মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

২৬- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস ১০ টি

হাদীস নং: ৫১০০
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
১৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নম্রতা, লজ্জাশীলতা ও উত্তম স্বভাব
৫১০০। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আমি কি তোমাদিগকে বলিয়া দিব না তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি কে ?
তাঁহারা বলিলেন হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। তিনি বলিলেনঃ তোমাদের মধ্যে তিনিই সর্বোত্তম—যিনি বয়সে বড় এবং স্বভাব-চরিত্রে ভাল। – আহমদ
كتاب الآداب
وَعَنْ أَبِي

هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا أُنْبِئُكُمْ بِخِيَارِكُمْ؟» قَالُوا: بَلَى. قَالَ: «خِيَارُكُمْ أَطْوَلُكُمْ أَعْمَارًا وَأَحْسَنُكُمْ أَخْلَاقًا» رَوَاهُ أَحْمد
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৫১০১
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
১৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নম্রতা, লজ্জাশীলতা ও উত্তম স্বভাব
৫১০১। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যাহার চরিত্র উত্তম সে-ই পরিপূর্ণ ঈমানদার। –আবু দাউদ ও দারেমী
كتاب الآداب
وَعَنْهُ

قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد والدارمي
হাদীস নং: ৫১০২
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
১৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নম্রতা, লজ্জাশীলতা ও উত্তম স্বভাব
৫১০২। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি আবু বকর (রাঃ)-কে গালি দিল। এই সময় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বসা ছিলেন এবং আশ্চর্যান্বিত হইয়া মৃদু হাসিতেছিলেন। লোকটি যখন আরও বেশী গালি দিতে লাগিল তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) তাহার কোন কোন কথার প্রতিবাদ করিলেন। ইহাতে নবী (ﷺ) রাগান্বিত হইয়া উঠিয়া চলিয়া গেলেন। তখন আবু বকরও তাঁহার পিছনে পিছনে গেলেন এবং বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। সে আমাকে গালি দিতেছিল তখন তো আপনি বসা ছিলেন। আর যখন আমি তাহার কোন কোন কথার প্রত্যুত্তর করিলাম তখন আপনি রাগ করিয়া উঠিয়া আসিলেন ? তিনি বলিলেনঃ তোমার সাথে একজন ফিরিশতা ছিলেন, যিনি ঐ লোকটির জওয়াব দিতেছিলেন। আর যখন তুমি নিজেই তাহার উত্তর দিতে লাগিলে তখন তোমাদের মাঝে শয়তান ঢুকিয়া গেল। অতঃপর তিনি বলিলেনঃ হে আবু বকর! এমন তিনটি ব্যাপার আছে যে, উহার প্রত্যেকটি অকাট্য সত্য। (১) যেই বান্দার উপর কোন প্রকার যুগ্ম করা হয়, আর সে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উহার কোনই প্রতিবাদ করে না, আল্লাহ্ তা'আলা তাহার সম্মান বৃদ্ধি করেন এবং তাহার সাহায্য করেন। (২) যে ব্যক্তি আত্মীয়-স্বজনদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে দানের দ্বার উন্মুক্ত করিয়া দেয়, আল্লাহ্ তা'আলা তাহার ধন-সম্পদ আরও বৃদ্ধি করিয়া দেন। (৩) যে ব্যক্তি ভিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করে এবং ইহার দ্বারা ধন-সম্পদ বৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা রাখে, তখন আল্লাহ্ তা'আলা ইহার কারণে উহা আরও কমাইয়া দেন। – আহমদ
كتاب الآداب
وَعَنْهُ

أَنَّ رَجُلًا شَتَمَ أَبَا بَكْرٍ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسٌ يَتَعَجَّبُ وَيَتَبَسَّمُ فَلَمَّا أَكْثَرَ رَدَّ عَلَيْهِ بَعْضَ قَوْلِهِ فَغَضِبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَامَ فَلَحِقَهُ أَبُو بَكْرٍ وَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ كَانَ يَشْتُمُنِي وَأَنْتَ جَالِسٌ فَلَمَّا رَدَدْتُ عَلَيْهِ بَعْضَ قَوْلِهِ غَضِبْتَ وَقُمْتَ. قَالَ: «كَانَ مَعَكَ مَلَكٌ يَرُدُّ عَلَيْهِ فَلَمَّا رَدَدْتَ عَلَيْهِ وَقَعَ الشَّيْطَانُ» . ثُمَّ قَالَ: يَا أَبَا بَكْرٍ ثَلَاثٌ كُلُّهُنَّ حقٌّ: مَا منْ عبدٍ ظلم بمظلمة فِي غضي عَنْهَا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ إِلَّا أَعَزَّ اللَّهُ بِهَا نَصْرَهُ وَمَا فَتَحَ رَجُلٌ بَابَ عَطِيَّةٍ يُرِيدُ بِهَا صِلَةً إِلَّا زَادَ اللَّهُ بِهَا كَثْرَةً وَمَا فَتَحَ رَجُلٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ يُرِيدُ بِهَا كَثْرَةً إِلَّا زَادَ اللَّهُ بِهَا قِلَّةً . رَوَاهُ أَحْمد
হাদীস নং: ৫১০৩
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
১৯. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - নম্রতা, লজ্জাশীলতা ও উত্তম স্বভাব
৫১০৩। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা যেই ঘরের বাসিন্দাদের জন্য উপকার করিতে চান তাহাদের মধ্যে কোমলতাদান করেন। আর যেই ঘরের বাসিন্দাদের প্রতি ক্ষতির ইচ্ছা করেন তাহাদিগকে উহা হইতে বঞ্চিত রাখেন। —বায়হাকী
كتاب الآداب
وَعَنْ عَائِشَةَ

قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يُرِيدُ اللَّهُ بِأَهْلِ بَيْتٍ رِفْقًا إِلَّا نَفَعَهُمْ وَلَا يَحْرِمُهُمْ إِيَّاهُ إِلَّا ضَرَّهُمْ «. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي» شُعَبِ الْإِيمَانِ
হাদীস নং: ৫১০৪
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১০৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একদা জনৈক ব্যক্তি নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলিল, আমাকে উপদেশ দিন। তিনি বলিলেনঃ রাগ করিও না। সে কয়েকবার একই কথা জিজ্ঞাসা করিল, আর হুযূর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও প্রত্যেকবার একই জবাব দিলেনঃ তুমি রাগ করিও না। -বুখারী
كتاب الآداب
بَابُ الْغَضَبِ وَالْكِبَرِ: الْفَصْل الأول
عَن أبي هريرةَ أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: أوصني. قَالَ: «لَا تغضبْ» . فردَّ ذَلِكَ مِرَارًا قَالَ: «لَا تَغْضَبْ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ
হাদীস নং: ৫১০৫
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১০৫। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: ঐ ব্যক্তি শক্তিশালী নহে, যে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় পরাভূত করিয়া ফেলে। বস্তুতঃ সেই ব্যক্তিই প্রকৃত বীর, যে ক্রোধের সময় নিজেকে আয়ত্তে রাখিতে পারে। -মোত্তাঃ
كتاب الآداب
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ» . مُتَّفق عَلَيْهِ
হাদীস নং: ৫১০৬
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১০৬। হযরত হারেসা ইবনে ওয়াহব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: আমি কি তোমাদিগকে বেহেশতবাসী সম্বন্ধে অবহিত করিব না ? তাহারা হইল দুর্বল লোক, যাহাদেরকে লোকেও দুর্বল মনে করে। কিন্তু খোদার কাছে তাহাদের এত সম্মান যে, তাহারা যদি আল্লাহর নামে শপথ করে, উহাকে অবশ্যই আল্লাহ্ তা'আলা সত্যে পরিণত করেন। (তিনি আরও বলিয়াছেন, আমি কি তোমাদিগকে দোযখীদের সম্বন্ধে অবহিত করিব না? তাহারা হইল অনর্থক কথা লইয়া বিবাদকারী, বদ-মেযাজী, অহংকারী। —মোত্তাঃ। আর মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, 'প্রত্যেক সম্পদ সঞ্চয়কারী কৃপণ, জারজ, অহংকারী।'
كتاب الآداب
وَعَنْ حَارِثَةَ بْنِ وَهْبٌ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ؟ كُلُّ ضَعِيفٍ مُتَضَعِّفٍ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللَّهِ لَأَبَرَّهُ. أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ؟ كُلُّ عُتُلٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ» . مُتَّفق عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَة مُسلم: «كل جواظ زنيم متكبر»
হাদীস নং: ৫১০৭
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১০৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন এমন কোন ব্যক্তি দোযখে প্রবেশ করিবে না, যাহার অন্তরে রাই পরিমাণ ঈমান থাকিবে। পক্ষান্তরে এমন কোন ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করিবে না, যাহার অন্তরে রাই পরিমাণ অহংকার থাকিবে। — মুসলিম
كتاب الآداب
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَدْخُلُ النَّارَ أحد فِي قلبه مِثْقَال حَبَّة خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ. وَلَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ أَحَدٌ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ مِنْ كبر» . رَوَاهُ مُسلم
হাদীস নং: ৫১০৮
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১০৮। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন যাহার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকিবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে না। তখন এক ব্যক্তি আরয করিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্।) প্রত্যেক ব্যক্তিই তো ইহা পছন্দ করে যে, তাহার কাপড় পোশাক ভাল হউক এবং জুতা জোড়াটি সুন্দর হউক, (ইহাও কি অহংকারের অন্তর্ভুক্ত?) তিনি বলিলেন: আল্লাহ্ তা'আলা নিজেও সুন্দর, পছন্দও করেন সৌন্দর্যকে। তবে অহংকার হইল, দত্তের সহিত হককে পরিত্যাগ করা এবং মানুষকে হেয় ও তুচ্ছ মনে করা। —মুসলিম
كتاب الآداب
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنَ كِبْرٍ» . فَقَالَ رَجُلٌ: إِنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حَسَنًا وَنَعْلُهُ حَسَنًا. قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ. الْكِبَرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاس» . رَوَاهُ مُسلم
হাদীস নং: ৫১০৯
- আদাব - শিষ্টাচার অধ্যায়
২০. প্রথম অনুচ্ছেদ - রাগ ও অহংকার
৫১০৯। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেনঃ তিন শ্রেণীর মানুষের সহিত কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা'আলা কথা বলিবেন না এবং তাহাদিগকে (পাপ-পঙ্কিলতা হইতেও) পবিত্র করিবেন না। অপর এক বর্ণনায় আছে এবং তাহাদের প্রতি (দয়ার) দৃষ্টিও দিবেন না এবং তাহাদের জন্য রহিয়াছে কঠোর শাস্তি—বৃদ্ধ ব্যভিচারী, মিথ্যাবাদী শাসক ও অহংকারী ভিক্ষুক! – মুসলিম
كتاب الآداب
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ثَلَاثَةٌ لَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ» . وَفِي رِوَايَةٍ: وَلَا يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ: شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ . رَوَاهُ مُسلم