মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
২০- জিহাদের বিধানাবলী অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৭ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৩৯৬৩

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৬৩। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) বলেন, যখন হযরত সা'দ ইবনে মুআযের ফয়সালা মানিয়া নেওয়ার শর্তে (ইয়াহুদী) বনী কুরায়যা গোত্র দুর্গ-দ্বার খুলিয়া বাহিরে আসিল, তখন রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সা'দ ইবনে মুআযকে আনিবার জন্য) লোক প্রেরণ করিলেন, অতঃপর তিনি একটি গাধার পৃষ্ঠে সওয়ার হইয়া আসিলেন।যখন তিনি কাছাকাছি আসিয়া পৌঁছিলেন, তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত লোকদিগকে বলিলেন: তোমাদের নেতার দিকে দাড়াইয়া যাও। অতঃপর হযরত সা'দ আসিয়া বসিলেন। ইহার পর রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (হযরত সা'দকে লক্ষ্য করিয়া) বলিলেন, ইহারা তোমার ফয়সালা মানিয়া নেওয়ার শর্তে দুর্গ খুলিয়া বাহির হইয়া আসিয়াছে। তখন হযরত সা'দ বলিলেন, তাহাদের ব্যাপারে আমার বিচার হইল এই যুদ্ধ করিতে সক্ষমদিগকে কতল করা হউক এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও মহিলাদিগকে বন্দী করা হউক। (এই রায় শুনিয়া) হুযুর (ছাঃ) বলিলেন, তাহাদের ব্যাপারে তুমি বাদশাহর (আল্লাহর) ফয়সালার মোতাবেক বিচার করিলে। অন্য আরেক রেওয়ায়তে বর্ণিত হইয়াছে, তুমি আল্লাহর হুকুম মোতাবেকই রায় প্রদান করিলে। মোত্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৯৬৪

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৬৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজদের দিকে কিছু অশ্বারোহী (সৈন্য) পাঠাইলেন। তাহারা বনী হানীফা গোত্রের এক ব্যক্তিকে ধরিয়া আনিল। তাহার নাম সুমামাহ্ ইবনে উসাল, ইয়ামামাবাসীদের সরদার। তাহারা তাহাকে মসজিদে নববী)-র একটি খামের সাথে বাধিয়া রাখিল। রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহার কাছে আসিলেন এবং তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ওহে সুমামাহ্! তুমি কি মনে করিতেছ? সে বলিল, হে মুহাম্মাদ আমার ধারণা ভালই। যদি আপনি আমাকে কতল করেন, তাহা হইলে অবশ্যই আপনি একজন খুনীকে কতল করিবেন। আর যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তাহা হইলে একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপরই অনুগ্রহ করিলেন। আর যদি আপনি মাল চান তাহা হইলে যাহা ইচ্ছা চাইতে পারেন, উহা আদায় করা হইবে। তাহার কথা শুনিয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাকে (আজিকার মত তাহার নিজের অবস্থার উপর) ছাড়িয়া দিলেন। যখন পরের দিন আসিল, এইবারও হুযূর (ছাঃ) তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ওহে সুমামাহ্। তোমার কি মনে হইতেছে ? সে জবাবে বলিল, তাহাই মনে হইতেছে যাহা আমি আপনাকে পূর্বেই বলিয়াছি। (অর্থাৎ) যদি আমার প্রতি মেহেরবানী করেন, তাহা হইলে একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর মেহেরবানী করিলেন। আর যদি আপনি কতল করেন, তাহা হইলে একজন খুনী লোককে কতল করিবেন। আর যদি মাল-সম্পদ চান, তাহা হইলে যাহা ইচ্ছা চাইতে পারেন, তাহা দেওয়া হইবে। রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজও তাহাকে (নিজের অবস্থার উপরে) ছাড়িয়া দিলেন। এইভাবে তৃতীয় দিন আসিল এইবারও হুযূর (ছাঃ) তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, ওহে সুমামাহ্। তোমার কি মনে হইতেছে? জওয়াবে সে বলিল, আমার তাহাই মনে হইতেছে যাহা আমি পূর্বেই আপনাকে বলিয়াছি। যদি আপনি আমার প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করেন, তাহা হইলে একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপরই অনুকম্পা করিলেন। আর যদি আপনি আমাকে হত্যা করেন, তাহা হইলে একজন খুনীকে হত্যা করিবেন। আর যদি আপনি মাল-সম্পদ চান, তাহা হইলে যতটা ইচ্ছা চাহিতে পারেন, উহা দেওয়া হইবে।
এইবার রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ( লোকদিগকে বলিলেন, তোমরা সুমামাহকে ছাড়িয়া দাও। (তাহাকে ছাড়িয়া দেওয়া হইল।) অতঃপর সে মসজিদের কাছে একটি খেজুর বাগানে গেল এবং সেখানে যাইয়া গোসল করিল। ইহার পর মসজিদে প্রবেশ করিয়া বলিয়া উঠিলঃ "আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু।" (অতঃপর বলিল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর কসম, পৃথিবীর বুকে আপনার চেহারা অপেক্ষা আর কাহারও চেহারা আমার নিকট অধিক ঘৃণিত ছিল না। কিন্তু এখন আপনার চেহারা আমার কাছে সবার চাইতে বেশী প্রিয় হইয়া গিয়াছে। আল্লাহর কসম! (ইতিপূর্বে) আপনার দ্বীন অপেক্ষা অধিক অপ্রিয় ও ঘৃণিত দ্বীন আমার কাছে আর কোনটিই ছিল না। কিন্তু এখন আপনার দ্বীনই আমার কাছে সর্বাপেক্ষা অধিক প্রিয় হইয়া গিয়াছে। আল্লাহর কসম! (ইহার আগে) আপনার শহরের চাইতে অধিক ঘৃণ্য শহর আর কোনটিই আমার কাছে ছিল না। কিন্তু এখন আপনার শহরটিই আমার কাছে সবচাইতে অধিক প্রিয় হইয়া গিয়াছে। আপনার অশ্বারোহীরা আমাকে এমন অবস্থায় পাকড়াও করিয়া আনিয়াছে, যখন আমি ওমরা করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হইয়াছিলাম। এখন আপনি আমাকে কি করিতে হুকুম দেন? রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাকে সুসংবাদ শুনাইলেন এবং ওমরা পালন করার আদেশ করিলেন। ইহার পর যখন তিনি মক্কায় পৌঁছিলেন, তখন জনৈক ব্যক্তি তাহাকে বলিল, তুমি নাকি বে-দ্বীন হইয়া গিয়াছ? তিনি জওয়াবে বলিলেন, তাহা হইবে কেন; বরং আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে ইসলাম গ্রহণ করিয়াছি। আর আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুমতি ছাড়া তোমাদের কাছে ইয়ামামা হইতে আর একটি গমের দানাও আসিবে না। --মুসলিম, বুখারী এই হাদীসটিকে আরও সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করিয়াছেন।
এইবার রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ( লোকদিগকে বলিলেন, তোমরা সুমামাহকে ছাড়িয়া দাও। (তাহাকে ছাড়িয়া দেওয়া হইল।) অতঃপর সে মসজিদের কাছে একটি খেজুর বাগানে গেল এবং সেখানে যাইয়া গোসল করিল। ইহার পর মসজিদে প্রবেশ করিয়া বলিয়া উঠিলঃ "আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু।" (অতঃপর বলিল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর কসম, পৃথিবীর বুকে আপনার চেহারা অপেক্ষা আর কাহারও চেহারা আমার নিকট অধিক ঘৃণিত ছিল না। কিন্তু এখন আপনার চেহারা আমার কাছে সবার চাইতে বেশী প্রিয় হইয়া গিয়াছে। আল্লাহর কসম! (ইতিপূর্বে) আপনার দ্বীন অপেক্ষা অধিক অপ্রিয় ও ঘৃণিত দ্বীন আমার কাছে আর কোনটিই ছিল না। কিন্তু এখন আপনার দ্বীনই আমার কাছে সর্বাপেক্ষা অধিক প্রিয় হইয়া গিয়াছে। আল্লাহর কসম! (ইহার আগে) আপনার শহরের চাইতে অধিক ঘৃণ্য শহর আর কোনটিই আমার কাছে ছিল না। কিন্তু এখন আপনার শহরটিই আমার কাছে সবচাইতে অধিক প্রিয় হইয়া গিয়াছে। আপনার অশ্বারোহীরা আমাকে এমন অবস্থায় পাকড়াও করিয়া আনিয়াছে, যখন আমি ওমরা করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হইয়াছিলাম। এখন আপনি আমাকে কি করিতে হুকুম দেন? রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাকে সুসংবাদ শুনাইলেন এবং ওমরা পালন করার আদেশ করিলেন। ইহার পর যখন তিনি মক্কায় পৌঁছিলেন, তখন জনৈক ব্যক্তি তাহাকে বলিল, তুমি নাকি বে-দ্বীন হইয়া গিয়াছ? তিনি জওয়াবে বলিলেন, তাহা হইবে কেন; বরং আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে ইসলাম গ্রহণ করিয়াছি। আর আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুমতি ছাড়া তোমাদের কাছে ইয়ামামা হইতে আর একটি গমের দানাও আসিবে না। --মুসলিম, বুখারী এই হাদীসটিকে আরও সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৯৬৫

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৬৫। হযরত জুবায়র ইবনে মুতয়িম (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর যুদ্ধের বন্দীদের সম্পর্কে বলিলেনঃ আজ যদি মুতয়িম ইবনে আদী জীবিত থাকিতেন এবং এই সমস্ত পূতিগন্ধময় লোকদের সম্পর্কে (অর্থাৎ, বদরের বন্দীদের সম্পর্কে) আমার কাছে সুপারিশ করিতেন, তাহা হইলে তাহার খাতিরে ইহাদের সবাইকে আমি ছাড়িয়া দিতাম। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৯৬৬

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৬৬। হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত, একবার মক্কার আশিজন অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত ঘাতকের একদল লোক তানঈম পর্বতের আড়াল হইতে রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাহার সাহাবীদের উপর অতর্কিতে আক্রমণ করিয়া তাহাদিগকে ঘায়েল করিবার উদ্দেশ্যে নীচে অবতরণ করিল। (অর্থাৎ, হোদাইবিয়ার সন্ধি বহাল থাকা অবস্থায়, কিন্তু রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাদিগকে বিনা মোকাবিলায় গ্রেফতার করিয়া ফেলিলেন। পরে তাহাদিগকে জীবিত ছাড়িয়া দিলেন। অন্য আরেক সূত্রে বর্ণিত হইয়াছে, তাহাদিগকে আযাদ করিয়া দিলেন। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা'আলা নিম্নের আয়াতটি নাযিল করিলেন। —অর্থঃ আল্লাহ্ সেই মহান সত্তা, যিনি মক্কার অদূরে তাহাদের (কাফেরদের) হাত তোমাদের উপর হইতে এবং তোমাদের হাত তাহাদের উপর হইতে বিরত রাখিয়াছেন। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৯৬৭

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৬৭। কাতাদাহ (রঃ) বলেন, হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) হযরত আবু তালহা হইতে আমাদিগকে বর্ণনা করেন যে, বদরের যুদ্ধের দিন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চব্বিশজন কুরাইশ নেতার লাশ (কূপে ফেলা) সম্পর্কে নির্দেশ দেন, অতঃপর বদর প্রান্তরে একটি নোংরা ও আবর্জনাপূর্ণ কূপে তাহাদেরে নিক্ষেপ করা হইল। নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিয়ম ছিল, কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করিলে তিনি সেই যুদ্ধ ময়দানে তিন রাত অবস্থান করিতেন। বদর প্রান্তরেও তৃতীয় দিনে যাত্রার জন্য প্রস্তুতির নির্দেশ দিলেন। সুতরাং সওয়ারীসমূহের জিন-গদী বাঁধা হইল, অতঃপর তিনি কিছু চলিলেন। সাহাবাগণও তাঁহার অনুগমন করিলেন। অবশেষে তিনি ঐ কূপের পার্শ্বে গিয়া দাড়াইলেন এবং কূপে নিক্ষিপ্ত মরদেহের ও তাহাদের বাপ-দাদার নাম ধরিয়া ডাকিতে লাগিলেন, হে অমুকের পুত্র অমুক। হে অমুকের পুত্র অমুক! তোমরা কি এখন বুঝিতে পারিয়াছ যে, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের আনুগত্য করিলে এখন খুশী হইতে পারিতে ? আল্লাহ্ আমাদের সঙ্গে যে অঙ্গীকার করিয়াছিলেন আমরা তাহা পুরাপুরিই সঠিক পাইয়াছি। তোমরা কি তোমাদের সাথে কৃত তোমাদের প্রভুর ওয়াদা সঠিক পাইয়াছ? তখন হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যেই সমস্ত দেহে প্রাণ নাই আপনি তাহাদের সাথে কথা বলিতেছেন? নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, সেই মহান সত্তার কসম, যাঁহার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, আমি যাহা বলিয়াছি, তাহা তোমরা উহাদের চাইতে অধিক শুনিতে পাও নাই।
অন্য আরেক রেওয়ায়তে বর্ণিত হইয়াছে, তোমরা তাহাদের অপেক্ষা অধিক শুনিতে পাও নাই, কিন্তু তাহারা জওয়াব দিতে পারে না। মোত্তাঃ
বুখারী অতিরিক্ত বলিয়াছেন, কাতাদাহ্ বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই কথাগুলি শুনাইবার জন্য আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদিগকে জীবিত করিয়া দিয়াছিলেন যেন তাহারা ধমকি, লাঞ্ছনা, অপমান, অনুশোচনা ও লজ্জা অনুভব করিতে পারে।
অন্য আরেক রেওয়ায়তে বর্ণিত হইয়াছে, তোমরা তাহাদের অপেক্ষা অধিক শুনিতে পাও নাই, কিন্তু তাহারা জওয়াব দিতে পারে না। মোত্তাঃ
বুখারী অতিরিক্ত বলিয়াছেন, কাতাদাহ্ বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই কথাগুলি শুনাইবার জন্য আল্লাহ্ তা'আলা তাহাদিগকে জীবিত করিয়া দিয়াছিলেন যেন তাহারা ধমকি, লাঞ্ছনা, অপমান, অনুশোচনা ও লজ্জা অনুভব করিতে পারে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৯৬৮

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৬৮। মারওয়ান (ইবনে হাকাম) ও মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রাঃ) হইতে বর্ণিত, যখন হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা ইসলাম গ্রহণ করিবার পর তাহাদের প্রতিনিধিদল রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসিয়া তাহাদের মাল-সম্পদ ও বন্দীদেরকে ফেরত দিবার জন্য আবেদন জানাইল, তখন তিনি তাহাদিগকে বলিলেন : বন্দী অথবা সম্পদ এই দুইটির যে কোন একটি তোমরা গ্রহণ করিতে পার। তখন তাহারা বলিল, আমরা আমাদের বন্দীদিগকে ফিরাইয়া পাইতে চাই। অতঃপর রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের মধ্যে (তাহার বক্তব্য পেশ করিবার জন্য) দাড়াইলেন এবং যথাযোগ্যভাবে আল্লাহর প্রশংসা বর্ণনা করিবার পর বলিলেন, তোমাদের এই সমস্ত ভাইয়েরা (হাওয়াযিনবাসীরা কুফরী হইতে) তওবা করিয়া আমাদের নিকট আগমন করিয়াছে। আর আমি তাহাদের বন্দীদিগকে ফেরত দেওয়া সমীচীন মনে করিয়াছি, সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাহারা খুশীর সহিত ফেরত দিতে প্রস্তুত, তাহারা যেন ফেরত দিয়া দেয়। আর তোমাদের মধ্য হইতে যাহারা নিজের অংশ সংরক্ষণ করিতে চায়, তাহারা যেন এই ওয়াদার উপর ফেরত দিয়া দেয় যে, ইহার পরে আল্লাহ্ আমাকে যে মাল ফলস্বরূপ সর্বপ্রথম দান করিবেন, উহা হইতে আমি তোমাদিগকে দিয়া দিব। এই কথা শুনিয়া সকলে সমস্বরে বলিয়া উঠিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমরা সন্তুষ্টচিত্তে (অর্থাৎ, কোন বিনিময় ছাড়াই) তাহাদিগকে মুক্তি (ফেরত দেওয়া পছন্দ করিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কে অনুমতি দিল আর কে দিল না, তাহা যেহেতু আমি জানিতে পারিলাম না, সেহেতু তোমরা ফিরিয়া যাও এবং তোমাদের সরদারগণ যেন তোমাদের মতামত আমার নিকট পৌঁছাইয়া দেয়। অতঃপর লোকেরা (নিজ নিজ তাবুতে) চলিয়া গেল এবং নেতাগণ তাহাদের সহিত আলোচনা করিয়া পুনরায় রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ফিরিয়া আসিয়া জানাইলেন যে, তাহারা সন্তুষ্টচিত্তে রাযী হইয়াছে এবং অনুমতি দান করিয়াছে। —বুখারী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৯৬৯

পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - যুদ্ধবন্দীদের বিধিমালা
৩৯৬৯। হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) বলেন, বনী সাকীফ ছিল বনী উকাইলের মিত্র সম্প্রদায়। একবার বনী সাকীফ রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গীদের দুই ব্যক্তিকে বন্দী করিল। পরে রাসুলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গীরা বনী উকাইলের এক ব্যক্তিকে বন্দী করিলেন এবং তাহাকে বাধিয়া মদীনার হাররা মাঠে ফেলিয়া রাখিলেন। রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহার নিকট দিয়া যাইতেছিলেন, সে তাহাকে ডাক দিল, “ইয়া মুহাম্মাদ। ইয়া মুহাম্মাদ! কোন্ অপরাধে আমাকে গ্রেফতার করা হইয়াছে ? ” হুযুর (ছাঃ) বলিলেন: তোমাদের মিত্র কওম সাকীফ গোত্রের অপরাধে। অতঃপর হুযূর (ছাঃ) তাহাকে ঐ অবস্থায় রাখিয়া সম্মুখে অগ্রসর হইলেন। লোকটি আবারও ইয়া মুহাম্মাদ। ইয়া মুহাম্মাদ। বলিয়া তাহাকে আহ্বান করিল। তখন হুযূর ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহার প্রতি দয়াপরবশ হইয়া ফিরিয়া আসিয়া বলিলেন, তোমার কি হইয়াছে? লোকটি বলিল, আমি ইসলাম গ্রহণ করিয়াছি। তখন তিনি বলিলেন, যদি তুমি এই বাক্যটি তখন বলিতে, যখন তুমি তোমার নিজের ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিলে, তখন তুমি পূর্ণ সফলতা লাভ করিতে। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাকে সেই দুইজন মুসলিম বন্দীর বিনিময়ে ছাড়িয়া দিলেন যাহাদিগকে বনু সাকীফ কয়েদ করিয়াছিল। মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান