মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

হাদীস নং: ৩৯৭০
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৭০। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, (বদরের যুদ্ধের পরে) যখন মক্কার কাফেরগণ তাহাদের বন্দীদের মুক্তির জন্য মুক্তিপণ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে পাঠাইল, তখন (হুযূর [ছাঃ]-এর কন্যা) হযরত যয়নব (রাঃ) তাঁহার স্বামী আবুল আসের মুক্তির জন্যও কিছু মাল পাঠাইলেন। তন্মধ্যে ঐ হারখানাও ছিল যাহা হযরত খাদীজার কাছে ছিল, পরে হযরত খাদীজা (রাঃ) উহা আবুল আসের সহিত যয়নবের বিবাহের সময় দিয়াছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হারখানা দেখিয়া (অতীত স্মৃতি স্মরণে) অত্যন্ত বিহ্বল হইয়া পড়িলেন। অতঃপর হুযূর (ﷺ) সাহাবাদিগকে বলিলেনঃ যদি তোমরা সমীচীন মনে কর, তাহা হইলে যয়নবের কয়েদী (আবুল আস)-কে ছাড়িয়া দাও এবং যয়নব যে সমস্ত মাল সম্পদ পাঠাইয়াছে, উহা তাহাকে ফেরত দিয়া দাও। সাহাবারা বলিলেন, হ্যাঁ (আমরা সকলেই ইহাতে সম্মত আছি। সুতরাং মাল ব্যতিরেকেই আবুল আসকে মুক্ত করিয়া দেওয়া হইল)। অবশ্য নবী (ﷺ) তাহার নিকট হইতে এই অঙ্গীকার লইয়াছিলেন যে, সে যেন যয়নবকে মদীনায় তাঁহার নিকট আসার পথে বাধা না দেয়। আর রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যায়দ ইবনে হারেসা ও একজন আনসারীকে মক্কায় পাঠাইয়াছিলেন এবং তাঁহাদের উভয়কে বলিয়া দিলেন, তোমরা মক্কার অনতিদূরে (প্রায় আট মাইল দূরে) ইয়াজিজ উপত্যকা নামক স্থানে অবস্থান করিবে। যয়নব সেই পর্যন্ত আসিয়া পৌঁছিলে তোমরা উভয়েই তাহার সঙ্গী হইবে এবং তাহাকে মদীনায় লইয়া আসিবে। – আহমদ ও আবু দাউদ
كتاب الجهاد
الْفَصْل الثَّانِي
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: لَمَّا بَعَثَ أَهْلُ مَكَّةَ فِي فِدَاءِ أُسَرَائِهِمْ بَعَثَتْ زَيْنَبُ فِي فِدَاءِ أَبِي الْعَاصِ بِمَالٍ وَبَعَثَتْ فِيهِ بِقِلَادَةٍ لَهَا كَانَتْ عِنْدَ خَدِيجَةَ أَدْخَلَتْهَا بِهَا عَلَى أَبِي الْعَاصِ فَلَمَّا رَآهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَقَّ لَهَا رِقَّةً شَدِيدَةً وَقَالَ: «إِنْ رَأَيْتُمْ أَنْ تُطْلِقُوا لَهَا أَسِيرَهَا وَتَرُدُّوا عَلَيْهَا الَّذِي لَهَا» فَقَالُوا: نَعَمْ وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَذَ عَلَيْهِ أَنْ يُخَلِّيَ سَبِيلَ زَيْنَبَ إِلَيْهِ وَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ وَرَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ: «كونا ببطنِ يأحج حَتَّى تَمُرَّ بِكُمَا زَيْنَبُ فَتَصْحَبَاهَا حَتَّى تَأْتِيَا بهَا» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد
হাদীস নং: ৩৯৭১
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৭১। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বদরের যুদ্ধে যখন কুরাইশদিগকে বন্দী করিলেন, তখন ওকবা ইবনে আবু মুআয়ত ও নযর ইবনে হারেসকে কতল করিলেন। আর আবু আযযাতুল জুমাহীকে মুক্তিপণ ব্যতীত এমনিই ছাড়িয়া দিলেন। —— শরহে সুন্নাহ্
كتاب الجهاد
وَعَنْهَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا أَسَرَ أَهْلَ بَدْرٍ قَتَلَ عُقْبَةَ بْنَ أَبِي مُعَيْطٍ وَالنَّضْرَ بْنَ الْحَارِثِ وَمَنَّ عَلَى أَبِي عَزَّةَ الْجُمَحِيِّ. رَوَاهُ فِي شَرْحِ السّنة وَالشَّافِعِيّ وَابْن إِسْحَاق فِي «السِّيرَة»
tahqiq

তাহকীক:

হাদীস নং: ৩৯৭২
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৭২। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন ওকবা ইবনে আবু মুআয়তকে কতল করিবার সংকল্প করিলেন, তখন সে বলিল, (আমাকে হত্যা করিলে) আমার ছোট ছোট সন্তানদের লালন-পালন কে করিবে ? উত্তরে হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ আগুন। —আবু দাউদ
كتاب الجهاد
وَعَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا أَرَادَ قَتْلَ عُقْبَةَ بْنَ أَبِي مُعَيْطٍ قَالَ: مَنْ لِلصِّبْيَةِ؟ قَالَ: «النَّار» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
হাদীস নং: ৩৯৭৩
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৭৩। হযরত আলী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, (বদরের যুদ্ধের পর) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ হযরত জিবরাঈল (আঃ) আসিয়া আমাকে বলিলেন, আপনি আপনার সঙ্গীদিগকে বদরের কয়েদীদের ব্যাপারে এই ইখতিয়ার দিয়া দেন, তাহারা এই সমস্ত কয়েদীদিগকে হত্যা করিতে চাহিলে করিতে পারিবে; আর যদি ধন-সম্পদের বিনিময়ে তাহাদিগকে ছাড়িয়া দিতে চায় তাহাও করিতে পারিবে। কিন্তু আগামী বৎসর কাফেরদের সংখ্যা পরিমাণ তাহাদের মধ্যে কতল হইবে। সাহাবাগণ বলিলেন, মুক্তিপণ লইয়া ছাড়িয়া দেওয়া এবং নিজেদের মধ্যে তাহাদের পরিমাণ শহীদ হওয়াই আমরা গ্রহণ করিলাম। – তিরমিযী, ইমাম তিরমিযী বলেন, এই হাদীসটি গরীব।
كتاب الجهاد
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ جِبْرِيلَ هَبَطَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ: خَيِّرْهُمْ يَعْنِي أَصْحَابَكَ فِي أُسارى بدر: القتلَ والفداءَ عَلَى أَنْ يُقْتَلَ مِنْهُمْ قَابِلًا مِثْلُهُمْ قَالُوا الْفِدَاءَ وَيُقْتَلَ مِنَّا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث غَرِيب
হাদীস নং: ৩৯৭৪
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৭৪। হযরত আতিয়্যাতুল কুরাযী (রাঃ) বলেন, আমিও বনী কুরাইযার বন্দীদের মধ্যে ছিলাম। আমাদিগকে নবী (ﷺ)-এর সম্মুখে উপস্থিত করা হয়। তখন সাহাবায়ে কেরাম (কয়েদীরা বালেগ হইয়াছে কিনা তাহা পরীক্ষার জন্য বন্দীদের সতর খুলিয়া গুপ্তাঙ্গের পশম) দেখিতেন। সুতরাং যাহার উক্ত পশম গজাইত তাহাকে হত্যা করিতেন। আর যাহার তাহা গজাইত না তাহাকে কতল করিতেন না। এই নিয়মের প্রেক্ষিতে তাহারা আমার সতর খুলিয়া দেখিলেন যে, আমার গুপ্তাঙ্গের পশম গজায় নাই। ফলে আমাকে কতল না করিয়া কয়েদীদের অন্তর্ভুক্ত করিলেন। —আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী
كتاب الجهاد
عَن عَطِيَّة القَرظِي قَالَ: كنتُ فِي سَبي قُرَيْظَةَ عُرِضْنَا عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانُوا يَنْظُرُونَ فَمَنْ أَنْبَتَ الشَّعَرَ قُتِلَ وَمَنْ لَمْ يُنْبِتْ لَمْ يُقْتَلْ فَكَشَفُوا عَانَتِي فَوَجَدُوهَا لَمْ تُنْبِتْ فَجَعَلُونِي فِي السَّبْيِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه. والدارمي
হাদীস নং: ৩৯৭৫
- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায়
৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৭৫। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, হোদাইবিয়ার সময় সন্ধি-চুক্তি সম্পাদন হওয়ার আগে কয়েকজন ক্রীতদাস মক্কা হইতে মদীনায় রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর খেদমতে চলিয়া আসিল। পরে তাহাদের মালিকেরা হুযূর (ﷺ)-এর নিকট লিখিয়া পাঠাইল। তাহারা বলিল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর কসম, ঐ সমস্ত ক্রীতদাসগুলি তোমার দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট হইয়া তোমার কাছে যায় নাই; বরং তাহারা দাসত্বের শৃংখল হইতে মুক্তি হাসিল করার উদ্দেশ্যে আমাদের নিকট হইতে পলায়ন করিয়াছে। (সুতরাং তাহাদিগকে মক্কায় ফেরত পাঠাইয়া দাও।) কয়েকজন সাহাবীও (ইহার সমর্থনে) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তাহাদের মালিকেরা সত্যই বলিয়াছে, কাজেই তাহাদিগকে তাহাদের মালিকের নিকট ফেরত পাঠাইয়া দিন । ইহাতে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) রাগান্বিত হইলেন এবং বলিলেনঃ হে কুরাইশদল। আমি দেখিতেছি, তোমরা তোমাদের গোঁড়ামি ও নাফরমানী হইতে সেই পর্যন্তও বিরত হইবে না, যেই পর্যন্ত না আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের ঘাড়ে এইজন্য আঘাত হানিবার জন্য কাহাকেও প্রেরণ না করেন। অতঃপর তিনি সুস্পষ্ট ভাষায় ঐ সমস্ত গোলামদিগকে ফেরত পাঠাইতে অস্বীকৃতি জানাইলেন এবং ঘোষণা করিয়া দিলেন, তাহারা হইল আল্লাহর আযাদকৃত। —আবু দাউদ
كتاب الجهاد
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: خَرَجَ عِبْدَانٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْنِي الْحُدَيْبِيَةَ قَبْلَ الصُّلْحِ فَكَتَبَ إِلَيْهِ مَوَالِيهِمْ قَالُوا: يَا مُحَمَّدُ وَاللَّهِ مَا خَرَجُوا إِلَيْكَ رَغْبَةً فِي دِينِكَ وَإِنَّمَا خَرَجُوا هَرَبًا مِنَ الرِّقِّ. فَقَالَ نَاسٌ: صَدَقُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ رُدَّهُمْ إِلَيْهِمْ فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «مَا أَرَاكُم تنتهونَ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ حَتَّى يَبْعَثَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ مَنْ يَضْرِبُ رِقَابَكُمْ عَلَى هَذَا» . وَأَبَى أَنْ يَرُدَّهُمْ وَقَالَ: «هُمْ عُتَقَاءَ اللَّهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد