ) শিক্ষা দিতে শুরু করিলেন। ইহার পর আসিলেন হযরত আম্মার, বেলাল ও সা'দ (রাঃ)। তারপর আসিলেন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশজন সাহাবীসহ হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)। অতঃপর (সর্বশেষে) আসিলেন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। (বর্ণনাকারী বারা বলেন, নাবীয়ে পাক (ছাঃ)-এর আগমনে আমি মদীনাবাসীকে এতবেশী আনন্দিত হইতে দেখিয়াছি যে, (ইহার পূর্বে) অন্য কোন জিনিসে তাহাদিগকে ততোটা আনন্দিত হইতে আর কখনও দেখি নাই। এমন কি,আমি দেখিয়াছি, মদীনার ছোট ছোট মেয়ে এবং ছেলেরা পর্যন্ত খুশীতে বলিতে লাগিল। ইনিই তো সেই আল্লাহর রাসুল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, যিনি আমাদের মাঝে আগমন করিয়াছেন। বারা (রাঃ) বলেন, তিনি আসিবার পূর্বেই আমি সুরা আলা ও অনুরূপ আরও কতিপয় ছোট ছোট সূরা শিখিয়া ফেলিয়াছিলাম। -বুখারী
كتاب الفضائل والشمائل
بَاب هِجْرَة أَصْحَابه صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من مَكَّة ووفاته: الْفَصْل الأول
عَن الْبَراء قَالَ: أَوَّلُ مَنْ قَدِمَ عَلَيْنَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ فَجَعَلَا يُقْرِآنِنَا الْقُرْآنَ ثُمَّ جَاءَ عَمَّارٌ وَبِلَالٌ وَسَعْدٌ ثُمَّ جَاءَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فِي عِشْرِينَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ جَاءَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَا رَأَيْتُ أَهْلَ الْمَدِينَةِ فَرِحُوا بِشَيْءٍ فَرَحَهُمْ بِهِ حَتَّى رَأَيْتُ الْوَلَائِدَ وَالصِّبْيَانَ يَقُولُونَ: هَذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ جَاءَ فَمَا جَاءَ حَتَّى قرأتُ: [سبِّح اسْم ربِّك الْأَعْلَى] فِي سُوَرٍ مِثْلِهَا مِنَ الْمُفَصَّلِ. رَوَاهُ البُخَارِيّ
তাহকীক:
হাদীস নং: ৫৯৫৭
- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায়
প্রথম অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ওফাতের পর সাহাবীদের মক্কাহ্ হতে হিজরত করা সম্পর্কে
৫৯৫৭। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাহার অন্তিমকালে) মিম্বরের উপর বসিয়া বলিলেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা তাহার এক বান্দাকে দুনিয়ার ভোগ-বিলাস ও আল্লাহর নিকট রক্ষিত নিয়ামত, এই দুইটির মধ্যে (যে কোন একটি গ্রহণ করিবার) এখতিয়ার দিয়াছেন। তখন ঐ বান্দা আল্লাহর নিকট (রক্ষিত) নিয়ামতকে (গ্রহণ করাই পছন্দ করিয়াছে। (রাবী বলেন, এই কথা শুনিয়া আবু বকর কাদিতে লাগিলেন এবং বলিলেন, (হে আল্লাহর রাসূল।) আমাদের পিতা ও মাতাকে আপনার জন্য উৎসর্গ করিলাম। রাবী বলেন, (তাহাকে কাঁদিতে দেখিয়া) আমরা আশ্চর্যান্বিত হইলাম এবং লোকেরা বলিতে লাগিল, এই বৃদ্ধের প্রতি লক্ষ্য কর, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো কোন একজন বান্দা সম্পর্কে খবর দিতেছেন যে, তাহাকে দুনিয়ার ভোগ-বিলাস অথবা আল্লাহর কাছে রক্ষিত নিয়ামত, এই দুইটি জিনিসের মধ্যে যে কোন একটি গ্রহণ করিবার এখতিয়ার দিয়াছেন এবং এই ব্যক্তি বলিতেছেন, আমরা আমাদের পিতা-মাতাকে আপনার উপর কোরবান করিতেছি। (রাবী বলেন,) এবং পরে আমরা বুঝিতে পারিলাম, সেই এখতিয়ারপ্রাপ্ত বান্দা ছিলেন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর আবু বকর ছিলেন আমাদের সকলের চাইতে অধিক জ্ঞানী। মোত্তাঃ
كتاب الفضائل والشمائل
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ: «إِنَّ عَبْدًا خَيَّرَهُ اللَّهُ بَيْنَ أَنْ يُؤْتِيَهُ مِنْ زَهْرَةِ الدُّنْيَا مَا شَاءَ وَبَيْنَ مَا عِنْدَهُ فَاخْتَارَ مَا عِنْدَهُ» . فَبَكَى أَبُو بَكْرٍ قَالَ: فَدَيْنَاكَ بِآبَائِنَا وَأُمَّهَاتنَا فعجبنا لَهُ فَقَالَ النَّاس: نظرُوا إِلَى هَذَا الشَّيْخِ يُخْبِرُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ عَبْدٍ خَيَّرَهُ اللَّهُ بَيْنَ أَنْ يُؤْتِيَهُ مِنْ زَهْرَةِ الدُّنْيَا وَبَيْنَ مَا عِنْدَهُ وَهُوَ يَقُولُ: فَدَيْنَاكَ بِآبَائِنَا وَأُمَّهَاتِنَا فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَ الْمُخَير وَكَانَ أَبُو بكر هُوَ أعلمنَا. مُتَّفق عَلَيْهِ
তাহকীক: