মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২২- খাদ্যদ্রব্য-পানাহার সংক্রান্ত অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৬ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৪২৪৯

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে
৪২৪৯। হযরত আনাস (রাঃ) অথবা অন্য কাহারও নিকট হইতে বর্ণিত যে, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সা'দ ইবনে উবাদাহ্ (রাঃ)-এর নিকট (গৃহে প্রবেশের) অনুমতি চাহিলেন। অর্থাৎ, (অনুমতির উদ্দেশ্যে) আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ্ বলিলেন। উত্তরে সা'দ ওয়াআলাইকুমুসালামু ওয়ারাহমাতুল্লাহ্ বলিলেন; কিন্তু নবী (ﷺ)-কে শুনাইলেন না (অর্থাৎ, ইচ্ছাকৃতভাবে খুব আস্তে জবাব দিলেন)। এমন কি নবী (ﷺ) তিনবার সালাম করিলেন এবং সা'দও তিনবার জবাব দিলেন, কিন্তু (একবারও) তাঁহাকে সালামের জবাব শুনাইলেন না, ফলে ( সালামের জবাব না পাওয়ায়) নবী (ﷺ) প্রত্যাবর্তন করিলেন। তখন হযরত সা'দও তাহার পশ্চাতে ছুটিয়া আসিয়া বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি উৎসর্গ (কোরবান) হউক, আপনি যতবারই সালাম করিয়াছেন, আমার উভয় কান তাহা শুনিয়াছে, আর আমি উহার জবাবও সাথে সাথে দিয়াছি; কিন্তু আমি (স্বেচ্ছায়) তাহা আপনাকে শুনাই নাই, আমার ইচ্ছা ছিল যে, আপনার সালাম ও বারাকাত (-এর দোআ) বেশী বেশী লাভ করি। অতঃপর সকলেই গৃহে প্রবেশ করিলেন এবং হযরত সা'দ তাঁহার সম্মুখে কিশমিশ পেশ করিলেন। আল্লাহর নবী (ﷺ) উহা খাইলেন। খাওয়া শেষ করিয়া তিনি বলিলেনঃ তোমাদের খাদ্য হইতে নেককার লোকেরা আহার করুক। ফিরিশতাগণ তোমাদের জন্য ইস্তিগফার করুক এবং রোযাদারগণ তোমাদের কাছে ইফতার করুক। —শরহে সুন্নাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪২৫০

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে
৪২৫০। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ ঈমানদার ব্যক্তি ও ঈমানের দৃষ্টান্ত হইল খুঁটায় বাধা ঘোড়ার ন্যায় উহা চক্কর কাটিতে থাকে। অবশেষে উক্ত খুঁটার দিকেই ফিরিয়া আসে। অনুরূপভাবে কোন মু'মিন (কখনও কখনও) ভুলভ্রান্তিতে লিপ্ত হয়, আবার ঈমানের দিকে প্রত্যাবর্তন করে। অতএব, তোমাদের খানা-খাদ্য (খাদ্যবস্তু) পরহেযগার লোকদিগকে খাওয়াও এবং তোমাদের দান-খয়রাত ঈমানদারদিগকে প্রদান কর। —বায়হাকী শোআবুল ঈমানে এবং আবু নোআইম হিলয়া গ্রন্থে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪২৫১

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে
৪২৫১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে বুসর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ)-এর একটি পাত্র ছিল, যাহা চার জন লোক উঠাইত। উহা গাররানামে অভিহিত ছিল। যখন চাশতের সময় হইল এবং (সাহাবায়ে কেরামগণ) চাশতের নামায আদায় করিলেন, তখন উক্ত পাত্রটি আনা হইল এবং তন্মধ্যে সারীদ প্রস্তুত করা হয় এবং সাহাবাগণ সমবেতভাবে উহার চতুষ্পার্শ্বে খাইতে বসেন। লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইলে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) পা গুটাইয়া বসিলেন। এক বেদুঈন বলিয়া উঠিল, ইহা কেমন ধরনের বসা? জবাবে নবী (ﷺ) বলিলেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে বিনয়ী বান্দা বানাইয়াছেন, তিনি আমাকে অহংকারী নাফরমান বানান নাই। অতঃপর তিনি লোকদিগকে বলিলেন, তোমরা প্রত্যেকে উহার পার্শ্ব হইতে খাও, উহার মধ্যস্থল ছাড়িয়া রাখ। কেননা, সেইখানে বরকত প্রদত্ত হয়। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪২৫২

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে
৪২৫২। ওয়াশী ইবনে হরব (রঃ) তাঁহার পিতা হইতে, তিনি তাহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, একদা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সাহাবীগণ আরয করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমরা খানাপিনা করি বটে, কিন্তু আমরা পরিতৃপ্ত হই না। তিনি বলিলেনঃ সম্ভবত তোমরা পৃথক পৃথকভাবে খানা খাও। তাঁহারা বলিলেন, জি-হ্যাঁ, অতঃপর তিনি বলিলেন, তোমরা সমবেতভাবে খানা খাইবে এবং আল্লাহর নাম লইবে। ইহাতে তোমাদের খানার মধ্যে বরকত আসিবে। – আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪২৫৩

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে
৪২৫৩। হযরত আবু আসীব (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলিলেন, একদা রাত্রের বেলায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমার নিকট আসিলেন এবং আমাকে ডাকিলেন। তৎক্ষণাৎ আমি বাহির হইয়া তাঁহার নিকট আসিলাম। অতঃপর তিনি হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর নিকট গমন করিলেন, তাঁহাকেও ডাকিলেন এবং তিনি বাহির হইয়া আসিলেন। পরে হযরত ওমর (রাঃ)-এর নিকট গমন করিলেন এবং তাঁহাকেও ডাকিলেন। সুতরাং তিনিও বাহির হইয়া আসিলেন। এবার তিনি (আমাদের সবাইকে সঙ্গে লইয়া) চলিলেন। অবশেষে জনৈক আনসারীর বাগানের মধ্যে প্রবেশ করিলেন এবং বাগানের মালিককে বলিলেনঃ আমাদেরকে তাজা পাকা খেজুর খাওয়াও। অমনি সে খেজুরের একটি ছড়া আনিয়া রাখিল। আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ও তাঁহার সঙ্গীরা উহা খাইলেন। অতঃপর তিনি ঠাণ্ডা পানি চাহিয়া আনাইলেন এবং পান করিলেন। ইহার পর তিনি বলিলেনঃ নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন এই সমস্ত নিয়ামত সম্পর্কে তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হইবে। বর্ণনাকারী বলেন, (এই কথা শুনিয়া) হযরত ওমর (রাঃ) খেজুরের ছড়াটি লইয়া যমীনের উপর আঘাত করিলেন, ইহাতে খেজুরগুলি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সম্মুখে বিক্ষিপ্তভাবে ছিটিয়া পড়িল, অতঃপর বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা কি কিয়ামতের দিন এই সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হইব? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তবে তিনটি বিষয়ে জবাবদিহি করিতে হইবে না। (এক) কাপড়ের সেই টুক্রাটি যাহার দ্বারা মানুষ তাহার লজ্জাস্থান আবৃত করে। (দুই) অথবা রুটির সেই খণ্ডটি যাহার দ্বারা সে তাহার ক্ষুধা নিবারণ করে। (তিন) এবং ঐ ছোট্ট ঘরখানি যাহাতে অবস্থান করিয়া গ্রীষ্ম ও শীত হইতে আত্মরক্ষা করে। —আহমদ ও বায়হাকী শোআবুল ঈমানে মুরসাল সূত্রে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৪২৫৪

পরিচ্ছেদঃ ১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - অতিথি আপ্যায়ন প্রসঙ্গে
৪২৫৪। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যখন দস্তরখান বিছানো হয়, তখন উহা তুলিয়া নেওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তিই যেন বসার স্থান হইতে উঠিয়া না যায়। আর লোকজনের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সে যেন নিজ হাতকে গুটাইয়া না লয়, যদিও সে পরিতৃপ্ত হইয়া যায়। আর (যদি কোন কারণে উঠিয়া যাইতে বাধ্য হয়, তবে) যেন কোন ওযর পেশ করিয়া উঠিয়া যায়। কেননা, ইহা সঙ্গীকে লজ্জিত করিবে, ফলে সেও নিজের হাতখানা গুটাইয়া ফেলিবে। অথচ তাহার আরো খাওয়ার প্রয়োজন থাকিতে পারে। —ইবনে মাজাহ্ ও বায়হাকী শোআবুল ঈমানে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান