মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)

مشكاة المصابيح للتبريزي

৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ

মোট হাদীস টি

অনুসন্ধান করুন

হাদীস নংঃ ১৪০১
details icon

পরিচ্ছেদঃ ৪৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুতবাহ্ ও সালাত।

খোতবা—অর্থ বক্তৃতা, বক্তৃতা করা। শরীআতে ইহার অর্থ, এমন বক্তৃতা, যাহাতে আল্লাহর প্রশংসা, তাঁহার তওহীদের ঘোষণা এবং রাসূলের প্রতি দরূদ ও উপস্থিত সাধারণের প্রতি কিছু উপদেশ থাকে।
খোতবা জুমুআর নামাযের শর্ত বা ফরয। খোবা ব্যতীত জুমুআর নামায হয় না। খোবার দুইটি অংশ রহিয়াছে। দ্বিতীয়াংশে উপদেশের স্থলে সাধারণত রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর আল ও আসহাবের প্রতি দরূদ এবং মুসলিম রাষ্ট্রের খলীফা ও জনসাধারণের জন্য দো'আ থাকে।
খোতবা আরবীতে দান করা সুন্নত। খোলাফায়ে রাশেদ্বীনের আমলে মিসরের কিবতীভাষী এবং ইরানের পারসীভাষীদের মধ্যে আরবীতেই খোতবা দান করা হইত। খোতবা আরবীতে হওয়াই উচিত। কারণ— (ক) ইসলাম একটি বিশ্বজনীন ধর্ম। বিশ্ব-রাষ্ট্র গঠন করা, বিশ্ব-ভ্রাতৃত্ব গড়িয়া তোলা এবং বিশ্ব-মুসলিমকে এক কেন্দ্রিক রাখা ইসলামের কাম্য। সুতরাং ইহার জন্য ভাষার ন্যায় একটি স্থায়ী ও সুদৃঢ় বন্ধন অপরিহার্য। (খ) ইসলাম পুরোহিত তন্ত্রের বিরোধী। ইসলাম চায় মুসলমানরা ইসলামকে ইসলামের মূল উৎস কোরআন ও হাদীস হইতে সরাসরিভাবে গ্রহণ করুক, সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের পক্ষেই আরবী জানা আবশ্যক। (গ) কোরআন ও হাদীসের আলোকে প্রথম যুগে আরবে যে আদর্শ সমাজ গড়িয়া উঠিয়াছিল, বিশ্বে উহার তামাদ্দুনিক প্রভাব বিস্তার ইসলামের উদ্দেশ্য। আর উহা একমাত্র আরবীর মাধ্যমেই সম্ভবপর। এক কথায় প্রত্যেক মুসলমানই আরবী জানুক, ইসলাম ইহাই চায়। ইহাতেই তাহাদের জাতীয় মঙ্গল এবং ইহাতেই তাহাদের ব্যক্তিগত কল্যাণ। সত্য কথা এই যে, আরবীতে খোতবাদান, আরবীতে মুসলমানদের নাম এবং আরবীতে মুসলমানদের অভিবাদন (সালাম) —এই কয়টি বিষয়ই বিশ্ব-মুসলিমকে পরস্পর নিকট করিয়া রাখিয়াছে। অন্যথায় তাহারা আরও শতধা বিচ্ছিন্ন হইয়া যাইত। চীনা মুসলমানরা নাম রাখা ও ইত্যাকার ব্যাপারে আরবীর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখায় মুসলিম বিশ্বের নিকট তাহারা অপরিচিত হইয়া রহিয়াছে।
দুঃখের বিষয়, আজকাল আমাদের এখানেও এক শ্রেণীর মুসলমান ইংরেজী ও বাংলায় নিজেদের ছেলেমেয়েদের ডাক নাম রাখিতে আরম্ভ করিয়াছেন এবং আরবী শিক্ষার প্রতি মনোযোগ না দিয়া উল্টা খোতবাকেই বাংলা করার প্রতি জোর দিতেছেন। ইহা নিশ্চয় মুসলমানদের ধ্বংসের পথ।
এতদসত্ত্বেও খতীবদের উচিত, তাঁহারা যেন জনসাধারণের বাস্তব অজ্ঞতার প্রতি লক্ষ্য করিয়া খোতবার পূর্বে বা পরে এমন কি খোতবার ভিতরে হইলেও খোতবার উপদেশ অংশটি সাধারণভাবে তাহাদের মাতৃভাষায় বুঝাইয়া দেন এবং মুসলিম-বিশ্বের উদ্ভূত সমস্যাবলী সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করেন। ইহাতে নিয়মের সামান্য ব্যতিক্রম হইলেও মুসলমানদের মধ্যে বিরাট জাগরণের সৃষ্টি হইবে। — অনুবাদক
১৪০১। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর নামায পড়িতেন যখন সূর্য চলিত। -বোখারী

tahqiq

তাহকীক:

তাহকীক চলমান