মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত শরীফ)
مشكاة المصابيح للتبريزي
৫- নামাযের অধ্যায় - এর পরিচ্ছেদসমূহ
মোট হাদীস ৪ টি
অনুসন্ধান করুন
হাদীস নংঃ ১৩৫৯

পরিচ্ছেদঃ ৪২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জুমুআর সালাত
১৩৫৯। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি একবার (শামের) সিনাই পর্বতের দিকে সফরে বাহির হইলাম। তথায় তাবেয়ী কা'ব আহ্বার-এর সহিত আমার সাক্ষাৎ হইল। আমি তাঁহার নিকট বসিলাম, তিনি আমাকে তওরাত গ্রন্থ হইতে কিছু বলিতে লাগিলেন, আর আমি তাহাকে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর কিছু হাদীস শুনাইতে লাগিলাম। আমি তাঁহাকে যাহা শুনাইয়াছিলাম তন্মধ্যে ইহাও ছিল যে, আমি বলিলাম, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন এমন সকল দিন অপেক্ষা—যাহাতে সূর্য উদিত হয়, জুমুআর দিনই উত্তম। উহাতেই হযরত আদমকে সৃষ্টি করা হইয়াছে; উহাতেই তাঁহাকে (দুনিয়াতে) অবতীর্ণ করা হইয়াছে; উহাতেই তাঁহার তওবা কবূল করা হইয়াছে আর উহাতেই তিনি মৃত্যুবরণ করিয়াছেন এবং উহাতেই কেয়ামত কায়েম হইবে। কেয়ামত কায়েম হইবার ভয়ে জুমুআবারে উষার প্রারম্ভ হইতে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত সকল প্রাণীই চীৎকার করিতে থাকে, জ্বিন ও মানুষ ব্যতীত। জুমুআর দিনে এমন একটি ক্ষণ রহিয়াছে— যদি উহাকে কোন মুসলমান বান্দা পায় নামায পড়া অবস্থায় এবং আল্লাহর নিকট কিছু চাহে, আল্লাহ্ নিশ্চয় উহা তাহাকে দান করেন। ইহা শুনিয়া কা'ব বলিলেন, উহা বৎসরে এক জুমুআ মাত্র। আমি বলিলাম; বরং প্রত্যেক জুমুআবারেই। অতঃপর কা'ব তওরাত পাঠ করিলেন এবং বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) সত্য বলিয়াছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম সাহাবীর সাথে সাক্ষাৎ করিলাম এবং তাঁহাকে কা'ব আহবারের সাথে আমার বৈঠক এবং তাঁহাকে জুমুআর দিন সম্পর্কে যাহা বলিয়াছি তাহা বলিলাম। অতঃপর আমি বলিলাম, কা'ব বলিয়াছেন ইহা বৎসরে একবার মাত্র। ইহা শুনিয়া আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাঃ) বলিলেন, কা'ব মিথ্যা বলিয়াছেন। আমি বলিলাম, অতঃপর কা'ব তওরাত পাঠ করিয়া বলিলেন, হ্যাঁ, উহা প্রত্যেক জুমুআবারেই। এবার আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাঃ) বলিলেন, কা'ব সত্য বলিয়াছেন। অতঃপর আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাঃ) বলিলেন, আমি নিশ্চয় করিয়া জানি উহা কোন্ ক্ষণ। আবু হুরায়রা বলেন, আমি বলিলাম, মেহেরবানী করিয়া আমাকে উহা বলুন এবং আমার সহিত কার্পণ্য করিবেন না। আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাঃ) বলিলেন, উহা জুমুআবারের সর্বশেষ ক্ষণটিই। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি বলিলাম, জুমুআবারের শেষ ক্ষণ কি করিয়া হইতে পারে? কারণ, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেন, যদি কোন মুসলমান বান্দা উহাকে পায় নামায পড়া অবস্থায় (অথচ আছরের পর নামায পড়া মাকরূহ)। ইহা শুনিয়া আব্দুল্লাহ্ ইবনে সালাম (রাঃ) বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কি একথাও বলেন নাই যে, যে ব্যক্তি নামাযের অপেক্ষায় বসিয়া থাকে সে নামাযেই থাকে, যাবৎ না সে ঐ নামায পড়ে? আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি বলিলাম, হ্যাঁ। আব্দুল্লাহ্ বলিলেন, এখানে নামায পড়িতে থাকা অর্থে নামাযের অপেক্ষায় থাকাকেই বুঝান হইয়াছে (অর্থাৎ, আছর পড়িয়া মাগরিবের অপেক্ষায় বসিয়া থাকা)। — মালেক, আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ী; কিন্তু আমদ "কাব সত্য বলিয়াছেন' পর্যন্ত।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৩৬০

পরিচ্ছেদঃ ৪২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জুমুআর সালাত
১৩৬০। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ জুমুআবারের সে ক্ষণটিকে, যাহাতে (দো'আ কবুলের) আশা করা যায়, আছরের পর হইতে সূর্যাস্তের মধ্যে তালাশ কর। – তিরমিযী

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৩৬১

পরিচ্ছেদঃ ৪২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জুমুআর সালাত
১৩৬১। হযরত আওস ইবনে আওস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ তোমাদের সকল দিন অপেক্ষা জুমুআর দিনটিই হইল শ্রেষ্ঠ—উহাতেই হযরত আদমকে সৃষ্টি করা হইয়াছে; উহাতেই তাঁহার মৃত্যু হইয়াছে এবং উহাতেই বিশ্ব ধ্বংসের জন্য শিঙ্গায় ফুৎকার দেওয়া হইবে এবং উহাতেই পুনর্জীবিত করার জন্য (দ্বিতীয়বার) শিঙ্গায় ফুৎকার দেওয়া হইবে। সুতরাং ঐ দিন আমার উপর বেশী করিয়া দরূদ পাঠ করিবে, কেননা তোমাদের দরূদ নিশ্চয় আমার নিকট উপস্থিত করা হইবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাদের দরূদ আপনার নিকট কেমন করিয়া উপস্থিত করা হইবে, অথচ আপনি তখন মাটি হইয়া যাইবেন? হুযূর উত্তর করিলেন, নবীদের শরীর আল্লাহ্ তা'আলা যমীনের প্রতি হারাম করিয়া দিয়াছেন (যমীন উহা ক্ষয় করিতে পারে না)। –আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ্ ও দারেমী এবং বায়হাকী দাআওয়াতে কবীরে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান
হাদীস নংঃ ১৩৬২

পরিচ্ছেদঃ ৪২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জুমুআর সালাত
১৩৬২। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলিয়াছেনঃ (কোরআনে বর্ণিত) 'প্রতিশ্রুত দিবস', 'মাশহুদ দিবস' ও 'শাহেদ দিবস' যথাক্রমে কেয়ামতের দিবস, আরাফার দিবস এবং জুমুআর দিবস। সূর্য উদিত হয় না এবং অস্ত যায় না জুমুআর দিবস অপেক্ষা কোন উত্তম দিবসে। উহাতে এমন একটি মুহূর্ত রহিয়াছে, যদি ঠিক সে মুহূর্তকে কোন মু'মিন পায় এবং আল্লাহ্র নিকট কোন কল্যাণ চাহে, আল্লাহ্ তাহাকে উহা নিশ্চয় দান করেন এবং যদি কোন (মন্দ) কাজ হইতে পানাহ্ চাহে, আল্লাহ্ তাহাকে নিশ্চয় পানাহ্ দেন। – আহমদ ও তিরমিযী
কিন্তু তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব। (মুসা) ইবনে আবায়দা (ওবায়দা নহে) ব্যতীত কাহারও প্রমুখাৎ বর্ণিত নহে; আর তাঁহাকে 'যয়ীফ' বলা হইয়া থাকে।
কিন্তু তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব। (মুসা) ইবনে আবায়দা (ওবায়দা নহে) ব্যতীত কাহারও প্রমুখাৎ বর্ণিত নহে; আর তাঁহাকে 'যয়ীফ' বলা হইয়া থাকে।

তাহকীক:
তাহকীক চলমান