মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৭- যাকাতের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৮ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ১৭৭৭

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
১৭৭৭। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আবু আওফা (রাঃ) বলেন, কোন পরিবারের লোকেরা যখন নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট তাহাদের যাকাত লইয়া আসিত, তিনি বলিতেন, “হে আল্লাহ্ । তুমি অমুক পরিবারের প্রতি রহমত বর্ষণ কর।" আব্দুল্লাহ্ বলেন, একদা আমার পিতা তাহার নিকট যাকাত লইয়া আসিলেন, তখন হুযূর বলিলেন: "আল্লাহ্! তুমি দয়া কর আবু আওফার পরিবারের প্রতি।" —মোত্তাঃ
অপর বর্ণনায় রহিয়াছে, যখন কোন ব্যক্তি নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আপন যাকাত লইয়া আসিত, তিনি বলিতেন, আল্লাহ্! তুমি তাহার প্রতি দয়া কর।
অপর বর্ণনায় রহিয়াছে, যখন কোন ব্যক্তি নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আপন যাকাত লইয়া আসিত, তিনি বলিতেন, আল্লাহ্! তুমি তাহার প্রতি দয়া কর।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৭৭৮

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
১৭৭৮। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হযরত ওমরকে যাকাত উসূল করিতে পাঠাইলেন। অতঃপর হুযুরকে বলা হইল, ইবনে জামীল, খালেদ ইবনে ওলীদ ও আব্বাস থাকাত দেন নাই। ইহা শুনিয়া রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিলেন: ইবনে জামীল এ কারণেই যাকাত দিতে নাপছন্দ করিতেছে যে, সে দরিদ্র ছিল, আল্লাহ্ ও তাহার রাসূল তাহাকে ধনী করিয়া দিয়াছেন। আর খালেদ ইবনে ওলীদ, (তাহার নিকট যাকাত চাহিয়া) তোমরা তাহার প্রতি অবিচার করিয়াছ। কেননা, সে তাহার বর্ম এবং সমস্ত মাল আসবাব আল্লাহর রাস্তায় ওয়াকৃষ্ণ করিয়া রাখিয়াছে। বাকি রহিল (আমার চাচা) আব্বাস, তাহার এ বছরের যাকাত এবং উহার সমান আরও আমার জিম্মায়। অতঃপর হুযূর বলিলেন, হে ওমর তুমি কি বুঝিলে না যে, কোন ব্যক্তির চাচা তাহার পিতার সমমূল। (সুতরাং তাহাকে কষ্ট দিও না।) — মোস্তাঃ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৭৭৯

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
১৭৭৯। আবু হুমায়দ সায়েদী (রাঃ) বলেন, একবার নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনে লুবিয়্যা নামক আয়ূদ গোত্রের এক ব্যক্তিকে যাকাত উসুলের জন্য কর্মচারী নিযুক্ত করিলেন। যখন সে যাকাত লইয়া (মদীনায় ) ফিরিল, বলিল, এই অংশ আপনাদের প্রাপ্য যাকাত, আর এই অংশ আমাকে হাদিয়া দেওয়া হইয়াছে। ইহা শুনিয়া নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাষা দানের জন্য দাঁড়াইলেন এবং প্রথমে আল্লাহর গুণগান করিলেন অতঃপর বলিলেন ব্যাপার এই যে, আমি তোমাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তিকে সে সকল কাজের কোন একটির জন্য কর্মচারী নিযুক্ত করি, যে সকল কাজের দায়িত্ব আল্লাহ আমার প্রতি সোপর্দ করিয়াছেন। অতঃপর তোমাদের সে ব্যক্তি আসিয়া বলে যে, ইহা আপনাদের প্রাপ্য যাকাত এবং ইহা আমাকে হাদিয়া দেওয়া হইয়াছে। সে কেন তাহার বাপ বা মায়ের ঘরে বসিয়া দেখিল না যে, তাহাকে হাদিয়া দেওয়া হয় কিনা? খোদার কসম, যে ব্যক্তি উহার কোন কিছুর তসররু করিবে, সে নিশ্চয় কিয়ামতের দিন উহা আপন ঘাড়ে বহন করিয়া হাজির হইবে। যদি উহা উট হয়, উটের ন্যায় চিঁ চিঁ রব করিবে। যদি গরু হয়, হাম্বা হাম্বা করিবে, আর যদি ছাগল/ভেড়া হয়, উহাদের ন্যায় ম্যা ম্যা করিবে। অতঃপর হুযূর (খুব দীর্ঘ করিয়া) আপন হস্তদ্বয় উঠাইলেন যাহাতে আমরা তাহার উভয় বগলের শুভ্রতা পর্যন্ত দেখিলাম এবং বলিলেন, হে আল্লাহ্। আমি নিশ্চয় (তোমার নির্দেশ) পৌঁছাইয়া দিলাম, হে আল্লাহ্! আমি নিশ্চয় পৌঁছাইয়া দিলাম। — মোত্তাঃ খাত্তাবী বলেন, “সে কেন তাহার বাপ মায়ের ঘরে বসিয়া দেখে না যে, তাহাকে হাদিয়া দেওয়া হয় কিনা।" হুযুরের এ কথায় প্রমাণ রহিয়াছে যে, যে বস্তুকে হারামের উসীলা বানান হয়, উহাও হারাম। আর যে আকন কয়েকটি আকদের মধ্যে থাকে, দেখিতে হইবে, উহার
পৃথক থাকার সময় ঐ হুকুমই থাকে কিনা যাহা উহার একত্র হওয়ার সময় রহিয়াছে। —শরহে সুন্নাহ
পৃথক থাকার সময় ঐ হুকুমই থাকে কিনা যাহা উহার একত্র হওয়ার সময় রহিয়াছে। —শরহে সুন্নাহ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৭৮০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
১৭৮০। হযরত আদী ইবনে আমীরাহ্ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন: তোমাদের মধ্যে আমি যাহাকে কোন কর্মে কর্মচারী নিযুক্ত করি, আর সে আমাদের নিকট হইতে একটি সুচ অথবা তদপেক্ষা ছোট কিছুও গোপন করে, উহা নিশ্চয় আমানতে খেয়ানত হইবে, যাহা লইয়া সে কিয়ামতের দিন হাজির হইবে। —মুসলিম

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৭৮১

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮১। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, যখন এই আয়াত নাযিল হইল, “যাহারা সোনা ও রূপা সংরক্ষণ করে” – ( শেষ পর্যন্ত) মুসলমানদের ইহা ভারী বোধ হইল। ইহা দেখিয়া হযরত ওমর (রাঃ) বলিলেন, আমি আপনাদের এ কষ্ট দূর করিব। অতঃপর তিনি নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট গেলেন এবং বলিলেন, হে আল্লাহর নবী! এই আয়াতটি আপনার সহচর গণের ভারী বোধ হইতেছে, (তবে কি আমরা কোন মালই সংরক্ষণ করিতে পারিব না?) হুযূর বলিলেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা এ জন্যই যাকাত ফরয করিয়াছেন, যাহাতে তোমাদের অবশিষ্ট মালকে পবিত্র করিয়া লন (অর্থাৎ, যাকাত প্রদানের পর বাকি মাল সমস্তই পবিত্র ও সংরক্ষণ যোগ্য)। আল্লাহ্ তা'আলা মীরাসকে ফরয করিয়াছেন, যাহাতে উহা তোমাদের পরবর্তীদের জন্য হয়। (যদি মাল মোটেই সংরক্ষণ করা না হইল, তবে মীরাস আসিবে কোথা হইতে ?) রাবী বলেন, মীরাসের পর হুযূর আর একটি কথা বলিয়াছিলেন, (তাহা আমি ভুলিয়া গিয়াছি।) পুনরায় রাবী বলেন, ইহা শুনিয়া হযরত ওমর খুশীতে 'আল্লাহু আকবর' বলিয়া উঠিলেন। অতঃপর নবী করীম (ﷺ) বলিলেন, আমি কি তোমাকে বলিয়া দিব না যে, মানুষ যাহা সংরক্ষণ করে, তাহার মধ্যে উত্তম জিনিস কি? উত্তম জিনিস হইল নেক স্ত্রী। যখন সে তাহার দিকে দৃষ্টি করে, সে তাহাকে সন্তুষ্ট করে, যখন সে তাহাকে কোন নির্দেশ করে, সে উহা পালন করে এবং যখন সে তাহার নিকট হইতে দূরে থাকে, সে তাহার হক সংরক্ষণ করে। —আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৭৮২

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮২। হযরত জাবের ইবনে আতীক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ শীঘ্র তোমাদের নিকট (যাকাত উসূলের জন্য) কতক সওয়ারী আসিবে, যাহাদিগকে তোমরা পছন্দ করিবে না। কিন্তু যখন তাহারা আসিবে, তাহাদিগকে স্বাগতম জানাইবে এবং তাহারা যাহা চাহিবে, তাহা তাহাদিগকে দিবে। যদি তাহারা তোমাদের সহিত ইসাফ করে, তাহাদের মঙ্গল হইবে, আর যদি যুলুম করে, তাহা তাহাদের অমঙ্গলের কারণ হইবে। কিন্তু তোমরা তাহাদিগকে সন্তুষ্ট রাখিতে চেষ্টা করিবে। কেননা, তাহাদের সন্তুষ্টির মধ্যেই তোমাদের যাকাতের পূর্ণতা রহিয়াছে এবং তাহারাও যেন তোমাদের জন্য দোআ করে। –আবু দাউদ ব্যাখ্যাঃ যাকাত লাভের পর যাকাত দানকারীদের জন্য দো'আ করার নির্দেশ কুরআনে রহিয়াছে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৭৮৩

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৩। হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ্ বাজালী (রাঃ) বলেন, একবার গ্রাম্য আরবদের কতক লোক রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর নিকট আসিয়া বলিল, হুযূর ! যাকাত উসূলকারী লোকেরা আমাদের নিকট যাইয়া আমাদের প্রতি অবিচার করেন। হুযূর বলিলেনঃ তোমরা তোমাদের যাকাত উসূলকারীদিগকে সন্তুষ্ট রাখিবে। তাহারা বলিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্। যদিও তাহারা আমাদের প্রতি অবিচার করে? হুযূর বলিলেন, তোমরা তোমাদের যাকাত উসূলকারীদিগকে সন্তুষ্ট রাখিবে (অর্থাৎ, যাকাত দিবে) যদিও তোমাদের উপর অবিচার করা হয়। –আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৭৮৪

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
১৭৮৪। হযরত বশীর ইবনে খাছাছিয়া (রাঃ) বলেন, আমরা বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ ! যাকাত উসূলকারীগণ আমাদের প্রতি অবিচার করিয়া থাকেন। সুতরাং আমরা কি অবিচার পরিমাণ আমাদের মাল গোপন করিয়া রাখিতে পারি? হুযূর বলিলেনঃ না। – আবু দাউদ

তাহকীক:
তাহকীক চলমান