মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১৭- কিসাসের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৩ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ৩৪৭১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭১। হযরত আবু রিমসা (রাঃ) বলেন, একদা আমি আমার পিতার সহিত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট উপস্থিত হইলাম। হুযূর (ﷺ) জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার সাথে এই ছেলেটি কে? আমার পিতা বলিলেন, সে আমার পুত্র। এই ব্যাপারে আপনি সাক্ষী থাকুন। তখন হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ সাবধান! তাহার অপরাধের শাস্তি তোমার উপর এবং তোমার অপরাধের শাস্তি তাহার উপর বর্তিবে না। –আবু দাউদ ও নাসায়ী
আর শরহে সুন্নাহর রেওয়ায়তের মধ্যে হাদীসের শুরুতে এই কথাটি অতিরিক্ত বর্ণিত হইয়াছে, আবু রিমসা বলেন, আমি আমার পিতার সাথে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গিয়াছিলাম, তখন আমার পিতা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পৃষ্ঠে যাহা (মোহরে নবুওত) আছে, তাহা দেখিতে পাইয়া বলিয়াছিলেন, আমাকে অনুমতি প্রদান করুন, আপনার পৃষ্ঠদেশে যেই জিনিসটি আছে আমি উহার চিকিৎসা করিয়া দেই। কারণ, আমি একজন চিকিৎসক। উত্তরে হুযূর (ﷺ) বলিলেন, তুমি হইলে সেবক ! আর আল্লাহ্ হইলেন, চিকিৎসক।
আর শরহে সুন্নাহর রেওয়ায়তের মধ্যে হাদীসের শুরুতে এই কথাটি অতিরিক্ত বর্ণিত হইয়াছে, আবু রিমসা বলেন, আমি আমার পিতার সাথে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট গিয়াছিলাম, তখন আমার পিতা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পৃষ্ঠে যাহা (মোহরে নবুওত) আছে, তাহা দেখিতে পাইয়া বলিয়াছিলেন, আমাকে অনুমতি প্রদান করুন, আপনার পৃষ্ঠদেশে যেই জিনিসটি আছে আমি উহার চিকিৎসা করিয়া দেই। কারণ, আমি একজন চিকিৎসক। উত্তরে হুযূর (ﷺ) বলিলেন, তুমি হইলে সেবক ! আর আল্লাহ্ হইলেন, চিকিৎসক।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭২। হযরত আমর ইবনে শোয়ায়ব তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, হযরত সুরাকা ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর দরবারে হাযির হইয়াছি (এবং দেখিয়াছি,) তিনি পুত্র হইতে পিতার কেসাস লইতেন ; কিন্তু পিতা হইতে পুত্রের কেসাস লইতেন না। —তিরমিযী, অবশ্য তিনি এই হাদীসটিকে যয়ীফ বলিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৩। হাসান বসরী (রঃ) হযরত সামুরা (রাঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি তাহার গোলাম (ক্রীতদাসকে) হত্যা করিবে, উহার বদলে আমরা তাহাকে হত্যা করিব। আর যে কেহ তাহার গোলামের কোন অঙ্গ কাটিবে, উহার বদলে আমরাও তাহার অঙ্গ কাটিয়া দিব। —তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী; আর নাসায়ী অন্য আরেক রেওয়ায়তের মধ্যে অতিরিক্ত এই বাক্যটিও বলিয়াছেন, যে কেহ তাহার ক্রীতদাসকে খাসী করিবে, আমরাও তাহাকে খাসী করিয়া দিব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৪। হযরত আমর ইবনে শোআয়ব তাঁহার পিতার মাধ্যমে তাঁহার দাদা হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি অন্য কাহাকেও স্বেচ্ছায় হত্যা করিবে, তাহাকে (হত্যাকারীকে) নিহত ব্যক্তির অভিভাবক ও ওলী ওয়ারিসদের হাতে সোপর্দ করা হইবে। তাহারা যদি ইচ্ছা করে, তবে এই ব্যক্তিকে হত্যা করিতে পারে। আর যদি চায় তবে দিয়ত (রক্তপণ) গ্রহণ করিয়া তাহাকে ছাড়িয়াও দিতে পারে। আর রক্তপণ হইল (একশত উট) ত্রিশটি 'হিক্কা' (যেই উটের বয়স তিন বৎসর পরিপূর্ণ হইয়া চতুর্থ বৎসরে পড়িয়াছে)। ত্রিশটি 'জাযআ' (চার বৎসর পূর্ণ হইয়া পঞ্চমে পড়িয়াছে)। এবং চল্লিশটি ‘খালেফাহ্’ (গর্ভধারণ করার বয়স হইয়াছে)। আর নিহত ব্যক্তির অভিভাবক যদি ইহার চাইতে কম উট গ্রহণ করিয়াও রাযী হইয়া যায়, তাহাও হইতে পারে। —তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৫। হযরত আলী (রাঃ) হইতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলিয়াছেনঃ সমস্ত মুসলমানের প্রাণ সমপর্যায়ের এবং একজন সাধারণ মুসলমান যদি কাহাকেও আশ্রয় বা নিরাপত্তা প্রদান করে, তাহা প্রত্যেক মুসলমানকে রক্ষা করিতে হইবে এবং যদি দূরে কোন বিচ্ছিন্ন সেনাদল গনীমতের মাল হাসিল করে, তবে (সেনাপতির) নিকটবর্তী পূর্ণবাহিনী ও উহার অংশীদার হইবে। আর অমুসলিমদের মোকাবেলায় সমস্ত মুসলমান এক অভিন্ন শক্তি বা সংগঠন। সাবধান! কোন কাফেরের বদলে কোন মুসলিমকে কতল করা যাইবে না। আর যে ব্যক্তি চুক্তিতে আব্দ্ধ রহিয়াছে, চুক্তি বহাল থাকা পর্যন্ত তাহাকে হত্যা করা যাইবে না। –আবু দাউদ ও নাসায়ী।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭৬

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৬। আর ইবনু মাজাহও হাদীসটি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭৭

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৭। হযরত আবু শোরায়হ আলখোযায়ী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিয়াছেনঃ যদি কাহারও কোন আপনজন না-হকভাবে নিহত হয় কিংবা তাহার কোন অঙ্গহানি হয়, তখন তাহার অভিভাবক তিনটির যে কোন একটি গ্রহণ করিতে পারে। তবে যদি সে চতুর্থ কিছুর ইচ্ছা করে, তখন তাহার হাত ধরিয়া ফেল। (অর্থাৎ, তাহা সে পাইবে না।) আর সেই তিনটি জিনিস হইল এইঃ কেসাস (খুনের বদলে খুন) অথবা তাহাকে ক্ষমা করিয়া দিবে অথবা দিয়ত গ্রহণ করিবে। আর এই তিনটির কোন একটি গ্রহণ করার পর যদি সে সীমা লঙ্ঘন করে (অর্থাৎ, অন্য কিছু চায়), তাহা হইলে তাহার জন্য জাহান্নাম। যেইখানে সে হামেশা অবস্থান করিবে। -দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭৮

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৮। তাউস হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি গণ্ডগোলের মধ্যে নিহত হয়, যেমন, পাথর মারামারি অথবা চাবুক ছোঁড়াছুড়ি কিংবা লাঠালাঠি দ্বারা গোলমাল ও মারপিট হইয়াছে এবং কে হত্যা করিয়াছে তাহা নির্ণয় করা সম্ভব নহে, তখন উহাকে قتل خطاء বলা হইবে। আর উহার রক্তপণও قتل خطاء (ভুলবশতঃ হত্যা) অনুযায়ীই হইবে। আর যাহাকে স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে হত্যা করা হয় তখন কেসাস ওয়াজিব। আর যে ব্যক্তি কেসাস লওয়ার মধ্যে বাধা সৃষ্টি করিবে, তাহার উপর আল্লাহর লা'নত ও ক্রোধ রহিয়াছে। ফলে তাহার ফরয ও নফল কোন এবাদতই কবুল হইবে না। –আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৭৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৭৯। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি রক্তমূল্য গ্রহণ করিবার পর (হত্যাকারীকে) কতল করিল, তাহার নিকট হইতে কেসাস না লইয়া ছাড়িব না। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৮০

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮০। হযরত আবুদ্দারদা (রাঃ) বলেন, আমি শুনিয়াছি, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন যাহার দেহে কোন জখম (বা অঙ্গহানি) করা হয়, আর সে উহার প্রতিশোধ গ্রহণ করার পরিবর্তে আহতকারীকে ক্ষমা করিয়া দেয়, তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাহার মর্যাদা বাড়াইয়া দেন এবং তাহার গুনাহসমূহও মাফ করিয়া দেন। —তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৮১

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮১। হযরত সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়াব (রঃ) হইতে বর্ণিত, একবার হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এক ব্যক্তির বদলে পাঁচ অথবা সাত ব্যক্তিকে কতল করিয়াছেন। তাহারা সকলে মিলিয়া গোপনে ঐ লোকটিকে হত্যা করিয়াছিল। এই সময় হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, যদি ঐ লোকটিকে সমস্ত সান আবাসীরা মিলিয়া হত্যা করিত তাহা হইলেও আমি তাহাদের সবাইকে (কেসাসস্বরূপ) কতল করিতাম। —মালেক।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৮২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮২। অবশ্য বুখারী এই হাদীসটি ইবনে ওমর (রাঃ) হইতে অনুরূপভাবে রেওয়ায়ত করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ৩৪৮৩

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৩৪৮৩। হযরত জুনদুব (রাঃ) বলেন, আমাকে অমুক লোক বলিয়াছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ফরমাইয়াছেনঃ নিহত ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তাহার হত্যাকারীকে পাকড়াও করিয়া লইয়া আসিবে এবং (পরওয়ারদেগারকে) বলিবে, এই লোকটিকে জিজ্ঞাসা করুন, সে আমাকে কেন কতল করিয়াছে? তখন সে (হত্যাকারী) বলিবে, আমি অমুক শক্তিধরের বলে বলীয়ান হইয়া এই ব্যক্তিকে কতল করিয়াছি। বর্ণনাকারী জুনদুব (রাঃ) বলেন, অতএব, তোমরা হত্যাকারীর সহায়তা হইতে বাঁচিয়া থাক। —নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান