মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন

হাদীস নংঃ ১৪২০
details icon

পরিচ্ছেদঃ ৪৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয়কালীন সালাত।

কোরআনে রহিয়াছেঃ

حَافِظُوا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَىٰ وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ - فَإِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا أَوْ رُكْبَانًا ۖ فَإِذَا أَمِنتُمْ فَاذْكُرُوا اللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُم مَّا لَمْ
تَكُونُوا تَعْلَمُونَ

“হেফাযত কর তোমরা সকল নামাযের – বিশেষ করিয়া মধ্যম নামাযের এবং দাঁড়াও তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিনয় সহকারে। যখন তোমরা ভয় করিবে (শত্রুর অথবা অপর কিছুর), তখন নামায পড়িবে দাঁড়ান অবস্থায় অথবা আরোহণ অবস্থায়, হ্যাঁ, যখন তোমরা নিরাপদ হইবে তখন আল্লাহর স্মরণ করিবে যেভাবে শিক্ষা দিয়াছেন তিনি তোমাদিগকে, যাহা তোমরা জানিতে না।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৮, ২৩৯ )

إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ إِنْ خِفْتُمْ أَن يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ إِنَّ الْكَافِرِينَ كَانُوا لَكُمْ عَدُوًّا مُّبِينًا - وَإِذَا كُنتَ فِيهِمْ فَأَقَمْتَ لَهُمُ الصَّلَاةَ فَلْتَقُمْ طَائِفَةٌ مِّنْهُم مَّعَكَ وَلْيَأْخُذُوا أَسْلِحَتَهُمْ فَإِذَا سَجَدُوا فَلْيَكُونُوا مِن وَرَائِكُمْ وَلْتَأْتِ طَائِفَةٌ أُخْرَىٰ لَمْ يُصَلُّوا فَلْيُصَلُّوا مَعَكَ وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ ۗ وَدَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ تَغْفُلُونَ عَنْ أَسْلِحَتِكُمْ وَأَمْتِعَتِكُمْ فَيَمِيلُونَ عَلَيْكُم مَّيْلَةً وَاحِدَةً

“যখন তোমরা যমীনে সফরে বাহির হইবে, তোমাদের প্রতি কোন দোষ বর্তাইবে না যে, তোমরা নামায ‘কসর' করিবে; যদি তোমরা ভয় কর শত্রুরা তোমাদিগকে বিপদগ্রস্ত করিবে। নিশ্চয়, কাফেরেরা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (এ ভয় অবস্থায়) যখন আপনি তাহাদের মধ্যে থাকিবেন এবং তাহাদের নামায পড়াইবেন, তখন যেন তাহাদের (মু'মিনদের) মধ্য হইতে একদল আসিয়া আপনার সাথে দাঁড়ায় এবং গ্রহণ করে (সংক্ষেপে) তাহাদের অস্ত্র-শস্ত্র। অতঃপর যখন ইহারা সজদা শেষ করিবে তখন যেন আপনাদের পিছনে (প্রহরায়) চলিয়া যায় এবং দ্বিতীয় দল যাহারা নামায পড়ে নাই তাহারা আসিয়া দাঁড়ায় এবং নামায পড়ে আপনার সাথে এবং গ্রহণ করে নিজেদের সতর্কতা ও নিজেদের অস্ত্র-শস্ত্র। কেননা, কাফেরেরা চাহে যে, যদি আপনারা আপনাদের অস্ত্র-শস্ত্র ও আসবাব সামগ্রী হইতে অমনোযোগী হন, তাহারা হঠাৎ আক্রমণ করিবে। (সূরা নিসা, ১০১, ১০২ )
এসকল আয়াত হইতে বুঝা গেল যে, নামায এইরূপ বিপদকালেও মাফ নাই। শত্রু বা অপর কিছুর ভয়ে নিয়মিত পন্থায় নামায পড়িতে না পারিলে যেদিকে সম্ভব সেদিকে ফিরিয়া, এক সাথে পড়িতে না পারিলে বিভিন্ন জামাআতে বিভক্ত হইয়া, তাহাও সম্ভবপর না হইলে একা পড়িবে। নিয়মানুযায়ী রুকূ-সজদা দিতে না পারিলে ইশারায় দিবে, তবু নামায পড়িবে। ইহাকে 'সালাতুল খওফ' বা ভয়কালীন নামায বলে। কোরআনে ইহার এক পদ্ধতি বর্ণিত হইলেও হাদীসে ইহার আরও কয়েক পদ্ধতি বর্ণিত হইয়াছে। হুযূর (ﷺ) বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইহা বিভিন্ন নিয়মে পড়িয়াছেন। হাদীসে এখানে ছয় পদ্ধতির বর্ণনা রহিয়াছে।
কোরআনে সফরের কথা উল্লেখ থাকিলেও হযরেও (ঘর-বাড়ীতেও এইরূপ অবস্থার সৃষ্টি হইলে এইরূপেই নামায পড়িবে। (ইহার বিস্তারিত নিয়ম-কানুন ফেকাহর কিতাবে দ্রষ্টব্য।) —অনুবাদক
১৪২০। তাবেয়ী সালেম ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর (রাঃ) তাঁহার পিতা আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর হইতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, তিনি বলিয়াছেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিত নজদের দিকে যুদ্ধ করিতে গেলাম। আমরা শত্রু সৈন্যের সম্মুখীন। হইলাম এবং তাহাদের সহিত লড়িবার জন্য কাতারবন্দী হইলাম। এসময় রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নামায পড়াইতে দাঁড়াইলেন আর আমাদের একদল তাঁহার সহিত (নামায পড়িতে) দাড়াইল এবং অপর দল শত্রুর সম্মুখীন হইয়া রহিল। রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহার সহিত যাহারা ছিল তাহাদের লইয়া একটি রুকু এবং দুইটি সজদা করিলেন। অতঃপর ইহারা, যাহারা নামায পড়ে নাই তাহাদের স্থলে চলিয়া গেল এবং তাহারা (রাসূলুল্লাহর পিছনে) আসিয়া দাড়াইল। ইহাদের লইয়া রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি রুকূ করিলেন এবং দুইটি সজদা দিলেন। অতঃপর তিনি (একাই) সালাম ফিরাইলেন এবং তাহাদের প্রত্যেক দল (একের পর এক) উঠিয়া নিজেদের জন্য একটি রুকু ও দুইটি সজদা দিল (এবং এইরূপে সকলে নামায সমাপ্ত করিল) ।

হযরত আব্দুল্লাহর অপর শাগরেদ) নাফে'ও এইরূপ বর্ণনা করিয়াছেন এবং তিনি অধিক বর্ণনা করিয়াছেন, ভয় যদি ইহা অপেক্ষাও অধিক হয়, তবে তাহারা পায়ের উপর দাড়াইয়া দাড়াইয়া পড়িবে অথবা সওয়ারী অবস্থায় (সওয়ারীর উপরে) বসিয়া নামায পড়িবে কেবলার দিকে ফিরিয়া অথবা কেবলার অপর দিকে ফিরিয়া, যে দিকেই সমর্থ হয়। অতঃপর নাফে' বলেন, আমার ধারণা, ইহাও হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হইতেই বর্ণনা করিয়াছেন। —বোখারী

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান