মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২৯- সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামত পরবর্তী বর্ণনা - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৩ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৫৬৪২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪২। হযরত বুরাইদা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! বেহেশতে ঘোড়া পাওয়া যাইবে কি? তিনি বলিলেনঃ যদি আল্লাহ্ তা'আলা তোমাকে বেহেশতে প্রবেশ করান আর তুমি ঘোড়ায় সওয়ার হইবার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ কর, তখন তোমাকে লাল বর্ণের মুক্তার ঘোড়ায় সওয়ার করান হইবে এবং তুমি বেহেশতের যথায় যাওয়ার ইচ্ছা করিবে ঘোড়া তোমাকে দ্রুত উড়াইয়া তথায় লইয়া যাইবে। আর এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করিল; ইয়া রাসূলাল্লাহ্! বেহেশতে উট পাওয়া যাইবে কি? বর্ণনাকারী বলেন, তিনি পূর্বের ব্যক্তিকে যেইভাবে উত্তর দিয়াছেন, এই ব্যক্তিকে সেইভাবে উত্তর না দিয়া বলিলেন; যদি আল্লাহ্ তাআলা তোমাকে বেহেশতে প্রবেশ করান, তবে তুমি সেই সমস্ত জিনিস পাইবে, যাহাকিছু তোমার মনে চাহিবে এবং তোমার নয়ন জুড়াইবে। — তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৪৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪৩। হযরত আবু আইউব (রাঃ) বলেন, একদা এক বেদুইন নবী (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ঘোড়াকে খুব বেশী পছন্দ করি, বেহেশতে ঘোড়া আছে কি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিলেনঃ যদি তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান হয়, তবে তোমাকে মুক্তার তৈয়ারী এমন একটি ঘোড়া দেওয়া হইবে, যাহার দুইটি ডানা রহিয়াছে, তোমাকে উহার উপরে সওয়ার করান হইবে। অতঃপর তুমি যেখানে যাইতে চাহিবে, উহা উড়াইয়া তোমাকে তথায় লইয়া যাইবে। – তিরমিযী এবং তিনি বলিয়াছেন, এই হাদীসটির সনদ নির্ভরযোগ্য নহে। ইহাতে বর্ণনাকারী আবু সাওরাকে হাদীস বর্ণনায় দুর্বল গণ্য করা হয়। ইমাম তিরমিযী আরও বলিয়াছেন; আমি মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারীকে বলিতে শুনিয়াছি, আবু সাওরা ‘মুনকারুল হাদীস', তিনি মুনকার হাদীস বর্ণনা করেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৪৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪৪। হযরত বুরাইদা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতবাসীদের একশত বিশ কাতার হইবে। তন্মধ্যে আশি কাতার হইবে এই উম্মতের আর অবশিষ্ট চল্লিশ কাতার হইবে অন্যান্য উম্মতের। —তিরমিযী, দারেমী ও বায়হাকী তাহার কিতাবুল বা'ছে ওয়ানুশূরে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৪৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪৫। হযরত সালেম তাঁহার পিতা [ইবনে উমর (রাঃ)] হইতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমার উম্মত বেহেশতের যেই দ্বার দিয়া প্রবেশ করিবে, উহার প্রশস্ততা হইবে উত্তম অশ্বারোহীর তিন দিন অথবা তিন বৎসরের পথের দূরত্ব। এতদসত্ত্বেও দরজা অতিক্রমের সময় এত ভীড় হইবে যে, ধাক্কার চোটে তাহাদের কাঁধ ভাঙ্গিয়া যাওয়ার উপক্রম হইবে। —তিরমিযী, আর তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি যঈফ। তিনি আরও বলেন, আমি মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী (রহঃ)-কে অত্র হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি হাদীসটি সম্পর্কে অবগত নন বলিয়া ব্যক্ত করিয়াছেন এবং বলিয়াছেন, অধস্তন রাবী ইয়াদ ইবনে আবু বকর মুনকার হাদীস বর্ণনা করেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৪৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪৬। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ জান্নাতে একটি বাজার রহিয়াছে, সেখানে ক্রয়-বিক্রয় নাই; বরং উহাতে নারী-পুরুষদের আকৃতিসমূহ থাকিবে। সুতরাং যখনই কেহ কোন আকৃতিকে পছন্দ করিবে, তখন সে সেই আকৃতিতে প্রবেশ করিবে (অর্থাৎ, রূপান্তরিত হইবে)। —তিরমিযী। তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৪৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪৭। সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যেব (রহঃ) হইতে বর্ণিত, একদা তিনি হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ)-এর সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। তখন আবু হোরায়রা (রাঃ) বলিলেন, আমি আল্লাহর কাছে এই দো'আ করি, তিনি যেন আমাকে ও তোমাকে বেহেশতের বাজারে একত্রিত করেন। তখন সাঈদ বলিলেন, সেখানে কি বাজারও আছে? তিনি জবাবে বলিলেন, হ্যাঁ, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতবাসীগণ যখন বেহেশতে প্রবেশ করিবে, তখন তাহারা নিজ নিজ আমলের মান অনুযায়ী স্থান লাভ করিবে। অতঃপর দুনিয়ার দিনগুলির হিসাব ও পরিমাণ অনুযায়ী সপ্তাহের জুমআর দিন তাহাদিগকে একটি বিশেষ অনুমতি প্রদান করা হইবে; আর উহা হইল তাহারা তাহাদের পরওয়ারদিগারের সাক্ষাৎ লাভ করিবে। সেই দিন আল্লাহ্ তা'আলা তাহার আশকে জনসমক্ষে উন্মুক্ত করিয়া দিবেন এবং বেহেশতবাসীদের সম্মুখে বেহেশতের বৃহৎ কাননসমূহের একটি কাননে আত্মপ্রকাশ করিবেন এবং বেহেশতবাসীদের জন্য তাহাদের মান ও মর্যাদা অনুপাতে নূরের, মণি-মুক্তার, যমররদের এবং সোনা-চান্দির মিম্বর স্থাপন করা হইবে। তাহাদের মধ্যে মামুলী মর্যাদাবান ব্যক্তি—অথচ বেহেশতীদের মধ্যে কেহ হীন হইবে না—কাফুর-কস্তুরীর টিলার উপর উপবেশন করিবে। এই সমস্ত টিলায় উপবেশনকারীগণ কুরসী বা আসনে উপবেশনকারীগণকে নিজেদের অপেক্ষা অধিক মর্যাদালাভকারী বলিয়া ধারণা করিবে না। (অর্থাৎ, প্রত্যেক জান্নাতী আপন স্থানে সন্তুষ্ট থাকিবে।) আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করিলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা কি আমাদের পরওয়ারদিগারকে দেখিতে পাইব? তিনি বলিলেন ; হ্যাঁ, দেখিতে পাইবে। আচ্ছা বল দেখি ! সূর্য এবং পূর্ণিমার রাত্রে চাঁদ দেখিতে তোমাদের কোন প্রকারের সন্দেহ হয় ? আমরা বলিলাম, না। কোন সন্দেহ হয় না। হুযূর (ﷺ) বলিলেন ; অনুরূপভাবে তোমাদের রবকে দেখিতে তোমাদের কোন রকমের সন্দেহ হইবে না এবং উক্ত মজলিসে এমন কোন লোক অবশিষ্ট থাকিবে না, যাহার সহিত আল্লাহ্ তা'আলা সরাসরি কথা বলিবেন না। এমন কি আল্লাহ্ তা'আলা উপস্থিত এক ব্যক্তিকে বলিবেনঃ হে অমুকের পুত্র অমুক! তোমার কি স্মরণ আছে যে, অমুক দিন তুমি এই এই কথাটি বলিয়াছিলে? মোটকথা, দুনিয়াতে সে যেই সমস্ত অপরাধ করিয়াছিল উহার কিছু কিছু তাহাকে আল্লাহ্ তা'আলা স্মরণ করাইয়া দিবেন। তখন সে বলিবে, হে আমার রব! তুমি কি আমাকে ক্ষমা করিয়া দাও নাই? আল্লাহ্ বলিবেনঃ হ্যাঁ, নিশ্চয়। আমার ক্ষমার বদৌলতেই তুমি আজ এই মর্যাদার অধিকারী হইয়াছ। ফলকথা, তাহারা এই অবস্থায় থাকিতেই এক খণ্ড মেঘ আসিয়া তাহাদিগকে উপর হইতে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিবে এবং উহা তাহাদের উপর এমন সুগন্ধি বর্ষণ করিবে যে, অনুরূপ সুগন্ধি তাহারা আর কখনও পায় নাই। অতঃপর আল্লাহ্ তা'আলা বলিবেন, তোমরা উঠ এবং উহার দিকে চল, যাহা আমি তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত করিয়া রাখিয়াছি। আর তোমাদের মনে যাহা যাহা চায় উহা হইতে নিয়া নাও অতঃপর আমরা এমন একটি বাজারে আসিব, যাহাকে ফেরেস্তাগণ বেষ্টন করিয়া রাখিয়াছেন। উহাতে এমন সব জিনিস রক্ষিত থাকিবে— যাহা মানব চক্ষু কখনও দেখিতে পায় নাই, উহার সংবাদ কর্ণে শুনিতে পায় নাই, এমন কি মানুষের অন্তরও কল্পনা করিতে পারে নাই। সুতরাং আমাদিগকে সেই বাজার হইতে এমন সব কিছু দেওয়া হইবে যাহা যাহা আমরা পছন্দ করিব, অথচ উক্ত বাজারে কোন জিনিসই বেচা-কেনা হইবে না; বরং তথায় বেহেশতীগণ একজন অন্য জনের সহিত সাক্ষাৎ করিবে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন, সেই বাজারে একজন উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি একজন মামুলী ধরনের ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করিবে— অবশ্য বেহেশতীদের মধ্যে কেহ হীন নহে। তখন সে তাহার পোশাক-পরিচ্ছদ দেখিয়া আশ্চর্যান্বিত হইবে কিন্তু তাহার কথা শেষ হইতে না হইতেই সে অনুভব করিবে যে, তাহার পোশাক উহার চাইতে আরও উত্তম হইয়া গিয়াছে। আর ইহা এই জন্য যে, বেহেশতে কোন ব্যক্তির অনুতপ্ত ও দুশ্চিন্তায় পতিত হওয়ার অবকাশ থাকিবে না। অতঃপর (উক্ত বাজার ও পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ শেষ করিয়া) আমরা আপন আপন বাসস্থানের দিকে প্রত্যাবর্তন করিব। এই সময় আমাদের স্ত্রীগণ আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করিবে এবং বলিবে, মারহাবা, খোশ আমদেদ ! বস্তুতঃ যখন তোমরা আমাদের নিকট হইতে পৃথক হইয়াছিলে, সেই অবস্থা অপেক্ষা এখন তোমরা আরও অধিক খুবসুরত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত হইয়া আমাদের নিকটে ফিরিয়া আসিয়াছ। তখন আমরা বলিব, আজ আমরা আমাদের মহা পরাক্রমশালী পরওয়ারদিগারের সাথে বসার সৌভাগ্য লাভ করিয়াছি। কাজেই এই মর্যাদার অধিকারী হইয়া প্রত্যাবর্তন করা আমাদের জন্য যথার্থ উপযোগী হইয়াছে এবং এইরূপ হওয়াই বাঞ্ছনীয় ছিল। তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্। ইমাম তিরমিযী বলিয়াছেন হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৪৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪৮। হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ নিম্নমানের জান্নাতবাসীর জন্য আশি হাজার খাদেম এবং বাহাত্তর জন স্ত্রী হইবে, তাহার জন্য গম্বুজ আকৃতির ছাউনি স্থাপন করা হইবে, যাহা মণি-মুক্তা, হীরা ও ইয়াকুত দ্বারা নির্মিত। উক্ত ছাউনির প্রশস্ততা হইবে জাবিয়া হইতে সাআ পর্যন্ত মধ্যবর্তী দূরত্বের পরিমাণ।
উক্ত সনদে আরও বর্ণিত হইয়াছে—রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ ছোট বয়সে কিংবা বৃদ্ধ বয়সে যে কোন বেহেশতী লোক (দুনিয়াতে) মারা যাইবে, সে বেহেশতে ত্রিশ বৎসর বয়সী (যুবক) হইয়া জান্নাতে প্রবেশ করিবে। এবং এই বয়স (-এর আকৃতি) কখনও বৃদ্ধি পাইবে না। দোযখবাসীরাও অনুরূপ ( ৩০ বৎসর বয়সী) হইবে।
উক্ত সনদে অপর এক বর্ণনায় আছে—হুযূর (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতবাসীদের মাথায় এমন মুকুট রাখা হইবে, যাহার মামুলী মুক্তা দুনিয়ার পূর্ব প্রান্ত হইতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত আলোকিত করিবে।
অত্র সনদে অপর এক বর্ণনায় আছে—নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতবাসী যখন বেহেশতে সন্তান কামনা করিবে, তখন গর্ভ, প্রসব এবং তাহার বয়স চাহিদা অনুযায়ী মুহূর্তের মধ্যে সংঘটিত হইয়া যাইবে। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম বলেন, মু'মেন যখনই বেহেশতে সন্তানের আকাঙ্ক্ষা করিবে, তখনই সে সন্তান পাইবে, তবে কেহই এই আকাঙ্ক্ষা করিবে না। —তিরমিযী। তিনি বলিয়াছেন হাদীসটি গরীব। ইবনে মাজাহ্ চতুর্থটি আর দারেমী কেবলমাত্র শেষ অংশটি বর্ণনা করিয়াছেন।
উক্ত সনদে আরও বর্ণিত হইয়াছে—রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ ছোট বয়সে কিংবা বৃদ্ধ বয়সে যে কোন বেহেশতী লোক (দুনিয়াতে) মারা যাইবে, সে বেহেশতে ত্রিশ বৎসর বয়সী (যুবক) হইয়া জান্নাতে প্রবেশ করিবে। এবং এই বয়স (-এর আকৃতি) কখনও বৃদ্ধি পাইবে না। দোযখবাসীরাও অনুরূপ ( ৩০ বৎসর বয়সী) হইবে।
উক্ত সনদে অপর এক বর্ণনায় আছে—হুযূর (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতবাসীদের মাথায় এমন মুকুট রাখা হইবে, যাহার মামুলী মুক্তা দুনিয়ার পূর্ব প্রান্ত হইতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত আলোকিত করিবে।
অত্র সনদে অপর এক বর্ণনায় আছে—নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতবাসী যখন বেহেশতে সন্তান কামনা করিবে, তখন গর্ভ, প্রসব এবং তাহার বয়স চাহিদা অনুযায়ী মুহূর্তের মধ্যে সংঘটিত হইয়া যাইবে। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম বলেন, মু'মেন যখনই বেহেশতে সন্তানের আকাঙ্ক্ষা করিবে, তখনই সে সন্তান পাইবে, তবে কেহই এই আকাঙ্ক্ষা করিবে না। —তিরমিযী। তিনি বলিয়াছেন হাদীসটি গরীব। ইবনে মাজাহ্ চতুর্থটি আর দারেমী কেবলমাত্র শেষ অংশটি বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৪৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৪৯। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতের হুরগণ এক জায়গায় সমবেত হইয়া বুলন্দ আওয়াজে এমন সুন্দর লহরীতে গাহিবে, সৃষ্ট জীব সেই ধরনের লহরী কখনও শুনিতে পায় নাই। তাহারা বলিবে, আমরা চিরদিন থাকিব, কখনও ধ্বংস হইব না। আমরা হামেশা সুখে-সানন্দে থাকিব, কখনও দুঃখ-দুশ্চিন্তায় পতিত হইব না। আমরা সর্বদা সন্তুষ্ট থাকিব, কখনও নাখোশ হইব না। সুতরাং তাহাকে ধন্যবাদ, যাহার জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যিনি। -তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৫০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৫০। হযরত হাকীম ইবনে মুআবিয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ বেহেশতে রহিয়াছে পানির সমুদ্র, মধুর সমুদ্র, দুধের সমুদ্র এবং শরাবের সমুদ্র। অতঃপর উহা হইতে আরও বহু নদী প্রবাহিত হইবে। —তিরমিযী,

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৫১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৫১। আর দারিমী হাদীসটি মু’আবিয়াহ্ (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৫২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ
৫৬৫২। হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলিয়াছেনঃ কোন বেহেশতী ব্যক্তি সত্তরটি গা-তাকিয়ায় হেলান দিয়া বসিবে। ইহা শুধু তাহার একই স্থান থাকিবে। অতঃপর একজন মহিলা (হুর) আসিয়া তাহার কাঁধে টোকা দিবে, তখন সে উক্ত মহিলার দিকে ফিরিয়া চাহিবে, তাহার চেহারার উজ্জ্বলতা আয়না অপেক্ষা অধিক স্বচ্ছ হইবে এবং তাহার গায়ে রক্ষিত মামুলী মুক্তার আলো পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থানকে উজ্জ্বল করিয়া ফেলিবে। মহিলাটি উক্ত পুরুষটিকে সালাম করিবে, সে সালামের জওয়াব দিয়া জিজ্ঞাসা করিবে, তুমি কে ? মহিলাটি উত্তরে বলিবে, আমি ‘অতিরিক্তের অন্তর্ভুক্ত'। তাহার পরনে রং-বেরংয়ের সত্তরখানা কাপড় থাকিবে এবং উহার ভিতর দিয়াই তাহার পায়ের নলার মজ্জা দেখা যাইবে। আর তাহার মাথায় এমন মুকুট হইবে, যাহার নিম্নমানের মুক্তার আলো পূর্ব হইতে পশ্চিম প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থান রৌশন করিয়া দিবে। —আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৫৯

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তাআলার দর্শনলাভ
৫৬৫৯। হযরত আবু যর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি কি (মে'রাজের রাত্রে) আপনার পরওয়ারদিগারকে দেখিয়াছেন? জবাবে তিনি বলিলেনঃ তিনি তো এক বিরাট জ্যোতি বা আলো, সুতরাং আমি তাঁহাকে কিভাবে দেখিতে পারি ? – মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৫৬৬০

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তাআলার দর্শনলাভ
৫৬৬০। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى. . . . وَلَقَدْ رَآهُ نزلة أُخْرَى এই আয়াতের তাফসীর বা ব্যাখ্যায় বলিয়াছেন—হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) অন্তর-চক্ষু দ্বারা আল্লাহ্ পাককে দুইবার দেখিয়াছেন। মুসলিম আর তিরমিযীর রেওয়ায়তে আছে—উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলিলেন, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার রবকে দেখিয়াছেন। ইকরামা বলেন, আমি ইবনে আব্বাসকে প্রশ্ন করিলাম, আল্লাহ্ তাআলা কি বলেন নাই— لَا تُدْرِكُهُ الْأَبْصَارُ وَهُوَ يدْرك الْأَبْصَار (অর্থাৎ, চক্ষুসমূহ তাঁহাকে দেখিতে পারে না, কিন্তু তিনি চক্ষুসমূহকে দেখিতে পান।) উত্তরে ইবনে আব্বাস বলিলেন, তোমার প্রতি আক্ষেপ। আরে! উহা তো সেই সময়ের ব্যাপারে বলা হইয়াছে, যখন আল্লাহ্ পাক তাঁহার বিশেষ জ্যোতিতে আত্মপ্রকাশ করিবেন (তখন তাঁহাকে দেখা সম্ভব নহে)। তবে মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁহার পরওয়ারদিগারকে (স্বাভাবিক অবস্থায়) দুইবার দেখিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান