মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৭- যাকাতের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ১৭ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ১৯১১

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১১। হযরত আবু যর গেফারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমার ভাইয়ের প্রতি তোমার হাস্যমুখ করাও একটা দান, কাহাকেও সৎ কাজের উপদেশ দেওয়াও একটা দান, অপকাজ হইতে নিষেধ করাও একটা দান, পথ হারাইবার জায়গায় কাহাকেও পথ দেখানও তোমার একটি দান, কোন চক্ষুহীন ব্যক্তিকে সাহায্য করাও তোমার একটি দান, পথ হইতে পাথর, কাঁটা বা হাড় সরানও তোমার একটি দান এবং তোমার বালতি হইতে তোমার (অপর) ভাইয়ের বালতি ভরিয়া দেওয়াও একটি দান। —তিরমিযী এবং তিনি বলিয়াছেন, হাদীসটি গরীব।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১২

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১২। হযরত সা'দ ইবনে উবাদা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! সা'দের মা (অর্থাৎ আমার মা) মারা গিয়াছেন, তাহার জন্য কোন্ দান উত্তম হইবে? হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ পানি। রাবী বলেন, সুতরাং সা'দ একটি কূপ খনন করিলেন এবং বলিলেন, ইহা (ওফ) সা'দের মার জন্য। –আবু দাউদ ও নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১৩

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১৩। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে কোন মুসলমান কোন মুসলমানকে তাহার উলঙ্গতায় কাপড় পরাইবে, (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ্ তাহাকে বেহেশতের সবুজ জোড়া পরাইবেন; আর যে কোন মুসলমান কোন মুসলমানকে তাহার মুখে অন্ন দান করিবে, আল্লাহ্ তাহাকে বেহেশতের ফল খাদ্যরূপে দান করিবেন এবং যে কোন মুসলমান কোন মুসলমানকে তাহার পিপাসায় পানি পান করাইবে, আল্লাহ্ তা'আলা তাহাকে (কিয়ামতে) মুখ বন্ধ করা বোতলের স্বচ্ছ পানি পান করাইবেন। —আবু দাউদ ও তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১৪

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১৪হযরত ফাতেমা বিনতে কায়স (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যাকাত ছাড়াও মালের মধ্যে (মানুষের) হক রহিয়াছে, অতঃপর হুযূর (প্রমাণে কুরআন পাকের) এই আয়াতটি পাঠ করিলেন – “তোমরা (নামাযে) পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাইবে (শুধু) ইহাই নেক কাজ নহে.......।” – তিরমিযী, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী
ব্যাখ্যাঃ পূর্ণ আয়াতটি এইঃ
لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ
তোমরা (নামাযে) পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাইবে (শুধু) ইহাই নেক কাজ নহে। কিন্তু (প্রকৃত) নেক কাজ তাহার কাজ যে ঈমান আনিয়াছে আল্লাহর প্রতি, শেষ দিনের প্রতি, ফিরিশতাদের প্রতি, (আল্লাহর) কিতাবের প্রতি ও নবীগণের প্রতি এবং আল্লাহর মহব্বতে মাল দান করিয়াছে আত্মীয়দিগকে, ইয়াতীমদিগকে, মিসকীনদিগকে, পথিক মুসাফির ও যাজ্ঞাকারী দিগকে এবং দাস আযাদকরণে। (এতদ্ব্যতীত) কায়েম করিয়াছে নামায ও আদায় করিয়াছে যাকাত। —সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৭
দানের পরে এখানে (কুরআনে) যাকাতকে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হইয়াছে। ইহাতে বুঝা গেল যে, যাকাত এবং এই দান এক নহে এবং যাকাতই মালের একমাত্র হক নহে। যাকাত ছাড়াও নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী এ সকল লোককে দান করিতে হইবে। যদি মুসলমানগণ এই নির্দেশ পালন করিতেন, মুসলিম সমাজে কোন গরীব দরিদ্রের অস্তিত্ব থাকিত না। কেহ চীন রাশিয়ার দিকে তাকাইত না। দেশ ধ্বংসের হাত হইতে রক্ষা পাইত।
ব্যাখ্যাঃ পূর্ণ আয়াতটি এইঃ
لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ
তোমরা (নামাযে) পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাইবে (শুধু) ইহাই নেক কাজ নহে। কিন্তু (প্রকৃত) নেক কাজ তাহার কাজ যে ঈমান আনিয়াছে আল্লাহর প্রতি, শেষ দিনের প্রতি, ফিরিশতাদের প্রতি, (আল্লাহর) কিতাবের প্রতি ও নবীগণের প্রতি এবং আল্লাহর মহব্বতে মাল দান করিয়াছে আত্মীয়দিগকে, ইয়াতীমদিগকে, মিসকীনদিগকে, পথিক মুসাফির ও যাজ্ঞাকারী দিগকে এবং দাস আযাদকরণে। (এতদ্ব্যতীত) কায়েম করিয়াছে নামায ও আদায় করিয়াছে যাকাত। —সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৭
দানের পরে এখানে (কুরআনে) যাকাতকে পৃথকভাবে উল্লেখ করা হইয়াছে। ইহাতে বুঝা গেল যে, যাকাত এবং এই দান এক নহে এবং যাকাতই মালের একমাত্র হক নহে। যাকাত ছাড়াও নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী এ সকল লোককে দান করিতে হইবে। যদি মুসলমানগণ এই নির্দেশ পালন করিতেন, মুসলিম সমাজে কোন গরীব দরিদ্রের অস্তিত্ব থাকিত না। কেহ চীন রাশিয়ার দিকে তাকাইত না। দেশ ধ্বংসের হাত হইতে রক্ষা পাইত।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১৫

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১৫। সাহাবীয়া হযরত বুহায়সা তাঁহার পিতা হইতে বর্ণনা করেন যে, একদা তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! সে কোন্ জিনিস যাহা যাজ্ঞা কারীকে না দেওয়া হালাল নহে? হুযূর (ﷺ) বলিলেনঃ পানি। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, হে আল্লাহর নবী! আর কোন্ জিনিস যাহা না দেওয়া হালাল নহে? হুযূর বলিলেন, নমক । অতঃপর তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া নাবীয়াল্লাহ্! আর কোন্ জিনিস যাহার দানে নিষেধ করা হালাল নহে? হুযূর বলিলেন, (এভাবে আর কত জিনিসের নাম করিব) যে কোন ভাল কাজ করাই তোমার পক্ষে ভাল। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১৬

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১৬। হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি কোন পতিত জমি কৃষি উপযোগী করিবে, তাহার জন্য উহাতে সওয়াব রহিয়াছে। উহা হইতে কোন খাদ্য অন্বেষণকারী প্রাণী যাহাকিছু খাইবে, উহা তাহার পক্ষে দান হইবে। —দারেমী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১৭

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১৭। হযরত বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি কাহাকেও একটি দুধের গাভী বা ছাগী দুধ খাওয়ার জন্য ধার দিবে অথবা কিছু চান্দি (অর্থাৎ, টাকা কড়ি) ধার দিবে অথবা কোন পথভ্রষ্টকে পথ দেখাইবে, উহা তাহার জন্য একটি গোলাম আযাদ করার সমান হইবে। — তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১৮

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১৮। হযরত আবু জুরাই জাবের ইবনে সুলাইম (রাঃ) বলেন, আমি একবার মদীনায় আসিলাম। দেখিলাম, একটি লোকের মতামত লইয়া মানুষ বাড়ী ফিরে। সে যাহাই বলুক না কেন তাহা অনুসারেই মানুষ কাজ করে। ইহা দেখিয়া আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, এই লোকটি কে ? লোকেরা বলিল, ইনি আল্লাহর রাসূল। আবু জুরাই বলেন, আমি তাঁহার নিকট গেলাম এবং দুইবার বলিলাম, "আলাইকাসসালাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্।" তিনি বলিলেনঃ 'আলাইকাসসালাম' বলিবে না, ইহা মৃতের অভিবাদন। বলিবে, 'আসসালামু আলাইকা।' আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, আপনি কি আল্লাহর রাসূল? তিনি বলিলেন, (হ্যাঁ,) আমি সেই আল্লাহর রাসূল যিনি — যদি তোমাতে কোন বিপদ পৌঁছে আর তুমি তাঁহাকে ডাক তিনি উহা তোমা হইতে দূর করেন এবং যদি তোমাকে দুর্ভিক্ষ আক্রমণ করে আর তুমি তাঁহাকে ডাক তিনি তোমার জন্য খাদ্যশস্য উৎপাদন করেন। আর যখন তুমি কোন তৃণ পানি শূন্য মরু প্রান্তরে অথবা ময়দানে থাক এবং তোমার বাহন হারাইয়া যায় এবং তুমি তাঁহাকে ডাক তিনি উহা তোমার নিকট ফিরাইয়া দেন।
এ সময় আমি বলিলাম, (ইয়া রাসূলাল্লাহ্!) আপনি আমাকে কিছু উপদেশ দিন! তিনি বলিলেন, কখনও কাহাকেও মন্দ বলিও না। আবু জুরাই বলেন, ইতঃপর আমি না কোন স্বাধীন ব্যক্তি বা কোন দাস আর না কোন উট বা ছাগলকে মন্দ বলিয়াছি। অতঃপর হুযুর বলিলেন, কোন ভাল কাজকে সামান্য মনে করিবে না। তুমি তোমার অপর ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলিবে, ইহাও একটি ভাল কাজ। তোমার তহবন্দকে নলার অর্ধ পর্যন্ত উঠাইবে। যদি তুমি ইহা না মান, তবে তুমি তোমার ছোট গিরা পর্যন্ত নামাইতে পার। (ইহার নীচে নহে।) খবরদার তুমি সতর্ক থাকিবে তহবন্দ নীচের দিকে ছাড়িয়া দেওয়া হইতে। কেননা, ইহা দাম্ভিকতার অন্তর্গত। আর আল্লাহ্ ভালবাসেন না দাম্ভিকতাকে। যদি কেহ তোমাকে মন্দ বলে এবং তোমার প্রতি দোষারোপ করে, যাহা তোমার মধ্যে দেখে তাহার কারণে, তবু তুমি দোষারোপ করিও না তাহাকে, যাহা তাহার মধ্যে দেখ তাহার কারণে। কেননা, ইহার ক্ষতি তাহার প্রতিই বর্তাইবে। —আবু দাউদ। তিরমিযী শুধু সালাম পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন। অপর বর্ণনায় আছে, তোমাকে ইহার সওয়াব মিলিবে এবং তাহার প্রতি ইহার ক্ষতি বর্তাইবে।
এ সময় আমি বলিলাম, (ইয়া রাসূলাল্লাহ্!) আপনি আমাকে কিছু উপদেশ দিন! তিনি বলিলেন, কখনও কাহাকেও মন্দ বলিও না। আবু জুরাই বলেন, ইতঃপর আমি না কোন স্বাধীন ব্যক্তি বা কোন দাস আর না কোন উট বা ছাগলকে মন্দ বলিয়াছি। অতঃপর হুযুর বলিলেন, কোন ভাল কাজকে সামান্য মনে করিবে না। তুমি তোমার অপর ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলিবে, ইহাও একটি ভাল কাজ। তোমার তহবন্দকে নলার অর্ধ পর্যন্ত উঠাইবে। যদি তুমি ইহা না মান, তবে তুমি তোমার ছোট গিরা পর্যন্ত নামাইতে পার। (ইহার নীচে নহে।) খবরদার তুমি সতর্ক থাকিবে তহবন্দ নীচের দিকে ছাড়িয়া দেওয়া হইতে। কেননা, ইহা দাম্ভিকতার অন্তর্গত। আর আল্লাহ্ ভালবাসেন না দাম্ভিকতাকে। যদি কেহ তোমাকে মন্দ বলে এবং তোমার প্রতি দোষারোপ করে, যাহা তোমার মধ্যে দেখে তাহার কারণে, তবু তুমি দোষারোপ করিও না তাহাকে, যাহা তাহার মধ্যে দেখ তাহার কারণে। কেননা, ইহার ক্ষতি তাহার প্রতিই বর্তাইবে। —আবু দাউদ। তিরমিযী শুধু সালাম পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন। অপর বর্ণনায় আছে, তোমাকে ইহার সওয়াব মিলিবে এবং তাহার প্রতি ইহার ক্ষতি বর্তাইবে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯১৯

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯১৯। হযরত আয়েশা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তাহারা একটি বকরী জবাই করিলেন (এবং মেহমান মুসাফিরদের খাওয়াইলেন)। অতঃপর নবী করীম (ﷺ) জিজ্ঞাসা করিলেন, উহার কতটুকু আছে ? আয়েশা বলিলেন, উহার একটি বাহু ছাড়া কিছু বাকি নাই। হুযূর বলিলেনঃ উহার সবই বাকি আছে ঐ বাহুটি ছাড়া। – তিরমিযী এবং তিনি ইহাকে সহীহ্ বলিয়াছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২০

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২০। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে কোন মুসলমান কোন মুসলমানকে একটি কাপড় পরাইবে, সে আল্লাহর হেফাযতে থাকিবে, যে পর্যন্ত উহার একটি টুকরাও তাহার গায়ে থাকিবে। — আহমদ ও তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২১

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২১। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নাম করিয়া বলেন যে, তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ ভালবাসেন – (১) যে ব্যক্তি রাতে উঠিয়া আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, (২) যে ব্যক্তি ডান হাতে কিছু দান করে এবং গুপ্ত রাখে উহাকে রাবী বলেন, আমি মনে করি, তিনি বলিয়াছেন—আপন বাম হাত হইতে এবং (৩) যে ব্যক্তি কোন সৈন্য দলে ছিল আর তাহার সহচরগণ পরাজিত হইল; কিন্তু সে শত্রুর দিকে অগ্রসর হইল ( এবং তাহাদিগকে পরাজিত করিল অথবা শহীদ হইল)। – তিরমিযী। আর তিনি ইহাকে গায়রে মাহফুয বা শায বলিয়াছেন। (কিন্তু অপর সনদ অনুসারে ইহা সহীহ্ ।)

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২২

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২২। হযরত আবু যর গেফারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তিন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তা'আলা ভালবাসেন, আর তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ তা'আলা ক্রুদ্ধ হন। যাহাদিগকে আল্লাহ্ তা'আলা ভালবাসেন, তাহারা হইলেন – (ক) কোন ব্যক্তি এক দল লোকের নিকট আসিল এবং তাহাদের নিকট আল্লাহর নামে কিছু চাহিল, তাহার ও তাহাদের মধ্যে যে আত্মীয়তা রহিয়াছে, উহার নামে নহে; (বরং আল্লাহর নামে) কিন্তু তাহারা তাহাকে কিছু দিল না। অতঃপর তাহাদের মধ্যকার এক ব্যক্তি তাহাদের পিছনে সরিয়া আসিল এবং চুপেচুপে তাহাকে কিছু দিল যাহা সম্পর্কে আল্লাহ্ তা'আলা এবং যাহাকে সে দিল সে ব্যতীত অপর কেহই কিছু জানে না। (খ) একদল লোক রাতে সফর করিল—এমন কি যখন নিদ্রা উহা অপেক্ষা সমস্ত জিনিসের তুলনায় তাহাদের নিকট প্রিয়তম হইয়া গেল, তাহারা সকলেই (নিদ্রার জন্য) নিজেদের মাথা যমীনে রাখিল; কিন্তু তাহাদের মধ্য হইতে এক ব্যক্তি উঠিয়া দাড়াইল এবং আমার নিকট অনুনয় বিনয় করিতে লাগিল, আর আমার আয়াত পাঠ করিতে লাগিল এবং (গ) যে ব্যক্তি কোন সৈন্য দলে ছিল এবং শত্রুর সম্মুখীন হইল অতঃপর তাহার সঙ্গীগণ পরাজিত হইল ( এবং পিছনে সরিয়া গেল); কিন্তু সে সম্মুখে বুক পাতিয়া রহিল যাবৎ না নিহত হইল অথবা জয়লাভ করিল।
যে তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ ক্রুদ্ধ হন, তাহারা হইল— (ক) বুড়া অথচ যেনাকার, (খ) ফকীর অথচ দাম্ভিক এবং (গ) ধনবান অথচ যালিম। (অর্থাৎ, ধনবান হইয়াও ধনের জন্য মানুষের প্রতি যুলুম করে এবং ধার লইলে ঠিক মত দেয় না। ) – তিরমিযী ও নাসায়ী। (কিন্তু নাসায়ী 'তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ ক্রুদ্ধ হন' হইতে বর্ণনা করেন নাই।)
যে তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ ক্রুদ্ধ হন, তাহারা হইল— (ক) বুড়া অথচ যেনাকার, (খ) ফকীর অথচ দাম্ভিক এবং (গ) ধনবান অথচ যালিম। (অর্থাৎ, ধনবান হইয়াও ধনের জন্য মানুষের প্রতি যুলুম করে এবং ধার লইলে ঠিক মত দেয় না। ) – তিরমিযী ও নাসায়ী। (কিন্তু নাসায়ী 'তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ্ ক্রুদ্ধ হন' হইতে বর্ণনা করেন নাই।)

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২৩

পরিচ্ছেদঃ ৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২৩। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যখন আল্লাহ্ তা'আলা যমীন সৃষ্টি করিলেন, যমীন কাঁপিতে লাগিল, অতঃপর আল্লাহ্ পাহাড় সৃষ্টি করিলেন এবং উহার উপর শলাকাস্বরূপ মারিলেন। যমীন স্থির হইল। ফিরিশতাগণ পাহাড়ের এই শক্তি দেখিয়া আশ্চর্যান্বিত হইলেন এবং বলিলেন, পরওয়ারদেগার! তোমার সৃষ্টিতে পাহাড় অপেক্ষা শক্তিশালী কোন জিনিস আছে কি? তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ, আছে, লোহা । অতঃপর তাহারা জিজ্ঞাসা করিল, পরওয়ারদেগার! তোমার সৃষ্টিতে লোহা অপেক্ষা কোন শক্তিশালী বস্তু আছে কি? তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ, আগুন। (আগুন লোহাকেও গলাইয়া দেয়।) অতঃপর তাহারা জিজ্ঞাসা করিলেন, পরওয়ারদেগার! তোমার সৃষ্টিতে আগুন অপেক্ষাও কোন শক্তিশালী জিনিস আছে কি? তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ, পানি। অতঃপর তাহারা জিজ্ঞাসা করিলেন, পরওয়ারদেগার! তোমার সৃষ্টিতে পানি অপেক্ষাও শক্তিশালী কোন জিনিস আছে কি ? তিনি বলিলেনঃ হ্যাঁ আছে, হাওয়া। (হাওয়া সমুদ্রকেও উচ্ছলিত করে।) তখন তাহারা জিজ্ঞাসা করিলেন, পরওয়ারদেগার! তোমার সৃষ্টিতে হাওয়া অপেক্ষাও শক্তিশালী কোন জিনিস আছে ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ আছে—বনি আদম, যে আপন ডান হাতে দান করে আর বাম হাত হইতেও উহাকে গুপ্ত রাখে। (ইহা কম শক্তির পরিচায়ক নহে।) — তিরমিযী। আর তিনি বলিয়াছেন, এই হাদীসটি গরীব। আর হযরত মুআযের হাদীস الصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ কিতাবুল ঈমানে উল্লেখ করা হইয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২৪

পরিচ্ছেদঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২৪। হযরত আবু যর গেফারী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে কোন মুসলমান বন্দা তাহার প্রত্যেক রকম মালের এক জোড়া আল্লাহর রাস্তায় দান করিবে, নিশ্চয় তাহাকে বেহেশতের দ্বাররক্ষীগণ স্বাগত জানাইবেন এবং প্রত্যেকেই তাহাকে নিজের নিকট যাহা আছে তাহার দিকে ডাকিবেন। আবু যর বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ইহা কেমন করিয়া ইয়া রাসূলাল্লাহ্? তিনি বলিলেন, যদি তাহার উট থাকে দুইটি উট দান করিবে আর গরু থাকিলে দুইটি গরু। —নাসায়ী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২৫

পরিচ্ছেদঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২৫। তাবেয়ী হযরত মারসাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রঃ) বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর জনৈক সাহাবী বলিয়াছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, কিয়ামতের দিন মু'মিনের ছায়া হইবে তাহার দান। —আহমদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২৬

পরিচ্ছেদঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২৬। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ যে আশুরার তারিখে নিজের পরিবারের প্রতি প্রশস্ততার সাথে খরচ করিবে, আল্লাহ্ তা'আলা সারা বছর তাহার প্রতি আপন দান প্রশস্ত রাখিবেন। তাবেয়ী হযরত সুইয়ান সওরী বলেন, আমরা ইহার পরীক্ষা করিয়াছি এবং ব্যাপারটিকে এইরূপই পাইয়াছি। —রযীন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৯২৭

পরিচ্ছেদঃ ৬. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা
১৯২৭। এ হাদীসটিকে ইমাম বায়হাক্বী ’আব্দুল্লাহ ইবনু মাস্’উদ, আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ), আবু সা’ঈদ ও জাবির (রাঃ) হতে শু’আবুল ঈমানে নকল করেছেন। তিনি এটি দুর্বল বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান