মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৩০- নবীজী সাঃ এর মর্যাদা ও শামাঈল অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৯ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৭৮৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৮৫। হযরত আবু তোফায়েল (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখিয়াছি। তিনি ছিলেন গৌর বর্ণের লাবণ্যময় এবং তিনি ছিলেন মধ্যম গড়নের (অর্থাৎ, প্রত্যেকটির মধ্যে পরস্পর সামঞ্জস্য ছিল)। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৮৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৮৬। হযরত সাবেত বলেন, একদা হযরত আনাস (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেযাব লাগান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল। জবাবে তিনি বলিলেন, তাহার চুল এমন সাদা হয় নাই যে, উহাতে খেযাব লাগাইতে হইবে। যদি আমি তাঁহার সাদা দাড়িগুলি গুনিয়া দেখিতে চাহিতাম, তবে অনায়াসে গুনিতে পারিতাম। অপর এক রেওয়ায়তে আছে—আমি তাহার মাথার সাদা চুলগুলি গুনিয়া দেখিতে চাহিলে অনায়াসে শুনিতে পারিতাম। —মোত্তাঃ। আর মুসলিমের এক রেওয়ায়তে আছে হযরত আনাস (রাঃ) বলিয়াছেন, নবী (ছাঃ)-এর ঠোটের নীচের পশমে, চোখ ও কানের মধ্যবর্তী পশমে শুভ্রতা ছিল এবং মাথার মধ্যেও কয়েকটি চুল সাদা হইয়াছিল।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৮৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৮৭। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৌরব বর্ণের ছিলেন। তাঁহার ঘর্ম ছিল মুক্তার ন্যায়। হ্যাঁটার সময় তিনি সম্মুখের দিকে কিছুটা ঝুঁকিয়া চলিতেন এবং আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতের তালু অপেক্ষা অধিকতর কোমল কোন রেশম কিংবা কোন গরদ স্পর্শ করি নাই। আর নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শরীরের সুগন্ধ অপেক্ষা অধিকতর সুগন্ধ কস্তুরী কিংবা মেশকে আম্বর আমি কখনও শুকি নাই। — মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৮৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৮৮। হযরত উম্মে সুলাইম (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া হইতে বাি তখন উতে সাল্লাম প্রায়শঃ তাহাদের সেখানে আসিতেন এবং দ্বিপ্রহরে তথায় বিশ্রাম করিতেন। তখন উন্মে সুলাইম তাঁহার জন্য একখানা চামড়ার ফরশ বিছাইয়া দিতেন এবং হুযূর (ছাঃ) উহাতেই বিশ্রাম করিতেন। নবী (ছাঃ)-এর শরীর মোবারক হইতে অত্যধিক ঘর্ম বাহির হইত। আর উম্মে সুলাইম তাঁহার ঘর্মগুলি একত্রিত করিয়া আতর বা সুগন্ধির মধ্যে মিলাইয়া রাখিতেন। তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করিলেন, হে উম্মে সুলাইম। তুমি ইহা কি করিতেছ? তিনি বলিলেন, ইহা আপনার শরীরের ঘাম। ইহাকে আমরা আমাদের সুগন্ধির সহিত মিশ্রিত করিব। বস্তুতঃ ইহা সর্বোত্তম সুগন্ধি। অপর এক বর্ণনায় আছে—উম্মে সুলাইম বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! ইহাতে আমরা আমাদের বাচ্চাদের জন্য (ব্যবহারের মাধ্যমে) বরকতের আশা করি। তখন হুযুর (ছাঃ) বলিলেন: তুমি ঠিকই করিয়াছ। – মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৮৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৮৯। হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিত প্রথম নামায (অর্থাৎ, যোহরের নামায) আদায় করিলাম। অতঃপর তিনি ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মসজিদ হইতে বাহির হইলেন এবং আমিও তাঁহার সঙ্গে বাহির হইলাম। এই সময় কতিপয় শিশু তাঁহার সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত হইল। তখন তিনি এক একটি 'করিয়া প্রতিটি শিশুর গালে হাত ফিরাইয়া দিলেন। অবশেষে আমার উভয় গালেও হাত ফিরাই লেন, তখন আমি তাঁহার হাতের শীতলতা ও সুগন্ধি অনুভব করিলাম। উহা (তাঁহার হাতখানা) এমন সুগন্ধময় ছিল যে, যেন উহাকে কোন আতরের ডিব্বা হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছেন। —মুসলিম। এই প্রসঙ্গে জাবের বর্ণিত হাদীস' নামসমূহের অধ্যায়ে এবং সায়েব ইবনে ইয়াযীদের বর্ণিত হাদীস ll পানির বিধানের অধ্যায়ে বর্ণিত হইয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৯০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৯০। হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) লম্বাও ছিলেন না এবং খাটও ছিলেন না। তাঁহার মাথা ছিল বড় এবং দাড়ি ছিল ঘন। হস্তদ্বয়ের এবং উভয় পায়ের তালু ছিল পুরু। তাঁহার গায়ের রং ছিল লাল-মিশ্রিত। হাড়ের জোড়াসমূহ ছিল মোটা মোটা। রক্ষের উপরে নাভি পর্যন্ত পশমের সরু একটি রেখা ছিল। চলার সময় সম্মুখের দিকে ঝুঁকিয়া চলিতেন, যেন তিনি কোন উচ্চস্থান হইতে নীচের দিকে নামিতেছেন। মোটকথা, নবী (ﷺ)-এর পূর্বে বা পরে তাঁহার মত (সুগঠন ও সুন্দর) কোন মানুষকে আমি দেখিতে পাই নাই। —তিরমিযী। তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি হাসান, ও সহীহ।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৯১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৯১। হযরত আলী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি যখনই নবী (ﷺ)-এর আকৃতির বর্ণনা দিতেন, তখন বলিতেন, তিনি অত্যধিক লম্বাও ছিলেন না এবং একেবারে খাটও ছিলেন না; বরং তিনি ছিলেন লোকদের মধ্যে মধ্যম গড়নের। তাঁহার মাথার চুল একেবারে কোঁকড়ানো ছিল না এবং সম্পূর্ণ সোজাও ছিল না; বরং মধ্যম ধরনের কোঁকড়ানো ছিল। তিনি অতি স্থূলদেহী ছিলেন না এবং তাঁহার চেহারা একেবারে গোল ছিল না; বরং লম্বাটে গোল ছিল। গায়ের রং ছিল লাল-সাদা সংমিশ্রিত। চক্ষুর বর্ণ ছিল কাল এবং পলক ছিল লম্বা লম্বা। হাড়ের জোড়াগুলি ছিল মোটা। গোটা শরীর ছিল পশমহীন, অবশ্য পশমের চিকন একটি রেখা বক্ষ হইতে নাভি পর্যন্ত লম্বা ছিল। হস্তদ্বয় ও পদদ্বয়ের তালু ছিল মাংসে পরিপূর্ণ। যখন তিনি হাঁটিতেন তখন পা পূর্ণভাবে উঠাইয়া যমীনে রাখিতেন, যেন তিনি কোন উচ্চ স্থান হইতে নিম্নের দিকে নামিতেছেন। যখন তিনি কোন দিকে তাকাইতেন তখন ঘাড় পূর্ণ ফিরাইয়া তাকাইতেন। তাঁহার উভয় কাঁধের মাঝখানে ছিল মোহরে নবুওত। বস্তুতঃ তিনি ছিলেন 'খাতেমুন নাবিয়্যীন' (নবী আগমনের সিলসিলা সমাপ্তকারী)। তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে আন্তরিকভাবে অধিক দাতা, সর্বাপেক্ষা সত্যভাষী। তিনি ছিলেন সর্বাপেক্ষা কোমল স্বভাবের এবং বংশের দিক দিয়া ছিলেন সম্ভ্রান্ত। যে ব্যক্তি তাঁহাকে হঠাৎ দেখিত, সে ভয় পাইত। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পরিচিত হইয়া তাঁহার সহিত মেলামেশা করিত, সে তাঁহাকে অতি ভালবাসিতে লাগিত। হুযূর (ﷺ)-এর গুণাবলী বর্ণনাকারী এই কথা বলিতে বাধ্য হন যে, আমি তাঁহার পূর্বে ও পরে তাঁহার মত ((ﷺ)) কাহাকেও কখনও দেখিতে পাই নাই। —তিরমিযী
ধ্য হন যে, আমি তার পূর্বে ও পরে তাঁর মতো কাউকেও কখনো দেখতে পাইনি। (তিরমিযী)
ধ্য হন যে, আমি তার পূর্বে ও পরে তাঁর মতো কাউকেও কখনো দেখতে পাইনি। (তিরমিযী)

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৯২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৯২। হযরত জাবের (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) যেই রাস্তা দিয়া চলিয়া যাইতেন, পরে কেহ সেই পথে গেলে সে অনায়াসে বুঝিতে পারিত যে, নবী (ﷺ) উক্ত পথে গমন করিয়াছেন। আর উহা তাঁহার গায়ের সুগন্ধির কারণে অথবা (রাবী বলিয়াছেন) তাঁহার ঘর্মের ঘ্রাণের কারণে। — দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৭৯৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবী (সা.) -এর নামসমূহ ও গুণাবলি
৫৭৯৩। হযরত আবু উবায়দা ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) বলেন, আমি রুবায়্যি' বিনতে মু'আব্বিয ইবনে আফরা (রাঃ)-কে বলিলাম, আমাদিগকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আকৃতি সম্পর্কে কিছু বলুন। জওয়াবে তিনি বলিলেন, হে বৎস! যদি তুমি তাঁহাকে দেখিতে, তাহা হইলে তোমার এমনই ধারণা হইত যে, সূর্য উদিত হইয়াছে। —দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান