মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
১০- যাবতীয় দোয়া-যিক্র - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১২ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ২৩৪৮

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৪৮। হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে কোরআনের এই আয়াত পড়িতে শুনিয়াছি—“ওহে! যাহারা নিজেদের প্রতি অবিচার করিয়াছ, তোমরা আল্লাহর রহমত হইতে নিরাশ হইও না, কেননা, আল্লাহ্ মাফ করেন সমস্ত গোনাহ্।” (সূরা যুমার, আয়াত ৫৩) আর তিনি কাহারও পরওয়া করেন না। —আহমদ ও তিরমিযী। তিনি বলেন, ইহা হাসান ও গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৪৯

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৪৯। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হইতে (কোরআনে) আল্লাহ্ তা'আলার এই মহাবাণী সম্পর্কে বর্ণিত আছে, “সগীরা গোনাহ্ ব্যতীত” – রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্! যদি তুমি ক্ষমা কর, ক্ষমা কর বড় গোনাহ্। কেননা, তোমার কোন্ বান্দা আছে, যে ছোট গোনাহ্ করে নাই ? – তিরমিযী। তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ ও গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫০

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫০। হযরত আবু যর গেফারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ আমার বান্দারা! তোমরা সকলেই পথহারা, কিন্তু আমি যাহাকে পথ দেখাইয়াছি, সুতরাং আমার নিকট পথের সন্ধান চাও, আমি তোমাদিগকে পথ দেখাইব। তোমাদের প্রত্যেকেই অভাবী, কিন্তু আমি যাহাকে অভাবমুক্ত করিয়াছি, সুতরাং আমার নিকট চাও, আমি তোমাদিগকে রিযিক দিব। তোমাদের প্রত্যেকেই অপরাধী, কিন্তু আমি যাহাকে নিরাপদে রাখিয়াছি (বা বাঁচাইয়াছি), সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে বিশ্বাস করে যে, আমি ক্ষমা করার ক্ষমতা রাখি, অতঃপর সে আমার নিকট ক্ষমা চায়, আমি তাহাকে ক্ষমা করি এবং আমি কাহারও পরওয়া করি না। যদি তোমাদের আওয়াল ও আখের, জীবিত ও মৃত, কাঁচা, শুকনা (ছেলে-বুড়া)—সকলেই আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা পরহেযগার ব্যক্তির অন্তরের ন্যায় এক অন্তর হইয়া যায়—ইহা আমার রাজ্যে একটি মাছির পালক পরিমাণও বাড়াইতে পারিবে না, আর যদি তোমাদের আওয়াল ও আখের, জীবিত ও মৃত, কাঁচা ও শুকনা—সকলেই আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা হতভাগ্য ব্যক্তির অন্তরের ন্যায় এক অন্তর হইয়া যায়—তাহাও আমার রাজ্যে এক মাছির পালক পরিমাণও কমাইতে পারিবে না। যদি তোমাদের আওয়াল ও আখের, জীবিত ও মৃত এবং কাঁচা ও শুকনা— সকলেই এক প্রান্তরে একত্র হয়, অতঃপর তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তি তাহার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আমার নিকট চায়, আর আমি তোমাদের প্রত্যেক সওয়ালকারীকে দান করি—তাহা আমার রাজ্যে কিছুমাত্র কমাইতে পারিবে না। যেমন, যদি তোমাদের কেহ সমুদ্রে পৌঁছে আর উহাতে একটি সুঁই ডুবায় অতঃপর উহা উঠায়। ইহা এই জন্যই যে, আমি বড় দাতা – প্রশস্ত দাতা; আমি করি যাহা ইচ্ছা করি। আমার দান হইল আমার কালাম মাত্র, আমার শাস্তি হইল আমার হুকুম মাত্র, আর আমার কোন বিষয়ের হুকুম হইল যখন আমি ইচ্ছা করি—আমি বলি, ‘হইয়া যাও', তৎক্ষণাৎ উহা হইয়া যায়। —আহমদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫১

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫১। হযরত আনাস (রাঃ) নবী করীম (ﷺ) হইতে বর্ণনা করেন যে, একদা তিনি এই আয়াত পাঠ করিয়া—“তিনি (আল্লাহ্) হইলেন ভয়ের অধিকারী ও ক্ষমার অধিকারী”—বলিলেন, তোমাদের পরওয়ারদেগার বলেনঃ আমি লোকের ভয় পাওয়ার অধিকারী; (আমা হইতে ভয় করা উচিত,) সুতরাং যে আমাকে ভয় করিল, আমি তাহাকে ক্ষমা করারও অধিকারী। — তিরমিযী, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫২

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫২। হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, আমি একই মজলিসে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর এস্তেগফার একশত বার গুণিতাম — তিনি বলিতেছেনঃ 'রাব্বিগ্-ফিরলী, ওয়াতুব আলাইয়্যা, ইন্নাকা আস্তাত্ তাওয়্যাবুল গাফূর', – পরওয়ারদেগার! তুমি আমাকে মাফ কর এবং আমার তওবা কবুল কর। কেননা, তুমি হও তওবা কবুল করনেওয়ালা ও মাফ করনেওয়ালা। —আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ্

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫৩

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৩। নবী করীম (ﷺ)-এর আযাদকৃত গোলাম যায়দের পুত্র ইয়াসার, তাহার পুত্র বেলাল বলেন, আমার পিতা আমার দাদার মাধ্যমে বলেন যে, আমার দাদা যায়দ বলিয়াছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, যে ব্যক্তি বলিল—'আস্তাগফিরূল্লাহাল্লাযী, লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যূম, ওয়া আতূবু ইলাইহি’—“আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাহি, যিনি ব্যতীত কোন মা'বূদ নাই, যিনি চিরঞ্জীব, চির প্রতিষ্ঠাতা এবং তাঁহার নিকট তওবা করি ” – আল্লাহ্ তাহাকে ক্ষমা করিবেন যদিও সে জেহাদের ছফ হইতে পলায়ন করিয়া থাকে। – তিরমিযী ও আবু দাউদ। তবে আবু দাউদ বলেন, বর্ণনা কারীর নাম হইল হেলাল ইবনে ইয়াসার। (অর্থাৎ বেলালের পরিবর্তে হেলাল।) তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫৪

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৪। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ আযযা ও জাল্লা বেহেশতে তাঁহার কোন নেক বান্দার মর্যাদা বুলন্দ করিবেন আর সে বলিবে, প্রভু হে! আমার এই মর্যাদা বৃদ্ধি কি কারণে হইল ? তখন আল্লাহ্ বলিবেন, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা চাওয়ার কারণে। – আহ্মদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫৫

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৫। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ নিশ্চয় মৃত ব্যক্তি হইল সাহায্যপ্রার্থী পানিতে পড়া ব্যক্তির ন্যায়, সে তাহার বাপ, মা, ভাই-বন্ধুর দো'আ পৌঁছার অপেক্ষায় থাকে। যখন তাহার নিকট উহা পৌঁছে, তখন উহা তাহার নিকট সমগ্র দুনিয়া ও উহার সামগ্রী অপেক্ষাও প্রিয়তর হয় এবং আল্লাহ্ তা'আলা কবরবাসীদিগকে যমীনবাসীদের দো'আর কারণে পর্বত-সমতুল রহমত পৌঁছান, আর যিন্দাদের পক্ষ হইতে মুর্দাদের জন্য হাদিয়া হইল তাহাদের জন্য ক্ষমা চাওয়া। —বায়হাকী শোআবুল ঈমানে

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫৬

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৬। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে বুসর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আনন্দ তাহার জন্য, যাহার আমলনামায় ইস্তেগফার বেশী পাওয়া যাইবে। —ইবনে মাজাহ্। আর নাসায়ী তাঁহার কিতাব 'আমলু ইয়াওমিন ওয়া লায়লাতিনে।'

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫৭

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৭। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ﷺ) বলিতেন, খোদা! আমাকে তাহাদের অন্তর্গত কর, যাহারা – যখন ভাল কাজ করে খুশী হয় এবং যখন মন্দ কাজ করে ক্ষমা চায়। — ইবনে মাজাহ্ । আর বায়হাকী দা'ওয়াতুল কবীরে ।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫৮

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৮। (তাবেয়ী) হারেস ইবনে সুওয়াইদ বলেন, আমাকে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ দুইটি কথা বলিয়াছেন—একটি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর পক্ষ হইতে, অপরটি নিজের পক্ষ হইতে। তিনি বলিয়াছেনঃ মু'মিন নিজের গোনাহকে এইরূপ মনে করে, যেন সে কোন পাহাড়ের নীচে বসা, যাহা সে তাহার উপর ভাঙ্গিয়া পড়ার আশংকা করে। পক্ষান্তরে ফাজের ব্যক্তি আপন গোনাকে দেখে—যেন একটি মাছি তাহার নাকের উপর বসিল, আর সে আপন হাতের ইঙ্গিতে উহাকে তাড়াইয়া দিল। অতঃপর তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, আল্লাহ্ তাঁহার মু'মিন বান্দার তওবায় সেই ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক খুশী হন, যে কোন ধ্বংসকারী মরুভূমিতে পৌঁছিয়াছে, আর তাহার সাথে তাহার বাহন রহিয়াছে, যাহার উপর তাহার খাদ্য ও পানীয় রহিয়াছে। সে তথায় যমীনে মাথা রাখিল এবং সামানা ঘুমাইল। অতঃপর জাগিয়া দেখিল তাহার বাহন ভাগিয়া গিয়াছে। সে উহা তালাশ করিতে রহিল, অবশেষে তাপ ও পিপাসা এবং অপরাপর কষ্ট যাহা আল্লাহর মর্জি তাহাকে কাতর করিয়া ফেলিল। তখন সে সিদ্ধান্ত করিল, আমি যেখানে ছিলাম সেখানে যাইয়া শুইয়া থাকিব, যাবৎ না মরিয়া যাই। সুতরাং সে তথায় আপন বাহুর উপর মাথা রাখিয়া শুইয়া পড়িল যাহাতে সে মরিয়া যায়। এ সময় হঠাৎ জাগিয়া দেখে তাহার বাহন তাহার নিকটে—তাহার উপর তাহার পাথেয় ও পানীয় আছে। এইরূপে – আল্লাহ্ তাঁহার মু'মিন বান্দার তওবায় এই ব্যক্তি তাহার বাহন ও পাথেয় পাইয়া যেরূপ খুশী হইয়াছে, তাহা অপেক্ষাও অধিক খুশী হন। —মুসলিম শুধু মর'ফূ অংশ এবং বুখারী মউকুফ এবং মরফূ' উভয় অংশ বর্ণনা করিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ২৩৫৯

পরিচ্ছেদঃ ২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্ষমা ও তাওবাহ্
২৩৫৯। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ্ ভালবাসেন সেই মু'মিন বান্দাকে যে গোনাহ্য় পতিত হইয়া তওবা করে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান